রেডিও কেনাকাটা
রেডিও হচ্ছে এমন এক ধরনের যোগাযোগের মাধ্যম, যা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মাধ্যমে অডিও সামগ্রী প্রেরণ করে। এটি শব্দকে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রূপান্তর করে, যা পরে বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে প্রেরণ করে থাকে। পরবর্তীতে, এই সংকেতগুলি রেডিও রিসিভার দ্বারা গ্রহণ করা হয়, এবং সিগন্যালগুলো পুনরায় শব্দে ডিকোড করে। ফলে মিউজিক, সংবাদ, টক শো সহ অন্যান্য প্রোগ্রাম সহজে শোনা যায়। টেলিভিশনের তুলনায় দামে সস্তা হওয়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় রেডিও বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। বর্তমানে, অত্যাধুনিক ডিজাইনে তৈরি ৪-১০ ব্যান্ডের রেডিও জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টলে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।
স্ট্রিমিং সার্ভিসের পরিবর্তে রেডিও শোনার সুবিধা কী?
- স্ট্রিমিং সার্ভিসের তুলনায় রেডিও বেশিই সুবিধাজনক হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় অধিকাংশ মানুষের বাসা-বাড়িতে, গাড়িতে, এমনকি মোবাইল ফোনেও রেডিও রয়েছে। যা শুধুমাত্র একটি বাটন প্রেস করে শুনতে সহায়তা করে। তাছাড়া, ইন্টারনেট সংযোগ বা নির্দিষ্ট অ্যাপের প্রয়োজন ছাড়াই রেডিওর মাধ্যমে নিজস্ব পছন্দের স্টেশনগুলো সহজে শোনা যায়, যা যেকোনো অবস্থায় শোনার জন্য উপযুক্ত।
- তাছাড়া, রেডিও স্টেশনগুলো বিশেষ করে স্থানীয় সংবাদ, ইভেন্ট এবং মিউজিকের উপর প্রচারণা চালায়। ফলে, স্থানীয়রা তাদের এলাকায় কখন কী ঘটছে সে সম্পর্কে জানতে পারেন। এমনকি জরুরি অবস্থার সময়, রেডিও বিশেষভাবে মূল্যবান এবং সময়োপযোগী তথ্য সরবারহ করে থাকে। তাই, স্ট্রিমিং সার্ভিস এর তুলনায় রেডিও শ্রোতাদের মধ্যে আলাদা জনপ্রিয়তা তৈরী করেছে।
- লাইভ ইন্টারঅ্যাকশনের জন্য রেডিও বিশেষ সুবিধা প্রদান করে থাকে। অনেক রেডিও স্টেশনে কল-ইন সেগমেন্ট, প্রতিযোগিতা এবং শ্রোতাদের অনুরোধ থাকে, যা শ্রোতাদেরকে সরাসরি হোস্টদের সাথে যুক্ত হতে এবং প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে সহায়তা করে। এই রিয়েল-টাইম ইন্টারঅ্যাকশন শ্রোতাদের মধ্যে আলাদা অনুভূতি তৈরি করে, যা স্ট্রিমিং সার্ভিসে পাওয়া যায়। কারণ স্ট্রিমিং সার্ভিসে বেশির ভাগ কন্টেন্ট আগে থেকে রেকর্ড করা থাকে এবং কম ইন্টারঅ্যাক্টিভ হয়।
- এছাড়াও, রেডিও আরজেরা নতুন নতুন কন্টেন্ট, অডিও প্লেলিস্ট তৈরি করে থাকেন। ফলে শ্রোতার সহজে নতুন কন্টেন্ট শুনতে পান। তাছাড়া, অনেক শ্রোতাদের মতে স্ট্রিমিং সার্ভিসে পছন্দ অনুযায়ী অডিও পাওয়া যায় না। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী রেডিও তাদের নতুন কিংবা পুরাতন অডিও খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
- বেশিরভাগ রেডিও স্টেশন কোনো প্রকার সাবস্ক্রিপশন চার্জ ছাড়াই শোনা যায়। অন্যদিকে স্ট্রিমিং সার্ভিসে বিজ্ঞাপন-মুক্ত অভিজ্ঞতা বা প্রিমিয়াম কন্টেন্টের জন্য সাবস্ক্রিপশন চার্জ প্রদান করতে হয়। তাই, স্ট্রিমিং সার্ভিসের বিপরীতে রেডিও দিয়ে কোনো প্রকার খরচ ছাড়াই অডিও এবং অন্যান্য বিনোদনমূলক প্রোগ্রাম সহজে উপভোগ করা যায়।
- তবে, রেডিও এর ক্ষেত্রে একটা খারাপ দিক হচ্ছে বিজ্ঞাপন এড়িয়ে যাওয়া যায় না। ফলে, বিজ্ঞাপনদাতারা শ্রোতাদের কাছে কার্যকরভাবে পৌঁছাতে পারেন। ফলে, গ্রাম কিংবা প্রত্যন্ত এরিয়াতে ব্যবসার প্রচারণা চালাতে রেডিও কার্যকর মাধ্যম।
রেডিও এর দাম কত?
বাংলাদেশে রেডিওর দাম মূলত ডিজাইন, সাইজ, বিল্ড কোয়ালিটি, কানেক্টিভিটি, অ্যান্টেনা সংখ্যা এবং অন্যান্য ফিচারের উপর নির্ভর করে ১৭৫০ টাকা থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। ৯ ব্যান্ডের সাউন্ড রিসিভার যুক্ত এবং মিউজিক প্লেয়ার হিসেবে ব্যবহার উপযোগী রেডিও ১৪০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন। এছাড়াও, সোলার চার্জার যুক্ত ও ওয়্যারলেস ক্যানেক্টিভিটি সম্পন্ন এফএম রেডিও ১৮০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। হাই সেন্সিটিভিটি এবং পাওয়ারফুল স্পিকার যুক্ত রেডিওর দাম বাংলাদেশে ২২০০ টাকার বেশি হয়ে থাকে।