ফ্রিজ কেনাকাটা
রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ বর্তমানে মানব জীবনের শ্রেষ্ঠতম চাহিদার একটি অপরিহার্য অংশ। কেননা এটি খাবারকে অনেকদিন পর্যন্ত সতেজ রাখতে পারে। রেফ্রিজারেটর বিভিন্ন শাক সবজি, ফল মূল, জুস, মাছ, মাংস, মশলা সহ বিভিন্ন খাবার খুব সহজেই টাটকা রাখতে পারে। বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিভিন্ন আকার, প্রযুক্তি এবং ক্ষমতা সম্পন্ন ফ্রিজ রয়েছে। স্যামসাং, শার্প, ওয়ালটন, এলজি ব্র্যান্ডের ফ্রিজ গুলো বাংলাদেশে বেশি জনপ্রিয়।
ফ্রিজ কেনার আগে কি কি সম্পর্কে জানতে হয়?
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে ফ্রিজ কেনার আগে অবশ্যই ভালো কম্প্রেসার, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ক্ষমতা, ফ্রিজের ভেতরের জায়গা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে জরুরী ভাবে। এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে তুলে ধরা হলোঃ
খাদ্যের গুণাগুণঃ
ফ্রিজ কেনার আগে সর্বপ্রথম দেখতে হবে এটিতে খাদ্যের গুণাগুণ কেমন রাখার ক্ষমতা আছে। একটু দাম দিয়ে হলেও খাদ্যের গুণাগুণ ভাল রাখতে পারে এমন ফ্রিজ কেনা উচিৎ। মাছ, শাক সবজি, ডিম ইত্যাদি খাদ্যের গুণাগুণের মাত্রা কমে যায় এমন ফ্রিজ না কেনাই ভাল।
কম্প্রেসারঃ
ফ্রিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে কম্প্রেসার। কম্প্রেসার যত উন্নতমানের হবে তত দ্রুত ঠাণ্ডা হবে ফ্রিজ। সাধ্যমত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইনভার্টার কম্প্রেসার রয়েছে এমন মডেলের ফ্রিজ কেনাই ভাল। কেননা এটিতে ভোল্টেজের ওঠানামাতেও ঠিকঠাক কুলিং হয়। তবে বর্তমানের নন ইনভার্টার কম্প্রেসারের ফ্রিজ ও ভাল কর্মক্ষমতা প্রদান করে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ীঃ
বর্তমানের প্রতিটি ব্র্যান্ডের ফ্রিজ গুলোতেই বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন রকমের প্রযুক্তি। এগুলো মূলত ফ্রিজকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ করতে রোধ করে। অল্প বিদ্যুৎ খরচ করেই দুর্দান্ত কর্মক্ষমতা প্রদান করে।
আকারঃ
ফ্রিজকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে স্থান অনুযায়ী এর আকার পছন্দ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ফ্রিজ আছে যেগুলো বাইরে থেকে দেখতে মনে হলেও ভিতরে একদমই ছোট। তাই ফ্রিজের ভিতরে কতটুকু জায়গা আছে এটি দেখে নিতে হবে। বর্তমানে কিছু আধুনিক প্রযুক্তির নো ফ্রস্ট বা বরফ জমে না এমন রেফ্রিজারেটর পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে। এগুলো কেনা বেশি উত্তম। এছাড়াও ডাবল ডোর ফ্রিজ গুলোতেও অনেক স্পেস পাওয়া যায় খাবার রাখার জন্য। অনেক পরিবার আছে যারা ভ্রমণ করতে পছন্দ করে। তাদের জন্য এরকম ফ্রিজ গুলো বেশি উপযোগী। বাংলাদেশে সাধারণত রেফ্রিজারেটর সিএফটি অথবা লিটার হিসাবে বিক্রি হয়।
বিক্রয়োত্তর সেবাঃ
বর্তমানে প্রতিটি ব্র্যান্ড অসাধারণ বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করে আসছে। ওয়ারেন্টি এবং গ্যারান্টির দিক থেকে কোনো ব্র্যান্ডই পিছিয়ে নেই। তারপরও বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন গ্রাহকগণের কাছে ভিন্ন ভিন্ন ব্রান্ড সেরা।
ফ্রিজ কেনা ভাল নাকি ডিপ ফ্রিজ?
ফ্রিজ ভাল নাকি ডিপ ফ্রিজ ভাল এটি নির্ভর করবে কি ধরণের খাদ্য সামগ্রী সংরক্ষণ করতে চাইছেন। অধিক হারে মাছ মাংসকে সতেজ রাখার জন্য ডিপ ফ্রিজ সেরা তবে মাছ মাংসের পাশাপাশি অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ ভাল হবে। তাই ফ্রিজ কেনার আগে কি কি খাদ্য সামগ্রীকে সতেজ রাখতে চাইছেন সেটি সম্পর্কে জেনে নিন। বাংলাদেশে সাধারণত বাড়িতে ফ্রিজের পাশাপাশি অতিরিক্ত সোভিদার জন্য ডিপ ফ্রিজ কেনা হয়।
বাংলাদেশে কত ধরণের ফ্রিজ পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে চার ধরণের ফ্রিজ পাওয়া যায়। এগুলো হলোঃ
- সিঙ্গেল ডোর টপ রেফ্রিজারেটর
- সিঙ্গেল ডোর বটম রেফ্রিজারেটর
- সাইড-বাই-সাইড বা ডাবল ডোর রেফ্রিজারেটর
- ডিপ ফ্রীয
রেফ্রিজারেটরের দাম কত?
রেফ্রিজারেটরের দাম বাংলাদেশে ২০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর কিছু মডেলে রয়েছে অটো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের সুবিধা যা শীতকালে তাপমাত্রা একটু বাড়িয়ে নিতে সাহায্য করবে এবং গরমকালে তাপমাত্রা কমিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়াও বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের ফ্রিজ রয়েছে এবং এর দাম নির্ভর করে এগুলোর ব্র্যান্ড, মডেল, সাইজ, ক্যাপাসিটি এবং প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে।
ডিপ ফ্রিজ কি সুবিধা দিবে এবং বাংলাদেশে দাম কত?
বাংলাদেশে ডিপ ফ্রিজের দাম শুরু হয় মাত্র ২০,৫০০ টাকা থেকে। এটিতে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী রাখার জন্য বড় একটি স্পেস রয়েছে। মাছ, মাংস, আইসক্রিম সহ রান্না করা খাবার দীর্ঘসময় মজুদ করা যায়। বিভিন্ন রকমের মসলা যেমন আদা বাঁটা, রসুন বাঁটা, পেঁয়াজ বাঁটা, মরিচ বাঁটাও দীর্ঘসময় যাবত সংরক্ষিত থাকবে এই ফ্রিজে। সবচেয়ে চমৎকার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দীর্ঘদিন মজুদের ফলেও খাবারের স্বাদ থাকবে অক্ষুণ্ণ।