গ্রাফিক্স কার্ড কেনাকাটা
গ্রাফিক্স কার্ড পিসির একটি প্রয়োজনীয় ডিভাইস। অনেক মাদারবোর্ডে গ্রাফিক্স কার্ড সংযুক্ত অবস্থায় থাকে আলাদা করে কিনতে হয় না। তবে এগুলো দিয়ে সাধারণ মানের কাজ করা যায়। কিন্তু প্রফেশনাল কাজের জন্য যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ভিডিও এডিটিং, গেমিং এর জন্য দরকার উন্নত প্রযুক্তির কার্ড। এগুলোকে বিডিতে জিপিউ, ভিডিও কার্ড, গেমিং গ্রাফিক্স কার্ডও বলা হয়ে থাকে। এই গ্রাফিক্স কার্ডে বা জিপিউর সাহায্যে গ্রাফিক্স বা ভিডিওর সকল কাজ নিখুঁত ভাবে করা যাবে।
বাংলাদেশে গ্রাফিক্স কার্ডের দাম কত?
বাংলাদেশে অনেক মডেলের গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যায়। এগুলোর দাম ২,৯০০ টাকা থেকে লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেমন বিডিতে ১জিবি গ্রাফিক্স কার্ডের দাম প্রায় ৩,০০০ টাকা এগুলো মোটামুটি মানের। বিডিতে ২জিবি গ্রাফিক্স কার্ডের দাম কমপক্ষে ৪,৫০০ টাকা এবং এগুলো দিয়ে গেম খেলা থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজ করা যাবে। আর ৪জিবি গ্রাফিক্স কার্ডের বিডিতে ৬,০০০ টাকা থেকে শুরু। যদি কেউ পেশাদার গ্রাফিক্সের কাজ করতে চান তবে টাকা আরো বেশি লাগবে এবং যত দামি গ্রাফিক্স কার্ড হবে তত ভাল হবে।
গ্রাফিক্স কার্ড কেনার আগে কিছু টিপস জানা আবশ্যকঃ
বাংলাদেশে বিভিন্ন মানের গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যায় তাই কেনার আগে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস বিবেচনা করা দরকার যেমন:
১। গ্রাফিক্স কার্ড কেনার আগে সর্বপ্রথম পিসির কম্পাবিলিটির দিক বিবেচনা করতে হবে। পিসির কম্পাবিলিটি অনুযায়ী গ্রাফিক্স কার্ড নির্বাচন করতে হবে। যেমন পিসির গ্রাফিক্স স্লটের কম্পাবিলিটি, মনিটরের রিফ্রেশ রেট এবং পাওয়ার সাপ্লাইয়ারের কম্পাবিলিটি চেক করে গ্রাফিক্স কার্ড কিনতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের পুরোনো পিসির ক্ষেত্রে একটু ভালভাবে দেখে কিনতে হবে।
২। বর্তমানের গ্রাফিক্স কার্ড গুলো আকৃতিতে কিছুটা বড় হয় বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তির কারণে। গ্রাফিক্স কার্ড মূলত পিসির কেসিং-এর মধ্যে লাগানো হয়ে থাকে। তাই কেসিং-এর স্পেস অনুযায়ী গ্রাফিক্স কার্ড কেনা প্রয়োজন যাতে সঠিক ভাবে ফিটিং করা যায়।
৩। আধুনিক সকল গ্রাফিক্স কার্ড গুলোতে এখন ভালো মানের কুলিং সিস্টেম থাকে। গ্রাফিক্স কার্ডের কুলিং সিস্টেম পিসির তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এমনকি গ্রাফিক্স কার্ড স্লটের তাপমাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণ করে গ্রাফিক্স কার্ডের কুলিং সিস্টেম। আপনি যদি গেমিং বা এনিমেশন তৈরী করেন তবে কুলিং সিস্টেম যুক্ত আছে এমন গ্রাফিক্স সিস্টেম ভালো হবে। আর বাংলাদেশের আবহাওয়া একটু গরম বিধায় কুলিং সিস্টেম ভাল হওয়া জরুরি।
৪। গ্রাফিক্স কার্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স র্যাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্রাফিক্স র্যাম যত বেশি হবে গ্রাফিক্স কার্ডের পার্ফোরমেন্স তত ভালো হবে। গ্রাফিক্স কার্ডের স্পীড নির্ভর করবে তার গ্রাফিক্স র্যামের উপর।
৫। গ্রাফিক্স কার্ডের ব্যান্ডউইডথ প্ৰযুক্তি হল ডিডিআর তাই এটি যত আধুনিক হবে তত ভাল হবে। এগুলোকে জিডিডিআর বলা হয়ে থাকে। গ্রাফিক্স কার্ডের কোরগুলোতে ডেটা আদান প্রদানের বৃদ্ধি করতে এই জিডিডিআর ব্যান্ডউইথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের বাজারে জিডিডিআর-৩, জিডিডিআর-৪, জিডিডিআর-৫ এর কার্ড পাওয়া যায়। আপনার বাজেট এবং চাহিদার উপর ভিত্তি করে কিনতে পারেন।
৬। শেডার কোরের মূল কাজ ইমেজ রেন্ডারিং তাই শেডার কোর বেশি হলে ইমেজ প্রসেসিং ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। ইমেজ প্রসেসিং ক্ষমতা বৃদ্ধি হলে ইমেজ গুলো আরও স্বচ্ছ দেখাবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি। গ্রাফিক্স কার্ড কেনার আগে শেডার কোর অবশ্যই চেক করে নিতে হবে।
৭। ট্রানজিস্টরের প্রধান কাজ হলো নয়েজ কমানো। পিসি ব্যবহার করার সময় গ্রাফিক্স কার্ডের পাখার অথবা কার্ড থেকে নির্গত যেকোনো আওয়াজকে কমিয়ে দেয় এই ট্রানজিস্টর বিভিন্ন প্রযুক্তি। তাই ট্রানজিস্টর যুক্ত গ্রাফিক্স কার্ড গুলো কেনা উচিত।
৮। গ্রাফিক্স কার্ডের চিপসেট মূলত দুটি ব্রান্ডের হয়ে থাকে। একটি হল এনভিডিয়া আরেকটি হল এএমমডি। বাংলাদেশে এই দুটি চিপসেটের কার্ড বিভিন্ন ব্রান্ডের নামে পাওয়া যায়। আপনার চাহিদা অনুযায়ী যেকোনটি কিনতে পারেন তবে মাদারবোর্ড সাপোর্ট করে কিনা জেনে নিন।
৯। মাদারবোর্ডের গ্রাফিক্স স্লটের সাথে মিলিয়ে দেখে নিন সাপোর্ট করে কিনা। এখনকার মাদারবোর্ডগুলোতে পিসিআই এক্সপ্রেস স্লট থাকে। এই স্লটের ৩টি ভার্সান আছে তবে পিসিআই এক্সপ্রেস ৩.০ যেটি আধুনিক ভার্সন সেটি কিনলে আগের ভার্সনও সাপোর্ট করবে।
১০। বাজেট কম কিন্তু ভাল মানের কার্ড কিনতে চাচ্ছেন তাহলে ব্যবহৃত গ্রাফিক্স কার্ড কিনতে পারেন। বাংলাদেশে কম দামে ভাল মানের কার্ড পাবেন।