ডিজিটাল ক্যামেরা কেনাকাটা
ডিজিটাল ক্যামেরা এই সব ফটোগ্রাফারদের প্রিয় যারা সাধারণত তাদের স্মৃতি সব সময় ধরে রাখতে চান। কারণ এই ক্যামেরাগুলি ব্যবহার করা সহজ সাথে দুর্দান্ত ছবি। এই ধরনের ক্যামেরা খুব পোর্টেবল তাৎক্ষণিক শুটিংয়ের জন্য দুর্দান্ত। বেশিরভাগ সেটিংস স্বয়ংক্রিয় হয় তবে কিছু ডিজিটাল ক্যামেরায় ম্যানুয়াল সেটিং রয়েছে। আরেকটি কারণ হল এর দাম বাংলাদেশে অনেক কম। আর আপনি যদি ব্যক্তিগত ভিডিও বা ভ্লগ ক্যাপচার করতে চান তবে ডিজিটাল ক্যামেরা ব্লগিং ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে কারন খুব কম মূল্যে এখন বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরার সুবিধা কি?
- ডিজিটাল ক্যামেরাতে অপটিক্যাল জুম ফিচার রয়েছে, যা দিয়ে দূরে কিংবা কাছের ছবি সহজেই ক্যাপচার করা যায়।
- ডিজিটাল ক্যামেরাতে অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন এবং ইলেকট্রনিক ইমেজ স্টেবিলাইজেশন ফিচার যুক্ত রয়েছে। যা ছবি কিংবা ভিডিও করার সময় হাতের নড়াচড়ার কারণে ক্যামেরার ঝাঁকুনি এবং অস্পষ্টতা কমাতে সাহায্য করে।
- ডিজিটাল ক্যামেরাতে ফিল্ম ব্যবহারে প্রয়োজন হয় না ফলে দীর্ঘমেয়াদী খরচ কম হয়।
- ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ছবি, ভিডিও ক্যাপচার করার ক্ষেত্রে ইচ্ছা অনুযায়ী এক্সপোজার, ফোকাস সহ অন্যান্য সেটিংস পরিবর্তন করা যায়।
- ডিজিটাল ক্যামেরাতে অটো এবং ১০০ থেকে ১২,৮০০ আইএসও সরবারহ করে, ফলে কম আলোতে গুনমান সম্পন্ন ছবি যায়।
- ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে দ্রুত চলমান বিষয়বস্তুর ছবি এবং অ্যাকশন ফটোগ্রাফি করা যায়।
- এছাড়াও, ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ৪কে ভিডিও রেকর্ড করা যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরা কেনার আগে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে
মেগাপিক্সেলঃ একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে যে যত বেশি মেগাপিক্সেল তত বেশি ভাল যা সত্য নয়। লেন্সের গুণমানের হিকে নজর দিন কারণ তাতে এটি দিয়ে চমৎকার ছবি তোলা যাবে।
জুম লেন্সঃ আপনি যদি পাখি, প্রাকৃতিক দৃশ্যের ভক্ত হন তবে লম্বা জুম সহ ডিজিটাল ক্যামেরা কিনুন। এই ধরনের ক্যামেরার জুম ইন্টিগ্রেটেড এবং পরে পরিবর্তন করা যাবে না। সুতরাং, প্রথমে আপনার কী প্রয়োজন তা নির্ধারণ করুন। তবে ডিজিটাল জুম নাম আরেকটি অপসান রয়েছে যা আপনার ছবিগুলিকে বড় করে তাতে জুম মনে হয।
ভিউফাইন্ডারঃ এলসিডি সাধারণত ভিউফাইন্ডার হিসাবে ব্যবহৃত হয় তবে কিছু ডিজিটাল ক্যামেরায় বস্তুগুলিকে সঠিকভাবে দেখার জন্য ডেডিকেটেড ভিউফাইন্ডার থাকে। একটি বড় এলসিডি ডিসপ্লে নেওয়ার চেষ্টা করুন যাতে আরও এরিয়া সঠিকভাবে দেখা যায়।
অ্যান্টি-শকঃ এটিকে ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশনও বলা হয় যার অর্থ আপনি যখন ছবি তুলবেন তখন আপনার হাতের সামান্য নড়াচড়া ছবিতে প্রভাব ফেলবে না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
মুখ শনাক্তকরণঃ এই বৈশিষ্ট্যটিও কার্যকর কারণ এটি সঠিকভাবে মুখ সনাক্ত করতে পারে এবং ছবিতে মুখগুলিকে আরও প্রাণবন্ত করতে সাহায্য করে৷ ডিজিটাল ক্যামেরা একসাথে একাধিক মুখ সনাক্ত করতে পারে। সুতরাং, এটি একই সময়ে কতগুলি মুখ সনাক্ত করতে পারে তা জানুন।
