ওজন মাপার যন্ত্র কেনাকাটা
প্রতিদিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে ওজন মাপার যন্ত্র একটি। দিনে দিনে এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। ছোট মুদির দোকান থেকে শুরু করে শিল্পকারখানায় ওজন মাপার যন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। তবে কাজের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের ওজন মাপার যন্ত্র বাংলাদেশে ব্যবহার করা হয়।
ওজন মাপার যন্ত্র কেন ব্যবহার করা হয়?
১। যেকোনো উপাদান এর ওজন পরিমাপের জন্য ওজন মাপার যন্ত্রের ব্যবহার করতে হয়।
২। স্বাস্থ্যসচেতন থাকতে বাসায় একটি ডিজিটাল ওজন মাপার মেশিন অবশ্যই রাখতে হবে যাতে নিয়মিত পরিবারের সকল সদস্যদের ওজন পর্যবেক্ষণ করা যায়।
৩। বাংলাদেশে গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয় কালীন সময়ে এগুলোর সঠিক দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ওজন মাপার জন্য অ্যানিম্যাল ওজন মাপার মেশিন ব্যবহার করা হয়।
৪। ট্রাক বা কন্টেইনার সহ ট্রাকের ওজন মাপার জন্য ডিজিটাল ট্রাক স্কেল মেশিন ব্যবহার করা হয়।
৫। স্বর্ণ, রুপা, ইত্যাদি মূল্যবান উপাদানের ওজন পরিমাপের ক্ষেত্রে গ্রাম স্কেল মেশিন ব্যবহার করতে হয়।
৬। এছাড়া, বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্প খাতে ফ্যাব্রিক এর সঠিক ওজন পরিমাপ করার জন্য ডিজিটাল জিএসএম ব্যালেন্স মেশিন ব্যবহার করা হয়।
৭। রান্নার মসলার ওজন পরিমাপের জন্য ইলেকট্রিক কিচেন স্কেল ব্যবহার করা হয়।
ওজন মাপার মেশিন কেনার আগে
- ওজন মাপার মেশিন কেনার আগে অবশ্যই এর সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ ওজন মাপার ক্যাপাসিটি সম্পর্কে জানতে হবে।
- প্রয়োজন অনুসারে কোন ধরনের ওজন মাপার মেশিন কিনবেন তা বিবেচনা করতে হবে।
- ট্রাক স্কেল মেশিন বা অ্যানিম্যাল ওজন মাপার মেশিন কেনার ক্ষেত্রে তা প্রয়োজন অনুসারে পর্যাপ্ত বড় কিনা তা খেয়াল রাখতে হবে।
- ওজন মাপার মেশিন সঠিক ওজন প্রদর্শন করছে কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে।
- ওজন মাপার মেশিনটি ব্যাটারি চালিত বা ইলেকট্রিক তা বিবেচনা করতে হবে।
বাংলাদেশে কয়ধরনের ওজন মাপার যন্ত্র পাওয়া যায়?
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে মূলত দুই ধরণের ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তা হলো এনালগ স্কেল ও অন্যটি ডিজিটাল স্কেল।
এনালগ স্কেলঃ
অ্যানালগ স্কেলের ব্যবহার দিনে দিনে কমে গেলেও কিছু ক্ষেত্রে যেমন বস্তুর ঘনত্ব বা ফ্রিকোয়েন্সি পরিমাপ করতে, এপিডেমিওলজিক কাজে এবং ক্লিনিকাল গবেষণায় অ্যানালগ স্কেল ব্যবহৃত হয়। অ্যানালগ স্কেল সরাসরি সংখ্যার মাধ্যমে কোন আউটপুট দেয় না বরং নির্দিষ্ট একটি নির্দেশকের মাধ্যমে আউটপুট বা ওজন মাপার ফলাফল প্রকাশ করে থাকে। অ্যানালগ স্কেলের সু-নির্দিষ্ট কোন রেঞ্জ থাকে না।
ডিজিটাল স্কেলঃ
সময়ে সাথে সাথে প্রযুক্তিরও অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। ডিজিটাল স্কেল ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র ও অনেক বড় বস্তুর ওজন নির্ণয় করা যায়। ডিজিটাল ওজন স্কেল কাজের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে।
- ব্যক্তিগত স্কেলকেঃ ব্যক্তিগত স্কেলকে ম্যান স্কেল, বাথরুম স্কেল, শরীরের ওজন মাপার স্কেলও বলা হয়। এটি শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক পর্যন্ত শরীরের ওজন পরিমাপ করে। এই ধরণের স্কেল কিছুটা নির্ভুল।
- অ্যানালাইটিকাল ব্যালেন্সঃ অ্যানালাইটিকাল ব্যালেন্স স্কেল একটি বিশেষ ধরণের ওজন মাপার যন্ত্র যা দিয়ে অতি সূক্ষ বস্তুর ওজন পরিমাপ করা যায়। এটি একটি বায়ুশূন্য স্থানে পরিমাপ করা হয় যাতে করে বাহিরের আবহাওয়া বা ধুলিকণা দ্বারা প্রভাবিত না হয়। এই ধরণের ওজন মাপার যন্ত্র স্বর্ণকারের দোকানে, বিজ্ঞান গবেষণাগারে ব্যবহৃত হয়।
- ঝুলন্ত স্কেলঃ উপরের দিকের বা ঝুলন্ত কোন বস্তু পরিমাপ করার জন্য ঝুলন্ত স্কেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত পরীক্ষাগার, চিকিৎসা, শিল্পকারখানায় অল্প পরিমানে এই ধরণের স্কেল ব্যবহার করা হয়।
- কিচেন স্কেলঃ রান্না ঘরের বিভিন্ন উপাদান পরিমাপের জন্য যে সকল স্কেল ব্যবহার করা হয় সে সকল স্কেলকে কিচেন স্কেল বলে। রান্নার কাজের জন্য এই স্কেল ব্যবহার করলে আলাদাভাবে কোন আসবাবপত্র নষ্ট হবে না। এতে করে সময় অনেক সাশ্রয়ী হবে।
- ফ্লোর স্কেলঃ যে সকল বস্তুর ওজন অনেক বেশি হাত দিয়ে তোলা যায় না এই ধরণের বস্তুর ওজন পরিমাপ করার জন্য ফ্লোর স্কেল ব্যবহার করা হয়। এই ধরণের স্কেলগুলো বড় শিল্প কারখানায় ও গুদামে ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে ওজন স্কেল মেশিনের দাম কত?
বর্তমানে বিডিতে ওজন মেশিনের দাম ৩৫০ টাকা থেকে শুরু হয় যা সাধারণত হ্যাঙ্গিং ওজন স্কেল মেশিন হয়ে থাকে এবং ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে পরিমাপকৃত ওজন প্রদর্শন করে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে ডিজিটাল ওজন মেশিনের দাম ৯০০ টাকা থেকে শুরু যা দ্বারা মানব শরীরের ওজন পর্যবেক্ষনে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, গরুর ওজন পর্যবেক্ষনের জন্য যেসকল ওজন মেশিন ব্যবহার করা হয় সেগুলোর দাম ৪৮,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে থাকে। তবে, ডিজিটাল ট্রাক স্কেল মেশিনের দাম ৮,৪০,০০০ টাকা থেকে শুরু হয় যাতে ৪০-টন ওজন পরিমাপ ক্ষমতা রয়েছে।