গাড়ি কেনাকাটা
টয়োটা পাসো মূলত জাপানের দাইহাতসু মোটর কর্পোরেশন লিমিটেডের তৈরি সাব কম্প্যাক্ট গাড়ি। এটি শুরুতে দাইহাতসু বুন নামে পরিচিত পেলেও পরবর্তীতে টয়োটা ব্র্যান্ড টয়োটা পাসো নামে বিশ্বব্যাপী সরবারহ করেছে। তাছাড়া, কম্প্যাক্ট সাইজ এবং যথেষ্ট জ্বালানি সাশ্রয়ী হওয়ায়, শহুরে রাস্তায় বিশেষ করে ঢাকার মতো শহরের ব্যস্ত রাস্তায় ড্রাইভ করার জন্য পাসো আদর্শ গাড়ি। যার ফলে, বাংলাদেশে গাড়ি ক্রেতাদের মধ্যে টয়োটা পাসো জনপ্রিয় পছন্দ হয়ে উঠেছে।
কেন টয়োটা পাসো কিনবেন?
ইঞ্জিনঃ টয়োটা পাসো সাধারণত ১০০০সিসি থেকে শুরু করে ১৩০০সিসি ও ১৫০০ সিসি ইঞ্জিনের সমন্বয়ে পাওয়া যায়, যা শক্তি এবং জ্বালানি দক্ষতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে। ১৩০০সিসি ও ১৫০০ সিসি ভেরিয়েন্টের ইঞ্জিনে একটু বেশি কর্মক্ষমতা পাওয়া যায়, যার ফলে শহরের ভিতরে এবং হাইওয়ে রাস্তায় দীর্ঘ ভ্রমণে ড্রাইভিং করার জন্য উপযুক্ত হয়ে থাকে।
ট্রান্সমিশনঃ টয়োটা পাসো গাড়ির বেশিরভাগ মডেলে ভিভিটি-আই, সিভিটি (কন্টিনিউয়ালি ভ্যারিয়েবল ট্রান্সমিশন) টাইপের ট্রান্সমিশন সিস্টেম দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে, যা মসৃণ ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে। পাশাপাশি আরও ভালো জ্বালানি সাশ্রয় করে থাকে। এই ধরনের ট্রান্সমিশন সিস্টেম সমূহ সাধারণত সিটি এরিয়ার জন্য সুবিধাজনক, যেখানে স্টপ-এন্ড-গো ট্র্যাফিক থাকে।
সিট এবং ইন্টেরিয়রঃ প্যাসো গাড়িতে সাধারণত পাঁচ থেকে সাত জন যাত্রী আরামদায়কভাবে বসার জন্য পর্যাপ্ত লেগরুম এবং হেডরুম দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। তাছাড়া, এই গাড়ির ভিতরের অংশে মানসম্পন্ন লেদার উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যা ড্রাইভার এবং যাত্রী উভয়ের জন্যই মনোরম পরিবেশ সরবারহ করে থাকে।
বডি স্টাইলঃ টয়োটা পাসো সাধারণত কম্প্যাক্ট হ্যাচব্যাক, সেডান, এস্টেট, এবং এসইউবি ৪*৪ বডি স্টাইল সরবারহ করে থাকে। ফলে, সংকীর্ণ স্থানে চলাচল করা সহজ হয় এবং শহরের ভিতরে ড্রাইভিং করা সুবিধাজনক হয়ে থাকে। তাছাড়া, এই গাড়ির স্টাইলিশ ডিজাইন ব্যাক্তিগত ব্যবহারকারী থেকে শুরু করে পারিবারিকভাবে ব্যবহারের জন্য গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে থাকে।
গিয়ার সিস্টেমঃ টয়োটা পাসো গাড়িতে অটোমেটিক গিয়ার সিস্টেম সরবারহ করে থাকে, যা ব্যবহারকারী-বান্ধব। ফলে, সহজেই গিয়ার পরিবর্তন করতে পারবেন। এছাড়াও, সিভিটি ইঞ্জিন সিস্টেমে ম্যানুয়াল গিয়ার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই নির্বিঘ্ন ত্বরণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
কালারঃ টয়োটা পাসো বিভিন্ন রঙে, যেমন সাদা, সিলভার এবং কালোর মতো ক্লাসিক শেডের গাড়ি সরবারহ করে। পাশাপাশি লাল এবং নেভি ব্লুয়ের মতো আরও আকর্ষণীয় কালারের পাসো গাড়ি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেট প্লেস বিডিস্টলে রয়েছে। এই ধরনের বৈচিত্র্যময় কালার আপনার ব্যক্তিগত স্টাইলের সাথে মানানসই রঙ বেছে নিতে সহায়ক হবে।
জ্বালানি সিস্টেমঃ পাসো গাড়ি মূলত জ্বালানি দক্ষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। পাশাপাশি এই গাড়ির জ্বালানি ট্যাঙ্কের ধারণক্ষমতা প্রায় ৪০ লিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে, এই গাড়ি দিয়ে দৈনন্দিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে একবার ট্যাঙ্ক লোড করে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারবেন সহজে। তাছাড়া, টয়োটা পাসো গাড়িতে পেট্রোল, অকটেন, সিএনজি/ এলপিজির মত ফুয়েল সিস্টেম রয়েছে, যা আপনার ইচ্ছানুযায়ী ফুয়েল ব্যবহার করার জন্য সহায়ক হবে।
কুলিং এবং ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেমঃ বেশিরভাগ মডেলের টয়োটা পাসো গাড়িতে গরম আবহাওয়ায় যাত্রী এবং ড্রাইভারকে আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে দক্ষ এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। এছাড়াও, এই গাড়িতে ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেমে সাধারণত সিডি প্লেয়ার, রেডিও এবং ব্লুটুথ সংযোগের মতো ফিচার রয়েছে। পাশাপাশি, ফগ লাইট, পাওয়ার মিরর, অরজিনাল হেডলাইট, এবিএস ব্রেক সিস্টেম, ডেশ ক্যামেরা সহ প্রয়োজনীয় ফিচার রয়েছে, যা সামগ্রিকভাবে আপনাকে উন্নত ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।
টয়োটা পাসোর দাম কত?
