নেটওয়ার্ক সুইচ কেনাকাটা
নেটওয়ার্ক সুইচের মাধ্যমে দুই বা ততোধিক নেটওয়ার্ক ডিভাইসকে সংযুক্ত করে ডাটা স্থানান্তর করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাপক হারে নেটওয়ার্ক সুইচ এর ব্যবহার দেখা যায়। নেটওয়ার্ক সুইচ হল লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের অন্যতম অংশ যা নির্দিষ্ট ডিভাইস থেকে ডাটা রিসিভ এবং নির্দিষ্ট ডিভাইসে ডাটা ফরওয়ার্ডিং জন্য কাজ করে। বাংলাদেশে টিপি-লিংক, সিসকো, নেটগিয়ার, মাইক্রোটিক, টেন্ডা, ডি-লিংক, ট্রেন্ডনেট, এবং অন্যান্য ব্র্যান্ডের নেটওয়ার্ক সুইচ পাওয়া যায়।
নেটওয়ার্ক সুইচ কেন ব্যবহার করা হয়?
নেটওয়ার্ক সমানভাবে ভাগ করে সরবরাহ করার জন্য নেটওয়ার্ক সুইচ ব্যবহার করা হয়। এবং, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একাধিক কম্পিউটার, প্রিন্টার, সার্ভার, ও বিভিন্ন ডিভাইস সংযুক্ত রাখতে ও প্রয়োজন অনুযায়ী ডাটা স্থানান্তর করতে নেটওয়ার্ক সুইচ ব্যবহার করে থাকে। নেটওয়ার্ক সুইচগুলো বিভিন্ন নেটওয়ার্ক প্রোটোকল অনুসরন করে কাজ করে থাকে। কাজের ধরণ ও বিভিন্ন নেটওয়ার্ক প্রোটোকল অনুসারে বিভিন্ন ধরণের নেটওয়ার্ক সুইচ বাংলাদেশে ব্যবহার করা হয়। কিছু নেটওয়ার্ক সুইচ ডাটা স্থানান্তরের পাশাপাশি ডাটা সুরক্ষিত রাখে।
বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক সুইচের দাম কত?
বর্তমানে, বিডিতে নেটওয়ার্ক সুইচের দাম সুইচের ধরণ, পোর্ট সংখ্যা, ব্র্যান্ড, এবং কোয়ালিটির ভিত্তিতে ৮০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকার মধ্য থেকে শুরু হয়। উন্নত মানের ৮-পোর্টের নেটওয়ার্ক সুইচগুলো ২,০০০ টাকা থেকে ৬,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। ১৬-পোর্টের নেটওয়ার্ক সুইচের দাম ৪,৫০০ টাকা থেকে ৫,০০০ টাকা মধ্য থেকে শুরু হয়। এছাড়াও, প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সংখ্যার পোর্টের নেটওয়ার্ক সুইচ বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
PoE সুইচ কি সাশ্রয়ী?
PoE সুইচ এখন বাংলাদেশে জনপ্রিয় কারণ সংযুক্ত ডিভাইসের জন্য আলাদা পাওয়ার প্রয়োজন হয় না এবং বর্তমানে দামও কম। PoE সুইচ বাংলাদেশে ২,৫০০ টাকায় কেনা যায় এবং সবচেয়ে ভালোটি প্রায় ১২০,০০০ টাকায় কেনা যায়।
বাংলাদেশে কয় ধরণের নেটওয়ার্ক সুইচ পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক সুইচ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সাথে মানানসই নেটওয়ার্ক সুইচ বর্তমানে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে বর্তমানে ম্যানেজড, পিওই সুইচ, আনম্যানেজড, স্ট্যাকেবল, এবং মডুলার নেটওয়ার্ক সুইচ অধিক ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন প্রযুক্তির ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক সুইচ পাওয়া যায়।
ম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচঃ ম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচ সাধারণত একাধিক ইথারনেট ডিভাইসের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এই সুইচের মাধ্যমে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (এলএএন) এর ট্র্যাফিক কনফিগার, নিরীক্ষণ, এবং পরিচালন করা যায়। তাই, বাংলাদেশে ম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচ তুলনামূলক বেশি ব্যবহার করা হয়। ম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচ ব্যবহারের ফলে ডাটা অতিরিক্ত ফায়ারওয়াল দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। বর্তমানে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন পোর্ট সংখ্যার ম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচ পাওয়া যায়।
