৮কে Drone কেনাকাটা
আকাশে থেকে ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি করার জন্য ৮কে ড্রোন এক ধরণের বিপ্লব তৈরি করেছে। কারণ এটি উচ্চ-রেজোলিউশনে ছবি, ভিডিও ক্যাপচার করার জন্য ৮কে ক্যামেরা, গিম্বল সেন্সর, ৫জি ফ্রিকুয়েন্সি ওয়াইফাই, অ্যাকুরেট পজিশনিং জিপিএস সহ ইন্টেলিজেন্ট ফিচার সরবারহ করে। বাংলাদেশে ব্যাক্তিগত এবং পেশাদার উভয়ের কাছে এই ৮কে ড্রোন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে ৮কে ড্রোন এর দাম কত?
বাংলাদেশে সাধারণত 8K ড্রোনের দাম ১৪,০০০ টাকা থেকে শুরু হয় এবং পেশাদার 8K ড্রোনের দাম ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। অতিরিক্ত ব্যাটারি, প্রোপেলার এবং ক্যারি বক্সের মতো অতিরিক্ত জিনিসপত্র কিনলে দাম বেশি হতে পারে। মনে রাখবেন যে কম দামের ৮কে ড্রোন শুধুমাত্র দৈনন্দিন বিনোদনের জন্য উপযুক্ত এবং এতে সমস্ত বৈশিষ্ট্য নাও থাকতে পারে। তবে ৮কে পেশাদার ড্রোন সমস্ত বৈশিষ্ট্য দিয়ে সজ্জিত এবং আপনি প্রত্যাশিত ৮কে রেজোলিউশন পাবেন।
৮কে ড্রোন কেন কিনবেন?
১। ৮কে ড্রোনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ক্যামেরা রেজোলিউশন। এই ড্রোন ছবি কিংবা ভিডিও ক্যাপচার করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭৬৮০ x ৪৩২০ পিক্সেল রেজোলিউশন সরবারহ করে। ছবি, ভিডিও এডিট করার ক্ষেত্রে ছবির রেজোলিউশন, ক্লিয়ারিটি সহজে নষ্ট হয় না।
২। অনেক ৮কে ড্রোনে ডুয়েল ক্যামেরা থাকায় বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে বিশেষ করে ওয়াইড এবং ডিটেইলস ছবি কিংবা ভিডিও শট নেওয়া যায়।
৩। এই ড্রোনে সারভো গিম্বল, জি টাইপ সেন্সর এবং ৩ অ্যাক্সিস গিম্বাল এর মত উন্নত সেন্সর রয়েছে যা ড্রোন উড়ানোর সময় ক্যামেরাকে স্থিতিশীল রাখে। এটি তীব্র বাতাসে মসৃণ ভিডিও ক্যাপচার করতে পারে। ফলে, প্রাকৃতিক পরিবেশ, ট্যুরিস্ট প্লেস এবং ইভেন্টের সহ ফিল্ম মেকিং এর ভিডিও শট নেওয়ার জন্য ৮কে ড্রোন উপযুক্ত।
৪। ৮কে ড্রোন মূলত ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে যা নতুন এবং প্রফেশনাল উভয়ের জন্য সহজ ব্যবহার নিশ্চিত করে। এতে ওয়ান-কি টেকঅফ এবং ল্যান্ডিং, জিপিএস ফাংশনালিটি এবং উচ্চতা ধরে রাখার মতো ফিচার রয়েছে।
৫। মডেল ভেদে এই ড্রোনে ৩.৭ ভোল্টের ১৮০০ এমএএইচ থেকে ১১.১ ভোল্ট ৩৫০০ এমএএইচ পাওয়ার ক্যাপাসিটির ব্যাটারি রয়েছে। ফলে ৮কে ড্রোন একবার চার্জে ২০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়।
