ইউ। পি। এস Battery কেনাকাটা
বাংলাদেশে সাধারণত বেশির ভাগ ইউপিএস এর সাথে ব্যাটারি যুক্ত থাকে তবে পরবর্তিতে অনেক ক্ষেত্রে আলাদা ভাবেও ইউপিএস ব্যাটারি কিনতে হয়। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইউপিএস ব্যাটারি কেননা এই আধুনিক যুগে কম্পিউটার বা অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যুৎ পরিচালিত করতে সাহায্য করে। অনেক সময়ে লোডশেডিং-এর জন্য দরকারি কাজ গুলো আটকে থাকে কিন্তু ইউপিএস ব্যাটারিতে চার্জ থাকলে এটি দিয়ে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস গুলো ব্যবহার করা যায়।
বিডিতে কত ধরণের ইউপিএস ব্যাটারি পাওয়া যায়?
বিডিতে দুই ধরণের ইউপিএস ব্যাটারি পাওয়া যায়। এগুলো হলোঃ
- ড্রাই সেল ব্যাটারি এবং
- লিড এসিড বা ওয়েট ব্যাটারি
ড্রাই সেল ব্যাটারি কীভাবে কাজ করে এবং এতে কি কি সুবিধা রয়েছে?
ড্রাই সেল ইউপিএস ব্যাটারি সাধারণত তার চার্জ সঞ্চয় করে এবং ব্যাটারি থেকে বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে একটি বিশেষ ধরনের ভালভ ব্যবহার করে। এবার জেনে নেয়া যাক ড্রাই সেল ব্যাটারির কিছু বিশেষ সুবিধাঃ
- ড্রাই সেল ব্যাটারি খুব সহজেই যেকোনো অবস্থানে পরিচালিত হতে পারে।
- ড্রাই সেল ব্যাটারি ওজনে বেশি ভারি হয় না। তাই এটি খুব সহজেই বহন করা যায়।
- এই ব্যাটারি গুলো খুব শক্তিশালী হয়।
- সেকেন্ডারি ব্যাটারির তুলনায় ড্রাই সেল ব্যাটারি গুলো বেশিক্ষণ ব্যাটারি ব্যাকআপ প্রদান করে।
- ড্রাই সেল ব্যাটারিতে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নেই।
লিড এসিড বা ওয়েট ব্যাটারির রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়াগুলো কি কি?
লিড এসিড বা ওয়েট ব্যাটারিকে রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই জরুরী। তবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। এগুলো হলোঃ
- ব্যাটারির ভালো কর্মক্ষমতার জন্য সর্বোত্তম স্তর বজায় রাখতে পর্যায়ক্রমে নিয়মিত পানি এবং অ্যাসিড যোগ করতে হবে। লিড এসিড বা ওয়েট সেল ব্যাটারির জন্য সাধারণত প্রতি তিন মাসে কমপক্ষে একবার তাদের ইলেক্ট্রোলাইট স্তর পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
- ক্যাবল গুলোকে সমসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তার ক্ষয় হয়ে গেলে দ্রুত তার পরিবর্তন করতে হবে।
- বুদবুদ বা গ্যাসের অস্বাভাবিক লক্ষণগুলির উপর নজর রাখতে হবে সবসময়।
- লিড এসিড বা ওয়েট ব্যাটারির প্রতি বছরে অন্তত একবার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পরিদর্শন করা উচিত। বাংলাদেশে বিশেষভাবে গ্রীষ্মের আগে বসন্তে যখন তাপমাত্রা সবচেয়ে উষ্ণ থাকে তখন।
কীভাবে ইউপিএস এর সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে ইউপিএস ব্যাটারি কেনা যায়?
