ব্যানার প্রিন্টার কেনাকাটা
ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন হচ্ছে এমন এক ধরনের প্রিন্টিং ডিভাইস যা উচ্চ-মানের এবং বড়-ফরম্যাটের ব্যানার প্রিন্ট করতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। বিডিতে এই ধরণের ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন মূলত প্রথাগত প্রিন্টিং পদ্ধতির বিপরীতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ইলেকট্রনিক ফাইল ব্যবহার করে। এই প্রিন্টার ভিনাইল, ফ্যাব্রিক, এবং পিভিসির মতো বিভিন্ন উপকরণে প্রাণবন্ত রঙ ব্যবহার করে উচ্চ-রেজোলিউশন ব্যানার বা ছবি প্রিন্ট করে থাকে। তাছাড়া, ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিন ব্যবহারের সহজলভ্যতার পাশাপাশি কাস্টমাইজেশন, খরচ সাশ্রয়ী, উচ্চ-মানের প্রিন্ট, এবং পরিবেশ-বান্ধব হয়ে থাকে।
ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনের দাম কত?
বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিনের দাম প্রিন্টিং মেশিনের ব্র্যান্ড, মডেল, আকার, এবং বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে দামের পার্থক্য হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনের দাম ১,৩৫,০০০ টাকা থেকে শুরু হয় যা সাধারণত সিংগেল ফাংশন, ২৪০০ x ১২০০ পিক্সেল ডিপিআই রেজোলিউশনে সিএডি, জিআইএস, এবং পোস্টার তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, ভিএসসডি টেকনোলোজি, ইন্টেলিজেন্ট ইক্লোশন ফাংশন, মাল্টিকালার কালি, এবং প্রায় সব ধরণের ব্যানার প্রিন্টিং সক্ষমতা সম্পন্ন ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিন দামে কিছুটা ব্যায়বহুল।
ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন কেনার আগে কি কি দেখতে হবে?
ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন কেনার আগে গুণগত মান যাচাই করার পাশাপাশি মিডিয়া সামঞ্জস্যতা, মুদ্রণের গতি, স্থায়িত্ব, এবং বাজেট সামঞ্জস্যতা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত। সঠিক ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিন বাছাই করতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবেঃ
১। প্রিন্ট কোয়ালিটিঃ ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন কেনার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে প্রিন্টিং কোয়ালিটি যাচাই। প্রাণবন্ত রঙ এবং বিবরণ সহ উচ্চ-রেজোলিউশনের ব্যানার, পোস্টার, এবং ছবি প্রিন্ট তৈরি করতে পারে এমন ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন নির্বাচন করতে হবে। পাশাপাশি পোস্টার, ব্যানার প্রিন্টিং, এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রিন্ট রেজোলিউশন, কালার গামু্ট, এবং কালির ধরন বিবেচনা করা উচিত।
২। মিডিয়া সামঞ্জস্যতাঃ ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে প্রিন্টিং মিডিয়ার ধরন বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনে বিভিন্ন ধরণের ব্যানার তৈরি করতে ভিনাইল, ফ্যাব্রিক এবং পিভিসি সহ বিভিন্ন উপকরণ পরিচালনা করা যাবে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া উচিত।
৩। মেশিনের আকারঃ পছন্দসই আকারের ব্যানার প্রিন্ট করার জন্য ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিনের প্রস্থ যাচাই করে নেওয়া উচিত। এমনকি সেট আপের জায়গা বিবেচনা করে মেশিনের আকার বিবেচনা করা উচিত যেন কর্মক্ষেত্রে ভালো ভাবে ফিট হয়।
৪। প্রিন্টিং স্পীডঃ অধিক পরিমানে প্রিন্ট করার জন্য দ্রুত প্রন্টিং গতি সহ ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিন বিবেচনা করা উচিত। তবে বিডিতে দ্রুত প্রিন্টিং গতি সম্পন্ন ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনের দামে কিছুটা ব্যয়বহুল হবে।
