সৌর Light কেনাকাটা
বিদ্যুৎ আবিষ্কারের পর থেকে মানুষের জীবন যতটা সহজলভ্য হয়েছে ততটাই ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। কারণ বাসা, অফিস, এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা রাস্তা আলোকিত রাখতে বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহারের ফলে প্রচুর পরিমাণ ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। সেদিক থেকে তুলনামূলক কমদামে সোলার লাইট ত্রুটিহীন, স্বস্তিদায়ক, ও আলোহীন জীবন থকে মুক্তির সহায়ক। সৌর শক্তিকে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করে যে আলো পাওয়া যায় তাকে সোলার লাইট বলা হয়।
কিভাবে সোলার লাইট কাজ করে থাকে?
সোলার লাইট মূলত সোলার প্যানেলে সূর্য থেকে সঞ্চিত শক্তি নিয়ে কাজ করে থাকে। সোলার লাইট প্রধানত ফোটোভোলটাইক সেল ব্যবহার করা হয়। ফোটোভোলটাইক সেল সূর্যের আলো থেকে শক্তি শোষণ করে এবং বৈদ্যুতিক চার্জ তৈরি করে। সোলার প্যানেল এবং ব্যাটারির মধ্যে তার দিয়ে সংযুক্ত করা থাকে। যা মূলত সূর্যের আলো থেকে প্রাপ্ত শক্তি সোলার প্যানেলের মধ্যে দিয়ে রাসায়নিক শক্তি হিসেবে ব্যাটারিতে জমা রাখে। পরবর্তীতে ব্যাটারি থেকে তারের সংযোগের মাধ্যমে সোলার লাইটে সংযোগে আলো জ্বলে। ফলে রাতে বাসা বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এবং রাস্তায় ব্যবহারে লোডশেডিং এর মত বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না। এখনো অনেক গ্রামাঞ্চলে ভরসার নাম সোলার লাইট। তাছাড়া সোলার লাইট এলইডি এবং ফ্লোরোসেন্ট যুক্ত লাইট থেকে ৯০ ভাগ বেশি আলো দিয়ে থাকে এবং দীর্ঘদিন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়।
কেন সোলার লাইট ব্যবহার করব?
বর্তমান সময়ে মানুষের চাহিদা এবং আগ্রহের উপর নির্ভর করে সোলার লাইট অনেক উন্নত। তাছাড়া সোলার লাইট বাসা বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। সোলার লাইট ব্যবহারে প্রধান কিছু সুবিধা হচ্ছেঃ
- সোলার লাইট প্রয়োজন অনুযায়ী যতটুকু সময় আলোর প্রয়োজন হয় ততটুকু সময় পর্যন্ত একটানা আলোর নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে
- তাছাড়া সোলার লাইট ব্যবহারে লোডশেডিংয়ের মত কোনো ঝামেলা নেই ফলে একটানা ব্যবহারে কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয় না
- সোলার লাইটের মেইনটেন্যান্স খরচ তূলনামূলকভাবে অনেক কম হয়ে থাকে কারন এই লাইট ব্যবহারে কাউকে ব্যবহার বাবদ খরচ বহন করতে হয় না
- সোলার লাইট অতিরিক্ত তাপ সহনশীল হওয়ার ফলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে
- তাছাড়া এই লাইট ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট যে তার এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয় সিস্টেমের মধ্যে গোছানো অবস্থায় তাকে ফলে ব্যবহারে ঝুঁকি অনেক কম
- যেকোনো জায়গায় প্রয়োজনমত সোলার লাইট ব্যবহার করা যায়। কেননা বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ইনডোর ও আউটডোর সোলার লাইট পাওয়া যায়
- পরিবেশে কোনো কার্বন নির্গমন করে না ফলে সোলার লাইট ব্যবহার করা পরিবেশ বান্ধব
- সোলার লাইট ইন্সটল এবং ঋতু পরিবর্তনের সাথে আলোর স্কিম আপডেট করা যায় সহজেই
- ব্যবহারে যেকোনো ত্রুটির সম্মুখীন হলে সহজেই বের করে সমাধান করা যায়
সোলার লাইট কেনার পূর্বে কি কি দেখতে হবে?
