এক্স-রে মেশিন কেনাকাটা
এক্স-রে হলো একটি দ্রুত এবং ব্যথা বিহীন পদ্ধতি যা সাধারণত দেহের আভ্যন্তরের ছবি তোলার জন্য ব্যবহার করা হয়। এক্স-রে মেশিন বিশেষ করে হাড়ের যেকোনো সমস্যা সনাক্ত করতে তুলনামূলক বেশি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, মানব দেহের সফট টিস্যুর সমস্যা সনাক্তকরনে এক্স-রে মেশিনের ব্যবহার হয়ে থাকে। মাত্র কয়েক মিনিট সময়ের মধ্যে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে দেহের আভ্যন্তরীণ ছবি তুলে এক্স-রে সম্পন্ন করা হয়। এক্স-রে আবিষ্কারের পর থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের এক্স-রে মেশিন ব্যবহার করে মানব দেহের সমস্যা সনাক্ত করা হয়।
এক্স-রে করার আগে জানতে হবে
১। সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য প্রয়োজন অনুসারে লিড অ্যাপ্রন, থাইরড কলার, লিডেড গোগলস, এবং লিডেড গ্লোভস পরিধান করে নিন।
২। এক্স-রে করানোর আগে শরীরে কোন প্রকার স্বর্ণালঙ্কার ও লোহা মত বস্তু থাকলে তা খুলে রাখতে হবে।
৩। এক্স-রে করানোর সময় ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করাই উত্তম।
৪। গর্ভবতী মহিলারা এক্স-রে করানোর পূর্বে ডাক্তারকে গর্ভাবস্থার বিষয় অবগত করতে হবে। কেননা ইমার্জেন্সি কোন কারণ ব্যতীত গর্ভঅবস্থায় মহিলাদের এক্স-রে করার পরামর্শ দেওয়া হয় না।
৫। এক্স-রে করানোর আগে লোশন, ক্রিম, এবং পারফিউম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
৬। শরীরের বিভিন্ন সফট টিস্যুর এক্স-রে সম্পাদন করার সময় সফট টিস্যুর ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন মেডিসিনের সাহায্য নেওয়া হয়ে থাকে।
৭। সাধারণত হাড়ের সমস্যা সনাক্ত করনে যে এক্স-রে করা হয় সেক্ষেত্রে এক্স-রে এর পর কোন প্রকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। অন্যদিকে, কন্ট্রাস্ট এজেন্ট এক্স-রে বা শরীরের সফট টিস্যুর এক্স-রে করার পরবর্তী সময় কিছুটা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যা মাত্র কয়েক দিনেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
৮। এক্স-রে চলাকালীন সময় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করতে হবে।
৯। শুয়ে বা দাঁড়িয়ে উভয় ভাবে এক্স-রে মেশিনের ধরণ অনুসারে এক্স-রে করা হয়। তাই, শুয়ে বা দাঁড়িয়ে এক্স-রে সম্পাদন কালীন সময় কোন প্রকার নড়াচড়া করা যাবে না। কেননা নড়াচড়া করলে এক্স-রে এর ছবি ঘোলা হয়ে যাবে।
এক্স-রে মেশিন কেনার আগে কি কি দেখতে হবে?
এক্স-রে মেশিনের রেডিয়েশেন ওয়েভ ব্যবহার করে মানব দেহের সমস্যা সনাক্ত করা হয় যা মানব দেহের জন্য সংবেদনশীল বিষয়। তাই, বিডিতে হাসপাতাল বা ক্লিনিকের জন্য এক্স-রে মেশিন নির্বাচন করার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হবে।
ইমেজ কোয়ালিটিঃ এক্স-রে মেশিনের প্রধান কাজ হলো মানব দেহের নির্দিষ্ট স্থানের আভ্যন্তরীণ স্পষ্ট ছবি তোলা। আর, এই ছবি দেখে ডাক্তার সমস্যা সনাক্ত করে থাকে। তাই, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সম্পাদন করা হয় দেহের আভ্যন্তরীণ একটি স্পষ্ট ছবি সংগ্রহ করার জন্য। তাই, পর্যাপ্ত পরিষ্কার ও কোয়ালিটি সম্পন্ন ছবি তোলা যাবে কিনা তা যাচাই করে এক্স-রে মেশিন নির্বাচন করতে হবে।
এক্স-রে মেশিনের ধরণঃ এক্স-রে মেশিন সাধারণত কম্পিউটেড টমোগ্রাফি (সিটি), ফ্লুরোস্কোপি, এবং রেডিওগ্রাফি তিন ধরণের হয়ে থাকে যা বাংলাদেশে পাওয়া যায় ক্ষেত্র বিশেষ বিদেশ হতে আমদানি করতে হয়। প্রয়োজন অনুসারে সঠিক এক্স-রে মেশিন নির্বাচন করতে হবে। এবং সাইজের ভিত্তিতে ফিক্সড এক্স-রে মেশিন, পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন, এবং মোবাইল এক্স-রে মেশিন এই তিন ধরনের এক্স-রে মেশিন ব্যবহার করা হয়।
এক্স-রে টিউবঃ এক্স-রে মেশিনের প্রধান অংশ হলো এক্স-রে টিউব যা বৈদ্যুতিক শক্তিকে এক্স-রে তে রুপান্তর করে। এবং, এক সময় কতটুকু জায়গায় এক্স-রে করতে পারবে তা নির্ভর করে এক্স-রে টিউব এর উপর। তাই, এক্স-রে মেশিন কেনার আগে প্রয়োজন অনুসারে এক্স-রে টিউব সঠিক ভাবে যাচাই করে নিতে হবে।
বৈশিষ্টঃ এক্স-রে মেশিনে কিছু কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে যা নিখুঁত ভাবে মানব দেহের আভ্যন্তরীণ ছবি তুলতে সাহায্য করে। তাই, প্রয়োজন অনুসারে বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও কার্যপ্রনালী ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করে উপযুক্ত এক্স-রে মেশিন নির্বাচন করতে হবে।
বাংলাদেশে এক্স-রে মেশিনের দাম কত?
বর্তমানে, বাংলাদেশে এক্স-রে মেশিনের দাম ৮,৫০,০০০ টাকা যাতে বিশেষ এক্স-রে টিউব ফোকাস, সংযুক্ত টেবিল, এবং আলাদা কন্ট্রোল সিস্টেম থাকে। তাছাড়া, বিডিতে এক্স-রে মেশিনের ধরণ, এক্স-রে টিউব, ইমেজ কোয়ালিটি, এবং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যর ভিত্তিতে এক্স-রে মেশিনের দামের তারতম্য হয়ে থাকে। তবে, উন্নত মানের এক্স-রে মেশিনগুলো ৮,০০,০০০ টাকা থেকে ১০,০০,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।