সিমেন্ট কেনাকাটা
বাংলাদেশে সিমেন্ট ব্যবহার করা হয় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট এবং অনেক জায়গায় যেখানে ঢালাইয়ের প্রয়োজন হয়। কারণ, ঢালাই খুব শক্তিশালী এবং টেকসই। সিমেন্ট সাধারণত সস্তা কারণ এগুলো বাংলাদেশে তৈরি হয়।
বাংলাদেশে কোন কোন ধরনের সিমেন্ট পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে ঢালাইয়ের জন্য সিমেন্টের ব্যবহার অপরিহার্য। প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার সিমেন্টের ব্যবহার দেখা যায়। কৃত্রিমভাবে তৈরী সিমেন্টকে সাধারণত পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট বলে। বাংলাদেশে বহুল ব্যবহিত সিমেন্টগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলঃ
সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টঃ বর্তমানে বাংলাদেশে সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট সকল নির্মাণ কাজে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এই পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট সাধারণত কংক্রিট, মশল্লা, এবং স্টাকোতে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশী সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টে উপাদান হিসেবে ৯৭% এর বেশি ক্লিংকার এবং ০৩% এর কম জিপসাম থাকে।
পোর্টল্যান্ড ফ্লাই অ্যাশ সিমেন্টঃ পোর্টল্যান্ড ফ্লাই অ্যাশ সিমেন্ট সাধারণত সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের থেকে বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে। এই সিমেন্টে উপাদান হিসেবে ৮৪-৮৬% ক্লিংকার, ১১-১৩% ফ্লাই অ্যাশ, এবং ০৩% এর কম জিপসাম ব্যবহার হয়ে থাকে।
পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্টঃ পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্ট সাধারণত পানির সংস্পর্শে থাকা বা মাটির নিচে থাকা সকল কাঠামোর জন্য উপযুক্ত। এক সাথে অধিক সিমেন্ট ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হয় যা নিয়ন্ত্রণ করা পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্টের অন্যতম কাজ। এই সিমেন্ট গুলো ভবনের ফাউন্ডেশন ও পানির বাঁধ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। পোর্টল্যান্ড ব্লাস্ট-ফার্নেস স্ল্যাগ সিমেন্টে ৭০-৭৫% ক্লিংকার, ২০-২৫% ব্লাষ্ট ফার্নেস স্লাগ এবং ০৫% জিপসাম থাকে
হোয়াইট পোর্টল্যান্ড সিমেন্টঃ হোয়াইট পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট যেকোন বিল্ডিং এর দেওয়াল ও সিলিং এর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র ভরাট করে সাদা ও মসৃণ করতে ব্যবহার করা হয়।
সিমেন্টের ব্যাগের ওজন কত?
বাংলাদেশী বাজারে যে সকল সিমেন্ট পাওয়া যায় সে সকল সিমেন্টের বস্তার ওজন ৫০ কেজি হয়ে থাকে। সিমেন্টের বস্তা গুলো ৫০ কেজি ওজনের হওয়ায় বহন করতে সুবিধা হয়।
ভালো সিমেন্ট চেনার উপায় কি?
- ভালো সিমেন্ট গুলো দুই আঙ্গুলের মাঝে নিয়ে ঘর্ষণ করলে মসৃণ লাগে।
- ভালো সিমেন্টের বস্তায় সরাসরি হাত ঢুকালে থান্ডা অনুভব হয়।
- এক মুষ্টি সিমেন্ট হাতে নিয়ে অল্প পরিমাণ পানি ঢাললে তা গরম হলে বুঝতে হবে ভালো সিমেন্ট।
- সিমেন্ট হাতে নিলে অনেক সময় দেখা যায় ছোট ছোট জমাট বাধা পাথরের মত টুকরো এবং যদি এই টুকরো গুলো আঙ্গুলের চাপে ভাঙ্গা না যায় তাহলে সিমেন্টি কংক্রিটিং কাজের জন্য কেনা যাবে না।
- সিমেন্টের ব্যগগুলো বায়ুরোধক কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে। যদি সিমেন্টের ব্যগ বায়ুরোধক না হয় তাহলে অধিক সময় গুদামজাত করে রাখার ফলে সিমেন্টের গুনগত মান নষ্ট হতে পারে।
বাংলাদেশে সিমেন্টের দাম কত?
বাংলাদেশে সিমেন্টের ধরন ও কোয়ালিটি অনুযায়ী সিমেন্টের দামের তারতম্য দেখা যায়। সিমেন্ট বাংলাদেশে প্রতি ব্যাগ হিসাবে বিক্রি হয় এবং ১ ব্যাগ সিমেন্টে ৫০ কেজি থাকে যার দাম প্রায় ৪৮৫ টাকা। আবার, পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্টগুলো প্রতি বস্তা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় পাওয়া যায়। হোয়াইট পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট প্রতি বস্তা ৯৯০ টাকা থেকে ১,০৫০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় সিমেন্টের ব্র্যান্ড কোন গুলো ?
বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিমেন্ট পাওয়া যায়। তার মধ্যে অধিক জনপ্রিয় সিমেন্টের ব্র্যান্ডে গুলো হলঃ
- সেভেন হর্স সিমেন্ট
- টাইগার সিমেন্ট
- সেভেন রিং সিমেন্ট
- প্রিমিয়ার সিমেন্ট
- শাহ সিমেন্ট
- বসুন্ধরা সিমেন্ট
- সুপারক্রিট সিমেন্ট
- হোলসিম সিমেন্ট