ট্যাবলেট কেনাকাটা
ট্যাবলেট বর্তমানে বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয় একটি ডিভাইস। ট্যাবলেট পরিচালিত হয় অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস বা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে। ট্যাবলেট ওজনে হালকা এবং আকারে ছোট বলে সহজেই বহন করা যায়। বিভিন্ন মিটিং, ভ্রমণ, জরুরি কনফারেন্স সকল কাজের ক্ষেত্রে ট্যাবলেট অনেকটা কম্পিউটারের মত সুবিধা প্রদান করে। সাথে ট্যাবলেটে উচ্চ রেজুলেশনের ক্যামেরা থাকে যা দিয়ে অসাধারণ ছবি তোলা এবং ভিডিও করা যায়। বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ট্যাবলেট পাওয়া যায় যেগুলো জানা থাকলে বাজেট এবং চাহিদা অনুযায়ী ভাল মানের ট্যাবলেট কেনা সম্ভব। আর বাংলাদেশে এগুলো ট্যাবলেট পিসি, ট্যাব এবং প্যাড নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশে ট্যাবলেট কত দামে পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে 6,999 টাকা থেকে শুরু করে 1,50,000 টাকা পর্যন্ত সেরা ট্যাবলেটের দাম জেনে নিতে পারবেন৷ বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যে আপনার ট্যাবলেট কিনতে Bdstall.com-এ সর্বশেষ অফার দেখে নিতে পারেন। তবে ভাল মানের ট্যাবলেট পিসির দাম নির্ভর করে এর স্ক্রিন কোয়ালিটি, ব্র্যান্ড এবং উন্নত হার্ডওয়ারের উপর। আর বাচ্চাদের জন্য কিছু ট্যাবলেট পাওয়া যায় যেগুলো কিডস ট্যাবলেট নাম পরিচিত এবং এগুলো দামে অনেক সস্তা।
৫০০০ টাকার নিচে ট্যাবলেটের
কিছু চায়না মডেল বাংলাদেশে পাওয়া যায় এবং এর দাম প্রায় 5,000 টাকা হলেও তাদের পারফরম্যান্স একটু কম হবে। একই বাজেটে, বাচ্চাদের ট্যাবলেট পাওয়া যায় এবং আপনার বাচ্চাদের শুরু করার জন্য যথেষ্ট।
১০০০০ টাকার নিচে ট্যাবলেটের
এই বাজেটে কিছু স্থানীয় জনপ্রিয় ব্র্যান্ড পাওয়া যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে ১০,০০০ টাকায় ওয়াই-ফাই ট্যাবলেট কিনতে পারবেন।
২০০০০ টাকার নিচে ট্যাবলেটের
মানসম্পন্ন ব্র্যান্ডের জন্য ২০,০০০ টাকাই যথেষ্ট এবং আপনি এই দামে বাংলাদেশে একটি ভাল ট্যাবলেট পেতে পারেন। এই ট্যাবলেটগুলির উচ্চ রেজোলিউশন আইপিএস ডিসপ্লে আছে এবং দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ রয়েছে। কিন্তু সাধারণত এই দামের মধ্যে 3G সুবিধা পাওয়া যাবে না।
৪০০০০ টাকার নিচে ট্যাবলেটের
বাংলাদেশে ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত উচ্চ মানের ট্যাবলেট পাওয়া যায়। এই টেবিলগুলির মধ্যে কিছু আইপিএসের পরিবর্তে অ্যামোলেড ডিসপ্লে রয়েছে যা যারা চশমা পরেন তাদের জন্য ভাল। তাছাড়া, সহজ সংযোগের জন্য কিছু মডেলে 3G সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় ট্যাবলেট ব্র্যান্ড কি কি?
বাংলাদেশে বেশ কিছু ব্র্যান্ডের ট্যাবলেট পাওয়া যায় যেগুলোর মধ্যে আসুস, লেনোভো, শাওমি, স্যামসাং, অ্যাপেল, এবং মাইক্রোসফট ব্র্যান্ডের ট্যাবলেট ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাছাড়া, কিছু চায়না ব্র্যান্ডের ট্যাবলেট তুলনামূলক কমদামে বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে বিধায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কোন অপারেটিং সিস্টেমের ট্যাবলেট নির্বাচন করা উচিত?
যদি আপনি অ্যাপল সিস্টেম পছন্দ করেন তবে আইওএস দ্বারা চলে এমন প্রচলিত ট্যাবলেট পিসি কিনতে পারেন। এগুলো শুধুমাত্র জনপ্রিয় নির্মাতা অ্যাপল তৈরী করে। তবে এন্ড্রোইড ট্যাবলেট বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় কারন এই এন্ড্রোইড ট্যাবলেট বিভিন্ন কোম্পানি তৈরী করে বিধায় দামে সস্তা হয় এবং বাংলাদেশের বাজারের সর্বত্র কম দামে পাওয়া যায়। তাছাড়া উইন্ডোজ অপারেটিং চালিত কিছু ট্যাবলেট বাংলাদেশে এখন পাওয়া যায়। উইন্ডোজ চালানো সবার কাছে সহজ বিধায় এগুলো চালাতে বেশ সুবিধা হবে এবং যারা অফিস এপ্লিকেশন বেশি ব্যবহার করেন তারা অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন। তবে মনে রাখবেন সর্বশেষ প্রযুক্তির ট্যাবলেট কেনা ভাল কারন এগুলোতে উন্নত সব ফিচার রয়েছে এবং আধুনিক সব এপস সহজেই চালাতে সক্ষম।
কেমন ডিসপ্লে সাইজ সম্পন্ন ট্যাবলেট কেনা উচিত?
বড় স্ক্রীনের ট্যাবলেট পিসি বেশ ভালো হবে। বাংলাদেশের বাজারে ৭ ইঞ্চি ট্যাবলেট থেকে শুরু করে ১১ ইঞ্চির ট্যাবলেট পিসি পাওয়া যায়। তবে ১০ ইঞ্চির ট্যাবলেট বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় কারন এগুলো দামের দিক থেকেও সস্তা এবং ব্যবহারে সুবিধাজনক।
আইপিএস বা অ্যামোলেড কোন ডিসপ্লের ট্যাবলেট ভালো?
বাংলাদেশে দুই ধরনের ডিসপ্লে পাওয়া যায় এগুলো হল এমোলেড এবং আইপিএস। দুটোই উন্নতমানের রেজুলেশন প্রদান করে। সাধারণত বাংলাদেশে যেসকল ট্যাবলেট পাওয়া যায় সেসকল ট্যাবলেটে আইপিএস প্রযুক্তির ডিসপ্লে অন্তর্ভুক্ত থাকে। তাছাড়া, কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড যেমন স্যামসাং এবং লেনোভো এমোলেড প্রযুক্তির ডিসপ্লে সম্পন্ন হাই-এন্ড ট্যাবলেট সরবরাহ করে থাকে, যেগুলোর দাম সাধারণত ৬০,০০০ টাকার টাকা থেকে শুরু হয়। তবে, যারা প্রগ্রেসিভ গ্লাস ব্যবহার করে তাদের জন্য অ্যামোলেড ডিসপ্লে সম্পন্ন ট্যাবলেট সেরা কেননা অ্যামোলেড ডিসপ্লে সম্পন্ন ডিভাইস ব্যবহারে চোখে প্রেশার পরেনা বললেই চলে।
ট্যাবলেট পিসিতে কি সিম সাপোর্ট করে?
বেশিরভাগ ট্যাবলেট শুধু ওয়াইফাই সাপোর্ট করে কারন এগুলো দামে বেশ সস্তা হয়। তবে ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য ওয়াইফাই সাপোর্ট এর পাশাপাশি সেলুলার নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করে এমন ট্যাবলেট পাওয়া যায়।
ট্যাবলেট পিসিতে কী কী সেন্সর থাকে?
ট্যাবলেট পিসিতে সাধারণত বিভিন্ন সেন্সর থাকে যেগুলো প্রতিদিনের কাজকে সহজ করে দেয় যেমন জিপিএস, এক্সিলারোমিটার, গাইরো, প্রক্সিমিটি ইত্যাদি। তবে লাইট সেন্সর আছে কিনা দেখে নিন কারন এটি বাহিরের বা ঘরের লাইটের তারতম্যের উপর নির্ভর করে ডিসপ্লের ব্র্রাইটনেস অটো এডজাস্ট ফলে চোখের কম ক্ষতি হয়।
ট্যাবলেট পিসিতে স্টাইলাস পেন ব্যবহার করা যায়?
