কিবোর্ড কেনাকাটা
বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজাইনের কিবোর্ড পাওয়া যাচ্ছে আর তার দামও খুব কম। বর্তমানে যে ধরনের কিবোর্ডগুলো বাজারে পাওয়া যায় তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো
১/ মেমব্রেন কীবোর্ডঃ এটি মূলত বেশ হালকা এবং টাইপিংয়ের সময় খুব কম শব্দ উৎপন্ন করা একটি কিবোর্ড যা মূলত প্লাস্টিক ও বারারের সমন্নয়ে তৈরি। এটির ব্যবহার আমরা ল্যাপটপে দেখতে পাই।
২/ মেকানিক্যাল কিবোর্ডঃ ২০১৪ সালে মেকানিক্যাল কিবোর্ডও বাজারে এসেছে। এটি কে আপনারা একটি দিক থেকে মেমব্রেন কিবোর্ডের বিপরীত ধরতে পারেন আর সেটা হলো এটির কী গুলোতে প্রেস করলে বেশ জোড়ালো ভাবে বাউন্স করে যার ফলে আপনি আপানার হাতে ও কানে একটা অনুভুতি পাবেন। মূলত মেকানিক্যাল কিবোর্ড লেখক, সাংবাদিক, ব্লগার, কিংবা গেমারদের জন্য উপযোগী।
৩/ লেজার কিবোর্ডঃ এটি মূলত একটি ডিভাইস থেকে লেজার রশ্নি যে কোন সমতল স্থানে এসে পরে তারপর আলোর মত কিবোর্ড উৎপন্ন করে যা মূলত আলোক সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করে। তবে এটি শুধু মাত্র সৌখিন ব্যবহারকারীদের জন্য যারা নিয়মিত বা পেশাদার কাজ করে থাকেন তাদের জন্য এটি মোটেও কার্যকরী নয়।
কোন কীবোর্ড সংযোগ সবচেয়ে ভাল?
আগে পিএস/২ সমস্ত ডিভাইসে ব্যবহৃত হত তবে এখন এটি ইউএসবি কীবোর্ড দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। বর্তমানে ইউএসবি কীবোর্ড ডেস্কটপ পিসি এবং অন্যান্য ডিভাইসে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। ওয়্যারলেস কীবোর্ড ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু সুবিধা এনেছে কারণ এতে কোনও তারের প্রয়োজন নেই।
পূর্ণ আকারের কীবোর্ড কী?
একটি পূর্ণ আকারের কীবোর্ড সাধারণত এমন একটি কীবোর্ডকে বোঝায় যেটিতে বর্ণমালা কী, অক্ষর কী, বিরামচিহ্ন কী, সংখ্যা কী এবং বিভিন্ন ফাংশন কী থাকে; এবং কীবোর্ডের ডান দিকে নম্বরযুক্ত প্যাড থাকতে পারে। এই কীবোর্ডগুলি দ্রুত কাজ করার জন্য সুবিধাজনক।
মিনি কীবোর্ডগুলি স্ট্যান্ডার্ড কীবোর্ডগুলির সমান কাজ করে তবে আকার এবং ওজনে ছোট। কিছু ফাংশন কী থাকে না এবং ডান পার্শ্বের সংখ্যাযুক্ত প্যাড নেই। মিনি কীবোর্ডগুলি বহন করা সহজ।
বিডিতে একটি কিবোর্ডের দাম কত?
