কনফারেন্স সিস্টেম কেনাকাটা
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভা, মিলনায়তন, সংসদ ভবন, বিভিন্ন কোম্পানির মিটিং রুমে কনফারেন্স সিস্টেমের ব্যবহার দেখা যায়। কনফারেন্স সিস্টেমের সাহায্যে বিভিন্ন সভার বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। মূলত কনফারেন্স সিস্টেম একাধিক ব্যক্তিবর্গের জন্য ব্যবহার করা হয় যাতে তাদের বক্তব্য মিটিংয়ে উপস্থিত সবাই শুনতে পায়। কনফারেন্স সিস্টেম দুই ধরণের হয়ে থাকে একটি হলো ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেম এবং আরেকটি অডিও কনফারেন্স সিস্টেম। বাংলাদেশে দুই ধরনেরই কনফারেন্স সিস্টেম পাওযা যায়।
কনফারেন্স সিস্টেম কি?
কনফারেন্স সিস্টেম হলো এমন একটি মাধ্যম যা একাধিক ব্যক্তিবর্গের কথাকে বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে থাকে। কনফারেন্স সিস্টেম অডিও এবং ভিডিও পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। মূলত কয়েকটি ডিভাইসের সমন্বয়ে গঠিত হয় একটি কনফারেন্স সিস্টেম। এই ডিভাইস গুলোর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি ডিভাইস হলো মাইক্রফোন, স্পীকার, তার, সেন্ট্রাল ইউনিট ইত্যাদি।
অডিও কনফারেন্স সিস্টেম কি?
অডিও কনফারেন্স সিস্টেম বলতে বুঝায় যে কনফারেন্স সিস্টেম শুধু অডিওর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। অর্থাৎ সেখানে কোনো ক্যামেরার উপস্থিতি থাকে না। একটি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ যে সকল কার্যকলাপ থাকে সেগুলো নিয়েই আলোচনা হয় এই অডিও কনফারেন্স সিস্টেমে। স্কুল কলেজ, কারখানা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অডিও কনফারেন্স হতে দেখা যায়। বাংলাদেশে খুব কম দামে অডিও কনফারেন্সের ফুল সেট পাওয়া যায়।
একটি কনফারেন্স সিস্টেমে কি কি থাকে?
তিনটি সামগ্রী ছাড়া একটি কনফারেন্স সিস্টেম কখনও পরিপূর্ণ হতে পারে না। এগুলো হলোঃ মাইক্রফোন, কন্ট্রোলার এবং ওয়্যারলেস কনাফারেন্সের ক্ষেত্রে এক্সেস পয়েন্ট। অডিও কনফারেন্সে মাইক্রফোনের ক্ষেত্রে ২টি প্রকারভেদ দেখা যায়। এগুলো হলোঃ
- চ্যায়ারম্যান ইউনিট মাইক্রফোন
- ডেলিগেট ইউনিট মাইক্রফোন
চ্যায়ারম্যান ইউনিট মাইক্রফোনঃ
চ্যায়ারম্যান ইউনিট মাইক্রফোন মুলত একজনের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান যখন কথা বলেন তখন তার সামনে একটি মাইক্রফোন থাকে এবং শুধু তিনিই কথা বলেন, বাকি কর্মকর্তাগণ শুনেন। একজনের কথা বলার জন্য যে মাইক্রফোনটি ব্যবহার হয়ে থাকে সেটিই মূলত চ্যায়ারম্যান ইউনিট মাইক্রফোন। একটি চ্যায়ারম্যান মাইক্রফোনে ২টি বাটন থাকে যা অন্যান্য মাইক্রফোনে থাকে না। বাংলাদেশে চ্যায়ারম্যান মাইক্রফোনের দাম বেশ সস্তা।
ডেলিগেট ইউনিট মাইক্রফোনঃ
এই মাইক্রফোনটি একাধিক ব্যক্তির ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করা হয়। ডেলিগেট ইউনিট মাইক্রফোনটিতে ১ টি বাটন থাকে। বাংলাদেশ সংসদ ভবন, বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেলিগেট ইউনিট মাইক্রফোন বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে।
কন্ট্রোলারঃ
কন্ট্রোলার মূলত মাইক্রফোনকে শক্তি সরবারহ করতে সাহায্য করে। কন্ট্রোলার দিয়ে চেয়ারম্যান এবং ডেলিগেট ইউনিট উভয় মাইক্রফোনকে পরিচালনা করা হয়। তবে যে ব্র্যান্ডের কন্ট্রোল ইউনিট ব্যবহার করা হবে সে ব্র্যান্ড অনুযায়ী মাইক্রফোন ব্যবহার করতে হবে।
এক্সেস পয়েন্টঃ
ওয়্যারলেস সংযোগের কনফারেন্স ইউনিট হলে সেটিতে একটি কন্ট্রোল ইউনিটের সাথে অন্যান্য মাইক্রফোন সংযোগ করতে হলে এক্সেস পয়েন্ট ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশের কনফারেন্স সিস্টেমের দাম কত?
