অল ইন ওয়ান Desktop Pc কেনাকাটা
অল-ইন-ওয়ান পিসি হলো কম্পিউটার ও ল্যাপটপের হাইব্রিড ডিজাইনের ডিভাইস। অল-ইন-ওয়ান পিসি হলো শুধু মাত্র একটি মনিটর যার ভিতরে কম্পিউটারের বাহ্যিক ডিভাইস গুলো অন্তর্নির্মিত থাকে। বর্তমানে লেনোভো, ডেল, আসুস, এইচপি, এমএসআই, এবং মাইক্রোসফট ব্র্যান্ডের বিভিন্ন সিরিজের অল-ইন-ওয়ান পিসি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। অল ইন ওয়ান পিসি সাধারনত এআইও পিসি হিসেবেও পরিচিত।
অল-ইন-ওয়ান পিসিতে কি কি থাকে?
অল-ইন-ওয়ান পিসি হলো ডেস্কটপ ও ল্যাপটপের মত ডিভাইস। যা আকার আকৃতিতে সাধারন মনিটরের মত দেখায়। অল-ইন-ওয়ান পিসিতে প্রসেসর, মাদারবোর্ড, র্যাম, স্টোরেজ, এবং পাওয়ার সাপ্লাই অন্তর্নির্মিত থাকে। এছাড়াও, এই ডিভাইসের ভিতরে কমপ্যাক্ট ডিজাইনের হাই-কোয়ালিটি কুলিং ফ্যান থাকে ফলে তুলনামূলক কম তাপ উতপন্ন করে। বেশিরভাগ অল-ইন-ওয়ান পিসির শুধুমাত্র র্যাম ও স্টোরেজ অ্যাক্সটেন্ড করা যায়। এছাড়াও, ল্যাপটপমের ন্যায় অল-ইন-ওয়ান পিসিতে ওয়্যারলেস ওয়াই-ফাই কানেক্টিভিটি এর মত স্মার্ট বৈশিষ্ট্যগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে।
কেন অল-ইন-ওয়ান পিসি ব্যবহার করব?
আধুনিক বিশ্বে বেশীরভাগ কাজ প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠেছে। তাই, সকলেরই স্মার্ট ডিভাইস যেমনঃ ডেস্কটপ পিসি বা ল্যাপটপ প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে দেখা যায় ল্যাপটপের মনিটর সাইজ বেশি বড় হয় না এবং সর্বত্র বহনযোগ্য হলেও বিভিন্ন কাজ করার জন্য অনুপযোগী। অন্যদিকে, ডেস্কটপ সেটআপ এর মাধ্যমে সবধরনের কাজ সহজেই করা যায় তবে ডেস্কটপ সর্বত্র বহনযোগ্য নয়। তাই, এই সমস্যার একমাত্র সমাধান অল-ইন-ওয়ান পিসি। কেননা অল-ইন-অন পিসির মনিটর সাইজ বড় থাকে এবং সব ধরনের ভারী লোড সম্পন্ন কাজ করাও সহজ। আবার প্রয়োজনে অল-ইন-ওয়ান পিসি সর্বত্র বহন করা যাবে। এছাড়াও, অল-ইন-ওয়ান পিসির কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ
ডিসপ্লেঃ অল-ইন-পিসি এর মনিটর ডিসপ্লে সাইজ কমপক্ষে ২০-ইঞ্চির এবং তার বেশি হয়ে থাকে। এবং, মডেল ভেদে অল-ইন-ওয়ান পিসি গুলোর রেজোলিউশন ফুল এইচডি ও ৪কে পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে, কিছু অল-ইন-ওয়ান পিসি রয়েছে যেগুলো ৫কে রেজোলিউশন প্রদান করে। এছাড়াও, বেশ কিছু অল-ইন-ওয়ান পিসিতে টাচ স্ক্রিন ডিসপ্লে রয়েছে যেগুলো স্টাইলাস পেন এর মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। টাচ স্ক্রিন অল-ইন-ওয়ান পিসিগুলো বিশেষ করে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য উপযুক্ত।
