জিমের সরঞ্জাম কেনাকাটা
ব্যক্তিগত জীবনে সুস্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা। শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরী। ব্যায়াম করার জন্য কিছু সরঞ্জাম অনেক দরকারি ভূমিকা পালন করে। আর এই সরঞ্জাম গুলিকে বলা হয় জিমের সরঞ্জাম। বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের জিমের সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কি কি জিমের সরঞ্জাম পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের জিমের সরঞ্জাম পাওয়া যায়। এই জিমের সরঞ্জাম গুলো মানবদেহের মাংস পেশী বাড়ানোর পাশাপাশি আরও বিভিন্ন উপকার করে থাকে। নিচে বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন কিছু জিম সরঞ্জামের নাম দেয়া হলোঃ
- ডাম্বেল
- ফ্লোর ম্যাট
- হ্যান্ড গ্রিপ
- সিট আপ বার
- টামি ট্রিমার
- পুশ আপ বার
- চেস্ট পুল
- রোপ
- বডি ফিটনেস হুইল
- আর্ম ডেভেলপার
- সাইকেল
- ট্রেডমিল
জিমের সরঞ্জাম গুলো মানব দেহে কি কি উপকার করে?
বিভিন্ন রকমের জিমের সরঞ্জাম মানব দেহে বিভিন্ন রকমের উপকার করে থাকে। এদের একেকটি সরঞ্জাম একেক কাজে ব্যবহৃত হয়। নিচে এগুলোর উপকার সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হলোঃ
ডাম্বেলঃ মানব দেহে ডাম্বেল একাই কয়েকটি উপকার করে থাকে। হাতের মাংস পেশির সঠিক গঠনে বিভিন্ন সাইজের ও ওজনের ডাম্বেল ব্যবহার করা হয়। বাইসেপস, ট্রাইসেপস, শোল্ডার এবং চেস্ট পাম্পের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন ওজনের ও সাইজের ডাম্বেল পাওয়া যায়।
ফ্লোর ম্যাটঃ জিমের সরঞ্জাম হিসাবে ফ্লোর ম্যাট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ফ্লোর ম্যাট ব্যক্তিগত ভাবে ব্যবহার করা উচিৎ। কেননা এতে শুয়ে থেকে বিভিন্ন ব্যায়াম করতে হয় ফলে শরীরের ঘাম লেগে থাকে। একাধিক মানুষ একটি ফ্লোর ম্যাট ব্যবহার করলে একজনের শরীরের ঘাম আরেকজনের শরীরে লাগলে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়াতে পারে। ফ্লোর ম্যাটে বেলি, পুশ আপ, থাই এবং অন্যান্য যেগুলো শুয়ে থেকে ব্যায়াম করতে হয় সেগুলো করা যায়।
হ্যান্ড গ্রিপঃ হ্যান্ড গ্রিপ হাতের কব্জির শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সাইজের হ্যান্ড গ্রিপ পাওয়া যায়। হ্যান্ড গ্রিপকে প্রয়োজন মতো শক্ত ও ঢিলা করা যায়।
সিট আপ বারঃ সিট আপ বার মূলত পুল আপ, বেলি এবং থাইয়ের ব্যায়ামের সময় পায়ের পাতাতে গ্রিপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এগুলো সিলিকন ও নরম ফোমের সাহায্যে তৈরি হয় বলে পায়ের পাতা স্লিপ করে না। অসাধারণ গ্রিপের সাথে ব্যায়াম করা যায়।
টামি ট্রিমারঃ টামি ট্রিমার যারা অতিরিক্ত মোটা তাদের ট্রাইসেপসে থাকা চর্বিকে কমায় এবং চিকনদের ট্রাইসেপস ফোলাতে সাহায্য করে। তবে টামি ট্রিমার অতিরিক্ত মোটা মানুষদের ওজন কমানোর জন্য বেশি ব্যবহার করা হয়।
