bdstall.com

পানির ফিল্টারের দাম ২০২৫

আইটেম ১-৪০ এর ১৫৬

পানির ফিল্টার কেনাকাটা

নিঃসন্দেহে জীবনের জন্য পানি অপরিহার্য। তবে, ঢাকা সহ সমগ্র বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান পরিবেশ দূষণের সাথে সাথে, আমাদের পানির উৎসের গুণমান গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফুটানোর মতো ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিগুলো কিছুটা বিশুদ্ধকরণ প্রদান করে, তবে প্রায়শই তারা সীসা, ক্লোরিন, ভারী ধাতু এবং রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের মতো ক্ষতিকারক দূষকগুলো অপসারণ করতে পারে না। আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ এবং স্বাস্থ্যকর পানীয় জলের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য পানির ফিল্টার কেনা জুরুরি।
আপনার নির্দিষ্ট চাহিদা এবং বাজেটের মধ্যে বাংলাদেশে সেরা পানির ফিল্টার খুঁজে পেতে বিডিস্টলে বিভিন্ন ধরণের পানির ফিল্টার, তাদের দাম, এবং মূল ফিচার সমূহ যাচাই করে সহজেই কিনতে পারবেন।

বাংলাদেশে আপনার কেন পানির ফিল্টার প্রয়োজনঃ পানির গুণমান সম্পর্কিত উদ্বেগগুলোর সমাধান

বাংলাদেশে অনেক এলাকা পানি দূষণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। সাধারণ দূষণকারী পদার্থের মধ্যে রয়েছেঃ

  • পলি এবং ঘোলাভাবঃ এই ধরণের দূষণকারী পানিকে যথেষ্ট ঘোলা এবং ময়লা যুক্ত দেখায়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
  • ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থঃ জীবাণুমুক্তকরণের জন্য ব্যবহৃত ক্লোরিন, পুরাতন পাইপ থেকে সীসা এবং ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার ক্যামিক্যাল সমূহ পানি দূষণের জন্য দ্বায়ী।
  • রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবঃ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং সিস্ট ইত্যাদি পানিতে বিদ্যমান থাকলে শিশু এবং বয়স্কদের জন্য টাইফয়েড, কলেরা এবং ডায়রিয়ার মতো পানিবাহিত রোগ হতে পারে।
  • আয়রনঃ বাংলাদেশে অনেক অঞ্চলের টিউবওয়েলের পানিতে আয়রন রয়েছে, যা দাগ সৃষ্টি করে এবং পানির স্বাদ নষ্ট করে।
  • আর্সেনিকঃ এটি বাংলাদেশের সীমিত কিছু অঞ্চলে গুরুতর উদ্বেগের বিষয়, যার জন্য বিশেষায়িত পরিস্রাবণ বা পানির ফিল্টার প্রয়োজন।
  • লবণাক্ততাঃ এটি দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জন্য বড় সমস্যা, যার ফলে সঠিক পরিশোধন ছাড়াই পানি পান করা যায় না।

তাই মানসম্পন্ন পানির ফিল্টার শুধু আপনার পানির স্বাদ উন্নত করবে না; পাশাপাশি এটি আপনার স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের পানির ফিল্টার এবং তাদের দাম

