হিকভিসন সিসিটিভি ক্যামেরা কেনাকাটা
হিকভিশন ডিজিটাল টেকনোলজি কোম্পানি বর্তমানে ভিডিও নজরদারি সরঞ্জামের বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সরবরাহকারী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে। তারমধ্যে, নজরদারি সিস্টেমে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ধরণের হিকভিশন ক্যামেরা বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপী পাওয়া যায়। বিশেষ করে হিকভিশন সিসি ক্যামেরার উচ্চ-মানের ইমেজিং সক্ষমতা, উন্নত লেন্স কোয়ালিটি, এবং উচ্চ ভিডিও কম্প্রেশন সিস্টেমের কারণে বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন মডেল হিকভিশন ক্যামেরা কম দামে বিডিস্টল থেকে সংগ্রহ করা যায়।
হিকভিশন ক্যামেরার দাম কত?
বর্তমানে, হিকভিশন ক্যামেরার দাম এর মডেল, ধরণ, প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য, এবং গুনমান এর ভিত্তিতে নির্ভর করে। বিডিতে হিকভিশন ক্যামেরার দাম ১,৩০০ টাকা থেকে শুরু যা একটি ২-এমপি সিএমওএস সেন্সর ক্যামেরা এবং ফুল এইচডি রেজোলিউশনে ভিডিও ক্যাপচার করতে সক্ষম। এবং, বাংলাদেশে হিকভিশন আইপি ক্যামেরার দাম ১,৬০০ টাকা থেকে শুরু যাতে ৩০-মিটার আইআর রেঞ্জ এবং ৬মিমি ফোকাল লেন্স থাকে। এছাড়াও, দিনে / রাতে কালার অপশন, লম্বা দূরত্বের আইআর, নাইট ভিশন, এবং ভিডিওর পাশাপাশি অডিও রেকোর্ড করত সক্ষম হিকভিশন ক্যামেরা বাংলাদেশে পাওয়া যায় যার দাম কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে কয় ধরণের হিকভিশন ক্যামেরা পাওয়া যায়?
হিকভিশন সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংরক্ষণ ও ট্রান্সমিশনের প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে মূলত তিন ধরণের হয়ে থাকে। বিস্তারিত বর্ণনা করা হলঃ
হিকভিশন স্ট্যান্ডার্ড ক্যামেরাঃ হিকভিশন স্ট্যান্ডার্ড ক্যামেরার সাথে ভিডিও বেলুন ব্যবহারের প্রয়োজন হয় এবং ডিভিআর এর সাথে ইথারনেট ক্যাবল এর সাহায্যে কানেক্ট করতে হয় যাতেকরে উচ্চ-গুনমানের ভিডিও সংরক্ষণ করা যায়। হিকভিশনের বিভিন্ন গঠনের ও প্রযুক্তি সম্বলিত স্ট্যান্ডার্ড ক্যাটাগরির সিসি ক্যামেরা বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
হিকভিশন আইপি ক্যামেরাঃ হিকভিশন আইপি ক্যামেরা সাধারণ ক্যামেরার মত ইথারনেট ক্যবলের মাধ্যমে এনভিআর বা ডিভিআরে ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ করতে পারে। তবে, হিকভিশন আইপি ক্যামেরা ইন্টারনেটে উচ্চ-মানে লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করতে সক্ষম। ফলে, ব্যবহারকারী পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে সহজেই ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করে লাইভ ভিডিও ফুটেজ দেখতে পারবেন।
হিকভিশন ওয়্যারলেস ক্যামেরাঃ হিকভিশন ওয়্যারলেস ক্যামেরা সেটআপ করা সবচেয়ে সহজ, কেননা এই ক্যামেরা গুলো সেটআপ করতে ইথারনেট ক্যাবেলের প্রয়োজন হয় না। হিকভিশন ওয়্যারলেস ক্যামেরা গুলো ওয়াই-ফাই কানেকশন ব্যবহার করে এনভিআরে ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ করতে পারে। তবে, হিকভিশন আইপি ক্যামেরার মত পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে ব্যবহারকারীরা সহজেই ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার হিকভিশন ওয়্যারলেস ক্যামেরার লাইভ ভিডিও ফুটেজ দেখতে পারবেন।
