বারকোড প্রিন্টার কেনাকাটা
বারকোড প্রিন্টার কি?
বারকোড প্রিন্টার হল বারকোড প্রিন্ট করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রিন্টিং ডিভাইস যা বারকোড লেবেল, কিউআর কোড এবং ট্যাগ প্রিন্ট করার জন্য ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে বারকোড প্রিন্টার লেভেল প্রিন্টার নামেও পরিচিত।
প্রিন্টিং প্রযুক্তি কোন ধরণের সবচেয়ে ভাল?
বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির বারকোড প্রিন্টার ব্যবহার হয়ে থাকে। কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে বারকোড প্রিন্টার নির্বাচন করা উচিত কারণ বাংলাদেশে বারকোড প্রিন্টারের দাম এটির উপর অনেকটাই নির্ভর করে। পদ্ধতি গুলো হলঃ
ডিরেক্ট থার্মাল বারকোড প্রিন্টিংঃ সরাসরি তাপ প্রয়োগ করে বারকোড প্রিন্ট করার জন্য ডিরেক্ট থার্মাল প্রিন্টার ব্যবহার করা হয়। এটি দিয়ে কম পরিমানে বারকোড প্রিন্ট যেমন প্লাস্টিকের ফিল্ম, ফ্ল্যাট প্যাকেজিং, লেবেল স্টক ইত্যাদি তৈরি করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই ধরণের বারকোড বেশি দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় না।
ইঙ্কজেট বারকোড প্রিন্টিংঃ ইঙ্কজেক্ট প্রিন্টার এমন একধরনের বারকোড প্রিন্টার যা দিয়ে সকল ধরণের রঙ্গিন বারকোড প্রিন্ট করার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। এই প্রিন্টারে যে কালি ব্যবহার হয় তা পরিবেশের জন্য কোন প্রকারের ক্ষতি করে না এমন কি খাবারের মধ্যেও এই ধরণের বারকোড ব্যবহার করা যায়।
থার্মাল ট্রান্সফার বারকোড প্রিন্টিংঃ থার্মাল ট্রান্সফার প্রিন্টার কাজের পদ্ধতি পূর্বের পদ্ধতির চেয়ে ভিন্ন। যে স্থানে বারকোড প্রিন্টিং এর কাজ করা হবে সেখানে প্রিন্টার হেড থেকে সরাসরি তাপ দেওয়া হয়। তাপ দেওয়ার ফলে লেবেল বা ফিতায় থাকা মম বা রজন গলে গিয়ে কাগজে প্রিন্ট হয়। এই ধরণের প্রিন্টিং খুবই শক্তিশালী হয় যা অতি বেগুণি রশ্মি, রাসায়নিক পদার্থ এবং অতি ঠান্ডা ও গরম প্রতিরোধ করতে পারে।
বারকোড লেবেলের আকার কি?
বিভিন্ন প্রিন্টারে বিভিন্ন আকারের বারকোড প্রিন্ট করা হয়। যদি বারকোড প্রিন্টার ছোট হয় তাহলে এটি দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত প্রিন্ট করা যাবে এবং বারকোড প্রিন্টার যদি বড় হয় তাহলে সাধারণ প্রস্থের চেয়েও বড় কারের প্রিন্ট করা যাবে।
বারকোড সবচেয়ে ভাল দেখায় কোন রেজ্যুলেশনে?
বারকোড প্রিন্টরের রেজ্যুলেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রিন্টিং এর রেজ্যুলেশন যত বেশি হবে বারকডের উজ্জ্বলতা ততবেশি হবে। সাধারণত ২০৩ ডিপিআই, ৩০০ ডিপিআই এবং ৬০০ ডিপিআই রেজ্যুলেশন বারকোড জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আর বেশি উজ্জ্বলতার প্রয়োজন হলে গ্রাফিক্সের ২ডি ও ৩ডি রেজ্যুলেশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাংলাদেশে বারকোড প্রিন্টারের দাম কত?
বাংলাদেশে বারকোড প্রিন্টারের দাম মাত্র ৭,০০০ টাকা যেটি একটি মিনি বারকোড প্রিন্টার এবং প্রতি সেকেন্ডে ২ থেকে ৫ ইঞ্চি সাইজের বারকোড প্রিন্ট করতে পারে। তবে ১০,০০০ টাকা থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে খুব উন্নতমানের বারকোড প্রিন্টার যাবে যেগুলোর গতি অনেক বেশি। বাংলাদেশে বারকোড প্রিন্টারের দাম নির্ধারণ হয় বারকোড প্রিন্টারের সাইজ, ফাংশন, রেজুলেশন এবং প্রিন্টিং স্পীডের উপর নির্ভর করে।
বিভিন্ন বারকোড প্রিন্টারগুলি কী কী?
