bdstall.com

সোলার / সৌর প্যানেল এর দাম

আইটেম ১-৩২ এর ৩২

সোলার প্যানেল কেনাকাটা

সোলার প্যানেল সিস্টেম কি?

সোলার প্যানেল মূলত সরাসরি সূর্যের আলো থেকে নবায়যোগ্য বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করতে পারে। যেই বিদ্যুৎ আমরা সরাসরি কোন ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রাংশ চালানোর কাজে ব্যবহার করতে পারি অথবা সেটি কোন ব্যাটারিতে সংরক্ষন করে পরবর্তীতে কাজে লাগাতে পারি।

সোলার প্যানেলের কিভাবে কাজ করে?

সোলার প্যানেলের প্রধান উপাদান হলো সোলার সেল এটিই মূলত সূর্য়ের আলো থেকে বিদ্যূৎ শক্তি উৎপাদন করতে পারে। সোলার সেলের আরেক নাম ফোটোভোলটাইক এখানে উল্লেখ্য যে ফটো বলতে লাইট এবং ভোলটাইক বলতে ইলেক্ট্রিসিটিকে বুঝানো হয়েছে। সোলার সেলগুলো সাধারণত এক ধরনের সেমি কন্ডাক্টর ধাতু দ্বারা তৈরি করা হয় যেমন জার্মেনিয়াম, সিলিকন, কার্বন সিলিকন কার্বাইড ইত্যাদি । এগুলো দ্বারা তৈরি সোলার সেলকে যখন সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আনা হয় তখন সেই আলো থেকে ফোটোভোলটাইক হালকা শক্তি ফোটন শোষণ করে নেয়। এর ফলে সেখানে কিছু ভোল্টের সৃষ্টি হয়ে থাকে আর এমন অনেকগুলো সেল যখন একত্রিত করা হয় তখন সবগুলো একসাথে অনেক বেশি ভোল্ট সৃষ্টি করতে পারে আর এভাবেই সোলার সেলের মাধ্যমে সোলার প্যানেল বিদ্যুশক্তি উৎপাদন করে থাকে।

অন্যান্য পাওয়ার সোর্সের বিপরীতে সোলার প্যানেল ব্যবহারের সুবিধা কি?

নবায়ণযোগ্য শক্তি উৎসঃ সোলার প্যানেল মূলত নবায়ণযোগ্য শক্তি যেমন সূর্যের আলো ব্যবহার করে থাকে। এই ধরণের শক্তি সাধারণত কয়লা, গ্যাসের মত অনবায়ণযোগ্য শক্তির মত শেষ হবে না। ফলে, সোলার প্যানেল ব্যবহারে আপনার এককালীন সোলার প্যানেলের দাম ও সেট আপ খরচ ব্যাতিত জ্বালানী বাবদ কোনো খরচ হবে না বললেই চলে।

বিদ্যুৎ বিল বাবদ খরচ সাশ্রয়ঃ এই ধরণের প্যানেল একবার ইন্সটল করার পর আপনাকে বিদ্যুৎ বিলের ন্যায় এনার্জি খরচ বাবদ কোনো বিল পরিশোধের চিন্তা করতে হবে না।

পরিবেশ বান্ধবঃ তাছাড়া, সোলার প্যানেল পরিবেশ বান্ধব শক্তি উৎস ব্যবহার করায় কোনো প্রকার গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হয় না। ফলে, এটি আপনার চারপাশের পরিবেশে কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না।

স্বাধীন পাওয়ার সোর্সঃ এছাড়াও, সোলার প্যানেল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক গ্রীডের উপর নির্ভর করার প্রয়োজন হয় না। ফলে, লোডশেডিং কিংবা ইউটিলিটি রেট বৃদ্ধি নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। তাই, স্বাধীন পাওয়ার সোর্স হিসেবে আপনার জন্য সোলার প্যানেলই সেরা।

নমণীয় ইন্সটলেশনঃ সোলার প্যানেল সাধারনত বাসা-বাড়ি, অফিস কিংবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়ার ছাদে, ফাকা স্থান এমনকি কৃষিকাজের জন্য অনুপযুক্ত জায়গায় সেট আপ করতে পারবেন। এটি প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের উপর বিরুপ কোনো প্রভাব ফেলবে না, যার ফলে আপনার আশেপাশের জীববৈচিত্র্য স্বাভাবিক থাকবে।

