মাইক্রোওয়েভ ওভেন কেনাকাটা
বর্তমানে মাইক্রোওয়েভ ওভেন প্রতিটি পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস। বিশেষ করে গৃহিণীরা মাইক্রোওয়েভ ওভেন সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে থাকেন কেননা এটি সংসারে রান্নার কাজকে অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে। এছাড়াও যারা কুকিং করতে ভালবাসে তাদের কাছে মাইক্রোওয়েভ ওভেন সবচেয়ে প্রিয় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস। তাছাড়া বাসাবাড়ির পাশাপাশি অনেক ব্যবসা প্ৰতিষ্ঠান এবং দোকানেও খাবার গরম করার কাজে এটি ব্যপক ব্যবহৃত হয়। আর শীতকালে এটির প্রয়জনীয়তা বাংলাদেশের শহরে অনেক দেখা যায়।
বাংলাদেশে মাইক্রোয়েভ ওভেনের দাম কত?
বাংলাদেশে মাইক্রোয়েভ ওভেনের দাম মাত্র ৭,৯০০ টাকা থেকে শুরু করে অনেক বেশি দামেরও পাওয়া যায়। সর্বনিম্ন দামের ওভেনটিতে ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে ২৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার মতো অপশন আছে। ফলে খাবার খুব দ্রুত করা সম্ভব এই ওভেনটির দ্বারা। ৬০ মিনিট পরে অটোমটিকভাবে এই মাইক্রোওয়েভ ওভেনটি বন্ধ হয়ে যায় ফলে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে রেহাই দিতে পারে। এছাড়াও এটিতে ৩৮ লিটার ক্যাপাসিটি আছে। তবে কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ অর্থাৎ গ্রিল সুবিধাসহ ওভেন কিনতে হলে দাম ১০,০০০ টাকার বেশি পড়বে। এছাড়াও বাংলাদেশে অনেক রকমের ওভেন পাওয়া যায়। মূলত বাংলাদেশে মাইক্রোওয়েভ ওভেনের দাম নির্ধারিত হয় এগুলোর ব্র্যান্ড, মডেল, প্রযুক্তি, ক্যাপাসিটি এবং অন্যান্য বিশেষত্বের উপর।
বাংলাদেশে কত ধরণের মাইক্রোওয়েভ ওভেন পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে দুই ধরণের মাইক্রোওয়েভ ওভেন পাওয়া যায়। এগুলো হলোঃ
- কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন
- সলো মাইক্রোওয়েভ ওভেন
কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেনঃ কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন দুটি মুডেই কাজ করে অর্থাৎ মাইক্রোওয়েভ এর পাশাপাশি এটিতে হিটিং এলিমেন্ট থাকে যেটি দিয়ে তাপ উৎপন্ন করা হয় এবং ফ্যানের সাহায্যে তাপকে সমান ভাবে বিতরণ করা হয়। বাংলাদেশে এটিকে গ্রিল মাইক্রোওয়েভ ওভেন বলে।
সলো মাইক্রোওয়েভ ওভেনঃ সলো মাইক্রোওয়েভ দিয়ে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে খাদ্য গরম করার কাজে ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে আমি কিভাবে একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন নির্বাচন করবো?