ডেস্কটপ বারকোড প্রিন্টারঃ বারকোড প্রিন্টিং এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন দুটি জিনিস হচ্ছে স্থান ও বাজেট। কোন স্থানে প্রিন্ট করতে হবে এবং বাংলাদেশে এর খরচ কেমন হবে? এই দুটি জিনিস মাথায় রেখে প্রিন্টর কিনতে গেলে তাহলে আপনার জন্য সেরা বারকোড প্রিন্টার হবে ডেস্কটপ বারকোড প্রিন্টার। অফিস এবং দোকানের কাজ করার জন্য এই ধরণের প্রিন্টার আদর্শ। এটি দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রিন্ট করা যাবে।
ইন্ডাসট্রিয়াল প্রিন্টারঃ একসাথে অনেক বেশি প্রিন্টিং এর কাজ করার জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রিন্টার ব্যবহার করা হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রিন্টার দিয়ে অনেক ধরণের কাজ ও করা যায় যেমন বারকোড তৈরিতে এবং ধাতব পদার্থের উপরে নকশা তৈরিতে। এই প্রিন্টারে অনেক বড় লেবেল রোল ব্যবহার হয় ফলে এটি দিয়ে ১ সেন্টিমিটার থেকে ২০ সেন্টিমিটার প্রস্থের লেবেল প্রিন্ট করা যায়।
মোবাইল বারকোড প্রিন্টারঃ মোবাইল বারকোড প্রিন্টারের কাজ ডেস্কটপ বারকোড প্রিন্টারের মতোই তবে ডেস্কটপ প্রিন্টারের মত এত বেশি বড় আকারের প্রিন্ট করা যায় না। এছাড়াও অন্যান্য প্রিন্টারের মত এর ইন্টারনাল মেমোরি কম থাকায় একসাথে অনেক বেশি প্রিন্ট করা যায় না।
রিস্টব্যান্ড বারকোড প্রিন্টারঃ সাধারণ প্রিন্টারের চেয়ে এর কাজের ধরণ সম্পূর্ন আলাদা। রিস্টব্যান্ড বারকোড প্রিন্টার দিয়ে হাতের কব্জির বারকোড তৈরি করার সময় হাইজিনের সাথে কিছু আন্টিব্যক্টেরিয়াল রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এই ধরণের রিস্টব্যান্ড বারকোড গুলো বেশির ভাগ সময়ে হাসপাতালে ব্যবহার হয়ে থাকে।
বারকোড প্রিন্টার দিয়ে কি স্টিকার প্রিন্ট করা যায়?
হ্যাঁ, বারকোড প্রিন্টার দিয়ে স্টিকার প্রিন্ট করা যায়। বারকোড প্রিন্টার মূলত বারকোডের তথ্য ধারণ করা লেবেল বা স্টিকার প্রিন্ট করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তাছাড়া, প্রডাক্ট শনাক্তকরণ, ট্র্যাকিং এবং স্ক্যান করার উদ্দেশ্যে প্রডাক্টে, প্যাকেজিংয়ে মূলত স্টিকার ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে বারকোড প্রিন্টার সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন
বারকোড প্রিন্টার কি কালার লেভেল প্রিন্ট করতে পারে?
উত্তরঃ বারকোড প্রিন্টার দিয়ে কালার লেভেল প্রিন্ট করা যায় না। কারণ বারকোড প্রিন্টার সাধারণত প্রোডাক্ট কিংবা অন্যান্য উপদানের তথ্য সমূহ প্রিন্ট করার জন্য কালো কালার ব্যবহার করে থাকে।
কিউআর কোড প্রিন্ট করতে কি বারকোড প্রিন্টার ব্যবহার করা যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, বারকোড প্রিন্টার দিয়ে কিউআর কোড প্রিন্ট করা যায়। অনেক বারকোড প্রিন্টার দিয়ে কিউএর কোড সহ ২ডি বারকোড প্রিন্ট করা যায়।
বারকোড প্রিন্টারের প্রিন্টিং স্পিড কত?
উত্তরঃ বারকোড প্রিন্টারের প্রিন্টিং স্পিড মূলত মডেল এবং সেটিংসের উপর নির্ভর করে পরিবর্তন হয়ে থাকে। তবে, বারকোড প্রিন্টার দিয়ে গড়ে প্রতি সেকেন্ডে কয়েক ইঞ্চি থেকে সর্বোচ্চ ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত লেবেল প্রিন্ট করা যায়।