বর্জ্য উৎপাদন হ্রাসঃ অন্যান্য পাওয়ার সোর্স শক্তি উৎপাদন এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এই ধরণের বর্জ্য বিশেষ করে চিকিত্সা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে সোলার প্যানেল দিয়ে শক্তি উৎপাদন এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক কম বর্জ্য উৎপন্ন হয়। তাছাড়া, সিলিকন, কাচ এবং ধাতু সহ অন্যান্য উপকরণে এই প্যানেল তৈরি হওয়ায় বেশিরভাগ উপকরণ পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

প্রত্যন্ত এরিয়া অ্যাক্সেসঃ এছাড়াও, বাংলাদেশে অনেক গ্রামাঞ্চলে এখনও বিদ্যুৎ পৌছায় নি যেখানে সোলার প্যানেলের বিকল্প নেই । সেসব প্রত্যন্ত গ্রামের জন্য সোলার প্যানেলই   আদর্শ সমাধান।

বাংলাদেশে কি কি ধরণের সোলার প্যানেল পাওয়া যায়?

  • মনোক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেলঃ এই ধরণের সোলার প্যানেল সিঙ্গেল ক্রিস্টাল স্ট্রাকচার দিয়ে তৈরি। মনোক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল ২০-২২% উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন হয়ে থাকে। মনো সোলার প্যানেলের দাম একটু বেশি হলেও এটি সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রদান করে। পাশাপাশি এই ধরণের সোলার প্যানেল দেখতেও যথেষ্ট মসৃণ। এটি প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে, ফলে হামকো, সানশাইন, রহিমআফরোজ, লঙ্গি সহ বেশিরভাগ ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানীর সোলার প্যানেলে দীর্ঘমেয়াদী ওয়ারেন্টি সরবারহ করে থাকে। এছাড়াও, পরিবেশগত পরিস্থিতি প্রতিরোধ এবং বিভিন্ন জলবায়ুতে ব্যবহার উপযোগী হওয়ায় আবাসিক এবং বাণিজ্যিক উভয় ক্ষেত্রে মনোক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।
  • পলিক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেলঃ পলিক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল একাধিক সিলিকন ক্রিস্টাল স্ট্রাকচার দিয়ে তৈরি। এই ধরণের সোলার প্যানেল মনোক্রিস্টালাইনের সোলার প্যানেলের তুলনায় কম দামে পাওয়া যায়। এর দক্ষতা লেভেল ১৩-১৭% মধ্যে হলেও ভালো পাওয়ার আউটপুট প্রদান করে। এটি বাজেট বান্ধব ব্যবহারকারীদের জন্য উপযুক্ত। খরচ সাশ্রয় করতে পলিক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল বড় ভবণে ব্যবহার করা যথেষ্ট কার্যকর।
  • পাতলা ফিল্ম সোলার প্যানেলঃ এই ধরণের সোলার প্যানেল সাধারণত কপার ইন্ডিয়াম গ্যালিয়াম সেলেনাইড (সিআইজিএস), ক্যাডমিয়াম টেলুরাইড (সিডিটিই) এবং জৈব ফটোভোলটাইক পদার্থের পাতলা স্তর দিয়ে তৈরি। যার ফলে এটি যথেষ্ট হালকা এবং নমনীয় হয়ে থাকে। বাসা-বাড়ি, অফিস, কিংবা বড় ভবণের ছাদ এবং বিল্ডিং এর দেওয়ালে সহজে সেট আপ করা যায়। মনোক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল এবং পলিক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেলের তুলনায় থিন ফিল্ম সোলার প্যানেলের দাম সবচেয়ে কম। পাতলা ফিল্ম সোলার প্যানেলের দক্ষতা ১০-১৩% এর মধ্যে হলেও, কম আলোতে ভালো কাজ করে। ফলে, পাতলা ফিল্ম সোলার প্যানেল মেঘলা কিংবা কম আলোর পরিবেশে ভালো পাওয়ার আউটপুট প্রদান করে।

সোলার প্যানেল কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়?

