বাংলাদেশে গ্যাজেটের ব্যবহার আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে তাই পাওয়ার ব্যাংক এই গ্যাজেটগুলিতে তাত্ক্ষণিক চার্জিং প্রদান করে। পাওয়ার ব্যাংক শুধু মোবাইল চার্জ করে না, ড্রোন, স্মার্ট ঘড়ি, টর্চলাইট এবং প্রায় প্রতিটি ছোট ডিভাইস চার্জ করতে পারে।
তাছাড়া, বাংলাদেশে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের বিভ্রাট হয় এবং পাওয়ার ব্যাংক বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো সমাধান। বিডিতে পাওয়ার ব্যাংকের দাম খুবই সস্তা এমনকি শিক্ষার্থীরাও সহজেই এটি কিনতে পারে। টর্চলাইট কিছু পাওয়ার ব্যাঙ্কে সংযুক্ত থাকে তাই টর্চলাইটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে যা অন্ধকার এলাকায় যাওয়ার সময় বাংলাদেশের সাধারণ ঐতিহ্য। তাই বিডি স্টল থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেরা পাওয়ার ব্যাংক কিনুন।
Read more
পাওয়ার ব্যাংক কেনাকাটা
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন প্রযুক্তির পাশাপাশি বাংলাদেশে পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারকারী বেড়ে চলেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে জরুরী কাজে স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আর অধিক ব্যবহারের ফলে চার্জ দ্রুত কমে যায়। ফলে জরুরী সময়ে ডিভাইস অফ হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। আবার কোথাও ভ্রমনে গেলে সবসময় বিদ্যুতের উপস্থিতি থাকে না ফলে ডিভাইসে চার্জ দেয়া সম্ভব হয় না। এই সময় গুলোতে ডিভাইসকে সচল রাখতেই পাওয়ার ব্যাংকের ব্যবহার। বাংলাদেশে পাওয়ার ব্যাংকের দামও সবার সাধ্যের মধ্যে।
পাওয়ার ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আপনি কী চার্জ করতে চান তা নির্ধারণ করুন
পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে আপনি আপনার মোবাইল, ট্যাবলেট, এবং ল্যাপটপ এর মত স্মার্ট ডিভাইসসমূহের ব্যাটারি রিচার্জ করতে পারবেন। ৫০০০ এমএএইচ এর কম পাওয়ার ক্যাপাসিটি সম্পন্ন পাওয়ার ব্যাংক বাংলাদেশে মিনি পাওয়ার ব্যাংক হিসেবে পরিচিত, যার দাম খুবই কম হয়ে থাকে। এই ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে বাটন মোবাইল, স্মার্টফোন চার্জ করা যায়। এছাড়াও, উচ্চ পাওয়ার ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে মোবাইল, ট্যাবলেট, কিংবা ল্যাপটপ একাধিকবার চার্জ করা যায়।
পাওয়ার ব্যাঙ্ক কেনার সময় যেসব বিষয় যাচাই করতে হবে
পাওয়ার ব্যাংক কেনার ক্ষেত্রে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি এবং সাপ্লাই ক্যাপাসিটি উভয়ই ভালো ভাবে যাচাই করতে হবে, যা আপনার ডিভাইস সমূহ পরিপূর্ণভাবে চার্জ করতে সহায়ক হবে।
- স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ পাওয়ার ব্যাংকের চার্জিং পাওয়ার মূলত মিলি অ্যাম্পায়ার ঘণ্টা বা এমএএইচ দিয়ে হিসেব করা হয়। পাওয়ার ব্যাংকের এমএএইচ যত বেশি হবে, ডিভাইস তত বেশি পাওয়ার পাবে। যেমনঃ ১০০০০ এমএএইচ পাওয়ার ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে আপনি আপনার মোবাইল, ট্যাবলেট দৈনিক ২-৩ বার ফুল চার্জ করতে পারবেন। এছাড়া, ২০০০০ এমএএইচ পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে ৫-৬ বার আপনার মোবাইল চার্জ করতে পারবেন। ১০০০০ এমএএইচ পাওয়ার ব্যাংকের দাম বিডিতে ১,০০০ টাকা থেকে ২,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। এছাড়াও, পাওয়ার ব্যাংক ২০০০০ এমএএইচ এর দাম বিডিতে ২০-৪০% বেশি হয়ে থাকে।