৫। রক্ষণাবেক্ষণঃ ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে এমন একটি মেশিন বিবেচনা করা উচিত যা সহজে রক্ষণাবেক্ষণ করার পাশাপাশি ভাল প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে। এমনকি বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিনের পার্টসের সহজল্যতা ও দামে সাশ্রয়ী হবে কিনা তা বিবেচনা করা উচিত।
৬। বাজেট সামঞ্জস্যতাঃ ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন কেনার আগে পিভিস ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনের দাম বাজেটের সাথে সামঞ্জস্য হবে কিনা তা যাচাই করার উচিত। তাছাড়া শুধুমাত্র ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনের দাম বিবেচনা করলেই হবে না, কেনার পরবর্তী সময়ে কালি, মিডিয়া, এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বিবেচনা করতে হবে।
সামগ্রিকভাবে, ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে উপরোক্ত বিষয়গুলো ব্যবহারকারীর জন্য সঠিক ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন বেছে নিতে সহায়ক হবে।
ডিজিটার প্রিন্টিনং মেশিনের মাধ্যমে কি কি প্রিন্ট করা যায়?
ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনগুলি বিস্তৃত পরিসরে ব্যানার, পোস্টার, এবং ছবি প্রিন্ট করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যা বিভিন্ন বিপণন সামগ্রীর ভিন্ন ভিন্ন সাইজ এবং কাস্টমাইজড ব্যানার তৈরির জন্য আদর্শ করে তুলবে।
- ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন সাধারণত ব্যানার, সাংকেতিক চিহ্ন এবং গাড়ির গ্রাফিক্স তৈরির জন্য ভিনাইলের উপর নমনীয় এবং টেকসই প্রিন্টিং করা যাবে।
- পলিয়েস্টার এবং নাইলনের মতো কাপড় যেমন পতাকা, ব্যানার এবং অন্যান্য টেক্সটাইল পণ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন দিয়ে সহজেই প্রিন্ট করা যাবে।
- বাহ্যিক ভাবে ব্যবহার উপযোগী পিভিসি ব্যানার যা জালের ন্যায় হবে এবং বাতাস আসা যাওয়াতে নষ্ট হবে না, এই ধরণের ব্যানার তৈরি করা যাবে ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিন দিয়ে।
- ডিজিটাল ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন দিয়ে চকচকে পোস্টার, ফ্লায়ার, ম্যাট এবং কার্ডস্টক পেপার সহ বিভিন্ন ধরণের কাগজে উচ্চ-মানের প্রিন্ট তৈরি করা যাবে।
- উইন্ডো ফিল্ম এবং ব্যাকলিট ফিল্ম সহ বিভিন্ন ফিল্ম উপকরণে ভিন্ন ভিন্ন সাইজের ব্যানার তৈরিতে সহায়ক হবে ব্যানার প্রিন্টিং মেশিন।
- এমনকি ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিন দিয়ে ফাইন আর্ট প্রিন্ট, গ্যালারি মোড়ক এবং অন্যান্য ধরণের সাজসজ্জার জন্য ব্যানার তৈরি করা যাবে।
ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনে কোন ধরণের কালি ব্যবহার করা হয়?
ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনের অ্যাপ্লিকেশন এবং প্রিন্টিং উপাদানের উপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের কালি ব্যবহার হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনে সাধারণত ইউভি কিউরেবল, ডাই সাব্লিমেশন, ল্যাটেক্স, পানীয় কালির পাশাপাশি সলভেন্ট কালি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই ব্যবহারের উপকরণ বিবেচনায় নিয়ে ব্যানার প্রিন্টিং কালি বাছাই করে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্যানার প্রিন্টিং মেশিনের জন্য সহজে ও সাশ্রয়ী দামে গুণগত মান সম্পন্ন বিভিন্ন ধরণের কালি পাওয়া যায়।