গ্র্যাভিটি ওয়াটার ফিল্টারঃ সাশ্রয়ী দাম এবং বিদ্যুৎহীন অপারেশন

  • প্রসেসঃ এই ফিল্টারগুলো সিরামিক বা অন্যান্য ফিল্টার মিডিয়ার মধ্য দিয়ে পানি প্রবাহিত করার জন্য মাধ্যাকর্ষণ ব্যবহার করে।
  • সুবিধাঃ 
    • গ্র্যাভিটি ওয়াটার ফিল্টারের দাম সর্বনিম্ন ৳ ২,০০০ টাকা থেকে শুরু।
    • এই ধরণের পানির ফিল্টার ব্যবহারে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না, যা লোড গ্রামীণ এলাকা জন্য আদর্শ।
    • তাছাড়া, এটি ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা সহজ।
  • অসুবিধাঃ
    • ধীর পরিস্রাবণ হার।
    • সমস্ত রাসায়নিক দূষক বা খুব ছোট অণুজীব কার্যকরভাবে অপসারণ নাও করতে পারে।
    • ফিল্টারের কার্যকারিতা মিডিয়ার মানের উপর নির্ভর করে।
    • তুলনামূলকভাবে পরিষ্কার পানির উৎস থেকে পানির মৌলিক পলি অপসারণ করে এবং স্বাদ উন্নত করে।
  • সেরা ব্যবহারকৃত স্থানঃ এটি বাজেট বান্ধব হওয়ায় বাংলাদেশে গ্রামীণ এলাকাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

ফসেট ওয়াটার ফিল্টারঃ সুবিধাজনক এবং সহজ ইনস্টলেশন

  • প্রসেসঃ এই ধরণের পানির ফিল্টার আপনার রান্নাঘরের কলের সাথে সরাসরি সংযুক্ত করে চাহিদা অনুযায়ী পানি ফিল্টার করতে পারবেন।
  • সুবিধাঃ
    • ফসেট ওয়াটার ফিল্টারের দাম প্রায় ৳ ৩,৫০০ টাকা থেকে শুরু।
    • ইনস্টল এবং ব্যবহার করা সহজ।
    • স্থান সাশ্রয়ী।
  • অসুবিধাঃ
    • ধীর প্রবাহ হার।
    • সীমিত পরিস্রাবণ ক্ষমতা।
    • সকল দূষণকারীর বিরুদ্ধে কার্যকর নাও হতে পারে।
  • সেরা ব্যবহারকৃত স্থানঃ ব্যাক্তিগত কিংবা ছোট পরিবারের জন্য বা হালকা ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত হয়ে থাকে। ফসেট পানির স্বাদ এবং গন্ধ উন্নত করে পাশাপাশি পলি অপসারণ করে থাকে।

বৈদ্যুতিক ওয়াটার ফিল্টার (কাউন্টারটপ এবং আন্ডার-সিঙ্ক)ঃ উন্নত পরিস্রাবণ

  • প্রসেসঃ বহু-পর্যায়ের পরিস্রাবণ সিস্টেমের মাধ্যমে পানি যথাযথ ভাবে ফিল্টার করার জন্য জন্য বৈদ্যুতিক পাম্প ব্যবহার করে।
  • সুবিধাঃ
    • দ্রুত পরিস্রাবণ হার।
    • আরও ব্যাপক পরিশোধনের জন্য প্রায়শই একাধিক পরিস্রাবণ পর্যায় রয়েছে যেমন পলি, ক্লোরিন, রাসায়নিক, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি।
    • অনেক মডেলের বৈদ্যুতিক ফিল্টারে মধ্যে ফিল্টার করা পানি ধরে রাখার জন্য আলাদার রিজারভিয়র রয়েছে।
    • এই ধরণের ওয়াটার ফিল্টারের পরিশোধন হার ৯৯% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • অসুবিধাঃ
    • এটি অপারেট করার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, ফলে লোডশেডিং এ পাওয়ার ব্যাকআপ প্রয়োজন হতে পারে।
    • বৈদ্যুতিক ওয়াটার ফিল্টারের দাম ৳ ৫,২০০ টাকা থেকে শুরু।
    • একাধিক ফিল্টার যুক্ত থাকায় রক্ষণাবেক্ষণ করা কিছুটা জটিল হয়ে থাকে।
  • সেরা ব্যবহারকৃত স্থানঃ বিশেষ করে রাসায়নিক এবং জীবাণু যুক্ত এলাকায় ব্যবহারকারীদের জন্য দ্রুত সময়ে মান সম্পন্ন পানি সরবারহের জন্য উচ্চ স্তরের পরিশোধন প্রক্রিয়া সরবারহ করে থাকে।