- সাপ্লাই ক্যাপাসিটিঃ পাওয়ার ব্যাংকের পাওয়ার সাপ্লাই ক্যাপাসিটি সাধারণত ওয়াটে পরিমাপ করা হয়। তাছাড়া, পাওয়ার ব্যাংক কত দ্রুত চার্জ করতে পারে তা নির্ভর করে ওয়াট ক্যাপাসিটির উপর। বর্তমানে, বিডিতে ১৮ ওয়াট, ২৫ ওয়াট, ৪৫ ওয়াট সহ উচ্চ ওয়াটের পাওয়ার ব্যাংক সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। ১০-২০ ওয়াটের পাওয়ার ব্যাঙ্ক সাধারণত মোবাইল চার্জ করার জন্য ভালো ভারসাম্য প্রদান করে৷ এছাড়াও, ৩০ ওয়াট বা উচ্চতর আউটপুট সহ পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে ল্যাপটপ বা অন্যান্য ডিভাইস চার্জ করার জন্য উপযুক্ত।
- পাওয়ার ব্যাংক সাইজ এবং শেপঃ পাওয়ার ব্যাংকের কেনার ক্ষেত্রে সাইজ খেয়াল রাখতে হবে যাতে খুব সহজেই বহন করা যায়। ক্যপাসিটি যত বেশি হবে এর ওজন তত বেশি হবে। তাই বেশি ভ্রমন করলে ১০,০০০ মিলিএম্প পাওয়ার ব্যাঙ্ক যথেষ্ট। আর পরিবারের সবাই মিলে ব্যবহার করলে একটু বেশি মিলিএম্পের নেয়া ভাল। তবে মনে রাখবেন একটু ভারী পাওয়ার ব্যাঙ্ক ভাল কারন এর সঠিক ক্যাপাসিটি দেয়া আছে। এছাড়াও, মোবাইল শেপ, ক্যাপসুল শেপ সহ বিভিন্ন শেপের পাওয়ার ব্যাংক পাওয়া যায়। উচ্চ ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক আকারে বড় হওয়ার পাশাপাশি হ্যান্ডি-টাইপের হয়ে থাকে।
- চার্জিং পোর্টঃ বর্তমানে, আধুনিক টেকনোলোজিতে তৈরি মোবাইল, ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপের মত স্মার্ট ডিভাইস চার্জ করার জন্য বাংলাদেশে মাল্টিপল চার্জিং পোর্ট যুক্ত সেরা মানের পাওয়ার ব্যাংক পাওয়া যায়।
- ইউএসবি-এঃ এটি মূলত আয়তাক্ষেত্রকার আকৃতির পোর্ট এবং বেশ পুরনো। চার্জিং অ্যাডাপ্টারের সাথে পাওয়ার ব্যাংকের ক্যাবল কানেক্ট করার জন্য এই পোর্ট ব্যবহার করা হয়।
- মাইক্রো/মিনি ইউএসবিঃ সাধারণত পুরানো স্মার্টফোন এবং কিছু পোর্টেবল ডিভাইসে ব্যবহারের জন্য ছোট আকৃতির পোর্ট। এই ধরণের পোর্ট বাংলাদেশে সাধারনত পুরানো পাওয়ার ব্যাংকগুলোতে বেশি দেখা যায়।
- ইউএসবি টাইপ-সিঃ ফাস্ট চার্জিংয়ের জন্যও ইউএসবি টাইপ-সি আদর্শ পোর্ট। বর্তমানে অধিকাংশ স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপে টাইপ-সি পোর্ট অধিক দেখা যায়। তাই, এই টাইপের পোর্ট দিয়ে মোবাইল দ্রুত চার্জ করতে পারবেন।
- ওয়্যারলেসঃ এটি অত্যাধুনিক টেকনোলজিতে তৈরি এবং বাংলাদেশে কম সংখ্যক পাওয়ার ব্যাংকে দেখা যায়। এই ধরণের টেকনোলজি যুক্ত পাওয়ারে ব্যাংক দিয়ে তারের সংযোগ ছাড়াই মোবাইল কিংবা অ্যাপল স্মার্ট ওয়াচের মত স্মার্ট ডিভাইস চার্জ করা যায়।
পাওয়ার ব্যাংকের আরও কিছু ফিচারসমূহ যা থেকে আপনি উপকৃত হবেন
- টর্চ লাইটঃ কিছু কিছু পাওয়ার ব্যাংকের সাথে বিল্ট-ইন টর্চলাইট পাওয়া যায়, যা ট্রাভেল করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক হয়ে থাকে।
- মাল্টিপল চার্জিং পোর্টঃ একই সময়ে একাধিক ডিভাইস চার্জ করার জন্য পাওয়ার ব্যাংকে মাল্টিপল চার্জিং পোর্ট রয়েছে। ফলে আপনি একই সাথে একাধিক মোবাইল চার্জ করতে পারবেন।
- পাস থ্রো চার্জিংঃ বর্তমানের পাওয়ার ব্যাংক গুলোতে পাস থ্রু চার্জিং প্রযুক্তি থাকে ফলে পাওয়ার ব্যাংক চার্জে থাকা অবস্থাতেও ডিভাইস চার্জ করা যায় আর এই ধরনের পাওয়ার ব্যাঙ্ক বাংলাদেশে এখন পাওয়া যায়।
- ডিজিটাল ইনডিকেটরঃ মোবাইল, ল্যাপটপ সহ স্মার্ট ডিভাইস সমূহ যথাযথ ভাবে চার্জ হচ্ছে কিনা যাচাই করার জন্য পাওয়ার ব্যাংকে ডিজিটাল ইনডিকেটর রয়েছে।
- ফাস্ট চার্জিংঃ পাওয়ার ব্যাংকে দ্রুত চার্জিং সুবিধা আছে নাকি অবশ্যই এটা দেখতে পারেন। আপনার ব্যবহৃত ডিভাইস যদি ফাস্ট চার্জ সাপোর্ট করে তবে সাধারণ পাওয়ার ব্যাংকগুলো থেকে চার্জ হতে একটু বেশি সময় লাগবে। কিন্তু দ্রুত চার্জিং পাওয়ার ব্যাংকে অল্প সময়ে ডিভাইস চার্জ করা যায়। আর বাংলাদেশে এখন ফাস্ট চার্জিং পাওয়ার ব্যাংকের দাম এখন অনেক কম।
বিডিতে পাওয়ার ব্যাংকের দাম কত?