আনম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচঃ আনম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচগুলো তুলনামূলক সহজেই কনফিগার করা যায়। এবং, আনম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচগুলো একাধিক ইথারনেট ডিভাইসের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ব্যবহার করা যায়। তাই, এই সুইচকে সাধারন প্লাগ এন্ড প্লে নেটওয়ার্ক সুইচও বলা যায়। আনম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচগুলো সাধারণত ইন্ডাস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক পরিচালন করতে ব্যবহার করা হয়। কেননা এই সুইচগুলো তুলনামূলক অধিক লোড নিতে পারে।
পাওয়ার ওভার ইথারনেট সুইচঃ পাওয়ার ওভার ইথারনেট সুইচ বা পিওই সুইচ গুলো ডাটা স্থানান্তরের ক্যাবেলের মাধ্যমে লো-ভোল্টেজ বিদ্যুৎ পাঠাতে সক্ষম। পিওই সুইচ সাধারণত ওয়্যারলেস অ্যাক্সেস পয়েন্ট, আইপি ফোন, এবং আইওটি ডিভাইসের সাথে ব্যবহার করার জন্য উপযুক্ত। বিভিন্ন আইইইই স্ট্যান্ডার্ডের পাওয়ার ওভার ইথারনেট সুইচ বাংলাদেশে পাওয়া যায়। পিওই প্রযুক্তি যুক্ত সুইচগুলো ওয়ারলেস অ্যাকসেস কন্ট্রোল ও সিসি ক্যামেরার সাথে ব্যবহার করা হয়।
স্ট্যাকেবল সুইচঃ একাধিক ফিক্সড সুইচের সংযোগের মাধ্যমে একটি সিঙ্গেল লজিকাল সুইচে রুপান্তর করলে তাকে স্ট্যাকেবল সুইচ বলা হয়। স্ট্যাকেবল সুইচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক স্পীডে ডাটা স্থানান্তর করা যায়। এবং, স্ট্যাকেবল সুইচের মধ্যে কোন একটি সুইচের বৈদ্যুতিক সংযোগে সমস্যা হলে স্ট্যাকেবল সুইচের অন্যান্য সুইচ থেকে অটোমেটিক বিদ্যুৎ ভাগ করে নেয়। এই ধরণের সুইচ ব্যবহার করলে প্রয়োজন অনুসারে পোর্ট বৃদ্ধি করতে অন্য একটি সুইচ সহজেই যুক্ত করা যায়।
মডুলার নেটওয়ার্ক সুইচঃ মডুলার বা চ্যাসিস ভিত্তিক নেটওয়ার্ক সুইচ একাধিক নেটওয়ার্ক সুইচ সংযুক্ত করে তৈরি করা হয়। মডুলার সুইচে জায়াগার অনুপাতে সুইচ সংযুক্ত করা যায় এবং প্রয়োজনে একাধিক মডুলার সুইচ সংযুক্ত করে ব্যবহার করা যায়। তাই, মডুলার নেটওয়ার্ক সুইচ সাধারণত স্ট্যাকেবল নেটওয়ার্ক সুইচের ন্যায়। তবে, মডুলার নেটওয়ার্ক সুইচের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সেট আপ আলাদা অ্যানক্লোজারে থাকে।
এছাড়াও, ২-লেয়ার ও ৩-লেয়ার বিশিষ্ট নেতওয়ার্ক সুইচ পাওয়া যায় যা কাজের ধরণের অনুসারে ব্যবহার করা হয়।
নেটওয়ার্ক সুইচ কেনার আগে কী করতে হবে?
- কতগুলো ডিভাইস নেটওয়ার্ক সুইচের সাথে সংযোগ হবে সে প্রয়োজন অনুযায়ী নেটওয়ার্ক সুইচের পোর্ট সংখ্যা নির্বাচন করতে হবে
- ব্যবহারের ভিত্তিতে নেটওয়ার্ক সুইচের প্রযুক্তি নির্বাচন করতে হবে। বিশেষ করে কর্পোরেট অফিসের জন্য আনম্যানেজড নেটওয়ার্ক সুইচ উপযুক্ত
- প্রয়োজন অনুসারে নেটওয়ার্ক সুইচের স্পীড নির্বাচন করুন
- দুই ধরনের ফর্ম ফ্যাক্টর পাওয়া যায়ঃ মেটাল ও প্লাস্টিক। মেটাল ফর্ম ফ্যাক্টর নেটওয়ার্ক সুইচ দীর্ঘ দিন ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত অন্যদিকে প্লাস্টিক ফর্ম ফ্যাক্টর নেটওয়ার্ক সুইচ দামে সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। তাই, প্রয়োজন অনুসারে নেটিওয়ার্ক সুইচের ফর্ম ফ্যাক্টর নির্বাচন করুন