৬। এই ড্রোনে ২.৪ গিগাহার্জ থেকে ৫ গিগাহার্জ ফ্রিকুয়েন্সির ওয়াইফাই সুবিধা রয়েছে যা রিয়েল টাইম ভিডিও ট্রান্সমিশন সুবিধা প্রদান করে।ফলে, ড্রোনের ক্যামেরা যা দেখে ব্যবহারকারী তাই দেখতে পান। তাই ভিডিও শট বা ছবি তোলার ক্ষেত্রে ৮কে ড্রোনে সঠিক ফ্রেমে উচ্চ মানের ফুটেজ ক্যাপচার করা যায়।
৭। এই ড্রোনে থ্রি-অ্যাক্সিস অ্যান্টি-শেকিং এবং সেলফ-স্টেবিলাইজিং ফিচার রয়েছে, যা ছবির ব্লারিভাব দূর করে এবং উচ্চ রেজোলিউশনে ভিডিও ক্যাপচার করতে সহায়তা করে।
৮। কিছু কিছু ৮কে ড্রোনে ৩৬০° ইন্টেলিজেন্ট অবস্ট্যাকল এভয়েডেন্স ফিচার রয়েছে,যা ড্রোনের ২০ মিটার কভারেজের মধ্যে থাকা যেকোনো বাধা সহজে শনাক্ত করতে পারে।
৯। বেশির ভাগ ৮কে ড্রোনে কোয়াডকপ্টার ব্রাশলেস মোটর ব্যবহার করা হয়েছে, যা তীব্র বাতাস প্রতিরোধ করে সহজে উড়তে পারে।
১০। এই ড্রোনে রিয়েল-টাইম ম্যাপ পজিশনিং ফাংশন রয়েছে যা ম্যাপে থাকা মানুষ, যানবাহন সহ অন্যান্য বস্তুর সঠিক অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে পারে।
১১। ৮কে ড্রোনে ৩ডি ভিউ মোড, হেডলেস মোড, উচ্চতা হোল্ড মোড, এলইডি লাইট, ৩ডি ফ্লিপ এবং ৫০ এক্স অপ্টিক্যাল জুম, এবং এফপিভি অপারেশন সহ অত্যাধুনিক সব ফিচার রয়েছে, যা আরও ভালো ভাবে ছবি, ভিডিও ক্যাপচার করার জন্য সহায়ক হয়ে থাকে।
১২। রিমোট কন্ট্রোল, মোবাইল অ্যাপ এবং ছয় অক্ষ বিশিষ্ট জাইরোস্কোপ রয়েছে ৮কে ড্রোনে, যা স্থিতিশীল ভাবে উড়ানোর পাশাপাশি সহজে নিয়ন্ত্রন করতে সহায়তা করে।
১৩। কিছু কিছু ৮কে ড্রোনে ইলেকট্রনিক ফেন্স লো ব্যাটারি অ্যালার্ম রয়েছে, যা ব্যাটারি পাওয়ার ৩০ পারসেন্ট এর কম হলে অ্যালার্ম দেয়।
৮কে ড্রোন কি সকলের জন্য উপযুক্ত?
ছবি, ভিডিও উচ্চ রেজোলিউশনে ক্যাপচার করার জন্য ৮কে ড্রোন সেরা। কারণ এটি রিয়েল টাইম ভিডিও ট্রান্সমিশন সুবিধা এবং অত্যাধুনিক ইন্টেলিজেন্ট ফিচার সরবারহ করে থাকে। পাশাপাশি ডিটেলইস সহ যথেষ্ট ক্লিয়ার ফুটেজ সরবারহ করায় বিভিন্ন গোয়েন্দা নজরদারির কাজেও বেশ উপকারী হয়ে থাকে। তবে, ৪কে ড্রোন দিয়েও দৈনন্দিন ফটোগ্রাফি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কন্টেন্ট ক্রিয়েট করা যায়, যার জন্য ৮কে ড্রোনের প্রয়োজন হয় না। তাই বাজেট এবং প্রয়োজনীয়তার বিষয় বিবেচনা করে চাহিদা অনুযায়ী ৪কে বা ৮কে ড্রোন কিনতে পারেন।