সোলার প্যানেল বিভিন্ন পরিবেশে ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে বাসা-বাড়ি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ছাদে সেট আপ করে দৈনন্দিন বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো যায়। এছাড়াও, বড় আকারে সৌর ফার্মে ব্যবহার করে যায়, যেখান থেকে আপনি হাজার হাজার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাণিজ্যিকভাবে নবায়নযোগ্য শক্তি সরবারহ করতে পারবেন। বৈদ্যুতিক গ্রীডের বাইরে কিংবা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল কিংবা পাহাড়ী এলাকাতে সোলার প্যানেল জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য আদর্শ পাওয়ার সোর্স। বর্তমানে, আধুনিক ডিভাইস সমূহে এবং ইঞ্জিন চালিতে বোটে পোর্টেবল সোলার সিস্টেম ব্যবহার করা যায়।

কত ক্ষমতার সোলার প্যানেল দরকার?

বিভিন্ন ক্ষমতার ও সাইজের সোলার প্যানেল রয়েছে আপনারা আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রয় করতে পারেন । তবে সমস্যাটা হয় তখন যখন আমাদের কার কতটুকু দরকার সেটা না জানা থাকে তাহলে চলুন একটা সাধারণ হিসাব বুজে নেই। ধরুন কোন ব্যক্তি দুইটা লাইট ও একটা ফ্যান চালাবে সোলার প্যানেল দ্বারা। ধরা যাক লাইট দুটির ক্ষমতা ১০ ওয়াট করে ২০ ওয়াট ও ফ্যানটির ক্ষমতা ২০ ওয়াট তাহলে মোট প্রয়োজন ৪০ ওয়াট। আমরা যদি প্রতিদিন ৬ ঘন্টা করে চালাতে চাই তাহলে মোট প্রয়োজন ৪০ * ৬ = ২৪০ ওয়াট। এর জন্য ব্যাটারি প্রয়োজন হবে ২৪০ / ১২ = ২০ এম্পিয়ার বা ১২ ভোল্টের ব্যাটারি। সোলার প্যানেলের লেড এসিড ব্যাটারির চার্জিং কারেন্ট ১০% । তাহলে ২০ এম্পিয়ার ব্যটারির চার্জিং কারেন্ট হবে ২০*১০/১০০ = ২ এম্পিয়ার আর ২ এম্পিয়ার কারেন্ট উৎপাদন করতে সোলার প্যানেল লাগবে ২*১২ = ২৪ ওয়াট। তারমানে এই ব্যক্তির ২৪ ওয়াটের সোলার প্যানেল লাগালেই তার বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে পারবে। এভাবেই আপনারা আপনাদের প্রয়োজন হিসাব করে সোলার প্যানেল ক্রয় করতে পারবেন।

সোলার প্যানেলের দাম কত?

সোলার প্যানেলের দাম সাধারণত প্যানেল টাইপ, সেল সংখ্যা, ওয়াট, প্যানেলের গুণমান এবং ব্র্যান্ড ভেদে কম বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে সোলার প্যানেলের দাম ৩,০০০ টাকা থেকে শুরু তবে কোয়ালিটিফুল এবং হাই-এফিশিয়েন্সির সোলার প্যানেলের দাম সর্বোচ্চ ১,০০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাছাড়া বাসা-বাড়ি, অফিস এবং বাণিজ্যিক ভবণে ব্যবহার উপযোগী সোলার প্যানেল কেনার জন্য অবশ্য পাওয়ার ক্যাপাসিটি যাচাই করতে হবে, কারণ ওয়াট ভেদে সোলার প্যানেলের দাম ভিন্ন হয়ে থাকে।

১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম

এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল ব্যাক্তিগত কিংবা ছোট পরিবারের দৈনন্দিন বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য উপযুক্ত। ১০০ ওয়াট সোলার প্যানেল দিয়ে আপনি এলইডি লাইট, টেবিল ফ্যান এবং ছোট ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস সমূহ ব্যবহার করতে পারবেন। বর্তমানে, সানশাইন, লং রান, রহিম আফরোজ এর মত জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের হাফ কাট এবং জেনেটিক প্লাটিনিয়ামে তৈরি সোলার প্যানেল বিডিস্টলে পাওয়া যায়, যার দাম ৩,০০০ টাকা থেকে শুরু।

