রড কেনাকাটা
রড মূলত ঢালাই লোহা এবং পেটা লোহা এর মধ্যবর্তী অবস্থাকে বুঝায়। এটি মূলত কন্সট্রাকশন কাজে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপাদান। এছাড়াও, রডকে কন্সট্রাকশন বিল্ডিং এর মেরুদন্ড ও বলা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে বাসা, অফিস কিংবা ইন্ডাস্ট্রির মত বহুতল ভবন নির্মাণে রডের চাহিদা অনেক। বর্তমানে, বিএসআরএম, কেএসআরএম, জেডএসআরএম, আরএসআরএম এবং একেএস সহ দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ড বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে রড সরবারহ করে।
রড কিনতে কি কি দেখতে হবে?
রডের কোয়ালিটিঃ রডের কোয়ালিটি এবং গ্রেড বিবেচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৫০০ এমপিএ (৭২,০০০ পিএসআই) রড বিল্ডিং স্ট্রাকচার তৈরির জন্য ভালো স্থায়িত্ব প্রদান করে। এছাড়াও, রড কেনার ক্ষেত্রে ভূমিকম্প সহনীয় রড বেছে নেওয়া উত্তম। কারণ এই ধরণের রড বিল্ডিং এর কাঠামোকে অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রদান করে।
ওয়েল্ডিং সামঞ্জস্যঃ সাধারণ রড যেকোনো ধরণের ওয়েল্ডিং করার কাজে ভেংগে যায় অথবা জ্বলে যেতে পারে। তাই ওয়েল্ডিং করার কাজে কম কার্বন যুক্ত রড বাছাই করা উচিত। যা ওয়েল্ড বা ল্যাপ ওয়েল্ড এর কাজকে সহজ করে এবং সময় বাঁচায়।
ক্ষয় প্রতিরোধঃ থার্মো-মেকানিক্যাল প্রক্রিয়ার মধ্য তৈরি হওয়া রড যাচাই করতে হবে। যা রডের ক্ষতিকারক অবশিষ্ট টরসিয়াল স্ট্রেস দূর করে এবং ক্ষয় প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
নমনীয়তাঃ নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট,বালু, সিমেন্ট এবং কংক্রিটের শক্তি বজায় রাখতে সহায়ক হবে এমন নমনীয় রড যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রডের ধরণ সামঞ্জস্যতাঃ একাধিক ধরণের রড কেনার সময় রডের গুণমান যেন সামঞ্জস্য পূর্ণ হয় তা যাচাই করতে হবে। কারণ একই কাস্টিং এবং টেম্পারিং প্রক্রিয়া তৈরি রড ধরণের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যতা নিশ্চিত করে এবং গুণমানের পার্থক্য কম হয়।
স্ট্রেইটনেসঃ কন্সট্রাকশন সাইটে পিলার,ভিম এবং কলামের কাজ করার জন্য সোজা রডের প্রয়োজন হয়। তাই রড কেনার আগে রডের স্ট্রেইটনেস দেখে কেনা উচিত। ফলে রড দিয়ে স্ট্রাকচার তৈরিতে সময় এবং শ্রম উভয়ই কম ব্যায় হবে।
রডের সার্টিফিকেশনঃ রডের কেনার আগে অবশ্যই রডের সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে কিনা তার জন্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সারটিফিকেশন যাচাই করে হবে।
দাম যাচাইঃ রড কেনার আগে বিভিন্ন সরবরাহকারীর কাছ থেকে দাম যাচাই করতে। তবে, দাম বিবচেনা করার পাশাপাশি রডের কোয়ালিটি ও সক্ষমতা বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
রডের কিভাবে সংরক্ষণ করবেন?
১। রড সাধারণত পরিষ্কার ও শুকনো জায়গায় সংরক্ষন করতে হবে।
২। আর্দ্রতা পেলে রড এ দ্রুত মরিচা পড়ে তাই শুষ্ক এবং ভালো বাতাস আদান প্রদান হয় এমন জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।
৩। পানি সংস্পর্শ থেকে রড নিরাপদ রাখতে জলরোধী টার্ফ কিংবা প্লাস্টিক কাগজে মুড়িয়ে রাখা উত্তম।
৪। সরাসরি মাটির সংস্পর্শে থাকলে রডে দ্রুত মরিচা পড়ে ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই রড সংরক্ষণ করার সময় মাটি থেকে কিছুটা উপরে র্যাক কিংবা স্ট্যান্ড এর মধ্যে রাখা উচিত।
৫। এছাড়াও, রড যদি একমাসের বেশি সময় বাইরে থাকে সেক্ষেত্রে সিমেন্ট পানি দিয়ে রড ধুয়ে রাখলে মরিচা পড়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৬। কন্সট্রাকশন সাইটে পিলার, ভীম কিংবা কলাম তৈরির পর রডের কিছু অংশ বাইরে থাকে। তাই পরবর্তীতে কাজের সময় রডের অবশিষ্ট অংশ পরিষ্কার করে নিতে হবে।
রডের দাম কত?
রডের দাম সাধারণত ধরণ, গ্রেড, কোয়ালিটি, ব্যাস এবং ব্র্যান্ড সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশে রডের দাম ৮৩,০০০ টাকা প্রতি টন, যা শক্তিশালী কন্সট্রাকশন স্ট্রাকচার তৈরির পাশাপাশি ভূমিকম্পে ঝুঁকি কম। এছাড়াও বাংলাদেশে টিএমটি স্টিল রডের দাম ৯৫,০০০ টাকা প্রতি টন, যা ৭২,৫০০ পিএসআই ভার বহন সক্ষমতা রয়েছে এবং একই সাথে কন্সট্রাকশন কাজে বাজেট সাশ্রয়ী হয়।