ভিডিও ক্যামেরা কেনাকাটা
চলমান কোনো দৃশ্য ধারণের জন্য ভিডিও ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন রকমের ক্যামেরা আছে যেগুলো দিয়ে ভিডিও করা গেলেও ভিডিও রেজুলেশন এবং মান ভাল পাওয়া যায় না। কিন্তু ভিডিও ক্যামেরা গুলো তৈরি হয়েছে শুধুমাত্র চলমান কোনো দৃশ্যকে ধারণ করার জন্য। আর ক্যামেরাগুলোতেও এসেছে অনেক প্রযুক্তির উন্নয়ন যেমন সেলুলয়েড ফিল্ম, চুম্বকীয় ফিতার পরিবর্তে এখন ভিডিও ধারণের জন্য রয়েছে আধুনিক ডিজিটাল স্টোরেজ ডিভাইস। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, ভ্লগ, ভ্রমণের বিভিন্ন দৃশ্য ধারণের জন্য ভিডিও ক্যামেরা বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। বাংলাদেশে সনি, প্যানাসনিক সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভিডিও ক্যামেরা পাওয়া যায়। এক সময় এই ভিডিও ক্যামেরার দাম বেশি থাকলেও এখন বাংলাদেশে খুব কম দামে উন্নতমানের ভিডিও ক্যামেরা পাওয়া যায়। বিভিন্ন দেশে এটি ক্যামকর্ডার নামে পরিচিত হলেও বাংলাদেশে ভিডিও ক্যামেরা নাম সর্বাধিক পরিচিত।
বাংলাদেশে ভিডিও ক্যামেরার দাম কত?
বাংলাদেশে ভিডিও ক্যামেরার মাত্র ৭,৫০০ টাকায় পাওয়া যায়। অপটিক্যাল এবং ডিজিটাল জুম এই ভিডিও ক্যামেরায় থাকে ফলে অনেক দূরের ভিডিও স্পষ্ট তোলা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রযুক্তির ভিডিও ক্যামেরা পাওয়া যায় বাংলাদেশের বাজারে। মূলত ভিডিও ক্যামেরার দাম নির্ধারণ করা হয় ভিডিওর কোয়ালিটি, জুম এবং বিভিন্ন ফিচারের উপর।
ভিডিও ক্যামেরার বা ক্যামকর্ডার কেনার আগে কি কি জানা জরুরি?
সঠিক মানের ভিডিও ক্যামেরা বা ক্যামকর্ডার নির্বাচন করার জন্য কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে সবার আগে। এ বিষয় গুলো হলোঃ
১। কোন ধরণের ভিডিও ধারণ করা হবে সেটি জেনে ভিডিও ক্যামেরা নির্বাচন করা উচিৎ। অর্থাৎ, অ্যাডভেঞ্চার, একশন শুটিং, পানির নিচের দৃশ্য ধারণ, ভ্লগিং ইত্যাদি ভিডিও ধারণের জন্য কাজ অনুযায়ী দরকারি সকল বিশেষত্ব গুলো আছে এমন ভিডিও ক্যামেরা কিনতে হবে। আর কিছু ভিডিও ক্যামেরা আছে যেগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে প্রফেশনাল ভিডিও ক্যামেরা বলে। বাংলাদেশে এই ক্যামেরাগুলোও এখন সহজলভ্য আর দাম কম।
