ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার কেনাকাটা
ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস, যা মূলত অফিস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় প্রবেশের অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে। এছাড়াও, জাতীয় পরিচয় পত্র, সিম রেজিস্ট্রেশন সহ অন্যান্য নিরাপত্তা জনিত কাজে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ব্যবহার করা যায়। এই ধরনের ডিভাইস মূলত কম্পিউটারে সিস্টেমে পূর্বে সংরক্ষিত ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাক্সেস প্রদান করে। নিরাপত্তা বাড়াতে বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্পোরেট অফিস, সরকারি অফিস সহ ব্যক্তিগত ডিভাইস সমূহ নিরাপত্তা বাড়াতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্তমানে, গ্রাহক চাহিদা অনুযায়ী ভির্দী, জেডকেটেকো, ফুট্ৰনিক, সেকুজেন, মরফো সহ জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দাম পাওয়া যায়।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ব্যবহারের সুবিধা কি?
১। ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে উচ্চ নির্ভুলতার হার। এই ধরনের স্ক্যানার সাধারণত পিন, পাসওয়ার্ড এর বিপরীতে প্রায় শতকরা ৯৯ ভাগ সঠিক অ্যাক্সেস প্রদান করে।
২। ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার খুবই কম সময়ে মসৃণ অথেটিকেশন সলিউশন প্রদান করে, যা ব্যবহারকারীদের কেবল ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অ্যাক্সেস সুবিধা প্রদান করে।
৩। ব্যবহারকারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট কখনও এক রকম হয় না, তাই ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ব্যবহারে পিন বা পাসওয়ার্ড এর মত নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বললেই চলে।
৪। ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সাধারণত উচ্চ আইপি রেটিংযুক্ত, এবং ঘন ঘন ব্যবহারের জন্য বেশ শক্তিশালী এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছে, যা দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
৫। বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে সাথে বাংলাদেশের বাজারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে, বড় পরিসরের অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ছোট পরিসরে অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রদান করছে।
৬। এছাড়াও, কিছু কিছু ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারে ফেক ফিঙ্গারপ্রিন্ট ডিটেক্ট করার সুবিধা রয়েছে।
বাংলাদেশে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারের দাম কত?
বাংলাদেশে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারের দাম ৪,৪০০ টাকা শুরু, যা সাধারণত সাউন্ড ইন্ডিকেটর, বিপ সাউন্ড, হাই লুমিনেন্স এলইডি স্ট্যাটাস ইন্ডিকেটর, ১২ ভোল্ট ডিসি পাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। তাছাড়া, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার এর দাম ব্র্যান্ড, মডেল, সেন্সর টেকনোলোজি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার টাইপ এবং অন্যান্য ফিচার সমূহের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।
ইউএসবি ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার
ইউএসবি ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার হচ্ছে কমপ্যাক্ট সাইজের পোর্টেবল ডিভাইস যা মূলত ইউএসবি ইন্টারফেস ব্যবহার করে সহজেই কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইসের সাথে সংযুক্ত করা যায়। ইউএসবি ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সাধারণত ব্যক্তিগত কম্পিউটার সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা যায়, যেমন ডিভাইস লক এবং আনলক করা, ক্রেডেনশিয়াল ফাইল এবং ডকুমেন্ট সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েবসাইটে নিরাপদ লগইন করতে সহায়তা করে৷ ইউএসবি ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সাধারণত ছোট ব্যবসা এবং অফিসে ব্যবহার জন্য উপযুক্ত। বাংলাদেশে ইউএসবি ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সাধারণত ৪,০০০ টাকা থেকে ৬,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার
বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার হচ্ছে অপটিক্যাল বা ক্যাপাসিটিভ টেকনোলোজি যুক্ত ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার যা দিয়ে উচ্চ-রেজোলিউশনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ক্যাপচার করা যায়। বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সাধারণত অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম, অ্যাটেন্ড্যান্স সিস্টেম, ভিজিটর ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশনের কাজে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশে বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ৪,৫০০ টাকা থেকে ১৬,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার কেনার আগে কি কি দেখতে হবে?
ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার অ্যাকুরেসিঃ ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার কেনার ক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্ট ভালো ভাবে ক্যাপচার এবং শনাক্ত করতে পারে কিনা তা যাচাই করতে হবে। এছাড়াও উন্নত সেন্সর টেকনোলোজি এবং অ্যালগরিদম সহ স্ক্যানার বাছাই করতে হবে যা ধারাবাহিকভাবে সঠিক ফলাফল প্রদান করে।
সিস্টেম ইন্ট্রিগেশনঃ অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম, টাইম অ্যাটেন্ডেন্স সফটওয়্যার সহ অন্যান্য অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেমের সাথে সহজেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ইন্ট্রিগেট করার যাবে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
সিকিউরিটি ফিচারঃ অননুমোদিত অ্যাক্সেস এবং টেম্পারিং প্রতিরোধে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারের সাথে ডাটা এনক্রিপশন ফিচার যুক্ত রয়েছে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
বিল্ড কোয়ালিটিঃ অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের দৈনন্দিন ব্যবহারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার বিল্ড কোয়ালিটি যাচাই করার পাশাপাশি পানি ও ধুলাবালি থেকে সুরক্ষিত রাখতে আইপি রেটিং সম্পন্ন কিনা তা যাচাই করতে হবে।
ইউজার ইন্টারফেসঃ ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার কেনার ক্ষেত্রে সঠিক নির্দেশনাবলি, এলইডি ইন্ডিকেটর, অডিও রেসপন্স এবং ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস রয়েছে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
স্ক্যানিং ক্যাপাসিটিঃ ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই স্ক্যানিং ক্যাপাসিটি যাচাই করতে হবে। তাছাড়া, অফিস, কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মী সংখ্যা বিবেচনা করতে হবে এবং পরবর্তীতে কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে বেশি ক্যাপাসিটি সম্পন্ন ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্কানার বাছাই করতে হবে।
বাজেট সামঞ্জস্যতাঃ ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাজেট বিবেচনা করতে হবে। এছাড়াও, প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বাজেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফিচারযুক্ত রয়েছে কিনা তা যাচাই করতে হবে।