এছাড়াও, কাঠামোর ভিত্তিতে তিন ধরনের হিকভিশন ক্যামেরা বাংলাদেশে পাওয়া যায়। বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ
হিকভিশন বুলেট ক্যামেরাঃ হিকভিশন বুলেট ক্যামেরাগুলোর কেসিং সাধারণত পানি, ধূলা, এবং ময়লা প্রতীরোধী উপাদান দ্বারা তৈরি করা হয় বিধায় আউটডোরে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। হিকভিশন বুলেট ক্যামেরা তুলনামূলক লম্বা দূরত্ব পর্যন্ত রেকোর্ডিং করতে পারে। কোনো নির্দিষ্ট একটি এলাকা একটানা নজরদারির জন্য বুলেট ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়।
হিকভিশন পিটিজেড ক্যামেরাঃ হিকভিশন পিটিজেড ক্যামেরার মাধ্যমে প্রয়োজনে জুম ইন ও আউট করা যায় এবং ডানে ও বামে প্যান করা যায়। ফলে, ৩৬০-ডিগ্রী পর্যন্ত এলাকা একটি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি করা সম্ভব। হিকভিশন পিটিজেড ক্যামেরাগুলো ইনডোর এবং আউটডোরে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া, এই ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে ব্লাইন্ড স্পটের পরিমাণ কমে যায়।
হিকভিশন ডোম ক্যামেরাঃ হিকভিশন ডোম ক্যামেরা গম্বুজ আকৃতির হয়ে থাকে এবং এর ক্যামেরা হাউসিং এর ভিতরেই থাকে বিধায় এর ডানে ও বামে প্যান করার সময় বুঝা যায় না। ফলে, হিকভিশন ডোম ক্যামেরার দিকে তাকালে এটি কোন দিকের ভিডিও রেকোর্ড করছে তা সনাক্ত করা যাবে না।
হিকভিশন ক্যামেরার বিশেষত্ব কি?
হিকভিশন ক্যামেরার বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও উন্নত গুনমানের জন্য বাংলাদেশে এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। হিকভিশন ক্যামেরার বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা করা হলঃ
১। ক্যামেরা লেন্সঃ হিকভিশন ক্যামেরা উন্নত মানের লেন্স ব্যবহার করে বিধায় বিস্তৃত কভারেজ পরিসীমা প্রদান করতে সক্ষম। তাছাড়া, বেশীর ভাগ হিকভিশন ক্যামেরার লেন্স জুম ইন এবং জুম আউট করার অপশন থাকে।
২। ভিডিও রেজোলিউশনঃ হিকভিশন ক্যামেরা কমপক্ষে ফুলএইচডি রেজোলিউশনে ভিডিও ফুটেজ ক্যাপচার করেত পারে। এবং, উচ্চ রেজোলিউশনের ভিডিও কম ব্যান্ডউইথে সংরক্ষণ করতে পারে। তাছাড়া, হিকভিশন আইপি ক্যামেরা ও ওয়্যারলেস ক্যামেরা গুলো উচ্চ রেজোলিউশনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিও ট্রান্সমিশন করতে পারে।
৩। অন্তর্নির্মিত অ্যানালিটিক্সঃ বেশীরভাগ হিকভিশন ক্যামেরায় অন্তর্নির্মিত অ্যানালিটিক্স থাকে বিধায় আলাদা অ্যানালিটিক্স সফটওয়্যারের ব্যবহার ছাড়াই হিকভিশন ক্যামেরা সহজেই মানুষ, গাড়ী, ইত্যাদি শনাক্ত করতে পারে। এই অন্তর্নির্মিত অ্যানালিটিক্স এর ফলে ফলস অ্যালার্ম থেকে মুক্ত থাকা যায়।
৪। ব্যবহার করা সহজঃ হিকভিশন ক্যামেরা তুলনামূলক সহজেই পরিচালনা করা যায় এবং হিকভিশন ক্যামেরাগুলো ডিভিআর বা এনভিআর এর সাথে সহজেই সামঞ্জস্য হয়। এছাড়া, হিকভিশন ক্যামেরা সহজেই জুম ইন / জুম আউট করে ভিডিও ধারণ করা যায়।
৫। উন্নত বৈশিষ্টঃ হিকভিশন ক্যামারাগুলোতে অ্যাডভান্স ইনফারেড টেকনোলজি, ইফিসিয়ান্ট ভিডিও কম্প্রেশন, অন্তর্নির্মিত মাইক্রোফোন, র্যাপিড ফোকাস, লম্বা আইআর দূরত্ব, ইত্যাদি উন্নত বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভূক্ত থাকে। তাই, প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হিকভিশন ক্যামেরা নির্বাচন করতে হবে।
তাছাড়া, হিকভিশন ক্যামেরা উন্নত গুনমান সম্পন্ন উপাদান দ্বারা তৈরি করা হয় বিধায় দীর্ঘদিন সহজেই ব্যবহার করা যায়।