বাংলাদেশে মাইক্রোওয়েভ ওভেনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার ক্যাপাসিটি, কাজের ধরণ, পরিচালন শক্তি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হবে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ
ক্যাপাসিটিঃ
- পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি ২ থেকে ৪ জন হয় তবে ২০ থেকে ২৫ লিটার ক্যাপাসিটির মাইক্রোওয়েভ ওভেন নির্বাচন করতে হবে।
- পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ থেকে ৬ জন হলে ২৫ থেকে ৩০ লিটার ক্যাপাসিটির ওভেন নির্বাচন করতে হবে।
- পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি আরও বেশি হয় তবে ৩০ লিটার থেকে বেশি ক্যাপাসিটির মাইক্রোওয়েভ ওভেন নির্বাচন করতে হবে।
কাজের ধরণঃ
- ওভেন কেনার আগে জানতে হবে কি কি সুবিধা নিতে চাইছেন ওভেনের সাহায্যে অর্থাৎ কাজের ধরণের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন করতে হবে মাইক্রোওয়েভ ওভেন। ব্যক্তিগত ব্যবহারের ক্ষেত্রে অর্থাৎ বাসায় ব্যবহারের জন্য মাইক্রোওয়েভ ওভেন কিনতে চাইলে বা শুধুমাত্র খাবার গরম করার উদ্দেশ্যে মাইক্রোওয়েভ ওভেন কিনতে চাইলে সলো মাইক্রোওয়েভ ওভেন কিনতে হবে।
- যদি ব্যবসায়িক কাজের জন্য কোনো রেস্টুরেন্ট অথবা হোটেলের জন্য কিনতে চাইলে অবশ্যই কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন কিনতে হবে। কেননা এটির সাহায্যে খাবার গরম করা যায় এবং অনেক খাবার রান্নাও করা যায় দ্রুত। যেমনঃ চিকেন গ্রিল, বিফ কারি ইত্যাদি। তবে বর্তমানে কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বাসাতেও ব্যবহার হচ্ছে।
পরিচালন শক্তিঃ
- মাইক্রোওয়েভ ওভেন পরিচালন হতে কতটুকু শক্তি খরচ করে সেটি জেনে নির্বাচন করতে হবে মাইক্রোওয়েভ ওভেন।
- বর্তমানে বাংলাদেশে খুব কম দামের মধ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মাইক্রোওয়েভ ওভেন পাওয়া যায় যা স্বল্প বিদ্যুতে সেরা কর্মদক্ষতা প্রদান করতে পারে।
- আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় বর্তমানের মাইক্রোওয়েভ ওভেন গুলোতে একটি বৈশিষ্ট্য যুক্ত হচ্ছে সেটি হচ্ছে অটো পাওয়ার অফ মোড। এটির সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে অটোমেটিক পাওয়ার অফ হয়ে যাবে ফলে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যায় খুব সহজেই।
বর্তমানের মাইক্রোওয়েভ ওভেন গুলোতে কি কি বৈশিষ্ট্য যুক্ত হচ্ছে?
বর্তমানের মাইক্রোওয়েভ ওভেন গুলোতে যুক্ত হচ্ছে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য যা রান্নার কাজকে সহজ ও নিরাপদ করতে সাহায্য করে। এই বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
ঘূর্ণায়মান ট্রেঃ
বর্তমানের প্রত্যেকটি ওভেন ব্র্যান্ড তাদের ওভেন গুলোতে ঘূর্ণায়মান ট্রে যুক্ত করছে। কেননা ঘূর্ণায়মান ট্রের সাহায্যে ওভেনে দেয়া খাবার গুলো গরম হওয়া কালীন ঘুরতে থাকে ফলে খাবার সুষ্ঠু ভাবে গরম হয় সবদিক থেকেই।
কুইক কিঃ
কুইক কি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে দ্রুত রান্না করা অথবা খাবার গরম করার সুবিধা প্রদান করে। জরুরী মুহুর্তে খাবার গরম বা রান্না করার দরকার হলে এই দ্রুত কি বিশেষ সেবা প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে যারা ব্যবসায়িক কাজে ওভেন ব্যবহার করে তাদের কাছে এটি সবচেয়ে প্রিয় একটি ফাংশন।
শর্টকাট কিঃ
শর্টকাট কি পপকর্ন, হিমায়িত শাকসবজি, পাস্তা বা এজাতীয় জনপ্রিয় খাবার গুলোকে খুব সুন্দর ভাবে তৈরি করে দিতে পারে।
চাইল্ড লকঃ
চাইল্ড লক ফাংশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা বাসায় বাচ্চারা অনেক সময় না বুঝে ওভেনের দরজা খুলে ফেলে এমতাবস্থায় বাচ্চাদের শরীরে গরম খাবার পড়ে গিয়ে পুড়ে যেতে পারে। কিন্তু চাইল্ড লক ফাংশন থাকলে ওভেনের দরজায় একটি লক করা যায় ফলে বাচ্চারা টানাটানি করলেও ওভেনের দরজা খুলে না।