ওয়েবক্যাম কেনাকাটা
ওয়েবক্যাম এমন একটি ক্যামেরা যা কম্পিউটারের সাথে ইউএসবি ক্যাবলের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ইন্টারনেটে ভিডিও আদান-প্রদান করতে পারে। ওয়েবক্যাম আমাদের আধুনিক জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে বর্তমানে অনলাইন ক্লাশ, অনলাইন মিটিং এবং ভিডিও চ্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে ওয়েবক্যামের ব্যবহার দেখা যায়। ল্যাপটপে সাধারণত ওয়েবক্যাম সংযুক্ত অবস্থায় আসে তাই এটি মূলত পিসির জন্য ব্যবহৃত হয় তাই বাংলাদেশে এটিকে পিসি ক্যামেরাও বলা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে ওয়েবক্যামের দাম কত হতে পারে?
বাংলাদেশে ওয়েবক্যামের দাম ৭০০ টাকা থেকে শুরু হয় যেটি দিয়ে এইচডি ভিডিও কল করা যায় এবং প্রায় ১৬ ফিট দূরত্বের অডিও গ্রহণ করতে পারে। ভাল মানের ওয়েবক্যামে ৪কে রেজুলুশন, জুম লেন্স, গ্রুপ ভিডিও কনফারেন্সিং সুবিধাসহ আরও অনেক ফিচার থাকে। তাই প্রয়োজন, বাজেট এবং কাজের উপর নির্ভর করে ওয়েবক্যাম নির্বাচন করুন।
আর কি জেনে ওয়েবক্যাম কেনা উচিত?
বাংলাদেশে সঠিক ওয়েবক্যাম কেনার আগে বিশেষ করে অনলাইন থেকে নিচের খুঁটিনাটি বিষয় গুলো জেনে নেয়া প্রয়োজনঃ
১। ওয়েবক্যামের একটি ফ্রেম রেট থাকে এবং এটির উপর এর কোয়ালিটি নির্ভর করে। ভালো মানের একটি ওয়েবক্যামের ফ্রেমরেট ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড থাকবে। ফ্রেম রেট এর থেকে কম হলে সে ওয়েবক্যাম ছবি বা ভিডিও স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারবে না। তাই অবশ্যই ওয়েবক্যামের ফ্রেমরেট কত তা দেখে নিতে হবে এবং বেশি হলে ভাল।
২। ক্যামেরার মান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ক্যামেরা ২ মেগাপিক্সেল অথবা তার অধিক কেনা ভালো। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ভালো মানের ওয়েব ক্যামেরা পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোতে নাইট মোড রয়েছে। এই নাইট মোড রাতেও ছবি বা ভিডিও এর মান উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত রাখে। তাই নাইট মোড বৈশিষ্ট্যের ওয়েবক্যাম কেনা সবচেয়ে ভালো।
৩। ওয়েবক্যামেরার রেজুলুশন অবশ্যই দেখতে হবে কারণ রেজুলেশন ভালো হলে ভিডিও স্পষ্ট ভাবে দেখা যাবে। ওয়েবক্যামের রেজুলুশন ৭২০পি বা ১০৮০পি থাকা ভালো। তবে বাজেট বেশি হলে ৪কে রেজুলুশনের ওয়েব ক্যাম কেনা যেতে পারে।
৪। ওয়েবক্যামে অটোফোকাস এর সাহায্যে অবজেক্টগুলোকে সহজেই স্পষ্ট ফোকাস করতে পারে ফলে ক্যামেরার সামনে থাকা মানুষকে আরও স্পষ্ট দেখা যায়। তাই অটোফোকাস মোড আছে কিনা এটা দেখা দরকার।
৫। মাইক্রফোনের মান ভালো না হলে কথা কিছুই বোঝা যাবে না। জরুরি অনলাইন মিটিং অথবা অনলাইন ক্লাশে যদি অডিও ভালোভাবে না শোনা যায় তবে অনেক সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই মাইক্রফোনের মান কেমন এটি জানা বিশেষ ভাবে দরকার।
৬। ওয়েবক্যামের আকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওয়েব ক্যাম সাধারণত মনিটরের উপর লাগান হয় তাই মনিটরের পাশে যদি জায়গা কম থাকে তাহলে ছোট ওয়েবক্যাম গুলোই নিতে হবে। আবার আকারে বড় ওয়েবক্যামগুলো দিয়ে কোনো কিছু পর্যবেক্ষণ করার জন্য বেশি উপযোগী। তাই কোন কাজের জন্য ওয়েবক্যাম ব্যবহার করা হবে সে অনুযায়ী আকৃতি নির্বাচন করতে হবে।
৭। আধুনিক ভিডিও কম্প্রেশন প্রযুক্তি আছে কিনা জেনে নিন। এটি অনেক বড় ভিডিও ফাইলকে খুব ছোট সাইজে পরিনিত করে বিধায় ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ অনেক কম লাগবে এবং সংরক্ষন করার ক্ষেত্রেও জায়গা কম লাগবে। বাংলাদেশে উন্নত প্রযুক্তির ভিডিও কম্প্রেশনের ওয়েব ক্যাম পাওয়া যাচ্ছে।
৮। ওয়েব ক্যামের ফিল্ড অফ ভিউ কত জেনে নিন কারন যত বেশি হবে তত বেশি এরিয়া দেখা যাবে। গ্রূপ ভিডিও কলের জন্য বেশি ফিল্ড অফ ভিউ হলে অনেক সুবিধা।
৯। অনেক ওয়েবক্যামে সফটওয়্যার কন্ট্রোল আছে ফলে এটিকে বিভিন্ন দিকে ঘুরান যায়। গ্রূপ কলের জন্যও এটি একটি ভাল সুবিধা। বাংলাদেশে এই ধরনের ওয়েবক্যাম এখন অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।
১০। ওয়েবক্যামের লেন্সটি যদি গ্লাসের হয় তবে ভাল মানের ছবি প্রদর্শন করবে। তবে কম দামের ওয়েবক্যামে সাধারণত প্লাষ্টিক লেন্স ব্যবহৃত হয়।