রিভার্স অসমোসিস (RO) ওয়াটার ফিল্টারঃ বিশুদ্ধতার জন্য সেরা

  • প্রসেসঃ পানিকে একটি আধা-ভেদ্য পর্দার মধ্য দিয়ে দ্রবীভূত কঠিন পদার্থ, ভারী ধাতু, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সহ কার্যত সমস্ত দূষক অপসারণ করতে বাধ্য করে। এই ধরণের পানির ফিল্টারে প্রাক-ফিল্টার হিসেবে পলি, কার্বন এবং স্বাদের জন্য একটি পোস্ট-কার্বন ফিল্টার রয়েছে।
  • সুবিধাঃ
    • ১০০% বিশুদ্ধ জল এমনকি ক্ষুদ্রতম কণা এবং অণুজীব অপসারণ করে।
    • আর্সেনিক এবং লবণাক্ততা সহ বিস্তৃত দূষণকারীর বিরুদ্ধে কার্যকর।
    • জলের স্বাদ এবং গন্ধ উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে।
    • ছোট শিশু এবং বয়স্কদের জন্য নিরাপদ।
    • এই ধরণের ওয়াটার ফিল্টার দামে কিছুটা ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। বাংলাদেশে রিভার্স অসমোসিস ওয়াটার ফিল্টারের দাম ৳ ৮,০০০ টাকা থেকে শুরু এবং মডেলে ও ডিজাইন ভেদে এর দাম ৳ ১৫,০০০ টাকার বেশি হয়ে থাকে।
  • অসুবিধাঃ
    • বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়।
    • বর্জ্য পদার্থ তৈরি করে তবে কিছু আধুনিক সিস্টেম আরও বেশি দক্ষ ওয়াটার ফিল্টার সরবারহ করে।
    • উপকারী খনিজ পদার্থ অপসারণ করতে পারে। এছাড়াও, কিছু মডেলে এটি মোকাবেলা করার জন্য খনিজ কার্তুজ রয়েছে।
    • দ্রবীভূত কঠিন পদার্থের উচ্চ মাত্রা, এবং আর্সেনিক দূষণ মুক্ত বিশুদ্ধ পানির জন্য রিভার্স অসমোসিস ওয়াটার ফিল্টার আদর্শ।

আল্ট্রাফিল্ট্রেশন ওয়াটার ফিল্টারঃ জীবাণু অপসারণের জন্য চমৎকার

  • প্রসেসঃ এই ধরণের পানির ফিল্টার উপকারী খনিজ পদার্থ ধরে রেখে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য অণুজীব অপসারণের জন্য আরও এর চেয়ে সামান্য বড় ছিদ্রযুক্ত ঝিল্লি ব্যবহার করে।
  • সুবিধাঃ
    • ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর।
    • প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ ধরে রাখে।
    • অনেক মডেলে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না।
    • রিভার্স অসমোসিসের তুলনায় দাম সাধারণত কম হয়ে থাকে। বর্তমানে, বাংলাদেশে আল্ট্রাফিল্ট্রেশন ওয়াটার ফিল্টারের দাম ৳ ৬,০০০ টাকা থেকে শুরু।
    • জীবাণু মুক্ত পানি সরবারহের জন্য গ্রামীণ এলাকা এবং কম বাজেটের মধ্যে ভালো বিকল্প।
  • অসুবিধাঃ
    • দ্রবীভূত রাসায়নিক এবং ভারী ধাতু অপসারণে রিভার্স অসমোসিসের মতো কার্যকর নাও হতে পারে।
    • কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য ফিল্টার প্রতিস্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • সেরা ব্যবহারকৃত স্থানঃ যেসব এলাকায় জীবাণু দূষণ প্রধান উদ্বেগ এবং খনিজ পদার্থ ধরে রাখা জুরুরি বিশেষ করে শহর ও গ্রামীণ উভয় পরিবেশের জন্যই আল্ট্রাফিল্ট্রেশন ওয়াটার ফিল্টার উপযুক্ত।

