গাড়ি কেনাকাটা
জরুরী চিকিৎসা পাশাপাশি পরিবহন সেবা প্রদান করার জন্য অ্যাম্বুলেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় অবকাঠামোগত অবস্থা অনেক সীমিত, তাই রোগীদের চিকিৎসার জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরের ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। তাছাড়া অ্যাম্বুলেন্স বিভিন্ন স্তরের গুণমান এবং অ্যাক্সেসযোগ্যতার সাথে বিডিতে সরকারী এবং বেসরকারী উভয় ক্ষেত্রে সেবা প্রদান করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্সের ভূমিকা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার মান ও প্রাপ্যতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্সের দাম কত?
বিডিতে ব্যবহৃত এবং রিকন্ডিশন উভয় ধরনের অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্সের দাম ১১,২০,০০০ টাকা থেকে শুরু যার ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ২,০০০ সিসি হয় এবং ব্যবহৃত কন্ডিশনের হয়ে থাকে। এছাড়াও উন্নত প্রযুক্তি, ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি, ডিজাইন, মডেল, এবং ট্রান্সমিশন সিস্টেম ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিডিতে অ্যাম্বুলেন্সের দামের পার্থক্য হয়ে থাকে। তবে, বর্তমানে উন্নত নিরাপত্তা, ফুয়েল সিস্টেম, উন্নত ডিজাইনে এবং রোগীদের জন্য উন্নত সুবিধা সম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্সের দাম ২৩,০০,০০০ টাকা থেকে শুরু।
অ্যাম্বুলেন্সে কি কি থাকা প্রয়োজন?
অ্যাম্বুলেন্সে থাকা নির্দিষ্ট সরঞ্জাম এবং সরবারহ ব্যবস্থা অ্যাম্বুলেন্সের ধরনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। অ্যাম্বুলেন্সে থাকা উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছেঃ
প্রাথমিক চিকিৎসা সরবরাহ ব্যবস্থাঃ ব্যান্ডেজ, জীবাণুমুক্ত ড্রেসিং, গজ, আঠালো টেপ এবং অ্যান্টিসেপটিক এর মত প্রাথমিক চিকিৎসা সরবরাহ ব্যবস্থা অ্যাম্বুলেন্সে থাকতে হবে।
অক্সিজেন সরঞ্জামঃ শ্বাসকষ্টে ভুগছে এমন রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকা উচিত।
ডিফিব্রিলেটরঃ ডিফিব্রিলেটর মূলত রোগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং অ্যারিথমিয়াসের চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। তাই অ্যাম্বুলেন্সে ডিফিব্রিলেটর থাকার পাশাপাশি তা পরিচালনার করার জন্য দক্ষ কর্মী থাকা উচিত।
স্ট্রেচারঃ রোগীদের নিরাপদে এবং আরামদায়কভাবে পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সে অবশ্যই স্ট্রেচার থাকা উচিত।
স্প্লিন্টঃ স্প্লিন্ট মূলত ভাঙ্গা হাড় বা অন্যান্য আঘাতকে স্থির অবস্থায় রাখতে ব্যবহৃত হয়। তাই অ্যাক্সিডেন্টে আহত রোগী বহনে শরীরের ভাঙ্গা অঙ্গ যেন স্থির অবস্থায় থাকে সে জন্য অ্যাম্বুলেন্সে বিভিন্ন সাইজের স্প্লিন্ট থাকতে হবে।
সাকশন সরঞ্জামঃ শ্বাসনালী পরিষ্কার করতে কিংবা রোগীর মুখ ও গলা থেকে শক্ত পদার্থ নিঃসরণ এবং অন্যান্য তরল অপসারণ করার জন্য সাকশন সরঞ্জাম থাকা উচিত।
ওষুধঃ অ্যাম্বুলেন্সে ব্যথা উপশমকারী, অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি ওষুধ এবং অন্যান্য চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরনের ইমারজেন্সি ওষুধ রাখা উচিত।
যোগাযোগের সরঞ্জামঃ তাছাড়া বিডিতে অ্যাম্বুলেন্স থেকে যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোন থাকার পাশাপাশি ইমারজেন্সি হাসপাতালের যোগাযোগ করার নাম্বার এবং অন্যান্য জুরুরি চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনে অভার ফোন সাপোর্ট দেওয়ার মত দক্ষ চিকিৎসা সেবা দিবে এমন সুবিধা থাকা উচিত। সামগ্রিকভাবে, অ্যাম্বুলেন্সের সরঞ্জাম এবং সরবরাহ ব্যবস্থা মূলত হাসপাতালে যাওয়ার পথে রোগীদের জরুরী চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তাই সেবাদানের স্তরের উপর নির্ভর করে বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্সের নির্দিষ্ট সরঞ্জাম এবং সরবরাহ ব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়ে থাকে।
টাইপ-১ অ্যাম্বুলেন্স কি?
টাইপ-১ অ্যাম্বুলেন্স হচ্ছে এডভান্স লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের সমন্বয়ে তৈরিকৃত অ্যাম্বুলেন্স যা কার্ডিয়াক অ্যাটাক জনিত রোগীদের ইমারেজেন্সি সাপোর্ট দিয়ে হাসপাতালে স্থানান্তর করা জন্য বিডিতে আদর্শ অ্যাম্বুলেন্স। বর্তমানে বাংলাদেশে টাইপ-১ অ্যাম্বুলেন্স সাধারণত ভারী-শুল্ক চেসিস সম্পন্ন ট্রাকের মতো এবং একটি কাস্টমাইজড অ্যাম্বুলেন্স বডি দিয়ে ডিজাইন করা হয়। বিডিতে এই ধরণের অ্যাম্বুলেন্সে এয়ারওয়ে ম্যানেজমেন্ট ইকুইপমেন্ট, কার্ডিয়াক মনিটর, ডিফিব্রিলেটর এবং ইমারেজেন্সি ওষুধ সহ বিভিন্ন জরুরী চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশে টাইপ-১ অ্যাম্বুলেন্সে উচ্চ প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক থাকে যারা উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে সক্ষম।
কিভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা খুঁজে পাওয়া যাবে?
বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়াটা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। তবে বাজেটের সাথে মানানসই অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত। যেমন- অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার, স্বাস্থ্য বীমা পরিষেবা প্রদানকারীর সাথে যোগাযোগ, পরিচিতদের মধ্যে থেকে যাচাই করা নেওয়া উচিত। পাশাপাশি বিডিতে স্থানীয় হাসপাতাল এরিয়াতে সচারাচর অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে নিজে থেকে যাচাই বাছাই করে নেওয়া উচিত। তবে একটা বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে জুরুরি প্রয়োজনে দাম যাচাইয়ের চেয়ে বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্সের স্বাস্থ্য সেবার মান যাচাই করে সেবা নেওয়া উচিত।
বিডিতে অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত খরচ কত?
সাধারণত যাতায়াতের দূরত্ব, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সের ধরনের উপর নির্ভর করে বিডিতে অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত খরচ পরিবর্তিত হয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াত খরচ ১,৫০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা বা তার বেশি হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশের সরকারী হাসপাতাল এবং কিছু এনজিও সংস্থা নিম্ন আয়ের ব্যক্তি বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা রোগীদের জন্য বিনামূল্যে বা ভর্তুকি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রদান করে থাকে।