১৫০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম

লাইট, ফ্যান এবং মোবাইল ও চার্জার লাইট এর মত ছোট ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস চার্জ করার জন্য ১৫০ ওয়াট সোলার আদর্শ। এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল দিয়ে আপনি প্রতিদিন তিনটি ১০ ওয়াট এলইডি লাইট এবং একটি ৩০ ওয়াট ফ্যান প্রতিদিন প্রায় ৪-৫ ঘন্টা পর্যন্ত চালাতে পারবেন। ১৫০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম বাংলাদেশে ৫,৫০০ থেকে ৬,৩০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তাছাড়া, ছোট পরিবার কিংবা ছোট কেবিনের জন্য পাওয়ার বেক সিস্টেম হিসেবে ১৫০ ওয়াট সোলার প্যানেল ব্যবহার করতে পারেন।

২৫০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম

২৫০ ওয়াটের সোলার প্যানেল মূলত ছোট আকারের বাড়িতে একাধিক লাইট, ফ্যান এবং টেলিভিশনের মতো ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস অপারেট করতে পারবেন। বাংলাদেশে ২৫০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম ৭,০০০ টাকা থেকে ২২,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল দিয়ে বাসা-বাড়িতে চারটি ১০ ওয়াট এলইডি লাইট, দুটি ৩০ ওয়াট ফ্যান এবং একটি ৬০ ওয়াট টিভি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।

৩০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম

এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল দিয়ে লাইট, ফ্যান, টেলিভিশন এবং ছোট সাইজের রেফ্রিজারেটর ব্যবহার করতে পারবেন। এটি বাসা-বাড়িতে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এটি মাল্টি-বাসবার টেকনোলোজি  ব্যবহার করায় ভালো লাইটিং সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রতিদিন প্রায় ছয়টি ১০ ওয়াট এলইডি লাইট, দুটি ৩০ ওয়াট ফ্যান, একটি ৬০ ওয়াট টিভি এবং একটি ১০০ ওয়াট রেফ্রিজারেটর ৪-৫ ঘন্টা ধরে চালাতে পারবেন।৩০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম ৭,৫০০ টাকা থেকে ১০,৪০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

৫০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম

বড় পরিবার বা ছোট সাইজের অফিসে লাইট, ফ্যান, টেলিভিশন এবং বড় রেফ্রিজারেটর সহ একাধিক ডিভাইস চালানোর জন্য ৫০০ ওয়াট সোলার প্যানেল উপযুক্ত পাওয়ার প্রদান করে। বর্তমানে, বিডিস্টলে চীনের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড লুঙ্গি এবং ট্রিনা সহ দেশীয় ব্র্যান্ডের ৫০০ ওয়াট সোলার প্যানেল পাওয়া যায়, যার দাম ১০,৮০০ টাকা থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল দিয়ে আটটি ১০-ওয়াট এলইডি লাইট, তিনটি ৩০-ওয়াট ফ্যান, একটি ৬০-ওয়াট টিভি এবং একটি ১৫০-ওয়াট রেফ্রিজারেটর চালাতে পারবেন।

১০০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম

আবাসিক বাসা-বাড়ি বা ছোট বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল যথেষ্ট কার্যকর হবে। কারণ এই ক্যাপাসিটির সোলার সিস্টেম দিয়ে দশটি ১০ ওয়াটের এলইডি লাইট, চারটি ৩০ ওয়াটের ফ্যান, একটি ১০০ ওয়াটের টিভি, একটি ২০০ ওয়াটের রেফ্রিজারেটর এবং অন্যান্য ছোট ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস সমূহ চার্জ করতে পারবেন। বাংলাদেশে ১০০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম ৬০,০০০ টাকা থেকে ৭৫,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