বিডিতে পাওয়ার ব্যাংকের দাম ৮৯৯ টাকা থেকে শুরু আর এটি দিয়ে যেকোন স্মার্ট ডিভাইস যেমন মোবাইল ৩/৪ বার চার্জ দেয়া যাবে। আর যদি ফাস্ট চার্জ পাওয়ার ব্যাঙ্ক হয় তবে বিডিতে এর দাম পরবে সর্বনিম্ন ১৩০০ টাকা আর এটি সাধারণত ইউএসবি টাইপ-সি দিয়ে চার্জ হয় ফলে পাওয়ার ব্যাংকটিও সহজে চার্জ হয়ে রেডি হয়ে যায়। তবে পাওয়ার ব্যাংকার দাম নির্ভর করে এর ক্যাপাসিটির উপর এবং ব্র্যান্ড। কারন ভাল ব্রান্ডের পাওয়ার ব্যাংকে ভাল মানের ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়।
পাওয়ার ব্যাংক সম্পর্কিত প্রায়শ জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
পাওয়ার ব্যাংক কত বছর পর্যন্ত স্থায়ীভাবে ব্যবহার করা যায়?
পাওয়ার ব্যাংক গড়ে প্রায় ৩ বছর পর্যন্ত স্থায়ীভাবে ব্যবহার করা যায়। গুনমান সম্পন্ন পাওয়ার ব্যাংক সাধারণত ৫০০ চার্জ সাইকেল পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। তবে, উচ্চ পাওয়ার ক্যাপাসিটি সম্পন্ন এবং উন্নত কোয়ালিটির কিছু কিছু পাওয়ার ব্যাংক ৮০০-১০০০ চার্জ সাইকেল সরবারহ করে থাকে।
পাওয়ার ব্যাংক চার্জ হতে কতক্ষণ সময় নেয়?
পাওয়ার ব্যাংক চার্জ হতে কতক্ষণ সময় লাগবে তা পাওয়ার ব্যাংকের ক্যাপাসিটি এবং চার্জারের উপর নির্ভর করে। বেশি ক্ষমতার পাওয়ার ব্যাংক সাধারণত বেশি সময় চার্জ দিতে হবে। তবে, পাওয়ার ব্যাংক চার্জ হতে গড়ে প্রায় ৩-৮ ঘণ্টা সময় নিয়ে থাকে।
আমি কি পাওয়ার ব্যাংকের ব্যাটারি পরিবর্তন করতে পারি?
আপনি পাওয়ার ব্যাংকের ব্যাটারি পরিবর্তন করতে পারবেন, তবে তা অনেক ব্যায়বহুল হবে। তাই, ব্যাটারির পরিবর্তন না করে, নতুন পাওয়ার ব্যাংক কেনা উত্তম হবে।
আমার পাওয়ার ব্যাঙ্ক গরম হয়ে যায়, এটা কি স্বাভাবিক?
হ্যাঁ, পাওয়ার ব্যাংক থেকে মোবাইল, ট্যাবলেট চার্জ করার ক্ষেত্রে গরম হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। তাই, ৩০-৪০ মিনিট চার্জ করার পর কিছু সময়ের জন্য পাওয়ার ব্যাংক থেকে ডিভাইস ডিসকানেক্ট করে পাওয়ার ব্যাংক ঠাণ্ডা হলে পুনরায় চার্জ করতে পারেন। এই ধরণের সমস্যায় সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করার প্রয়োজন নেই।