লেজার Light কেনাকাটা
সাধারণ বাল্ব বা ফ্ল্যাশ লাইট থেকে লেজার লাইট বেশ ভিন্ন। এটি খুব আঁটসাঁট আলোর রশ্মি সরবারহ করে। তাছাড়া, লেজার লাইট সাধারনত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নির্গমনের উপর ভিত্তি করে অপটিক্যাল অ্যামপ্লিফিকেশন প্রক্রিয়ায় আলো সরবারহ করে। বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ, চিকিৎসা, কাটিং এবং ঢালাই শিল্পে, ট্রাফিক কন্ট্রোল সহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক কাজে লেজার লাইট ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে, মাল্টিপল কালার ও বিভিন্ন পাওয়ার ক্যাপাসিটির রিচারজেবল ব্যাটারির সমন্বয়ে তৈরি গুনমান সম্পন্ন লেজার লাইট জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টলে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে লেজার লাইটের দাম কত?
বাংলাদেশে লেজার লাইটের দাম ৩৯৯ বিডিটি থেকে ৭৯৯ বিডিটি মধ্যে হয়ে থাকে, যা কোয়ালিটি, টাইপ, ব্যাটারি পাওয়ার, ডেম ডিসটেন্স, রেঞ্জ সহ অন্যান্য ফিচারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কিংবা কাটিং শিল্পে ব্যবহার উপযোগী লেজার লাইটের দাম তুলনামূলকভাবে ব্যায়বহুল হয়ে থাকে।
লেজার লাইট টাইপ
- গ্রিন লেজার লাইটঃ গ্রিন লেজার লাইট সাধারণত ৫৩২ এনএম তরঙ্গদৈর্ঘ্যে আলো সরবারহ করে, যা লাল লেজার লাইট বা মাল্টিপল লেজার লাইট এর তুলনায় বেশি দৃশ্যমান হয়ে থাকে। এটি অন্যান্য কালারের লেজার লাইটের তুলনায় বেশি দৃশ্যমান হওয়ায় বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। এই ধরণের লেজার লাইট কাটিং শিল্পে এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পথ নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশে গ্রিন লেজার লাইট যথেষ্ট কম দামে পাওয়া যায়।
- লেজার পয়েন্টারঃ লেজার পয়েন্টার সাধারণত ৫২৩ ন্যানো মিটার থেকে ৬৫০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যে আলো সরবারহ করে থাকে। এটি বেশ পাওয়ারফুল লেজার লাইট। গ্রিন লেজার লাইটের তুলনায় লেজার পয়েন্টারের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে। এই ধরণের লেজার লাইট দিয়ে প্রেজেন্টেশন, বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু কিংবা নির্দিষ্ট ব্যাক্তিকে দৃশ্যমান করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। এছাড়াও, প্রজেক্টর স্ক্রিন, ভিডিও সহ অন্যান্য বিষয়বস্তু যথাযথ ভাবে বোঝাতে লেজার পয়েন্টার যথেষ্ট কার্যকর।
এছাড়াও, টেলিকমিউনিকেশন, চিকিৎসা সহ অন্যান্য বিনোদনমূলক কাজের জন্য উন্নত ফিচার এবং উচ্চ পাওয়ার সম্পন্ন লেজার লাইট ব্যবহার করা হয়। এই ধরণের কাজে ব্যবহার উপযোগী পাওয়ারফুল লেজার লাইট এর দাম বাংলাদেশে ৩০০০ বিডিটি থেকে ১৫,০০০ বিডিটির মধ্যে পাওয়া যায়।
লেজার লাইট কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে
- লেজার লাইট টাইপঃ লেজার লাইট সাধারনত বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ভিন্ন ভিন্ন টাইপ সরবারহ করে থাকে। বিশেষ করে আরজিবি লেজার লাইট বিভিন্ন কালারের বৈচিত্র্য প্রদান করে, যা বিনোদনমূলক কাজে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এছাড়া, সবুজ লেজার লাইট এবং পয়েন্টার মূলত প্রেজেন্টেশন এবং বাইরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, চিকিৎসা, ও কাটিং শিল্পে ব্যবহার উপযোগী পাওয়ারফুল লেজার লাইট বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
- পাওয়ার আউটপুটঃ লেজার লাইটের পাওয়ার আউটপুট সাধারণত মিলিওয়াটে পরিমাপ করা হয়। তাই, নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত শক্তি স্তর সম্পন্ন লেজার লাইট বাছাই করতে হবে। উচ্চ শক্তির লেজার লাইট আরও বেশি দৃশ্যমান হয়ে থাকে। পাশাপাশি দীর্ঘ দূরত্বে পৌঁছতে পারে তবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- কালারঃ লেজার লাইটের কালার সাধারণত বিষয়বস্তু দৃশ্যমান করতে সহায়তা করে। সবুজ লেজার লাইট সাধারণত লাল রঙের লেজার লাইটের চেয়ে উজ্জ্বল এবং আরও বেশি দৃশ্যমান হয়, যা বাইরে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। তাই, লেজার লাইট কেনার ক্ষেত্রে আপনি আপনার কাজের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সঠিক কালার বিবেচনা করবেন।
- পোর্টেবিলিটি এবং ব্যাটারি লাইফঃ বেশির লেজার লাইট ই পোর্টেবল হয়ে থাকে। তবে সবসময় বাইরের ব্যবহারের জন্য বিশেষত ইভেন্টের জন্য আপনার যদি পোর্টেবল লেজারের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে লেজার লাইটের ওজন এবং ব্যাটারি যাচাই করে সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও, ৩০০০ এম এ এইচ থেকে ৬৫০০ এম এ এইচ এর রিচার্জেবল ব্যাটারি যুক্ত লেজার লাইট বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। তাই লেজার ৩০৩ গ্রিন লাইট এর মত হালকা ওজনের মডেল বিবেচনা করার পাশাপাশি ব্যাটারি লাইফ যাচাই করতে পারেন, যা একবার চার্জে দীর্ঘসময় নিশ্চিন্তে ব্যবহার করার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।
- নিরাপত্তা ফিচারঃ প্রতিরক্ষামূলক কেসিং, স্বয়ংক্রিয় শাট-অফ ফাংশন এর মত নিরাপত্তা ফিচার যুক্ত লেজার লাইট বিবেচনা করুন, যা নিরাপত্তা মান পূরণ করে, ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমাবে।
- টেকসইঃ লেজার লাইট সাধারণত প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম, পিভিসি সহ বিভিন্ন উপাদানে তৈরী হয়ে থাকে। তাই, কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই লেজার লাইট টেকসই হবে কিনা তা যাচাই করতে হবে
লেজার লাইট ব্যবহার করার জন্য নিরাপত্তা সতর্কতা
- লেজার লাইটের আলো সরাসরি চোখে পড়লে চোখের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই চোখের সুরক্ষায় সঠিক গুগলস ব্যবহার করতে হবে। কারণ উচ্চ-ক্ষমতার লেজার লাইটের এক্সপোজার দৃষ্টিশক্তি হ্রাস সহ চোখের স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে।
- লেজার লাইট কখনোই আকাশপথে ব্যবহার করা যাবে না। কারণ লেজার লাইটের আলো আকাশে উড়ন্ত বিমানের পাইলটদের বিমান পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে।
- চিকিৎসা ক্ষেত্রে লেজার লাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই লেজার অপারেটরদের নিরাপদে লেজার চালানোর জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতে হবে।