প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য এবং আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো জেনে সোলার লাইট কেনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে বাংলাদেশে সোলার লাইট খুবই জনপ্রিয়। তাই সোলার লাইট কেনার পূর্বে যে বিষয় গুলো সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবেঃ
প্রয়োজনীয়তাঃ সোলার লাইটগুলো লোডশেডিংহীন এবং খরচ সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। তাই, সোলার লাইট ব্যবহার করার পূর্বে কীভাবে ব্যবহার করবেন এবং কোথায় ব্যবহার করবেন তা নির্বাচন করুন। তাছাড়া, সোলার লাইট বিভিন্ন ডিজাইন এবং স্থান ভেদে ব্যবহার উপযোগী করে তৈরী করা হয়। ফলে, আউটডোর ও ইনডোর উভয় ধরণের সোলার লাইট ব্যবহার করা যায়।
আলোঃ সোলার লাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত আলো পাওয়ার বিষয় টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ওয়াটের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরণের লুমেন সম্পন্ন সোলার লাইট পাওয়া যায়। তাছাড়া সোলার লাইট এলইডি লাইটের চেয়ে কম শক্তি ব্যবহার করে বেশি পরিমণে আলো দিয়ে থাকে। তবে ব্যবহারের স্থান ভেদে সোলার লাইটে লুমেনের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে।
সোলার প্যানেলের ধরণঃ সাধারণত সোলার লাইট তিন ধরনের সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয় যথা নিরাকার, পলিক্রিস্টালাইন এবং মনোক্রিস্টালাইন প্যানেল। একটি নিরাকার সৌর প্যানেল পাতলা, নমনীয় এবং হালকা হয়। এবং মনোক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেলটি সিলিকন সোলার সেল দিয়ে তৈরি। সেইসাথে শক্তিশালী, ভারী, এবং দক্ষ পাওয়ার জেনারেটিং প্যানেল। অন্যদিকে পলিক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেলটি সিলিকন সোলার সেল দ্বারা তৈরি যা অনেক বেশি ভারী এবং শক্তিশালী এবং বাজেট-বান্ধব সৌর প্যানেল।
ব্যাটারিঃ সোলার লাইট ব্যবহারে ব্যাটারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ ব্যাটারির মধ্যে সোলার প্যানেল বৈদ্যুতিক শক্তিকে রাসায়নিক শক্তি হিসাবে সঞ্চয় করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে সোলার লাইটের সাথে সীসা যুক্ত অ্যাসিড ব্যাটারি, নিকেল ব্যাটারি, এবং নিকেল-ক্যাডমিয়াম ব্যাটারি অধিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই ব্যাটারির ধরন ভেদে চার্জের সময়, শক্তি ধারণ ক্ষমতা, ওজন, এবং দীর্ঘস্থায়ীত্ততা নির্ভর করে।
রান টাইমঃ ব্যাটারি মূলত প্রয়োজন হয় সারা রাত বা তার বেশি সময় ধরে সোলার লাইট ব্যবহার করার জন্য। পাশাপাশি রিচার্জ করতে কত সময় লাগে এবং সঞ্চয়কৃত চার্জ দিয়ে কতক্ষণ বেক আপ পাওয়া যাবে তা জেনে নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশে সোলার লাইটের দাম কত?
বাংলাদেশে সোলার লাইটের দাম লাইটের ক্ষমতা, সেন্সর, আলোর দূরত্ব, ওয়াটারপ্রফ,এবং নন-ওয়াটারপ্রুফ ভিত্তিতে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে থেকে শুরু হয়। উন্নত মানের আউটডোর সোলার লাইটগুলো ১,০০০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। তবে, প্রয়োজন অনুসারে কাস্টম সোলার লাইট তৈরি করা যায়।