৫ কিলোওয়াট পর্যন্ত সোলার প্যানেলের দাম

মাঝারি থেকে বড় আকারের বাড়ি কিংবা উল্লেখযোগ্য পাওয়ার চাহিদা সম্পন্ন ছোট অফিসের জন্য ৫ কিলোওয়াট উপযুক্ত সোলার প্যানেল। লাইট, ফ্যান, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন এবং এয়ার কন্ডিশনার সহ একাধিক যন্ত্রপাতি চালানো যায়। বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার উপযোগী ৫ কিলো ওয়াট সোলার প্যানেল বিডিস্টলে পাওয়া যায়, যার দাম ২৭৫,০০০ টাকা থেকে শুরু। এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টা পর্যন্ত একটানা পাওয়ার প্রদান করে থাকে।

১০ কিলোওয়াট পর্যন্ত সোলার প্যানেলের দাম

আবাসিক ভবন, অফিস কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০ কিলোওয়াট যথেষ্ট শক্তি সরবারহ করতে পারে।এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল দিয়ে বাসা-বাড়ির যাবতীয় ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, একাধিক এয়ার কন্ডিশনার এবং ল্যাপটপ, প্রিন্টারের মত অফিস সরঞ্জাম সহজে চালাতে পারবেন। বাংলাদেশে ১০ কিলোওয়াট সোলার প্যানেল ৫০০,০০০ টাকায় পাওয়া যায়। আবাসিক ভবণের এই ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল প্রায় ২৪  ঘন্টা পাওয়ার প্রদান করে। বাণিজ্যিক ভবনের ক্ষেত্রে ১০ ঘন্টা পর্যন্ত পাওয়ার প্রদান করে।

২০ কিলোওয়াট পর্যন্ত সোলার প্যানেলের দাম

বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কারখানা, অথবা ব্যাপক বিদ্যুৎ চাহিদা সম্পন্ন অফিসের জন্য ২০ কিলোওয়াট ক্যাপাসিটির সোলার প্যানেল উপযুক্ত। ভারী ডিভাইস, বিস্তৃত পরিসরে লাইটিং, এইচভিএসি সিস্টেম এবং যাবতীয় অফিস সরঞ্জাম অপারেট করার জন্য পর্যাপ্ত পাওয়ার সরবারহ করে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়াতে ব্যবহার উপযোগী ২০ কিলো ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম বাংলাদেশে ১,০০০,০০০ টাকা থেকে শুরু।

সোলার প্যানেল কেনার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় যাচাই করতে হবে?

