গাড়ি কেনাকাটা
টাটা গাড়ি মূলত ভারতীয় মাল্টিন্যাশনাল অটোমোটিভ কোম্পানি টাটা মটরস লিমিটেড এর তৈরি। পার্শ্ববর্তী দেশে তৈরি হওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের গাড়ীর তুলনায় এই গাড়ি যথেষ্ট সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। ছোট হ্যাচব্যাক থেকে শুরু করে বড় এসইউভি এবং সেডান টাটা গাড়ি পাওয়া যায়, যা বাংলাদেশের যেকোনো রাস্তায় ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া, টাটা গাড়ীতে দক্ষ এবং শক্তিশালী ইঞ্জিন ব্যবহার করায় যথেষ্ট জ্বালানী সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। সামগ্রিকভাবে, টাটা গাড়ি সাশ্রয়ী দাম, উন্নত ইঞ্জিন এবং নির্ভরযোগ্য সার্ভিসিং সুবিধা প্রদান করায় বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
টাটা গাড়ীর সিরিজসমূহ
- টাটা ন্যানোঃ টাটা ন্যানো মূলত কম্প্যাক্ট সাইজের গাড়ী। এটি বাংলাদেশে সিটি কার বা মিনি কার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই সিরিজের গাড়ীতে ০.৬ লিটার পেট্রোল ইঞ্জিন রয়েছে, যা প্রায় ২১-২৩কিমি/লিটার মাইলেজ প্রদান করে থাকে। তাছাড়া, টাটা ন্যানো গাড়ীতে ৪-ইঞ্চি ডিসপ্লে, ম্যানুয়াল এয়ার কন্ডিশনার এবং পাওয়ার স্টিয়ারিং এর মতো মৌলিক ফিচার রয়েছে। বাংলাদেশে টাটা ন্যানো গাড়ীর দাম ৩৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু।
- টাটা ইন্ডিগোঃ টাটা ইন্ডিগো গাড়ি সাধারণত কমপ্যাক্ট সেডান গাড়ি যা ক্লাসিক ডিজাইনে তৈরি। এই সিরিজের গাড়ি পেট্রোল এবং ডিজেল উভয় ইঞ্জিন সরবারহ করে থাকে। টাটা ইন্ডিগো গাড়ি প্রতি লিটারে প্রায় ১৫-২৫কিমি মাইলেজ প্রদান করে থাকে, যা বাংলাদেশে ৩০০,০০০ টাকা ৫০০,০০০ টাকার মধ্যে কেনা যায়। এছাড়া, টাটা ইন্ডিগো গাড়ীতে ২-ডিআইএন মিউজিক সিস্টেম, পাওয়ার উইন্ডোজ এবং সেন্ট্রাল লকিংয়ের মতো ফিচার সরবারহ করে থাকে।
- টাটা ডাবল ক্যাভিনঃ টাটা ডাবোল কেবিন গাড়ি পিছনে একটি পৃথক কার্গো এলাকা দিয়ে ডিজাইন করা রয়েছে। এই মডেলের গাড়ীতে ১.৪ লিটার ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে, যা প্রায় ১৪ কিমি/লিটার মাইলেজ প্রদান করে। টাটা ডাবল ক্যাভিন গাড়ীতে ২-ডিআইএন মিউজিক সিস্টেম, পাওয়ার স্টিয়ারিং এবং ডুয়াল-টোন ইন্টেরিয়র দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। বাংলাদেশে, টাটা ডাবোল কেবিন গাড়ি ৭০০,০০০ টাকা থেকে ১,০০০,০০০ টাকায় পাওয়া যায়, যা ছোট ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
কেন টাটা গাড়ি কিনবেন?
স্টাইলিশ ডিজাইনঃ টাটা গাড়ি সাধারণত আধুনিক এবং আকর্ষণীয় ডিজাইন সরবার করে থাকে। এই ব্র্যান্ডের গাড়ি সমূহ মসৃণ ডিজাইনে তৈরি হওয়ার পাশাপাশি এরোডাইনামিক এক্সটারিয়র, সুইপ্ট-ব্যাক হেডল্যাম্প এবং কুপের মত রুফলাইন সরবারহ করে থাকে। ফলে, টাটা গাড়ি বাংলাদেশে ড্রাইভার এবং গাড়ি উৎসাহীদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
উন্নত ইঞ্জিনঃ ক্রমাগত উন্নত কর্মক্ষমতা এবং দক্ষতা প্রদানের জন্য টাটা গাড়ীর ইঞ্জিন টেকনোলোজি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। অনেক টাটা গাড়ীতে টার্বোচার্জড পেট্রোল এবং ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে যা আকর্ষণীয় পাওয়ার আউটপুট সরবরাহ করে। তাছাড়া, ইঞ্জিন নির্ভরযোগ্য এবং টেকসইভাবে ডিজাইন করার ফলে টাটা গাড়ি মসৃণ এবং আরামদায়ক ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়৷
অভ্যন্তরীণ অবস্থাঃ টাটা গাড়িতে যথেষ্ট আরামদায়ক অভ্যন্তর সরবারহ করে থাকে, যা মূলত যাত্রীদের চাহিদাকে প্রধান্য দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে, টাটা গাড়ীতে পর্যাপ্ত লেগরুম এবং হেডরুম সহ প্রশস্ত কেবিন পাওয়া যায়, যা প্রিমিয়াম অনুভূতি প্রদান করে থাকে।
ট্রান্সমিশন সিস্টেমঃ এই ব্র্যান্ডের গাড়ীতে ম্যানুয়াল এবং স্বয়ংক্রিয় ম্যানুয়াল (এএমটি) গিয়ারবক্স রয়েছে। ফলে, টাটা গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী ট্রান্সমিশন সিস্টেম বাছাই করে নিতে পারবেন। টাটা গাড়ীর ট্রান্সমিশন সিস্টেম মূলত নিরবিচ্ছিন্ন পাওয়ার ডেলিভারি এবং দক্ষ গিয়ার শিফ্ট সুবিধা প্রদান করে থাকে। ফলে, উন্নত ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
ইঞ্জিন ক্যাপাসিটিঃ টাটা গাড়ি সাধারণত ৬৩০ সিসি থেকে ২৫০০ সিসি ক্যাপাসিটির ইঞ্জিন সরবারহ করে থাকে। এছাড়াও, টাটা ন্যানো গাড়ীতে কম্প্যাক্ট সাইজের ০.৬ লিটার থেকে শুরু করে টাটা নেক্সন এর মত মডেলের গাড়ীতে ১.৫ লিটারের ডিজেল ইঞ্জিন সরবারহ করে থাকে। ফলে, চাহিদা ও বাজেট অনুযায়ী পছন্দের টাটা গাড়ি সহজেই কিনতে পারবেন।
ফুয়েল সিস্টেমঃ পেট্রোল এবং ডিজেল উভয় ধরণের ফুয়েল সিস্টেমের টাটা গাড়ি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এই ব্র্যান্ডের গাড়ি উপযুক্ত ফুয়েল সিস্টেম অনুযায়ী সর্বোত্তম কর্মক্ষমতা এবং দক্ষতা নিশ্চিত করে থাকে। ফলে, চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী উপযুক্ত ফুয়েল সিস্টেম বাছাই করে টাটা গাড়ি কিনতে পারবেন।
কালারঃ মেরুন, সাদা, লাল সহ বিভিন্ন কালারে টাটা গাড়ি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। তাই, আপনি আপনার পছন্দের কালারের টাটা গাড়ি সহজে সংগ্রহ করতে পারবেন।
সেফটি ফিচারঃ টাটা গাড়িতে ডুয়াল এয়ারব্যাগ, ইবিডি সহ এবিএস, রিয়ার পার্কিং সেন্সর এবং কর্নার স্টেবিলিটি কন্ট্রোল সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ফিচার দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। এই ফিচার যুক্ত টাটা গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। তাই, বাংলাদেশের রাস্তার জন্য টাটা গাড়িকে নিরাপদ গাড়ি হিসেবে কিনতে পারেন।
বিক্রয়োত্তর সেবাঃ গ্রাহকদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের সুবিধা প্রদান করতে সারা বাংলাদেশে অনুমোদিত টাটা গাড়ির সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষ টেকনিশিয়ান পাওয়া যায়। তাই যেকোন সমস্যায় টাটা গাড়ি তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত করা যায়। ফলে, সময়ের সাথে টাটা গাড়ির ভালো কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে পারবেন।
বাংলাদেশে টাটা গাড়ীর দাম
বাংলাদেশে ব্যবহৃত এবং রিকন্ডিশন উভয় ধরনের টাটা গাড়ি পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে টাটা গাড়ীর দাম ৩০০,০০০ টাকা থেকে শুরু যা ব্যবহৃত কন্ডিশনের গাড়ি এবং ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ৬৩০ সিসি হয়ে থাকে। এছাড়াও, গাড়ির মডেল, ডিজাইন, বডি স্টাইল, ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি, কালার, ফুয়েল সিস্টেম, ট্রান্সমিশন সহ অন্যান্য ফিচারের উপর নির্ভর করে বাংলাদেশে সকল টাটা গাড়ীর দামের পার্থক্য হয়ে থাকে। তবে, ২৫০০ সিসি ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি, ডিজেল ইঞ্জিন, এবং ৫ আসন বিশিষ্ট টাটা গাড়ির দাম বাংলাদেশে ৭৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু।