স্পিল কিট কেনাকাটা
স্পিল কিট বিশেষ এক ধরণের কিট যা সাধারণত তেল, রাসায়নিক এবং অন্যান্য বিপজ্জনক পদার্থের ছড়িয়ে পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। বাংলাদেশে, এটি শিল্প এলাকা, তেল ও গ্যাস শিল্প,ল্যাবরেটরি-রিসার্চ সেন্টার এবং পরিবহন ও লজিস্টিক এরিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। স্পিল কিট সাধারণত শ্রমিক এবং পরিবেশ উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিসবেল, এইচএজেড, এসপিসি এবং ইউনিভার্সাল সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্পিল কিট বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কি কি ধরণের স্পিল কিট পাওয়া যায়?
শিল্পের প্রয়োজনে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য যেসব স্পিল কিট পাওয়া যায়ঃ
জেনারেল স্পিল কিটসঃ সাধারণত অ-বিপজ্জনক যেমন-পানীয় তরল, কুল্যান্ট এবং অ-ক্ষয়কারী তরল শোষণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহারে জন্য জেনারেল স্পিল কিটস ডিজাইন করা হয়েছে।
তেল স্পিল কিটসঃ বিশেষ করে তেল, হাইড্রোকার্বন এবং পেট্রোলিয়াম-ভিত্তিক তরলের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
রাসায়নিক স্পিল কিটসঃ রাসায়নিক স্পিল কিট সাধারনত বিপজ্জনক রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করে।
মেরিন স্পিল কিটসঃ সামুদ্রিক বন্দর, পোতাশ্রয় এবং জলপথ সহ সামুদ্রিক পরিবেশে তেলের পাশাপাশি বিপজ্জনক পদার্থ ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এছাড়াও, বায়োহ্যাজারড স্পিল কিট পাওয়া যায় যা দিয়ে তেল, গ্যাস, রাসায়নিক পদার্থের পাশাপাশি চিকিৎসা বর্জ্য ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
স্পিল কিট ব্যবহারের সুবিধা কি?
১। স্পিল কিট সহজে দ্রুত এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রদান করে যা তাৎক্ষণিক ছড়িয়ে পড়া স্থানে বিপদ এবং পরিবেশগত ক্ষতির সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
২। সাধারণত শোষক প্যাড, মোজা বা বুমের মতো উপাদান সরবারহ করে স্পিল কিট যা কার্যকরভাবে ছড়িয়ে পড়া পদার্থকে সীমাবদ্ধ রাখতে সাহায্য করে এবং বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়তে বাধা দেয়।
৩। স্পিল কিটে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম পিপিই যেমন গ্লাভস, গগলস এবং প্রতিরক্ষামূলক পোশাক থাকে। যা পরিচ্ছন্নতার কাজে বিপজ্জনক পদার্থের সংস্পর্শের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
৪। বাস্তুতন্ত্র, বন, মাটি, পানি বা অন্যান্য প্রাকৃতিক আবাসস্থলের দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
৫। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া তরল অপসারণ করে পিচ্ছিল পৃষ্ঠের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনা এবং আঘাতের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ রাখতে সহায়তা করে।
৬। স্পিল কিট পরিবেশগত জরিমানা বা আইনি দায়বদ্ধতার সাথে সম্পর্কিত আর্থিক ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
স্পিল কিটের দাম কত?
স্পিল কিটের দাম সাধারণত কিটের আকার, ছিটানোর ধরন, ব্র্যান্ড এবং ডিজাইন ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে স্পিল কিটের দাম সর্বনিম্ন ৬,৫০০ টাকা থেকে শুরু হয় যা ৪০-লিটার রাসায়নিক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন, ২০ পিস শোষণকারী প্যাড, ২ পিস শোষণকারী বালিশ, ১ জোড়া নাইট্রিল গ্লাভস সহ বিভিন্ন উপকরণ পাওয়া যায়। কেমিক্যাল স্পিল কিটের দাম ৮,০০০ টাকা থেকে শুরু, যা তেল, রাসায়নিক এবং অন্যান্য দাহ্য বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করতে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া, বৃহৎ পরিসরের শিল্প কারখানায়, সামুদ্রিক পরিবেশ বা অন্যান্য পরিবেশে ব্যবহারে জন্য উচ্চ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্পিল কিটের দাম ২০,০০০ টাকা থেকে শুরু।
জরুরী পরিস্থিতিতে কার্যকরভাবে স্পিল কিট ব্যবহার করার কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?
জরুরী স্পিল পরিস্থিতিতে স্পিল কিট কার্যকরভাবে ব্যবহার করার জন্য সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
- ছড়িয়ে যাওয়া পদার্থের প্রকৃতি, আয়তন এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি নির্ধারণ করতে হবে।
- বিপজ্জনক পদার্থের সংস্পর্শ থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য গ্লাভস, গগলস এবং প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করতে হবে।
- আশেপাশের অবস্থানকারী জনসাধারণকে তেল, রাসায়নিক কিংবা অন্যান্য দাহ্য পদার্থ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে অবহিত করতে হবে এবং পথচারীদের সুরক্ষার জন্য সীমানা স্থাপন করতে হবে।
- স্পিলের ধরন এবং ছিটকে যাওয়া উপাদানের জন্য উপযুক্ত স্পিল কিট বাছাই করতে হবে।
- পদার্থের ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কন্টেনমেন্ট ডিভাইস, যেমন শোষণকারী মোজা বা বুম ব্যবহার করতে হবে। কৌশলগতভাবে ছিটানোর জন্য আক্রান্ত স্থানের চারপাশে স্পিল কিট রাখতে হবে। ফলে দ্রুত তরল শোষণ এবং ক্যাপচার করতে পারবে।