অতিবেগুনী (UV) ওয়াটার ফিল্টারঃ জীবাণুমুক্তকরণে অতিরিক্ত স্তর

  • প্রসেসঃ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য অণুজীবের ডিএনএ ক্ষতি করে মেরে ফেলা বা নিষ্ক্রিয় করার জন্য আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ব্যবহার করে। এটি রিভার্স অসমোসিস, আল্ট্রাফিল্ট্রেশন টেকনোলোজির সাথে মিলিত হয়ে দ্বিতীয় পরিশোধন পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়।
  • সুবিধাঃ
    • পানি জীবাণুমুক্ত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।
    • জলের স্বাদ বা গন্ধ পরিবর্তন করে না।
    • তুলনামূলকভাবে কম রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়।
  • অসুবিধাঃ
    • পলি, রাসায়নিক বা ভারী ধাতু অপসারণ করে না।
    • বিদ্যুতের প্রয়োজন।
    • এই ধরণের ফিল্টার অন্যান্য পরিস্রাবণ পর্যায়ের সাথে মিলিত হলে দাম বেশি হয়ে থাকে। 
      অন্যান্য পরিস্রাবণ পদ্ধতির সাথে ব্যবহার করলে জীবাণু দূষণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত স্তর প্রদান করে।

বাণিজ্যিক ওয়াটার ফিল্টারঃ ব্যবসার জন্য বৃহৎ-স্কেলে পানি পরিশোধন করে

  • প্রসেসঃ প্রতি ঘন্টায় প্রচুর পরিমাণে পানি পরিশোধন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি নির্দিষ্ট শিল্প কারখানা বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের চাহিদার উপর ভিত্তি করে কাস্টমাইজ করা যায়। বাংলাদেশে কমার্শিয়াল ওয়াটার ফিল্টারের দাম ৩২,৫০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে, পাওয়ার, ক্যাপাসিটি, এবং টেকনোলোজির উপর ভিত্তি করে কমার্শিয়াল ওয়াটার ফিল্টারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়।
  • সেরা ব্যবহারকৃত স্থানঃ  অফিস, কারখানা, রেস্টুরেন্ট এবং অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেখানে অধিক মানুষ কাজ করে থাকেন।

বাংলাদেশে ওয়াটার ফিল্টার কেনার সময় বিবেচনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফিচারসমূহ

  • পানির গুণমান যাচাইয়ে টিডিএস লেভেলঃ ওয়াটার ফিল্টার কেনার আগে পানির টিডিএস লেভেল বিবেচনা করতে হবে। সাধারণত ৫০০ টিডিএস মাত্রার পানি বিশুদ্ধ এবং ১০০০ টিডিএস মাত্রার পানি দূষিত পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই ওয়াটার ফিল্টার কেনার আগে নির্দিষ্ট এরিয়ার পানির কোয়ালিটি কেমন তা অবশ্যই টিডিএস মিটার দিয়ে যাচাই করতে হবে।
  • পরিস্রাবণ টেকনোলজিঃ বিশুদ্ধ পানি সরবারহ নিশ্চিত করতে আপনার এরিয়ার দূষণকারী পদার্থ কিংবা অন্যান্য রাসায়নিকের উপর ভিত্তি করে রিভার্স অসমোসিস, আল্ট্রাফিল্ট্রেশন, এবং আলট্রা ভায়োলেট এর মত প্রয়োজনীয় টেকোনোলোজি যুক্ত ওয়াটার ফিল্টার বিবেচনা করতে হবে।
  • পরিস্রাবণ ক্ষমতাঃ আপনার দৈনন্দিন পানির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম এমন পরিশোধন ক্ষমতা পানির ফিল্টার বিবেচনা করতে হবে।
  • পানির প্রবাহ হারঃ ফিল্টারটি কত দ্রুত পানি বিশুদ্ধ করতে পারে তা বিবেচনা করতে হবে। বিশেষ করে অন-ডিমান্ড ফসেট ফিল্টারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • মাইক্রন রেটিংঃ কম মাইক্রন রেটিং সম্পন্ন ওয়াটার ফিল্টার মূলত সূক্ষ্ম পরিস্রাবণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছোট কণা এবং অণুজীব আরও ভালো ভাবে অপসারণ করতে পারে।
  • রিজার্ভিয়র সাইজঃ বৈদ্যুতিক ওয়াটার ফিল্টার কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার পরিবারের ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত রিজার্ভিয়র সাইজ বিবেচনা করতে হবে।
  • ফিল্টার প্রতিস্থাপনের সতর্কতাঃ  পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা যথাযথ ভাবে ধরে রাখতে ফিল্টার প্রতিস্থাপনের সতর্কতা দেয় কিনা তা যাচাই করতে হবে।
  • ফিল্টার ওয়ারেন্টি এবং প্রতিস্থাপন ব্যবস্থাঃ ফিল্টারের আয়ুষ্কাল, প্রতিস্থাপনের খরচ এবং প্রতিস্থাপনের সহজতা সম্পর্কে যাচাই করতে হবে। তাহলে, টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী ওয়াটার ফিল্টার কিনতে পারবেন।
  • খনিজ ধারণঃ যদি রিভার্স অসমোসিস ফিল্টার কিনেন, তাহলে স্বাস্থ্যকর পানির জন্য প্রয়োজনীয় খনিজগুলি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম এমন খনিজ কার্তুজ সহ ওয়াটার ফিল্টারের মডেল বিবেচনা করুন।
  • গরম এবং ঠান্ডা পানির বিকল্পঃ কিছু এডভান্স টেকনোলোজি যুক্ত ওয়াটার ফিল্টার গরম এবং ঠান্ডা পানি সরবরাহ করে, যার দাম ৳ ২০,০০০ টাকা থেকে ৳ ৪০,০০০ টাকার বেশি হয়ে থাকে।
  • বিক্রয়-পরবর্তী পরিষেবা এবং ওয়ারেন্টিঃ ওয়াটার ফিল্টার কেনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য বিক্রয়-পরবর্তী পরিষেবা এবং ভাল ওয়ারেন্টি সরবারহকারী ব্র্যান্ড বিবেচনা করবেন।
  • সার্টিফিকেশনঃ ওয়াটার ফিল্টারটি কর্মক্ষমতা মান পূরণ করে কিনা তা নিশ্চিত করতে স্বীকৃত সংস্থাগুলো যেমন, এনএসএফ ইন্টারন্যাশনাল, ওয়াটার কোয়ালিটি অ্যাসোসিয়েশন থেকে সার্টিফিকেশন রয়েছে কিনা যাচাই করবেন।
  • অতিরিক্ত ফিচারঃ আপনার পছন্দ এবং বাজেটের উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল ডিসপ্লে, স্মার্ট ওয়াটার ট্যাঙ্ক এবং লিক সনাক্তকরণের মতো ফিচার সহ ওয়াটার ফিল্টার বিবেচনা করতে পারেন।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওয়াটার ফিল্টার ব্র্যান্ড

বাংলাদেশের বেশিরভাগ ওয়াটার ফিল্টারই চাইনিজ ব্র্যান্ডের এবং বাংলাদেশে এই ওয়াটার ফিল্টারের দাম তুলনামূলকভাবে কম। কিছু বাংলাদেশী নামী কোম্পানি এখন সুন্দর দেখতে রিজার্ভার এবং লাইটিং সহ ওয়াটার পিউরিফায়ার বিক্রি করছে। তবে, ওয়াটার ফিল্টারের ব্র্যান্ড ভ্যালু বিবেচনা করার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে

  • খ্যাতি এবং নির্ভরযোগ্যতাঃ মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ এবং ইতিবাচক গ্রাহক পর্যালোচনা বিবেচনায় নিয়ে ব্র্যান্ড বিবেচনা করুন।
  • বিক্রয়-পরবর্তী পরিষেবাঃ নিশ্চিত করুন যে ব্র্যান্ডটির বাংলাদেশে অ্যাক্সেসযোগ্য পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে এবং সহজেই ফিল্টার প্রতিস্থাপন করা যাবে।
  • স্থানীয় উপস্থিতিঃ বাংলাদেশী কোম্পানিগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে ভাল বিক্রয়-পরবর্তী সহায়তা প্রদান করে এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের ওয়াটার পিউরিফায়ার সরবারহ করছে।
  • আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডঃ কিছু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড উচ্চমানের ফিল্টার সরবারহ করে তবে দাম তুলনামূলকভাবে যথেস্ট বেশি হয়ে থাকে। পাশাপাশি প্রতিস্থাপন খরচও বেশি হয়ে থাকে।

পরিশেষে বলা যায় যে, ব্র্যান্ড বিবেচনার তুলনায় ওয়াটার ফিল্টার ১০০% বিশুদ্ধ পানি এবং নির্ভরযোগ্য পরিস্রাবণ টেকনোলজি সরবারহ করে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া উত্তম।

আপনার ওয়াটার ফিল্টারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা এবং রক্ষণাবেক্ষণ টিপস

  • নিয়মিত ফিল্টার কার্তুজ প্রতিস্থাপনঃ সর্বোত্তম কর্মক্ষমতা বজায় রাখার জন্য ফিল্টার কার্তুজ প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুতকারকের নিয়মাবলি অনুসরণ করুন। তাছাড়া, ঢাকা কিংবা অন্যান্য বিভাগীয় শহরের পানিতে যদি উচ্চ মাত্রায় আয়রন থাকে, তাহলে ঘন ঘন ফিল্টার কার্তুজ পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।
  • পর্যায়ক্রমিক পরিষ্কারঃ ধুলো, ময়লা এবং অণুজীব জমে থাকা রোধ করতে ওয়াটার ফিল্টারের ভিতরে এবং বাইরে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
  • লিক চেকঃ ফিল্টারে কোন লিক আছে কিনা তা প্রায় সময় যাচাই করতে হবে এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত করতে হবে।
  • পরিষ্কার পানি সংরক্ষণঃ যদি আপনার ফিল্টারে পানি ধরে রাখার জন্য স্টোরেজ ট্যাঙ্ক থাকে, তাহলে এটি নিয়মিত পরিষ্কার এবং ঢেকে রাখতে হবে।
  • টিডিএস স্তর পর্যবেক্ষণঃ ফিল্টার কার্যকরভাবে কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য আপনার ফিল্টারে ফিল্ট্রেশন করা পানির টিডিএস স্তর পর্যায়ক্রমে যাচাই করতে হবে।
  • পানির প্রবাহ যাচাইঃ যদি পানি প্রবাহ ধীর হয়ে যায়, তাহলে এটি পরিষ্কার কিংবা ফিল্টার কার্তুজ প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে। যদি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে।
  • প্রস্তুতকারকের ম্যানুয়াল গাইড অনুসরণঃ সর্বদা প্রস্তুতকারকের দেওয়া ম্যানুয়াল গাইড অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ করতে চেষ্টা করবেন।

বাংলাদেশে ওয়াটার ফিল্টার সম্পর্কে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

ওয়াটার ফিল্টার কি লবণাক্ত জল অপসারণ করতে পারে?

হ্যাঁ, রিভার্স অসমোসিস (RO) ফিল্টার পানি থেকে লবণ অপসারণে অত্যন্ত কার্যকর।

সব ওয়াটার ফিল্টারে কি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়?