২। ভিডিও ক্যামেরার রেজুলেশন দেখে নির্বাচন করতে হবে। বাংলাদেশে বিভিন্ন রেজুলেশনের ভিডিও ক্যামেরা পাওয়া যায় যেমন এইচডি ভিডিও ক্যামেরা, ফুল এইচডি ভিডিও ক্যামেরা, ৪কে এবং ৮কে ভিডিও ক্যামেরা। তবে বাংলাদেশে বর্তমানের প্রচলিত রেজুলেশন ৪কে ভিডিও ক্যামেরাগুলো নির্বাচন করা ভালো তাতে টাকা খুব একটা বেশি লাগবে না। আর যেকোনো প্রাণবন্ত স্পষ্ট ভিডিও ধারণে সর্বশেষ রেজুলেশনের ভিডিও ক্যামেরাগুলো বিশেষভাবে উপযোগী। তবে এইচডি, ফুল এইচডি ভাল কাজ করে।
৩। ভিডিও ক্যামেরার ফ্রেম রেট জেনে ভিডিও ক্যামেরা নির্বাচন করা উচিৎ। বাংলাদেশে ৬০, ৫০, ৩০, ২৫, এবং ২৪ এফপিএস ফ্রেম রেটের ভিডিও ক্যামেরা পাওয়া যায়।
৪। সাংবাদিকতা, সাক্ষাৎকার, লাইভ শুটিং এর জন্য অনেক সময় ভিডিও ধারণের পাশাপাশি ভয়েস রেকর্ডিং এর সুবিধার দরকার হয়। তাই ভাল ভয়েস রেকর্ড করা যায় এরকম ভিডিও ক্যামেরা নির্বাচন করতে হবে।
৫। রাতে ভিডিও ধারণের জন্য নাইট মোড আছে এমন ভিডিও ক্যামেরা নিরবাচন করা ভাল। ফলে রাতে স্পষ্ট ভিডিও ধারণ করা যাবে এবং ভিডিওতে নয়েজ কম থাকবে।
৬। ব্যাটারি কর্মক্ষমতা দেখে একটি ভিডিও ক্যামেরা নির্বাচন করতে হবে। ব্যবহারের সময়ের উপর নির্ভর করে ব্যাটারি কর্মদক্ষতা কেমন তা দেখতে হবে।
৭। ভিডিও ক্যামেরা থেকে অন্যান্য ডিভাইসে ভিডিও নেয়ার জন্য দরকারি সব পোর্ট আছে কিনা সেটি দেখে ভিডিও ক্যামেরা নির্বাচন করতে হবে। আর এক্ষেত্রে ওয়াইফাই বা ব্লুটুথ থাকলে ভাল হয়।
৮। সহজে বহন করার জন্য হ্যান্ডি ভিডিও ক্যামেরা নির্বাচন করা উত্তম। এই হ্যান্ডি ক্যামেরা গুলো ওজনে হালকা হয় এবং আকারে ছোট হয় তাই সহজেই বহন করা যায়। এগুলোর রেজুলেশনও ভাল অনেক।
৯। ভিডিও ক্যামেরাতে নিয়ন্ত্রণের জন্য যদি ডিসপ্লে থাকে তাহলে অনেক সুবিধা হয়। তাই ডিসপ্লে আছে এমন ভিডিও ক্যামেরা গুলো কেনা বেশি ভাল। আর এই ডিসপ্লে কতটুকু ঘুরানো যায় দেখে নেয়া উচিত।
১০। জুমিং কর্মক্ষমতা কেমন এটা দেখে ভিডিও ক্যামেরা কেনা উচিত যাতে দূরের কোনো দৃশ্যের ভিডিও সহজেই ধারণ করা যায়। বাংলাদেশের বাজারে প্রাপ্ত ভিডিও ক্যামেরাগুলোতে দুই ধরনের জুমিং থাকে। একটি হল ডিজিটাল জুম অন্যটি অপটিক্যাল জুম। ডিজিটাল জুমে ভিডিও ফেটে যেতে পারে তাই অপটিক্যাল জুম সবচেয়ে ভাল। যদি অনেক দূরের ভিডিও করতে চান তাহলে বেশি অপটিক্যাল জুম আছে এমন ক্যামেরা নির্বাচন করুন।
১১। ভিডিও ক্যামেরার স্টোরেজ কত তা দেখে নেয়া উচিত অর্থাৎ এটি কতক্ষন একটানা রেকর্ড করতে পারে। কিছু ভিডিও ক্যামেরাতে হার্ড ডিস্ক থাকে ফলে অনেকক্ষন রেকর্ডিং করা যায়। তবে সাধারণত ভিডিও ক্যামেরাতে মেমোরি কার্ডের অপসন থাকে।