স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন কেনাকাটা
স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন হচ্ছে এমন এক ধরণের মেশিন যা টেকসই প্লাস্টিকের কয়েল ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, খাতা বাঁধার কাজে ব্যবহার করা হয়। এই ধরণের মেশিন মূলত বেশি পরিমান কাগজ একত্রে ছিদ্র করতে পারে এবং ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে স্পাইরাল কয়েল প্রবেশ করে কাগজ গুলোকে একত্রে আটকে রাখার ব্যবস্থা করে দেয়। বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, ফটোকপি দোকান এবং প্রিন্টিং প্রেসগুলোতে স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন ব্যাপক ব্যাবহার করা হয়। বর্তমানে, ম্যানুয়াল, ইলেকট্রিক এবং বিভিন্ন পাঞ্চ হোল বিশিষ্ট স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন সাশ্রয়ী দামে জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেট প্লেস বিডিস্টলে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কি কি ধরণের স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন পাওয়া যায়?
- বৈদ্যুতিক স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনঃ বৈদ্যুতিক স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন সাধারণত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এবং সহজ ইউজার ইন্টারফেস প্রদান করে। এই ধরণের স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন দিয়ে ম্যানুয়াল মেশিনের তুলনায় দ্রুত বাইন্ডিং করা যায়। তাছাড়া, ইলেকট্রিক স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনের পাঞ্চিং এবং বাইন্ডিং প্রক্রিয়াকে অটোমেটিক প্রসেসে হওয়ায়, বৃহত্তর পরিসরের নথিপত্র বাইন্ডিং করার জন্য উপযুক্ত। এই ধরণের মেশিন অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার জন্য আদর্শ।
- ম্যানুয়াল স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনঃ এই ধরণের স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন সাধারণত ম্যানুয়ালি হাতে অপারেট করতে হয়। ম্যানুয়াল স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন দিয়ে একবারে প্রায় ১২ টি শীট পর্যন্ত পাঞ্চ করা যায় এবং ৫০-৭০ মিমি পুরুত্বের ডকুমেন্ট বাঁধতে সহায়তা করে। এই ধরণের স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন বাংলাদেশে কম দামে পাওয়া যায়। তাছাড়া, ছোট ছোট খাতা কিংবা ডকুমেন্টস বাধার কাজের জন্য উপযুক্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও, ম্যানুয়াল স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন পোর্টেবল এবং বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না।
স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনের দাম কত?
মডেল, পাঞ্চিং হোল, হোল ক্যাপাসিটি এবং অন্যান্য ফিচারের উপর নির্ভর করে বাংলাদেশে স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনের দাম ৩,৪০০ টাকা থেকে ১৯,৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। ম্যানুয়াল বাইন্ডিং সলিউশনের জন্য ব্যবহার উপযোগী স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে ম্যানুয়াল স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনের দাম ৩,৫০০ টাকা থেকে ৭,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। ইলেকট্রিক স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনের দাম সাধারণত স্পেসিফিকেশন এবং ক্ষমতার উপর নির্ভর কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। তবে, বড় পরিসরের বাইন্ডিং কাজের জন্য ইলেকট্রিক স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন উপযুক্ত। বাংলাদেশে ইলেকট্রিক স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন ৯,০০০ টাকা থেকে ১৯,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় যাচাই করবেন
মেশিনের ধরণঃ বাংলাদেশে সাধারণত দুই ধরণের স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন পাওয়া যায়। ইলেকট্রিক স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন দ্রুত কাজ করে এবং উচ্চ-ভলিউম কাজের জন্য উপযুক্ত। অন্যদিকে ম্যানুয়াল পাঞ্চিং স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন এর মতো ম্যানুয়াল মেশিনগুলি আরও সাশ্রয়ী এবং বহনযোগ্য, যা মাঝে মাঝে ব্যবহারের জন্য আদর্শ। তাই, স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের চাহিদা বিবেচনা করে মেশিনের ধরন বেছে নেওয়া উচিত।
পাঞ্চিং ক্যাপাসিটিঃ স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনে সাধারণত ১২-২০ টি শিট বা ডকুমেন্ট বাঁধাই করা যায়। তাই, এই ধরণের মেশিন কেনার ক্ষেত্রে একবারে কতগুলো শীট পাঞ্চ করা যাবে তা যাচাই করতে হবে। এছাড়াও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য অবশ্যই উচ্চ পাঞ্চিং ক্যাপাসিটি সম্পন্ন স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন বিবেচনা করা উচিত।
বাইন্ডিং পুরুত্বঃ সর্বোচ্চ কতটি ডকুমেন্টস বাঁধাই করা যাবে, তার স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনের পুরুত্ব যাচাই করতে হবে। এই ধরণের মেশিন সর্বোচ্চ ৫০-৭০ মিমি পুরুত্বের ডকুমেন্ট বাঁধাই করা যায়। ফলে, একের অধিক ডকুমেন্টস সহজে বাঁধাই করা যাবে। তাই, স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নির্দিষ্ট বাঁধাইয়ের চাহিদা বিবেচনা করতে হবে।
হোল সাইজ এবং দূরত্বঃ স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন ভেদে হোল সাইজ এবং দূরত্ব ভিন্ন হয়ে থাকে। ম্যানুয়াল পাঞ্চিং স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনের হোল সাইজ ৩ x ৮ মিমি এবং দূরত্ব ১৪.৩ মিমি হয়ে থাকে। তাই স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে আপনার কাজের বিষয় বস্তু বিবেচনা করে কেনা উচিত।
ওজনঃ এই ধরনের মেশিন সাধারণত ৪.৮ কেজি থেকে ১৩ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। যদি স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন ঘন ঘন সরাতে হয়, তাহলে কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই এর ওজন এবং মাত্রা বিবেচনা করতে হবে। হালকা ওজনের জন্য ৪.৮ কেজি ওজনের স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন বিবেচনা করা উচিত, যা পরিবহন করা সহজ।
পেইজ সাইজঃ স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন দিয়ে এ৪, বি৪, এফ৪ সহ বিভিন্ন সাইজের পেইজ বাঁধাই করা যায়। তবে, মেশিনের মডেল ভেদে পেইজ সাইজ ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই, স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ব্যবহৃত কাগজের সাইজ পরিচালনা করতে পারবে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনে সর্বাধিক কতগুলো শিট বাঁধাই করা যায়?
স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনে সর্বাধিক কত পেইজ বাঁধাই করা যাবে, তা মূলত ব্যবহৃত কয়েল সাইজ এবং কাগজের পুরুত্বের উপর নির্ভর করে। তবে, এই ধরণের মেশিন দিয়ে সর্বোচ্চ ৪৫০ টি শিট বাধাই করা যাবে।
স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিন দিয়ে কি বইয়ের পেইজ প্রতিস্থাপন করা যায়?
হ্যাঁ, কয়েলটি খুলে নতুন পৃষ্ঠাগুলি স্থাপন করার পরে বইটিতে পুনরায় পেইজ যোগ করা যায়। তবে, প্রচুর সংখ্যক বই আপডেট করার ক্ষেত্রে বিষয়টি জটিল হবে।