কানেক্টিভিটিঃ সাধারণত ইউএসবি হল আপনার ছবি ট্রান্সফার করার সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত উপায়। যাইহোক, ওয়াই-ফাই সুবিধা আপনার কাজকে আগের চেয়ে আরও সহজ করে তুলবে।
বাজেটঃ ১২,০০০ টাকায় একটি ভালো মানের ডিজিটাল ক্যামেরা কেনা যাবে যা আপনার প্রয়োজন মেটাতে পারে। কিছু ক্যামেরা পেশাদার মানের ছবি তুলতে পারে এবং বাংলাদেশে এই ধরনের ডিজিটাল ক্যামেরার দাম ২০,০০০ টাকা থেকে শুরু হয় যা খুবই সাশ্রয়ী। সুতরাং, আপনার প্রয়োজনীয় উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি সন্ধান করুন এবং আপনার বাজেটের সাথে মেলে এমন একটি ক্যামেরাকে নির্বাচন করুন।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্যঃ ফটো তোলার স্থানগুলির অবস্থান রেকর্ড করার জন্য জিপিএস, মেমরি কার্ড যা আপনার ফটো সংরক্ষণ করতে সক্ষম এবং ব্যাটারির ক্ষমতা ইত্যাদি দেখতে পারেন৷
ডিজিটাল ক্যামেরার দাম কত?
বাংলাদেশে ডিজিটাল ক্যামেরার দাম সাধারণত ব্র্যান্ড, মডেল, স্পেসিফিকেশন এবং অন্যান্য ফিচার সমূহের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে, বাংলাদেশে ডিজিটাল ক্যামেরার দাম ১৪,০০০ টাকা থেকে শুরু, যা শার্প এবং ডিটেইলস ছবি সরবরাহ করে। এছাড়াও, বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টল.কম এ সাশ্রয়ী দামে কমপ্যাক্ট সাইজের এন্ট্রি-লেভেল ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে শুরু করে উচ্চ মানের প্রফেশনাল ডিজিটাল ক্যামেরা পাওয়া যায়। তাছাড়া, বাংলাদেশে উন্নত ডিএসএলআর ক্যামেরা বা মিররলেস ক্যামেরার চেয়ে ডিজিটাল ক্যামেরা কম খরচে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে ডিজিটাল ক্যামেরার দাম ৫০০০ এর নিচে
বাংলাদেশে ৫০০০ টাকার নিচে ডিজিটাল ক্যামেরা পাওয়া যায়, যা সাধারণত ব্যবহৃত কন্ডিশনে এবং পুরনো মডেলের হয়ে থাকে। তাছাড়া, বাচ্চাদের খেলনা টাইপের ডিজিটাল ক্যামেরা বাংলাদেশে জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেট প্লেস বিডিস্টল.কম এ পাওয়া যায়, যার দাম ১,০০০ টাকা থেকে শুরু।
বাংলাদেশে ডিজিটাল ক্যামেরার দাম ১০,০০০ এর নিচে
বাংলাদেশে ১০,০০০ টাকার নিচে ডিজিটাল ক্যামেরা পাওয়া যায়, যা সাধারণত এন্ট্রি লেভেল ক্যামেরা। এই বাজেটের ডিজিটাল ক্যামেরাতে মূলত বেসিক ফিচার থাকে এবং ক্যাজুয়াল ফটোগ্রাফি করা যায়।
বাংলাদেশে ডিজিটাল ক্যামেরার দাম ২০,০০০ এর নিচে
বাংলাদেশে মিড রেঞ্জের ডিজিটাল ক্যামেরা ২০,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়। এই রেঞ্জের ডিজিটাল ক্যামেরাতে উন্নত সেন্সর, বিস্তৃত পরিসরে অপটিক্যাল জুম এবং বিল্ট-ইন ইউএসবি ইন্টারফেসের পাশাপাশি অন্যান্য সংযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। তাছাড়া, ২০,০০০ টাকা বাজেটের ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে মান সম্পন্ন ছবি ও ভিডিও ক্যাপচার করা যায়।
এছাড়াও, বাংলাদেশে পেশাদার ফটোগ্রাফারদের জন্য ব্যতিক্রমী ইমেজ কোয়ালিটি, উন্নত ফিচার এবং উন্নত বিল্ড কোয়ালিটি সম্পন্ন ডিজিটাল ক্যামেরা সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরার রেজুলেশন কত?
ডিজিটাল ক্যামেরার রেজুলেশন মূলত মডেলের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে ১২ থেকে ২৪ মেগাপিক্সেলের ডিজিটাল ক্যামেরা পাওয়া যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরার লেন্সের সর্বোচ্চ অ্যাপারচার কত?
ডিজিটাল ক্যামেরার লেন্সের সর্বোচ্চ অ্যাপারচার এফ/ ১.৮ থেকে এফ/ ৩.৫ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ডিজিটাল ক্যামেরা কন্টিনওয়াস মোডে প্রতি সেকেন্ডে কতগুলি ফ্রেম শুট করতে পারে?
ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে কন্টিনওয়াস মোডে প্রতি সেকেন্ডে ৩ থেকে ১০ ফ্রেমের শুট করা যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরাতে কি বিল্ট-ইন ফ্ল্যাশ আছে?
হ্যা, ডিজিটাল ক্যামেরাতে সাধারণত কম শক্তির বিল্ট-ইন ফ্ল্যাশ থাকে। তবে, লাইভ প্রিভিউ ফটো ফ্রেম করার জন্য কিছু হাই-এন্ড-কমপ্যাক্ট ডিজিটাল ক্যামেরাতে বাহ্যিক ফ্ল্যাশের সাথে সংযোগ করার জন্য হটশু থাকে।
ডিজিটাল ক্যামেরার সর্বোচ্চ আইএসও সেন্সিটিভিটি কত?
ডিজিটাল ক্যামেরার আইএসও সেন্সিটিভিটি ৩২০০ আইএসও থেকে সর্বোচ্চ ১২,৮০০ আইএসও পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ডিজিটাল ক্যামেরাতে কি ওয়াইফাই বা ব্লুটুথ সংযোগ আছে?
সাধারণ ডিজিটাল ক্যামেরাতে ইউএসবি সংযোগ ব্যবস্থা থাকে। তবে, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ডিজিটাল ক্যামেরাতে ইউএসবি, ওয়াইফাই, ব্লুটুথ সহ অন্যান্য সংযোগ সুবিধা থাকে।
ডিজিটাল ক্যামেরার ব্যাটারি লাইফ কেমন?
ডিজিটাল ক্যামেরার ব্যাটারি লাইফ ক্যামেরার ব্যবহার, সেটিংস এবং ব্যাটারির ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তবে, ডিজিটাল ক্যামেরা প্রতিবার চার্জে কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার শট নেওয়া যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে কি ভিডিও রেকর্ড করা যায়?
হ্যা, ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ৭২০ পিক্সেল থেকে ১০৮০ প্রিক্সেলের ফুল এইচডি ভিডিও রেকর্ড করা যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরাতে কি ইন-ক্যামেরা ইমেজ এডিটিং ফিচার আছে?
ডিজিটাল ক্যামেরাতে ইন-ক্যামেরা ইমেজ এডিটিং সুবিধা রয়েছে, যা দিয়ে ছবি ক্রপ, সাইজ পরিবর্তন, ফিল্টারিং করার পাশাপাশি এক্সপোজার সামঞ্জস্য করার মত অন্যান্য ফিচার যুক্ত রয়েছে।
ডিজিটাল ক্যামেরাতে কি লেন্স পরিবর্তন করা যায়?
না, ডিজিটাল ক্যামেরাতে সাধারণত ফিক্সড লেন্স ব্যবহার করা হয়ে থাকে।