বাংলাদেশে কনফারেন্স সিস্টেমের দাম শুরু হয় মাত্র ৩৫,০০০ টাকা থেকে। এটি একটি ওয়্যারলেস প্রযুক্তির কনফারেন্স সিস্টেম। এটিতে আছে আরও বিভিন্ন রকমের সুবিধা। একটি কনফারেন্স সিস্টেমের দাম নির্ভর হয় তার ব্র্যান্ড, প্রযুক্তি, মাইক্রফোন এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে।
ভিডিও কনফারেন্স কেন করা হয়?
ভিডিও কনফারেন্স করার মূল কারণ হলো অল্প সময়ের মধ্যে অধিক মানুষের কাছে নিজের কথা গুলো উপস্থাপন করা। বিভিন্ন ক্যামেরার সাহায্যে বক্তব্য প্রচার বা ভার্চ্যুয়াল মিটিং করার যে প্রক্রিয়া অবম্বন করা হয় সেটিই ভিডিও কনফারেন্স। এটিতে মাইক্রফোনের পাশাপাশি সেন্ট্রাল ইউনিট, ওয়েবক্যাম অথবা অন্যান্য ক্যামেরা এবং আরও বিভিন্ন সরঞ্জামের সাহায্যে ভিডিও কনারেন্স গঠিত।
কনফারেন্স সিস্টেমের সুবিধা গুলো কি?
কনফারেন্স সিস্টেমে অনেক রকমের সুবিধা আছে। এটির সুবিধাগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
১। কনফারেন্সের সাহায্যে বক্তব্যকে একাধিক মানুষের কাছে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করা যায়।
২। অল্প সময়ে কনফারেন্সের গতি ঠিক রেখে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়। প্রত্যেকের টেবিলে মাইক্রফোন থাকায় কোনো বাধা ছাড়াই সবাই সবার বক্তব্যগুলো তুলে ধরতে পারে ফলে সময় অপচয় কম হয় এবং সভার সৌন্দর্য বজায় রাখে।
৩। ভিডিও কনারেন্সের মাধ্যমে খুব কম সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সভা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া যায়।
৪। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের প্রতিষ্ঠানের লাভ, ক্ষতি, পদক্ষেপ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের সফলতার জন্য অগ্রসর হতে পারে অডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে।
৫। কনফারেন্স সিস্টেমের মধ্যে কিছু বিশেষত্ব আছে এগুলো হলো মিউটিং, ভলিউম এডজাস্টমেন্ট, স্পিকিং টাইম কন্ট্রোল, ভোটিং সিস্টেম ইত্যাদি। এই বিশেষত্বগুলোর সাহায্যে অনেক রকমের দরকারি কাজ কনফারেন্স সিস্টেমের সাহায্যে করা যায়।