পুশ আপ বারঃ পুশ আপ বার মূলত পুশ আপ দেয়ার সময় হাতল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহার করা না হলে হাতে গ্রিপ পাওয়া যায় না, আর হাতে গ্রিপ পাওয়া না গেলে হাত পিছলে মাটির সাথে ব্যথা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু পুশ আপ দেয়ার সময় শরীরের সব ভার সামনের দিকে এসে পরে তাই পুশ আপ বার ব্যবহার করা একান্ত ভাবে জরুরী। পুশ আপ বার ব্যবহার করার আরেকটি ভাল দিক হচ্ছে এটি ব্যবহার করলে মাটি থেকে সঠিক উচ্চতায় শরীর থাকে ফলে বুকের মাংস পেশি সঠিক ভাবে ফুলে উঠে।
চেস্ট পুলঃ জিমের সরঞ্জামের মধ্যে চেস্ট পুল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কারণ চেস্ট পুলের সাহায্যে বুকে বা বুকের অন্যান্য স্থানে থাকা অতিরিক্ত চর্বি কমে আসে এবং বুক ও কাধের হাড় চওড়া হয়।
রোপঃ সাধারণ দড়ি এবং জিমের দড়িতে অনেক তফাৎ আছে যদিও এরা দেখতে প্রায় একই। জিমের দড়ি গুলো আকারে মোটা হয়। দুই হাতের বাহুর জড়তা কাটাতে এই দড়ি ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন খেলোয়াড়দের জিমের দড়ি ব্যবহার করতে বেশি দেখা যায়।
বডি ফিটনেস হুইলঃ বডি ফিটনেস হুইল দেখতে অনেকটা ডাম্বেলের মতো হয়। তবে ডাম্বেলের মতো দুই পাশে দুইটি গোলাকার ভারি বস্তু থাকলেও বডি ফিটনেস হুইলে এগুলো চাকা হয়ে থাকে। বডি ফিটনেস হুইল দিয়ে ডলফিন পুশ আপ দেয়া হয় ফলে কাধ ও পিঠ চওড়া হয় এবং মাংস পেশি ফুলে উঠে।
আর্ম ডেভেলপারঃ আর্ম ডেভেলপার হাতের বাহুতে শক্তি বাড়ানোর কাজে ব্যবহার হয় এবং হাতের বাহুকে চওড়া করতে ব্যবহৃত হয়।
সাইকেলঃ জিমের সরঞ্জামের মধ্যে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য বিশেষ ভাবে উপযোগী হলো সাইকেল। তবে এই সাইকেল গুলো সাধারণ বাইসাইকেলের মতো না। জিমের বাইসাইকেল গুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানেই দাড়িয়ে থাকে। এই সাইকেলে প্যাডেল দেয়া যায় বলে পেট, কোমর এবং তল পেটের চর্বি কমায়। এছারাও পায়ের মাংস পেশি বাড়াতে এই সাইকেল গুলো সেরা ভূমিকা পালন করে অন্যান্য জিমের সরঞ্জামের তুলনায়। জিমের সাইকেল গুলো ইলেক্ট্রনিক এবং সাধারণ দুইটি বৈশিষ্ট্যেই পাওয়া যায়।
ট্রেডমিলঃ ট্রেডমিল ব্যবহার করা হয় শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ও ওজন কমানোর জন্য। এটিতে দৌড়ানো যায় খুব সহজেই এবং ওজন কমানোর জন্য এটি বিশেষ ভাবে কার্যকরি।
বাংলাদেশে জিমের সরঞ্জামের দাম কত?
বাংলাদেশে জিমের সরঞ্জাম ২৮৯ টাকা থেকে শুরু করে ২০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম জিমের সরঞ্জাম গুলো বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয় বলে এদের ওজন ও সাইজ আলাদা হয়ে থাকে। বৈদ্যুতিক জিমের সরঞ্জাম গুলোর দাম একটু বেশি হলেও এগুলোতে অনেক রকমের সুবিধা পাওয়া যায়। আর বৈদ্যুতিক সংযোগ লাগে না এমন জিমের সরঞ্জামের দাম খুব সস্তা। মূলত বাংলাদেশে জিমের সরঞ্জামের দাম নির্ভর করে আকার, ওজন, কাজের ধরণ এবং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর।