জিএসএম কাটার কেনাকাটা
ফ্যাব্রিকের জিএসএম নির্ধারণ করতে জিএসএম কাটারের পাশাপাশি একটি ওজনের স্কেল এবং একটি জিএসএম প্যাড ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে প্রয়োজন অনুসারে ফ্যাব্রিকের মান নির্ধারণের জন্য জিএসএম কাটার ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ফ্যাব্রিকের গুনমান পরিক্ষা করার জন্য জিএসএম কাটার ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ও কোয়ালিটির জিএসএম কাটার মেশিন তুলনামূলক কম দামে বিডিস্টলে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কয় ধরনের জিএসএম কাটার ব্যবহার করা হয়?
বাংলাদেশে মূলত দুই ধরণের জিএসএম কাটার ব্যবহার করা হয়। জিএসএম কাটার এর ধরণ সম্পর্কে বিস্তারিতঃ
সার্কেল জিএসএম কাটারঃ এই ধরণের জিএসএম কাটার দেখতে অনেকটা চাকতির মত হওয়ায় এর নাম সার্কেল জিএসএম কাটার। এই জিএসএম কাটার রাউন্ড জিএসএম কাটার নামেও অনেকাংশে পরিচিত। সার্কেল জিএসএম কাটার মেশিন এর সাথে একাধিক এসএস ব্লেড ব্যবহার করা যায়। এবং, প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাব্রিকের জন্য বিভিন্ন সাইজের ও বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন সার্কেল জিএসএম কাটার, বাংলাদেশে পাওয়া যায়। সার্কেল জিএসএম কাটারগুলো দামে তুলনামূলক কম হয়ে থাকে।
হাইড্রলিক জিএসএম কাটারঃ হাইড্রোলিক জিএসএম কাটার গুলো তুলনামূলক সাইজে বড় হয়ে থাকে। হাইড্রলিক জিএসএম কাটারে একটি আলাদা হ্যান্ডেল থাকে যার সাহায্যে দ্রুত সময়ে ফ্যাব্রিকের নমুনা সংগ্রহ করা যায়। এই ধরণের জিএসএম কাটার ব্যবহারে কম সময়ের মধ্যে অধিক ফ্যাব্রিক নমুনা সংগ্রহ করা যায়। হাইড্রলিক জিএসএম কাটারের দাম তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে।
এছাড়াও, বাংলাদেশে কিছু কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজের সুবিধার্থে অটোমেটিক জিএসএম কাটারের ব্যবহার দেখা যায়। তবে, অটোমেটিক জিএসএম কাটারের দাম তুলনামূলক সবচেয়ে বেশী হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে জিএসএম কাটারের দাম কত?
বর্তমানে, জিএসএম কাটারের দাম এর কোয়ালিটি, কাটিং এরিয়া, এবং কাটিং থিকনেসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়ে। বাংলাদেশে জিএসএম কাটারের দাম ২,৮০০ টাকা থেকে শুরু যা ১০০ বর্গ সেমি নমুনা সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত এবং সাথে একটি রাবার প্যাড রয়েছে। তাছাড়া, বাংলাদেশে হাইড্রলিক জিএসএম কাটার মেশিন এর দাম ২২,০০০ টাকা থেকে শুরু হয় যা ০.১ মিমি থেকে ১০ মিমি থিকনেস পর্যন্ত ফ্যাব্রিকের নমুনা সংগ্রহ করতে পারে। প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট কম থেকে বেশী দামের জিএসএম কাটার মেশিন বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
জিএসএম কাটার কেনার আগে আর কি কি দেখতে হবে?
গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে ফ্যাব্রিকের নির্দিষ্ট মান নির্ধারণে ও ফ্যাব্রিকের নির্দিষ্ট মান নিয়ন্ত্রণে জিএসএম কাটার ব্যবহার করা হয়। তাই, জিএসএম কাটার কেনার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় জানতে হবে। বিস্তারিত উল্লেখ করা হলঃ
১। ধরণঃ বাজেট ও প্রয়োজন অনুসারে জিএসএম কাটারের ধরণ নির্বাচন করতে হবে। সাধারণত সার্কেল জিএসএম কাটার ও হাইড্রলিক জিএসএম কাটার এই দুই ধরনের জিএসএম কাটার বাংলাদেশে ব্যবহার করা হয়। তাই, নিজের জন্য উপযুক্ত জিএসএম কাটারের ধরণ নির্বাচন করুন।
২। কাটিং এরিয়াঃ জিএসএম কাটিং মেশিন কেনার আগে এর কাটিং এরিয়া সম্পর্কে বিবেচনা করতে হবে। সাধারণত জিএসএম কাটিং মেশিনগুলোর কাটিং এরিয়া ৪৫ থেকে ১০০ বর্গ সেমি হয়ে থাকে। এই মেশিনের কাটিং এরিয়ার ভিত্তিতে কতটুকু ফ্যাব্রিক নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করা যাবে তা নির্ভর করে। তাই, প্রয়োজন অনুসারে কাটিং এরিয়া বিবেচনায় জিএসএম কাটার নির্বাচন করতে হবে।
৩। কাটিং থিকনেসঃ জিএসএম কাটিং মেশিনের কাটিং থিকনেস এর উপর নির্ভর করে যে মেশিনটি সর্বোচ্চ কতটুকু মোটা ফ্যাব্রিক থেকে কেটে নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে। সাধারণত জিএসএম এর আদর্শ কাটিং থিকনেস হলো ০.১ মিমি থেকে ১০ মিমি। তাই, জিএসএম কাটিং মেশিন কেনার আগে এর কাটিং থিকনেস বিবেচনা করতে হবে।
৪। কাটার ব্লেডঃ জিএসএম কাটারগুলোতে প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে এর ব্লেড ব্যাস এর ভিন্নতা দেখা যায়। তাছাড়া, অনেক জিএসএম কাটারে একাধিক এসএস ব্লেড ব্যবহার করা যায় যাতে সহজেই ফ্যাব্রিক থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যায়। তাই, প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট ব্লেড ব্যাস সম্পন্ন জিএসএম কাটার নির্বাচন করতে হবে বা প্রয়োজন অনুসারে একসাথে একাধিক এসএস ব্লেড ব্যবহার করা যায় এমন জিএসএম কাটার নির্বাচন করতে হবে।
৫। নির্মিত উপাদানঃ জিএসএম কাটার সাধারণত অ্যালুমেনিয়াম, স্টিল, ইত্যাদি উপাদান দ্বারা তৈরি করা হয়। তাই, জিএসএম কাটার কেনার আগে এর দাম ও নির্মিত উপাদান এর বিবেচনায় সংগ্রহ করতে হবে।
সামগ্রিকভাবে, নির্দিষ্ট বিষয়গুলো বিবেচনায় যেকোনো গার্মেন্টস বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত জিএসএম কাটার নির্বাচন করা যাবে।