বিডিতে কিবোর্ডের দাম ৪০০ টাকা থেকে শুরু যা মিনি বা পূর্ণ আকারের একটি ইউএসবি কীবোর্ড। এছাড়াও, বাজারে গেমিং কীবোর্ড, মেকানিক্যাল কীবোর্ড, ওয়্যারলেস কীবোর্ড রয়েছে তাই দাম কীবোর্ডের কার্যকারিতা, ব্র্যান্ড, গুণমান এবং প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণ কাজের জন্য কম দামের কীবোর্ড বেশ ভাল এবং এগুলো অনেকদিন ভাল সার্ভিস দিয়ে থাকে। আর বাংলাদেশের বাজারে বাংলা কীবোর্ড পাওয়া যায় যার দাম একটু বেশি কিন্তু যারা বেশি বাংলা টাইপ করেন তাদের জন্য এটি বেশ সুবিধাজনক। আর কিছু লাইটিং কীবোর্ড রয়েছে যেগুলো গেমাররা বা ছোট বাচ্চারা ব্যবহার করে বেশ আনন্দ পাবে।
কীবোর্ড কেনার আগে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে
কীবোর্ডের টাইপঃ সাধারণত মেমব্রেন, মেকানিক্যাল এবং লেজার সহ বিভিন্ন ধরণে কীবোর্ড বাংলাদেশে বিভিন্ন ফিজিক্যাল শো-রুম, কম্পিউটার অ্যাক্সেসোরিস দোকানে পাওয়ার পাশাপাশি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টল.কমে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। তবে, টাইপের ভিন্নতা অনুযায়ী কীবোর্ড সমূহ ভিন্ন ভিন্ন টাইপিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে। তাই কীবোর্ড কেনার সময় নয়েস লেভেল, বাটনের রেসপন্স টাইম, এবং গ্রিপ বিবেচনা করতে হবে।
ব্যবহারঃ গেমিং, টাইপিং এবং প্রোগ্রামিং সহ সাধারণ কাজে ব্যবহার উপযোগী বিভিন্ন ধরণের কীবোর্ড রয়েছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে কম দামে প্রোগ্রামেবল কী সহ গেমিং কীবোর্ড এবং দীর্ঘ টাইপিং সেশনের জন্য এরগনোমিক কীবোর্ড পাওয়া যায়। তাই কীবোর্ড কেনার আগে অবশ্যই ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী কীবোর্ড বাছাই করতে হবে।
সংযোগ সুবিধাঃ তারযুক্ত, ব্লুটুথ এবং ওয়্যারলেস সংযোগ সুবিধা সম্পন্ন কীবোর্ড বিডিতে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। তবে, ওয়্যারড কীবোর্ড ব্যবহারে সাধারণত চলাচলের সীমাবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে, ওয়্যারলেস কীবোর্ড সাধারণত ১০ মিটার দূরত্ব থেকে ব্যবহার করা যায় পাশাপাশি ব্যাটারি প্রতিস্থাপন বা চার্জ করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই, কীবোর্ড কেনার আগে অবশ্যই সংযোগ সুবিধা যাচাই করতে হবে।
কীবোর্ড লেআউটঃ গেমিং এবং টাইপিং এর জন্য কিছু কীবোর্ডে অতিরিক্ত কী বা বিশেষ লেআউট থাকে যা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। তাই, কীবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী কীবোর্ড এর কী লেআউট যাচাই করতে হবে।
কীবোর্ডের ডিজাইনঃ দীর্ঘ সময় টাইপিং করার জন্য এরগোনমিক ডিজাইনে তৈরি কীবোর্ড বিবেচনা করতে হবে, যা হাত এবং কব্জির অবস্থান স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক হয়ে থাকে। ফলে, দীর্ঘসময় আরামদায়ক ভাবে কীবোর্ড ব্যবহার করা যাবে।
কীবোর্ড সাইজঃ কীবোর্ড মূলত মিনি সাইজ, কমপ্যাক্ট ডিজাইন এবং পোর্টেবল সহ ফোল্ডেবল অবস্থায় পাওয়া যায়। তাই, ডেস্ক কিংবা কম্পিউটার টেবিলে স্থান বিবেচনা ছাড়াও, সহজে যে কোন জায়গায় বহন করা যাবে এমন কীবোর্ড বিবেচনা করতে হবে।
ব্যাকলাইটিংঃ কম-আলোতে কাজ করার ক্ষেত্রে কিংবা গেমিং এর জন্য ব্যাকলিট কীবোর্ড হচ্ছে আদর্শ কীবোর্ড। তাই, কীবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে সিঙ্গেল কালার বা আরজিবি এর মত ব্যাকলাইটিং সুবিধা সম্পন্ন কীবোর্ড যাচাই করতে হবে।
সামঞ্জস্যতাঃ কীবোর্ড সাধারণত উইন্ডোজ এবং ম্যাকওএস এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া, বর্তমানে মোবাইল সাথে ব্যবহার উপযোগী কীবোর্ডও বাংলাদেশের বাজারে সচারাচর পাওয়া যায়। উন্নত টেকনোলোজি এবং ফিচারের সমন্বয়ে তৈরি কিছু কীবোর্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ড্রাইভারের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই, কীবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যবহৃত ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে ব্যবহার করা যাবে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
বিল্ড কোয়ালিটিঃ উচ্চ-মানের উপকরণে তৈরি এবং শক্তিশালী বিল্ড কোয়ালিটির কীবোর্ড দীর্ঘদিন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। তাই, কীবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিল্ড কোয়ালিটি যাচাই করতে হবে।