বিছানার চাদর কেনাকাটা
বিছানার চাদর সবার প্রতিদিনের একটি দরকারি জিনিস। একটি বিছানার চাদরের উপর নির্ভর করে ঘরের ৮০ শতাংশ সৌন্দর্য। বাংলাদেশে বিভিন্ন রঙ এবং নকশার চাদর পাওয়া যায়। বিছানার এই চাদর গুলো তৈরি হয় বিভিন্ন গার্মেন্টসে আর একারনে এগুলো সাশ্রয়ী দামে বাংলাদেশে পাওয়া যায়। তবে চীনের তৈরী কিছু বিছানার চাদর পাওয়া যায় যেগুলো একটু রঙীন বেশি তবে টেকসই।
যেভাবে বিছানার জন্য সঠিক চাদর নির্বাচন করা সম্ভবঃ
বাংলাদেশে অনেক রকমের বিছানার চাদর বা বেড শিট পাওয়া যায়। কিন্তু ঘরের জন্য সঠিক ভাবে বিছানার চাদর নির্বাচন করতে না পারায় ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সম্ভব হয় না। শুধু দামি আসবাবপত্র এবং ঘর সাজানোর সামগ্রী দিয়ে ঘরের সৌন্দর্য বাড়বে এই ধারণা ভুল। নিচের কৌশল গুলো অনুসরণ করে বেড শিট কিনলে ঘরকে সুন্দর এবং পরিপাটি রাখা যাবে। তাই বিছানার জন্য সঠিক চাদর নির্বাচন করার ক্ষেত্রে নিচে কিছু কৌশল তুলে ধরা হলোঃ
খাটের মাপ
বেড শিট কেনার আগে অবশ্যই খাটের মাপ জেনে নিতে হবে ভালো ভাবে। কারণ খাটের তুলনায় বিছানার চাদর ছোট বা বড় হয়ে গেলে বিছানা থাকবে অগোছালো। তাই জেনে নিতে হবে খাটের মাপ। আর খাটের মাপের তুলনায় পাশে যেন বিছানার চাদরের পরিমান বেশি হয় সেদিকে লখ্য রাখতে হবে। তবে বাংলাদেশে এগুলো সিঙ্গেল বিছানার চাদর, ডাবল বিছানার চাদর হিসাবে বেশি পরিচিত।
ঘরের রঙ
বিছানার চাদর কেনার আগে ঘরের রঙ কি উজ্জ্বল নাকি হালকা আবছা এটা দেখে নিতে হবে। ঘর যদি উজ্জ্বল রঙের হয় তবে যেকোনো বিছানার চাদর মানিয়ে নিবে আর যদি আবছা রঙের হয় তবে উজ্জ্বল রঙের চাদর কিনতে হবে নতুবা ঘর আরও অন্ধকার মনে হবে। তবে সাদা রঙের বিছানার চাদর সব ধরনের ঘরে মানিয়ে নিবে আর এগুলোর কিছুতে অন্য রঙের স্ট্রাইপ থেকে এবং বাংলাদেশে দামে কম।
ঋতু অনুযায়ী বিছানার চাদর নির্বাচন
বেড শিট কেনার সময় কোন ঋতু চলমান আছে সেটা দেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্রীষ্মকালে পাতলা সুতির চাদরে আরাম পাওয়া যাবে এবং গরম কম লাগবে। আবার বর্ষাকালের জন্য সিল্ক বা জর্জেটের চাদর ভালো হবে। সিল্ক বা জর্জেটের চাদর ধোঁয়ার পরে শুকাতে বেশি সময় নেয় না। শীতকালের জন্য মোটা কাপড়ের চাদর ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যাবে কারন তীব্র শীতে উষ্ণতা পাওয়া যাবে। তাই ঋতু অনুযায়ী চাদর কেনা ভালো।
পানি নিরোধক বিছানার চাদর
কিছু বিশেষ বিছানার চাদর বাংলাদেশে পাওয়া যায় যেগুলোতে পানি প্রবেশ করতে পারে না। ফলে পানি পড়লে বিছানার অন্যান্য জিনিসের ক্ষতি হয় না। যে ঘরে ছোট শিশু আছে তাদের জন্য খুব ভাল এবং দামও খুব বেশি নয়।
বাংলাদেশে বিছানার চাদরের দাম কত?
বাংলাদেশে ভাল মানের বিছানার চাদর ৫০০ টাকায় পাওয়া যায় যেগুলোর রঙ খুব ভাল এবং অনেকদিন টেকসই হয। তবে বিছানার চাদরের দাম নির্ভর করে করে এর ফেব্রিকের কোয়ালিটি এবং রঙের কোয়ালিটির উপর।
বিছানার চাদর নিয়ে কিছু সতর্কতাঃ
বেড শিট নিয়ে অবশ্যই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। আর এই সতর্কতা বিছানার চাদর কেনার আগে এবং পরে দুই সময়েই অবলম্বন করতে হবে। যেভাবে সতর্কতা অবল্বন করতে হবে তা নিচে তুলে ধরা হলোঃ
১। বিছানার চাদর কেনার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে চাদরে ব্যবহৃত রঙ কাঁচা নাকি পাকা। রঙ পাকা না হলে সেটি কখনোই কেনা উচিত হবে না কারণ চাদর ধোঁয়ার পরে রঙ উঠে যাবে। তাই পাকা রঙের বিছানার চাদর কেনা ভালো।
২। চাদরের সাথে বালিশের কভার না থাকলে সেটি বেমানান তাই দাম একটু বেশি হলেও অবশ্যই বিছানার চাদরের সাথে বালিশের কভার কিনে নিতে হবে। আর যদি বেড শিটের সাথে বালিশের কভার সেট করা থাকে তাহলে সেটা কেনা বেশি ভালো এবং দামেও সাশ্রয়ী হবে।
৩। বিছানার চাদর কেনার পরে চাদরকে বেশি টানাটানি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ছোট বাচ্চারা বিছানার উপরে লাফালাফি করবে এটাই স্বাভাবিক তবে চাদরের পরিচর্যা না করলে চাদর ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৪। বিছানার চাদর ধোঁয়ার সময় ব্রাশ বা এ জাতীয় কিছু ব্যবহার না করাই ভালো। এগুলো বেড শিটের কাপড়ের অনেক ক্ষতি করে। বিছানার চাদর ধোঁয়ার সময় হালকা গরম পানির সাবান মেশালে খুব সহজেই ধুয়ে ফেলা যাবে। তাই কাপড় ধোঁয়ার ব্রাশ ব্যবহার না করাই ভালো।
৫। বেডশিট ধোঁয়ার সময় এন্টিসেপ্টিক ব্যবহার করলে জীবাণু মুক্ত থাকবে। যেহেতু বেড শিটের মধ্যে ঘুম, বসা ইত্যাদি কাজ করা হয় তাই এটিকে জীবাণু মুক্ত রাখা উচিত।