গাড়ি কেনাকাটা
হাইব্রিড গাড়িতে পেট্রোল বা ডিজেল ইঞ্জিন এবং ইলেকট্রিক মোটর থাকে যা গাড়িকে চালিত করার জন্য একাধিক জ্বালানী সিস্টেমের সাথে কাজ করতে পারে। ফলে, হাইব্রিড গাড়িগুলো তুলনামূলক কম জ্বালানী ব্যবহার করে তুলনামূলক অধিক পথ চলতে করতে পারে। হাইব্রিড গাড়ির ব্যাটারি সরাসরি অভ্যন্তরীণ ইঞ্জিন সিস্টেমের সাহায্যে চার্জ হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে টয়োটা, নিসান, হোন্ডা, ইত্যাদি ব্র্যান্ডের হাইব্রিড ধরনের গাড়ি পাওয়া যায়।
হাইব্রিড গাড়ির সুবিধা কি কি?
হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহারে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। বিস্তারিত উল্লেখ করা হলঃ
- শক্তি সাশ্রয়ীঃ হাইব্রিড গাড়ি প্রতি গ্যালন ফুয়েল ব্যবহার করে সাধারণ গাড়ির তুলনায় কমপক্ষে ৪৮ থেকে ৫০ কিলোমিটার রাস্থা বেশি চলতে পারে ফলে তুলনামূলক শক্তি সাশ্রয়ী হয়ে থাকে।
- খরচ সাশ্রয়ীঃ হাইব্রিড গাড়িগুলো তুলনামূলক শক্তি সাশ্রয়ী হয়ে থাকে ফলে এর পরিচালনায় কম খরচ হয়।
- পরিবেশ-বান্ধবঃ হাইব্রিড গাড়িতে মূলত ফুয়েল ইঞ্জিনের পাশাপাশি ইলেকট্রিক মোটর থাকে ফলে জীবাশ্ম জ্বালানি কম খরচ হয় এবং পরিবেশে সিও২ কম নির্গত হয়। ফলে, হাইব্রিড গাড়ি ব্যবহারে ওজোন স্তরে কম প্রভাব ফেলে তাই হাইব্রিড গাড়ি পরিবেশ-বান্ধব হিসেবে বিবেচিত।
- সহজ রক্ষানাবেক্ষণঃ হাইব্রিড গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ তুলনামূলক সহজ হয়ে থাকে। এবং, হাইব্রিড গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ খরচ সাধারণ গাড়ির সমান হয়ে থাকে।
- স্মার্ট বৈশিষ্ট্যঃ হাইব্রিড গাড়িগুলোতে বিশেষ স্মার্ট ফিচার থাকে যা ভ্রমন উপভোগের পাশাপাশি গাড়িকে কম খরচে চলতে সাহায্য করে। এমনকি, একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা হাইব্রিড গাড়ি কম স্পিডে গাড়ি চলাকালীন সময় ইঞ্জিন পাওয়ার কমিয়ে দেয় ফলে ফুয়েল কম খরচ হয়।
- আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ হাইব্রিড গাড়িতে অত্যাধুনিক ক্যামেরা, বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দরজার লক, এবং দুর্ঘটনা কালীন সময়ের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। তাই, হাইব্রিড গাড়ি অধিক নিরাপদ এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম।
বাংলাদেশে হাইব্রিড গাড়ির দাম কত?
বাংলাদেশে বর্তমানে রিকন্ডিশন ও ব্যবহৃত উভয় কন্ডিশনের হাইব্রিড গাড়ি পাওয়া যায়। এবং, হাইব্রিড গাড়ির দাম এর ব্র্যান্ড, ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি, ডিজাইন, মাইলেজ, ইত্যাদির ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে হাইব্রিড গাড়ির দাম ১৩,০০,০০০ টাকা থেকে শুরু যার ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ১৫০০ সিসি এবং ব্যবহৃত কন্ডিশনের হয়ে থাকে। তাছাড়া, ১৮০০ সিসি এবং ২০০০ সিসি ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি সম্পন্ন হাইব্রিড গাড়ি বাংলাদেশে পাওয়া যায় দাম তুলনামূলক বেশি হয়।
হাইব্রিড গাড়ি কেনার আগে কি কি দেখতে হবে?
হাইব্রিড গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ
১। গাড়ির মাইলেজঃ বাংলাদেশে মূলত ব্যবহৃত ও রিকন্ডিশন গাড়ি পাওয়া যায় তাই হাইব্রিড গাড়ি কেনার আগে এই গাড়িটি পূর্বে কত কিলোমিটার চলেছে তা যাচাই করে নিতে হবে। হাইব্রিড গাড়ির মাইলেজ যত কম হবে গাড়ির কন্ডিশন তত ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২। ফুয়েল সিস্টেমঃ সাধারণত, বাংলাদেশে হাইব্রিড গাড়িগুলো অকটেনে চালিত হয়ে থাকে। এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় অকটেন চালিত গাড়িকে সিএনজি গ্যাসে চালিত গাড়িতে রুপান্তর করা যায়। ফলে, অকটেন ও সিএনজি গ্যাস উভয় সিস্টেমে হাইব্রিড গাড়ি চলতে পারে। তাই, প্রয়োজন অনুসারে ফুয়েল সিস্টেম যাচাই করে হাইব্রিড গাড়ি সংগ্রহ করতে হবে।
৩। ফুয়েল ট্যাঙ্ক ক্যাপাসিটিঃ প্রতি বার কত লিটার জ্বালানি একবারে জ্বালানি ট্যাঙ্ক পরিপূর্ণ করবে তাই ফুয়েল ট্যাঙ্ক ক্যাপাসিটি। ফুয়েল ট্যাঙ্ক ক্যাপাসিটি কম হলে ঘন ঘন ট্যাঙ্ক পরিপূর্ণ করতে হবে ফলে যাত্রাপথে ঘন ঘন ব্যাঘাত ঘটবে। তাই, প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট ফুয়েল ট্যাঙ্ক ক্যাপাসিটি বিবেচনায় হাইব্রিড গাড়ি নির্বাচন করতে হবে।
৪। জ্বালানি খরচঃ হাইব্রিড গাড়ি কেনার আগে এর জ্বালানি খরচ যাচাই করে নিতে হবে। প্রতি লিটার জ্বালানি ব্যবহার করে কত কিলোমিটার চলতে পারবে তার ভিত্তিতে হাইব্রিড গাড়ি নির্বাচন করতে হবে।
৫। ইঞ্জিন ক্যাপাসিটিঃ ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি যত বেশি হবে হাইব্রিড গাড়ি তত বেশি দ্রুত গতিতে চলতে পারবে। তাই, প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি সম্পন্ন হাইব্রিড গাড়ি নির্বাচন করতে হবে।