সব ধরনের ট্যাবলেট পিসির সাথে স্টাইলাস পেন ব্যবহার করা যায়। তবে, সকল মডেল ট্যাবলেট পিসির সাথে স্টাইলাস পেন অন্তর্ভুক্ত থাকে না। বিশেষ করে লেনোভো এবং স্যামসাং ব্র্যান্ডের বেশ কিছু ট্যাবলেট এর সাথে ডিজিটাল স্টাইলাস পেন অন্তর্ভুক্ত থাকে।
কত রেজোলিউশনের ট্যাবলেট নির্বাচন করা উত্তম?
রেজুলেশনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এইচডি নির্বাচন করা ভাল কেননা বর্তমানে যেকোনো ছবি বা ভিডিও কমপক্ষে এইচডি রেজুলেশনের হয়ে থাকে। তবে বাজেট বেশি হলে ফুল এচডি বা ৪কে ট্যাবলেট কেনা যেতে পারে।
ট্যাবলেট কেনার আগে আর কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে?
- র্যাম এবং প্রসেসরঃ র্যাম এবং প্রসেসর ট্যাবলেট পিসির জন্য একটি গুরুত্বপর্ণ দিক কারন র্যাম বেশি হলে অ্যাপস গুলো দ্রুত চলবে। প্রসেসরের ক্ষেত্রে কোর দেখতে হবে। কোর যত বেশি হবে ট্যাবলেট পিসি তত দ্রুত কাজ করবে। বর্তমানের এপস ভালভাবে চালাতে গেলে কমপক্ষে অক্টাকোর প্রসেসর প্রয়োজন। তবে মনে রাখবেন দাম একটু বেশি লাগলেও বেশি র্যামযুক্ত ট্যাবলেট নেয়া ভাল কারন পরবর্তীতে এটি বাড়াতে পারবেন না।
- ক্যামেরাঃ ক্যামেরা যুক্ত থাকে বেশিরভাগ ট্যাবলেট পিসিতেই। এগুলো বিভিন্ন রেজুলেশনের হয়ে থাকে। বর্তমানে অনেক ট্যাবলেট পিসিতে সেলফি ক্যামেরা এবং পিছনের দিকে একাধিক ক্যামেরা দেখা যাচ্ছে। অনলাইন মিটিং, ছবি তোলা, ভিডিও করার কাজে ক্যামেরা ব্যবহার করা একদমই সহজ। ট্যাবলেট পিসির ক্যামেরার মেগাপিক্সেল যত ভালো হবে এটি দিয়ে ছবি বা ভিডিও খুব প্রাণবন্ত আসে।
- ব্যাটারি লাইফঃ বর্তমান বাংলাদেশে খুব শক্তিশালী ব্যাটারি ব্যাকআপ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাবলেট দেখতে পাওয়া যায়। এই ট্যাবলেটগুলোর সাথে দ্রুত গতিতে ব্যাটারি চার্জ হওয়ার জন্য একটি ভালো মানের ফাস্ট চার্জারও দিয়ে থাকে। এই চার্জারগুলো খুব অল্প সময়ে ব্যাটারিকে করে ফুল চার্জ। তাই পছন্দের ট্যাবলেট পিসির ব্যাটারি কত মিলি এম্পিয়ারের এটি দেখে নেয়া দরকার।
- স্টোরেজঃ ট্যাবলেট এর অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ বেশি হলে এতে বেশি তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য, অডিও, ভিডিও, ছবি, অ্যাপস এগুলো ডাউনলোড করতে অভন্তরীন স্টোরেজ পর্যাপ্ত পরিমাণ স্টোরেজ থাকা দরকার। তাই অধিক স্টোরেজের ট্যাবলেট নির্বাচন করা উত্তম। সাথে যদি অতিরিক্ত মেমরি কার্ড যুক্ত করার সুবিধা থাকে তাহলে ভাল হয়।
- রেডিওঃ অনেক ট্যাবলেটে রেডিও সুবিধা তাকে। তবে এগুলো দিয়ে শুধু এফএম ব্যান্ড চালানো যায়।