ডিজাইনঃ অল-ইন-ওয়ান পিসি কমপ্যাক্ট ডিজাইনের হয়ে থাকে বিধায় সর্বত্র বহন করা যায়। এই ধরনের পিসিগুলো সেটাআপে তারের কানেকশনে সময় নষ্ট হয় না বরং বৈদ্যুতিক সংযোগের পরে বাটনে চাপ দিয়ে চালু করা যায়। এছাড়া, অল-ইন-ওয়ান পিসিগুলোতে রয়েছে মার্জিত বাহ্যিক ডিজাইন যা যেকোন ওয়ার্কপ্লেসের সাথে মানানসই। এবং, অল-ইন-ওয়ান পিসি স্বল্প জায়গায় সেটআপ করা যায় বিধায় এই পিসিকে স্পেস সেভিং বলা হয়। বিশেষ করে অল-ইন-ওয়ান পিসির বহনযোগ্যতার কারনে বাংলাদেশে অধিক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ঃ অল-ইন-ওয়ান পিসিগুলোর একটি মনিটরে সম্পূর্ণ সেটআপ থাকে বিধায় সাধারণ ডেস্কটপ পিসির তুলনায় ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয়ে থাকে।
অল-ইন-ওয়ান পিসির মূল সুবিধা কি কি?
বাংলাদেশে অল-ইন-ওয়ান পিসির বহনযোগ্যতা, ডিজাইন, ও বিভিন্ন বিশেষ সুবিধার কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে, অল-ইন-ওয়ান পিসির কিছু মূল সুবিধা উল্লেখ করা হলঃ
- অল-ইন-ওয়ান পিসির ল্যাপটপের ন্যায় কমপ্যাক্ট ডিজাইনের হয় বিধায় সর্ট সার্কিটে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- অল-ইন-ওয়ান পিসিগুলো ডেস্কটপের ন্যায় ঘন ঘন রক্ষণাবেক্ষণ এর প্রয়োজন হয় না।
- অল-ইন-ওয়ান পিসি স্বল্প জায়গায় সেটআপ করা যায়।
অল-ইন-ওয়ান পিসি কেনার পূর্বে কি কি করনীয়?
বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রয়োজনে অল-ইন-ওয়ান পিসি ব্যবহার করা হয়। অল-ইন-ওয়ান পিসি কেনার পূর্বে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা আবশ্যক।
- কাজের প্রয়োজনীতার অনুপাতে কনফিগারেশন বিবেচনায় অল-ইন-ওয়ান পিসি নির্বাচন করতে হবে। কেননা অল-ইন-ওয়ান পিসির র্যাম ও স্টোরেজ ব্যতীত অন্য কোন কিছু অ্যাক্সটেন্ড করা যায় না।
- প্রয়োজনে র্যাম ও স্টোরেজ অ্যাক্সটেন্ড করা যাবে কিনা তা দেখে নিতে হবে। এবং, কতটুকু র্যাম অ্যাক্সটেন্ড করা যাবে তা বিবেচনায় অল-ইন-ওয়ান পিসি নির্বাচন করতে হবে।
বাংলাদেশে অল ইন ওয়ান পিসির দাম কত?
বর্তমানে বাংলাদেশে অল-ইন-ওয়ান পিসির দাম এর ব্র্যান্ড, কনফিগারেশন, ও ডিসপ্লে কোয়ালিটির ভিত্তিতে ৫০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকার মধ্যে থেকে শুরু হয়। এছাড়াও, বিডিতে ব্যবহৃত অল-ইন-ওয়ান পিসি পাওয়া যায় যেগুলোর দাম ২৫,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্য থেকে শুরু হয়। তবে, বর্তমানে ১,০০,০০০ টাকা থেকে ১,৫০,০০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের অল-ইন-ওয়ান পিসি পাওয়া যায়।