গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কেনাকাটা
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কি এবং এটি দিয়ে কি করা যায়?
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট ছাত্র, শিক্ষক থেকে শুরু করে ডিজাইনার, ইঞ্জিনিয়ার এবং সবার কাজে লাগে। এটি দেখতে সাধারণ ট্যাবলেটের মতো এবং এটি দিয়ে
- হাত দিয়ে ছবি আকা যায়
- অ্যানিমেশন এবং গ্রাফিক্স এর কাজ করা যায়
- বাড়ীর ডিজাইন আকা যায়
- বিভিন্ন জিনিষের মডেল আকা যায়
- কনফারেন্স বা মিটিং এর সময় ছবি বা আউটলাইন আকা যায়
- অনলাইন ক্লাসে এটি সাদা বোর্ড এর মত ব্যবহার করা যায়
আর এই কাজগুলো করতে কলমের পরিবর্তে একটি ডিজিটাল পেন ব্যবহার করা হয় যেটিকে প্রেসার পেন বা স্টাইলাস বলা হয়।
নিচে ২০২১ সালের জন্য গ্রাফিক্স বা ড্রয়িং ট্যাবলেট কেনার কিছু টিপস দেয়া হল।
কোন ধরনের স্ক্রীন ভাল?
স্ক্রীনের সাইজঃ ট্যাবলেটের সাইজ নয় একটিভ এরিয়ার সাইজ দেখে কিনুন। একটিভ এরিয়ার ভিতরই আপনি আকতে পারবেন। সাথে রিডিং এর হাইট দেখে নিতে পারেন।
স্ক্রীনের রেজোলিউশনঃ ট্যাবলেটের ডিসপ্লের ইনপুট রেজোলিউশন বলতে বোঝায় যে প্রতি ইঞ্চিতে (এলপিআই) কত লাইন আছে এবং স্টাইলাস পেন থেকে এটি কতটা সনাক্ত করতে পারে। আর ইনপুট রেজোলিউশন যা এলপিআই দিয়ে বুঝানো হয় যত বেশি হবে তত ভাল।
স্ক্রীন ব্রাইটনেস এবং কনট্রাস্টঃ যত বেশি হবে ভাল। এগুলো প্রয়োজন মত অ্যাডজাস্ট করে নেয়া যায়।
স্ক্রীন প্রেসারঃ আপনার হাতের চাপের উপর নির্ভর করে এটি দিয়ে কত গাড় বা হাল্কা অঙ্কন করা যাবে। গ্রাফিক্স ট্যাবলেট এর প্রেসার যত বেশি হবে তত নিখুঁত ছবি অঙ্কন করা যাবে। বাজারে ভাল মানের ট্যাবলেটে ৮১৯২ লেভেলের প্রেসার থাকে।
কি কি এক্সট্রা কন্ট্রোলস?
দ্রুত কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন ধরনের বাটন আপনার কাজকে ত্বরান্বিত করবে। এগুলোকে "এক্সপ্রেস কি" বলে।
সাইড সুইচ বা স্টাইলাস নিবঃ দুটো বাটন থাকে যেগুলো মাউসের ডাবল ক্লিক বা রাইট ক্লিকের মত কাজ করে। এগুলো কাস্টমাইজ করেও নেয়া যায়।
টাচ রিংঃ ব্রাশ রিসাইজিং এর পাশাপাশি এটি দিয়ে স্ক্রল বা জুম এবং অন্যান্য কাজের জন্যও কাস্টমাইজ করা যায়।
ইরেজারঃ এটি দিয়ে কাগজে পেন্সিলের দাগ যেভাবে মুছে ফেলা হয় সেইভাবেই ব্যবহার করা যায়।
কোন ধরনের গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কেনা উচিৎ?
বাংলাদেশের বাজারে ডিসপ্লে এবং নন-ডিসপ্লে ট্যাবলেট পাওয়া যায়। নন-ডিসপ্লে ট্যাবলেটগুলো কম্পিউটারের সাথে সংযোগ দিয়ে ব্যবহার করতে হয়। এটিতে কোন ডিসপ্লে থাকে না বিধায় বেশ সস্তা হয়ে থাকে। তাই অনলাইন ক্লাস বা মিটিং এর জন্য এগুলো খুব ভাল। আর ডিসপ্লে ট্যাবলেটগুলোকে ড্রয়িং ট্যাবলেটও বলা হয়ে থাকে।
কোন ধরনের পেন বা স্টাইলাস নিবেন?
বাংলাদেশের বাজারে তিন ধরনের আছে।
ব্যাটারি চালিতঃ ব্যাটারি দিয়ে চলে তাই এগুলো একটু ভারি হয়ে থাকে। কিছু দিন পর পর ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হয়।
রিচার্জেবলঃ এগুলোতে চার্জ দিতে হয়।
ব্যাটারি ফ্রিঃ এগুলো সর্বশেষ প্রযুক্তির স্টাইলাস। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সির মাধামে কাজ করে বলে কোন ব্যাটারির দরকার হয় না।
জনপ্রিয় ব্র্যান্ড কী?
আপনি যদি সস্তা ট্যাবলেট কিনতে চান তবে হিউয়ান ট্যাবলেট কিনুন। যদিও হিউয়ান সস্তা তবে এটি প্রাথমিক বা মাঝে মাঝে ব্যবহারকারীদের জন্য ভাল। ওয়াকমের ড্রয়িং ট্যাবলেট প্রফেশনালদের কাছে বেশ জনপ্রিয় কারন এই ট্যাবলেটগুলিতে উচ্চমানের ফিচার রয়েছে। অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলি যেমন এক্সপি-পেন, ভিক্ক বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট এর বর্তমান দাম কত?
অনলাইন ক্লাসের জন্য নন-ডিসপ্লের গ্রাফিক্স ট্যাবলেটগুলো ভাল। এগুলো ৫,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। মাঝারি মানের ট্যাবলেটগুলো বর্তমাণে বাংলাদেশে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ভিতর পাওয়া যায়। ভাল মানের ট্যাবলেট ২৫,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু।
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট দিয়ে অন্য কি করা যেতে পারে?
ডিজিটাল স্বাক্ষর রেকর্ড করার জন্য গ্রাফিক্স ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে। যাইহোক, শুধু স্বাক্ষর নেয়ার জন্য স্বাক্ষর প্যাড অনেক ভাল কাজ করে।