হুইল চেয়ার কেনাকাটা
সাধারণত স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে অক্ষম এমন মানুষ হুইল চেয়ার ব্যবহার করে। বিশেষ করে হাসপাতালে রোগীদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার জন্য হুইল চেয়ার ব্যবহার করা হয়। আবার, প্যারালাইজড ও প্রতিবন্ধী রোগীরা হুইল চেয়ারের মাধ্যমে হাতের সাহায্যে চলাচল করতে পারে। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী, প্যারালাইজড, ও অতি বয়স্কদের জন্য বিভিন্ন ধরনের হুইল চেয়ার পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের বাজারে কয় ধরনের হুইল চেয়ার পাওয়া যায়?
ম্যানুয়াল হুইল চেয়ারঃ সাধারণত হাসপাতাল গুলোতে রোগীদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার জন্য ম্যানুয়াল হুইলচেয়ার ব্যবহার করা হয়। আবার, প্রতিবন্ধী রোগীরা যাদের হাতে পর্যাপ্ত শক্তি আছে তারা অন্যের সাহায্য ছাড়াই ম্যানুয়াল হুইল চেয়ারের চাকা হাতের সাহায্যে ঘুরিয়ে চলাচল করতে পারবে। প্রয়োজন শেষে ম্যানুয়াল হুইলচেয়ার গুলো ফোল্ড করে রাখা যায়। বাংলাদেশে ম্যানুয়াল হুইল চেয়ারের ব্যবহার তুলনামূলক বেশি।
কমোড হুইল চেয়ারঃ অসুস্থ বা প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি যদি মলমূত্র ত্যাগের জন্য টয়লেটে যেতে না পারে সেক্ষেত্রে তাদের জন্য কমোড হুইল চেয়ার উপযুক্ত। কমোড হুইল চেয়ারের মাধ্যমে প্রথমত, রোগীকে সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়া যাবে এবং দ্বিতীয়ত, রোগীর টয়লেটের কাজ হুইল চেয়ারে বসেই করতে পারবে। কমোড হুইল চেয়ার বিশেষ করে প্যারালাইজড ও অতি বয়স্ক রোগীরা ব্যবহার করে থাকে।
বৈদ্যুতিক হুইল চেয়ারঃ ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারের মাধ্যমে কোন সাহায্যকারি ছাড়াই প্রতিবন্ধী বা স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে অক্ষম ব্যক্তি এক হাত দিয়ে সুইচ কন্ট্রোল করে চলাচল করতে পারে। যদি ম্যানুয়াল হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে অসুবিধা হয় তাহলে ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, বৈদ্যুতিক হুইল চেয়ার ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ব্যবহারকারিকে বৈদ্যুতিক হুইল চেয়ারটি কন্ট্রোল করার নিয়ম শিখে নিতে হবে। ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারের দাম তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে।
স্লিপিং হুইল চেয়ারঃ স্লিপিং হুইল চেয়ার গুলোতে হেলান দেওয়ার জন্য চেয়ারের পেছন সাইড বাকানো যায় এবং প্রয়োজনে বেডে রূপান্তর করা যায়। যদি হুইলচেয়ার ব্যবহারকারি প্রতিনিয়ত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা হুইল চেয়ারে সময় অতিবাহিত করে তাহলে এমন ব্যাক্তিদের জন্য স্লিপিং হুইল চেয়ার বা চেয়ারের পেছন সাইড বাকানো যায় এমন হুইল চেয়ার উপযুক্ত। স্লিপিং হুইল চেয়ার ব্যবহার করলে মেরুদন্ডের হাড়ের সমস্যা হওয়া থেকে এড়ানো যাবে। বেশিরভাগ স্লিপিং হুইল চেয়ারে কমোড সংযুক্ত থাকে।
হুইল চেয়ার কেনার আগে কি কি দেখতে হবে?
রোগীর সমস্যার বিষয় বিবেচনা করে হুইল চেয়ার নির্বাচন করা উচিত। হুইল চেয়ার কেনার আগে অবশ্যই যে বিষয় গুলো খেয়াল রাখতে হবেঃ
- রোগীর অক্ষমতা যদি শুধুমাত্র শরীরের নিচের অংশ থাকে এবং হাতে পর্যাপ্ত শক্তি থাকে তাহলে নিয়মিত ব্যবহার করার জন্য ম্যানুয়াল হুইল চেয়ার উপযুক্ত।
- যদি রোগীর টয়লেটে যাওয়া আসায় সমস্য হয় তাহলে অবশ্যই কমোড হুইল চেয়ার ব্যবহার করাই উপযুক্ত হবে।
- নিয়মিত বেশি সময় হুইল চেয়ার ব্যবহার করলে চেয়ারের পেছন সাইড বাকানো যায় এমন চেয়ার কেনা উচিত।
- রোগীর হাতে যদি পর্যাপ্ত শক্তি না থাকে তবে যদি আঙ্গুলের সাহায্যে সুইচ কন্ট্রোল করতে পারে তাহলে ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার তার জন্য উপযুক্ত।
- যদি সাময়িক সময়ের জন্য হুইল চেয়ারের প্রয়োজন হয় তাহলে হুইল চেয়ার ভাড়ায় নেওয়াই উপযুক্ত।
- ফোল্ড হয় এমন হুইল চেয়ার কেনা উচিত যাতে সহজেই যেকোন যায়গায় বহন করা যায়।
বিডিতে হুইল চেয়ারের দাম কত?
হুইল চেয়ারের ধরন ও কোয়ালিটির ভিত্তিতে বিভিন্ন দামের হয়ে থাকে। বিডিতে হুইল চেয়ারের দাম সর্বনিম্ন ৭,০০০ টাকা থেকে ৮,৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় যেটি একটি ম্যানুয়াল হুইল চেয়ার। আবার বাংলাদেশে কমোড হুইল চেয়ার গুলো ৯,০০০ টাকা থেকে ১৫,৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। স্লিপিং হুইল চেয়ার গুলো ১৫,০০০ টাকা থেকে ৩৫,০০০ টাকার পর্যন্ত পাওয়া যায়। এবং, বিডিতে বৈদ্যুতিক হুইল চেয়ার গুলো ৭৫,০০০ টাকা থেকে ১,২০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে, সাময়িক সময়ের জন্য প্রয়োজন হলে দৈনিক হিসেবে ভাড়ায় হুইল চেয়ার পাওয়া যায়।