না। মাধ্যাকর্ষণ-ভিত্তিক এবং কিছু UF ফিল্টারের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। তবে, RO এবং অনেক উন্নত মাল্টি-স্টেজ ফিল্টারের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় জল সরবরাহ করার জন্য বৈদ্যুতিক ফিল্টারে অবশ্য রিজার্ভার থাকে।

পরিষ্কারকৃত জলের আদর্শ পিএইচ স্তর কত?

পানীয় জলের জন্য আদর্শ পিএইচ ৬.৫ থেকে ৮.৫ এর মধ্যে হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ভাল মানের ওয়াটার ফিল্টার এই নিরাপদ পরিসরের মধ্যে পানি সরবারহ করে।

পরিষ্কারের পরে ভালো পানির টিডিএস লেভেল কত?

পরিষ্কারের পরে ৫০০ এমজি/লিটার এর নিচে টিডিএস লেভেল সাধারণত নিরাপদ এবং সুস্বাদু পানি বলে বিবেচিত হয়।

আমি কি কম পানির চাপে গ্র্যাভিটি ফিল্টার ব্যবহার করতে পারি?

হ্যাঁ আপনি পারেন তবে ফিল্টার করা পানির পরিমাণ কম হবে তাই এটি সময়সাপেক্ষ হবে।

কত দিন দিন পর ওয়াটার ফিল্টার কার্তুজ পরিবর্তন করা উচিত?

ফিল্টার কার্তুজ পরিবর্তনের সময়কাল মূলত ফিল্টারের ধরণ, পানির গুণমান এবং ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। তবে, প্রস্তুতকারকের মতে সাধারণত প্রতি ৬-১২ মাস অন্তর ওয়াটার ফিল্টারের কার্তুজ পরিবর্তন করা উচিত।

শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য কি জল ফিল্টারগুলি নিরাপদ?

হ্যাঁ, বিশেষ করে রিভার্স অসমোসিস এবংআলট্রা ভায়োলেট ওয়াটার ফিল্টারে প্রক্রিয়াজাত কৃত পানি নিরাপদ। কারণ এই ধরণের ওয়াটার ফিল্টার কার্যকরভাবে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস অপসারণ করে। রিভার্স অসমোসিস ব্যবহার করলে ফিল্টার করা জলে প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ ধরে রাখতে পুনঃখনিজকরণের পর্যায় বিবেচনা করতে হবে।

বাংলাদেশে আমি অরজিনাল ওয়াটার ফিল্টার কোথা থেকে কিনতে পারি?

আপনি ইলেকট্রনিক্স দোকান, ব্র্যান্ড শপ, কিংবা অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টল থেকে অরজিনাল ওয়াটার ফিল্টার কিনতে পারবেন। এছাড়াও, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের অনুমোদিত ডিলারদের কাছ থেকে ওয়াটার ফিল্টার কিনতে পারেন।

বাংলাদেশের সেরা পানির ফিল্টার এর মূল্য তালিকা April, 2025

2024 & April, 2025-এর বাংলাদেশের সেরা পানির ফিল্টার এর তালিকা দেওয়া হল।। বিডি স্টলের পানির ফিল্টার ক্রেতাদের আগ্রহের ভিত্তিতে এই সেরা পানির ফিল্টার এর তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

পানির ফিল্টার মডেল বাংলাদেশে দাম
Unilever Pure Ultima Mineral RO + UV + MF ৳ ২৭,৯১০
Drinkit Water Purifier Blue ৳ ৩,৩০০
Pureit Wave 6 Liter RO + MF Mineral Water Purifier ৳ ১৪,৫০০
Pureit Classic Mineral RO + MF ৳ ১৬,৯৯০
Pureit Marina Plus 6 Liter Water Purifier ৳ ১৭,৯৯৯
UF 5-Stage Water Purifier ৳ ৫,১০০
Heron Max Life Hot / Cold / Normal RO Purifier ৳ ১৬,৫০০
Vision RO Hot & Cold Water Filtering System ৳ ১৭,৯৯০
Unilever Pureit Vital Max ৳ ২০,৯৯০
Vision RO Water Purifier Special Edition ৳ ৮,৯০০