  • ব্যবহারঃ সোলার প্যানেল সাধারনত বাসা-বাড়িতে ব্যবহারের পাশাপাশি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে, সোলার প্যানেল কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার পাওয়ার চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহৃত স্থানের জন্য সঠিক সোলার প্যানেল বিবেচনা করতে হবে।
  • সেল টাইপঃ বাংলাদেশে কম দামে মনোক্রিস্টালাইন সোলার, পলিক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল এবং থিন ফিল্ম সোলার প্যানেল পাওয়া যায়। ধরণ অনুযায়ী সোলার প্যানেলের পাওয়ার আউটপুট ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন মনোক্রিস্টালাইন প্যানেল সবচেয়ে বেশি দক্ষ এবং স্থান সাশ্রয়ী হয়, অন্যদিকে পলিক্রিস্টালাইন প্যানেল সাধারণত সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায় তবে কিছুটা কম দক্ষ হয়ে থাকে। থিন-ফিল্ম প্যানেল যথেষ্ট হালকা এবং নমনীয় হয়ে থাকে। তাই সেরা পাওয়ার আউটপুট পাওয়ার জন্য সঠিক সোলার প্যানেল যাচাই করতে হবে।
  • সেল সংখ্যাঃ সোলার প্যানেলের সেল সংখ্যা মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনকে প্রভাবিত করে থাকে। বাসা-বাড়ি কিংবা অফিসের মত আবাসিক এরিয়াতে ব্যবহার উপযোগী সোলার প্যানেলে ৬০ বা ৭২টি সেল থাকে। তবে, বাণিজ্যিক ভাবে কিংবা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল এরিয়াতে ব্যবহার উপযোগী সোলার প্যানেলে আরও বেশি সেল সরবারহ করে থাকে। সেল সংখ্যা বেশি হলে শক্তিও বেশি উৎপন্ন হয়। তাই সোলার প্যানেল কেনার সময় আপনার শক্তির চাহিদা বিবেচনা করতে হবে।
  • ফ্রন্ট গ্লাসঃ সোলার প্যানেল কেনার ক্ষেত্রে টেম্পার্ড গ্লাসযুক্ত প্যানেল বিবেচনা করা উত্তম। কারণ এই ধরণের গ্লাস পরিবেশগত বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে স্থায়িত্ব এবং আরও ভাল কর্মক্ষমতা প্রদান করতে সহায়তা করবে। সামগিকভাবে, উচ্চমানের ফ্রন্ট গ্লাস প্যানেল আপনার সোলার প্যানেলের জীবনকাল এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
  • পাওয়ারঃ সোলার প্যানেলের আউটপুট পাওয়ার সাধারণত ওয়াট দিয়ে হিসাব করা হয়, যা স্ট্যান্ডার্ড পরিস্থিতিতে কতটা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে তা বুঝা যায়। ১০০ ওয়াট থেকে ২০০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল বিডিস্টলে সেরা দামে পাওয়া যায়। উচ্চ ওয়াট ক্যাপাসিটির প্যানেল সাধারণত বেশি শক্তি উৎপাদন করতে পারে, যা বড় আবাসিক কিংবা বাণিজ্যিক ভবনে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত হয়ে থাকে।
  • ভোল্টেজঃ সোলার প্যানেল কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভোল্টেজ রেটিং যাচাই করতে হবে যেন আপনার প্রয়োজনীয় সিস্টেমের সাথে সামঞ্জস্য হয়। যদি ভোল্টেজ ইনভার্টার এবং ব্যাটারির সাথে সামঞ্জস্য না হয়, তাহলে যেকোনো সময় ভোল্টেজ আপ ডাউনের ফলে সোলার প্যানলের পার্টস ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
  • কানেক্টরঃ সোলার প্যানেল কেনার ক্ষেত্রে সংযোগকারী কানেক্টর যাচাই করতে হবে। এই প্যানেলগুলোর বেশিরভাগ এমসি৪ টাইপের কানেক্টর ব্যবহার করা হয়। ফলে আপনার সোলার সিস্টেমের সাথে সহজে সংযোগ করার জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
  • মডিউল এফিশিয়েন্সিঃ উচ্চ দক্ষতার সোলার প্যানেল বেশি সূর্যালোককে বিদ্যুতে রূপান্তর করে, যা সীমিত স্থানে ব্যবহারের জন্য আদর্শ। তাই, সঠিক ও কার্যকর পারফরম্যান্স পাওয়ার জন্য অবশ্যই ১৫% এর উপরে দক্ষতা রেটিং সম্পন্ন সোলার প্যানেল বিবেচনা করবেন।
  • প্যানেল ডায়মেনশনঃ আপনার বাসা-বাড়ি, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সোলার প্যানেল ইনস্টল করার ক্ষেত্রে অবশ্যই এরিয়া বিবেচনা করে মানানসই সোলার প্যানেল বাছাই করতে হবে। বড় সাইজের সোলার প্যানেল বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে, তবে তার জন্য বেশি জায়গার প্রয়োজন হবে।
  • বাজেটঃ সোলার প্যানেল কেনার জন্য শুধুমাত্র প্যানেলের দাম বাজেট হিসেবে নির্ধারণ করলেই চলবে না। পাশপাশি ইনস্টলেশন খরচও বাজেটের মধ্যে রাখতে হবে। যথাযথ ইন্সটলেশনে আপনার সোলার প্যানেল দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার উপযোগী রাখতে সহায়তা করবে।
  • ওয়ারেন্টিঃ বাংলাদেশে দেশীয়ভাবে তৈরি সোলার প্যানেল এবং চায়না সোলার প্যানেল সমূহ ১০-২৫ বছর পর্যন্ত স্থায়ী ভাবে ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে থাকে। তাই, সোলার প্যানেল কেনার ক্ষেত্রে কর্মক্ষমতা এবং পার্টস ওয়ারেন্টি সমূহ ভালো ভাবে যাচাই করে কিনবেন।

সোলার প্যানেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে কি বাংলাদেশ সরকার থেকে কি কোনো প্রণোধনা দেয়?