বাংলাদেশে টয়োটা পাসো গাড়ির দাম ৫৩০,০০০ টাকা থেকে শুরু, যা হ্যাচবেক বডি স্টাইল, ৫ আসন বিশিষ্ট এবং ভিভিটি-আই টাইপ ইঞ্জিনের সমন্বয়ে তৈরি। তবে, মডেল, ইয়ার, কন্ডিশন, ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি, কালার, ফুয়েল সিস্টেম, এবং ট্রান্সমিশন সহ অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভর করে টয়োটা পাসোর দাম সাধারণত পরিবর্তিত হয়ে থাকে। বর্তমানে, রিকন্ডিশন এবং ব্যবহৃত উভয় ধরনের পাসো গাড়ি বাংলাদেশে জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টলে পাওয়া যায়।
১০০০ সিসি টয়োটা পাসোর দাম
বাংলাদেশে ১০০০ সিসি টয়োটা পাসোর দাম সাধারণত ৬৮০,০০০ টাকা থেকে শুরু, যা গাড়ির মডেল, ইয়ার এবং কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এই সিসির পাসো গাড়ি সাধারণত কম্প্যাক্ট সাইজ এবং ৫ আসন বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
১৫০০ সিসি টয়োটা পাসোর দাম
বাংলাদেশের বাজারে ১৫০০ সিসি ভ্যারিয়েন্টের টয়োটা পাসো কম দেখা যায়। তবে, মডেল ইয়ার, আসন বিন্যাস এবং কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে ১৫০০ সিসির টয়োটা পাসো বাংলাদেশে ৮৫০,০০০ টাকা থেকে ১,৪৫০,০০০ টাকার কিনতে পারবেন। এই সিসি ক্যাপাসিটির পাসো গাড়ি সাধারণত ৭ আসন বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
টয়োটা পাসো দিয়ে কি দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করা যায়?
হ্যাঁ, বাংলাদেশে টয়োটা পাসো দিয়ে আপনি দীর্ঘ দূরত্বে ভ্রমণ করতে পারবেন। এই কমপ্যাক্ট সাইজের গাড়িটি মূলত শহরের রাস্তায় ব্যবহার উপোযগী করে ডিজাইন করা হয়েছে। তাছাড়া, জ্বালানি সাশ্রয়ের কারণে পাসো গাড়ি দিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণ লাভজনক হবে। এছাড়াও, আকারে ছোট হওয়ার কারণে শহরের যানজটের মধ্যে টয়োটা পাসো দিয়ে চলাচল করা সহজ হয়। তবে, গ্রামীণ এরিয়াতে বিশেষত পাহাড় কিংবা কাদামাটির রাস্তায় ড্রাইভিং করার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করতে পারে। সামগ্রিকভাবে, টয়োটা পাসো শহরে কিংবা হাইওয়ের মত রাস্তায় ড্রাইভিং করার পাশাপাশি দীর্ঘ ভ্রমণের আদর্শ গাড়ি।
পাসো গাড়ি মাইলেজ কেমন দিয়ে থাকে?
টয়োটা পাসো প্রতি লিটারে প্রায় ২৪ কিমি মাইলেজ প্রদান করে থাকে। এছাড়াও, হাইওয়ে তে লিটার প্রতি প্রায় ২৬-২৮ কিমি পর্যন্ত মাইলেজ প্রদান করে থাকে। তবে, পাসো গাড়ির ভ্যারিয়েন্ট, ট্রান্সমিশন, ফুয়েল টাইপ এবং ড্রাইভিং স্টাইলের নির্ভর করে মাইলেজ কিছু টা কম বা বেশি হয়ে থাকে।
টয়োটা পাসোর টপ স্পীড কত?
টয়োটা পাসো গাড়ির টপ স্পীড গড়ে ১৭০-১৮০ কিমি/ঘন্টা হয়ে থাকে। তবে, গাড়ির ইঞ্জিন, ফুয়েল এবং রাস্তার অবস্থা ভেদে টপ স্পিড তারতম্য হয়।