কেভিএম স্যুইচ কেনাকাটা
কেভিএম সুইচ হার্ডওয়্যার ডিভাইসটি কিবোর্ড, মনিটর এবং মাউস সেটআপের সাথে ব্যবহার করে একাধিক কম্পিউটার একসাথে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বর্তমানে, বিডিতে কেভিএম সুইচ সাধারণত ডেটা সেন্টার, সার্ভার রুম এবং অন্যান্য আইটি সম্পর্কিত কোম্পানি ব্যবহার করা হয়। যার ফলে কাজের প্রয়োজনে এডমিনিস্ট্রেটররা একাধিক কম্পিউটারকে একই জায়গা থেকে পরিচালনা করা যায়। পাশাপাশি ডেটা সেন্টার, সার্ভারের বিশৃঙ্খলতা, শক্তি সঞ্চয় এবং কাজকে গতিশীল রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া, একাধিক কম্পিউটার পরিচালনার জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ এবং সাশ্রয়ী সমাধান হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশে কেভিএম সুইচের ব্যবহার অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিডিতে কয় ধরনের কেভিএম সুইচ পাওয়া যায়?
ব্যবহারকারীদের চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের কেভিএম সুইচ পাওয়া যায়। বর্তমানে বিডিতে উল্লেখযোগ্য যে কেভিএম সুইচগুলো পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
ডেস্কটপ কেভিএম সুইচঃ ছোট থেকে মাঝারি আকারের ব্যবসায় কিংবা অফিসে ব্যবহারের জন্য মূলত ডেস্কটপ কেভিএম সুইচ ডিজাইন করা হয়েছে। এই ধরনের কেভিএম সুইচ সাধারণত একক কনসোল ব্যবহার করে সর্বোচ্চ চারটি কম্পিউটার পরিচালনা করা যায়।
র্যাক-মাউন্ট কেভিএম সুইচঃ র্যাক-মাউন্ট কেভিএম সুইচ সাধারণত ডেটা সেন্টার বা সার্ভার রুমে ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই ধরণের কেভিএম সুইচ মূলত ১৯ ইঞ্চি ডিসপ্লে সহ একক কনসোল প্যানেল রয়েছে যা র্যাকে মাউন্ট করা যায় সহজেই। এমনকি নির্ধারিত স্থান থেকে একাধিক কম্পিউটারকে সহজেই পরিচালনা করা যায়।
এছাড়াও, বর্তমানে বাংলাদেশে উন্নত এনক্রিপশনযুক্ত আইপি ভিত্তিক কেভিএম সুইচ, ওয়্যারলেস কেভিএম সুইচ এবং নিরাপদ কেভিএম সুইচ পাওয়া যায়।
কেভিএম সুইচের দাম কত?
বাংলাদেশে কেভিএম সুইচের দাম ৪,৫০০ টাকা থেকে শুরু হয় যাতে ২-৪ পোর্ট থাকে তাছাড়া সাধারণত এর দাম সুইচের ধরণ, ব্র্যান্ড এবং উন্নত বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে, বর্তমানে ৮-১৬ পোর্ট সংখ্যা, উন্নত সিকিউরিটি সিস্টেমসহ বিডিতে কেভিএম সুইচের দাম ২৬,০০০ টাকা থেকে শুরু।
কেভিএম সুইচ কেনার আগে কি কি দেখতে হবে?
কেভিএম সুইচ কেনার আগে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা উচিত যা ব্যবহারকারী প্রয়োজনীয়তা পূরণ করবে। তাই, কেনার আগে যে বিষয় গুলো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
- কেভিএম সুইচ কেনার পূর্বে প্রথমত কতগুলো কম্পিউটার সংযোগ করা যাবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিচালনা করা যাবে কিনা তা বিবেচনা করতে হবে।
- এইচডিএমআই, ভিজিএ, ডিভিআই এবং ডিসপ্লেপোর্ট সহ বিভিন্ন সংযোগ ব্যবস্থা রয়েছে কেভিএম সুইচে। তাই কেভিএম সুইচ কেনার আগে ব্যবহৃত কম্পিউটার এবং ডিসপ্লে ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে কিনা সে সম্পর্কে যাচাই করে নিতে হবে।
- কেভিএম সুইচটি কম্পিউটারের ডিসপ্লে রেজোলিউশন সমর্থন করে কিনা যাচাই করে নিতে হবে।
- ব্যবহারকারীর সুবিধার্থে কম্পিউটারে দ্রুত ও সহজে পরিবর্তন আনার জন্য কেভিএম সুইচে হটকি ব্যবহার করা হয়েছে। তাই কেনার আগে কেভিএম সুইচের সাথে মানানসই হটকিসহ বাছাই করে নেওয়া উচিত।
- কম্পিউটারের সাথে যদি ইউএসবি ডিভাইস কানেক্ট করতে হয় সেক্ষেত্রে কেনার আগে কেভিএম সুইচ সাথে যথেষ্ট ইউএসবি পোর্ট রয়েছে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া উচিত।
- কম্পিউটার থেকে অডিও পরিচালনা করার প্রয়োজন হলে কেভিএম সুইচে অডিও সংযোগের ব্যবস্থা রয়েছে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া উচিত।
- দূরবর্তী অবস্থান থেকে কম্পিউটার পরিচালনা করতে চাইলে আইপি ভিত্তিক কেভিএম সুইচ বাছাই করে নেওয়া উচিত।
- ডেটা ও সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখার জন্য অথেনটিকেশন ও ডাটা এনক্রিপশন সহ উন্নত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন কেভিএম সুইচ যাচাই করে নেওয়া উচিত।
কেভিএম সুইচ এর সুবিধা কি?
কেভিএম সুইচ মূলত ডেটা সেন্টার, সার্ভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা বাড়াতে সহায়তা করার পাশপাশি যথেষ্ট খরচ সাশ্রয়ী করে। তবে ব্যবহারকারীর চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে কেভিএম সুইচ নির্দিষ্ট সুবিধা প্রদান করে থাকে। তাই বাংলাদেশে কেভিএম সুইচ কেনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
১। উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধিঃ কেভিএম সুইচের মাধ্যমে ব্যবহারকারী একটি একক কিবোর্ড, মাউস এবং মনিটর থেকে একাধিক কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যার ফলে একাধিক কিবোর্ড, মাউস এবং মনিটরের মধ্যে স্যুইচ করার প্রয়োজনীয়তা দূর করে এবং কাজের গতিকে তরান্বিত করে।
২। খরচ সাশ্রয়ীঃ কেভিএম সুইচের মাধ্যমে একক কনসোল ব্যবহার করে একাধিক কম্পিউটার পরিচালনা করা যাবে ফলে একাধিক কিবোর্ড, মাউস এবং মনিটরের মতো হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হবে না। এছাড়াও কেভিএম সুইচ একাধিক সিস্টেমের জন্য প্রয়োজনীয় স্থানের পরিমাণ কমাতে সহায়ক হবে, যার ফলে রিয়েল এস্টেট খরচ বাঁচাবে।
৩। বিশৃঙ্খলা হ্রাসঃ কেভিএম সুইচে একাধিক কিবোর্ড, মাউস এবং মনিটরের প্রয়োজনীয়তা দূর করার পাশাপাশি ক্যাবলের বিশৃঙ্খলা কমাতে সাহায্য করে। এটি কর্মক্ষেত্রকে পরিষ্কার এবং সুসংগঠিত করতে সহায়তা করে, যা পরবর্তীতে উন্নত উত্পাদনশীলতার দিকে পরিচালিত করবে।
৪। উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ এনক্রিপশন এবং অথেনটিকেশন এর মত উন্নত নিরাপত্তা সুবিধা রয়েছে কেভিএম সুইচে। যার ফলে সংবেদনশীল ডেটা এবং সিস্টেমকে অননুমোদিত অ্যাক্সেস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
৫। দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনাঃ কেভিএম সুইচ ব্যবহারে ব্যবহারকারীদের দূরবর্তী অবস্থান থেকে যেকোনো নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা প্রদান করে থাকে। ফলে দূরবর্তী অবস্থান থেকে সার্ভার বা অন্যান্য সিস্টেম পরিচালনা করার জন্য আইটি এক্সপার্টদের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।