সোলার প্যানেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্নভাবে প্রণোধনা দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য ভর্তুকি, সোলার প্যানেলের পার্টসের উপর কর অব্যাহতি, সোলার প্রকল্পের জন্য কম সুদে ঋণ সরবারহ করেছে। এছাড়াও, নেট মিটারিং নীতি রয়েছে, যার ফলে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত এনার্জি গ্রিডে বিক্রি করতে পারেন। এই ধরণের প্রণোধনা সোলার প্যানেল ব্যবহারে আরও বেশি আকৃষ্ট করে তুলেছে।

সোলার প্যানেল ইন্সটলেশনের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় জানা খুবই জুরুরী

  • প্রথমত সোলার প্যানেল পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলো পায় কিনা তা যাচাই করে সঠিক স্থানে সেট আপ করতে হবে। কারণ সোলার প্যানেল সূর্যের আলোর মাধ্যমে প্রাপ্ত আলো থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে।
  • যদি সোলার প্যানেল দিনের পর দিন ছায়াময় জায়গায় পড়ে থাকে তাহলে অল্প দিনেই প্যানলের কার্যক্ষমতা হারিয়ে যাবে।
  • অনেক সময় সোলার প্যানেলে বেশি এমপিয়ারের ব্যাটারী ব্যবহারের কারণে সোলার প্যানেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কারণ ব্যাটারি এবং সোলার প্যানেল দুটোই নির্দিষ্ট লোড অনুযায়ী সেট আপ করতে হয়। তা না হলে অতিরিক্ত লোড এর ফলে সোলার প্যানেল কম সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাবে।
  • এছাড়াও, সোলার প্যানেলে নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটির বেশি লোড দেওয়ার ফলে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ভালো পারফর্ম করতে পারে না।
  • বাংলাদেশে বিশেষ করে বর্ষাকালে ঝড় বৃষ্টির সময় সোলার প্যানেল গাছের পাতা কিংবা ময়লা দিয়ে ডেকে যায়। এই সময় সঠিকভাবে পরিষ্কার না করলে সোলার প্যানেলের স্থায়িত্ব ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং মেয়াদকাল পূর্ণ করার আগেই ব্যবহার অনপোযোগী হয়ে যাবে।

সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করার জন্য আর কী কী প্রয়োজন?

  • সৌর প্যানেলের পাশাপাশি সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করার জন্য কিছু বাজেটও প্রয়োজন
  • ডিসি থেকে এসি রূপান্তর অপরিহার্য হলে সৌর ইনভার্টার প্রয়োজন
  • রাতের জন্য শক্তি সংরক্ষণের জন্য সৌর ব্যাটারি
  • সৌর ডিভাইস সংযোগের জন্য তার
  • ইনস্টলেশন চার্জ

বাংলাদেশের সেরা সোলার প্যানেল এর মূল্য তালিকা April, 2025

2024 & April, 2025-এর বাংলাদেশের সেরা সোলার প্যানেল এর তালিকা দেওয়া হল।। বিডি স্টলের সোলার প্যানেল ক্রেতাদের আগ্রহের ভিত্তিতে এই সেরা সোলার প্যানেল এর তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

সোলার প্যানেল মডেল বাংলাদেশে দাম
RahimAfrooz Mono Solar Panel 100W ৳ ৫,৫০০
Industrial 20KW Solar Power System ৳ ১,০০০,০০০
Longi LR5-72HGD 585W Double Glass Solar Panel ৳ ১০,৫৩০
Longi LR4-60HPB 355W Solar Panel ৳ ৭,৫০০
Long Ran Mono 100-Watt Solar Panel ৳ ৩,২৫০
Sunshine 100-Watt Half Cut Solar Panel ৳ ৩,০০০
Commercial 5KW Solar Power Plant ৳ ২৭৫,০০০
Sunshine Monocrystalline 170W Half-Cut Solar Panel ৳ ৪,৮০০
Jinko Tiger Pro 550-Watt Mono-Facial Solar Panel ৳ ১১,৫০০
Sunshine Monocrystalline 220W Half-Cut Solar Panel ৳ ৬,২০০