ডিভাইসের সাথে ইউপিএস ব্যাটারির যদি সামঞ্জস্যতা না থাকে, তাহলে কখনোই ইউপিএস ব্যাটারির কাজ করবে না। তাই নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জেনে নিলে ইউপিএস এর সাথে সামঞ্জ্যসতা রেখে ইউপিএস ব্যাটারি কেনা যাবেঃ
ডিভাইসঃ
ইউপিএস ব্যাটারি কেনার আগে জানতে হবে আপনার ইউপিএস মেশিনটি কোন ধরনের ব্যাটারি সাপোর্ট করে তা না হলে কাজ নাও করতে পারে। আর ইউপিএস মেশিনটির ক্ষমতা জেনে নিয়ে আপনি নির্ধারণ করতে পারেন কয়টি ডিভাইস এটির সাহায্যে পরিচালিত হবে।
ব্যাটারি পাওয়ারঃ
ব্যাটারি পাওয়ার বলতে বুঝানো হচ্ছে ব্যাটারি কত ভোল্টে চার্জ নিবে এবং পাওয়ার প্রদান করবে। ইউপিএস এর পাওয়ার ইনপুটের সাথে ব্যাটারির পাওয়ার আউটপুটের মিল রেখে ইউপিএস ব্যাটারি পছন্দ করতে হবে। সামঞ্জস্যতা না থাকলে ইউপিএস এর ক্ষতি হতে পারে এবং ইউপিএস অকেজ হয়ে যেতে পারে।
এম্পিয়ারঃ
ইউপিএস ব্যাটারি কত এম্পিয়ারের সেটি জেনে নিতে হবে এর পরবর্তি ধাপেই। কেননা ব্যাটারি এম্পিয়ার যত বেশি হবে তত বেশি ব্যাকআপ পাওয়া যাবে। কতক্ষণ ব্যাকআপ দরকার সেটির উপর ভিত্তি করে ইউপিএস ব্যাটারি কেনা উচিৎ। দাম একটু বেশি হলেও ঝুঁকি এড়াতে বেশি এম্পিয়ারের ব্যাটারি উত্তম।
বিডিতে ইউপিএস ব্যাটারির দাম কত?
বিডিতে ইউপিএস ব্যাটারিরর দাম ৯০০ টাকা যেটি ৭.৫ এম্পিয়ারের ১২ ভোল্টে পাওয়ার প্রদান করে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের ইউপিএস ব্যাটারি পাওয়া যায়। এছাড়া এটির দাম এটি লিড-অ্যাসিড নাকি ড্রাই-সেল তার উপরেও নির্ভর করে। তাছাড়া আরও কিছু ফ্যাক্টর আছে যেগুলো দাম নির্ধারণে ভূমিকা পালন করে যেমন এর এম্পিয়ার, পাওয়ার, ব্র্যান্ড ইত্যাদি। তবে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইউপিএস ব্যাটারির দাম ৩০,০০০ টাকা বা অধিক হতে পারে।
ইউপিএস ব্যাটারিকে ভাল রাখতে কি কি করণীয়?
কয়েকটি জিনিস জানা থাকলে ইউপিএস ব্যাটারিকে ভাল রাখা সম্ভব হবে। ইউপিএস ব্যাটারি ভাল থাকলে বারবার ব্যাটারি পরিবর্তন করার খরচ করতে হবে না। নিচের বিষয় গুলো জানা থাকলে ব্যাটারিকে ভাল রাখা যাবেঃ
- প্রথমত ব্যাটারিকে পরিষ্কার রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি স্যাঁতসেঁতে কাপড় বা শুকনো ন্যাকড়া দিয়ে ব্যাটারি টার্মিনালের চারপাশ থেকে ধুলা বালি অথবা অন্যান্য ময়লা পরিষ্কার করা উচিৎ। ব্যাটারির প্লাস্টিকের আবরণের ক্ষতি করতে পারে এমন জটিল রাসায়নিক বা এ জাতীয় কোনো কিছু ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় ইউপিএস ব্যাটারি বেশি দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
- ব্যাটারির তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখতে হবে জরুরী ভাবে। ইউপিএস ব্যাটারিকে কোনো শীতল এবং শুষ্ক পরিবেশে সংরক্ষণ করা দরকার। অধিকাংশ ইউপিএস ব্যাটারি প্রস্তাবিত ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এ রাখা উচিৎ। হিমাঙ্কের তাপমাত্রা এড়িয়ে চলতে হবে। এই ব্যাটারিগুলি যাতে কোনো ভাবেই অতিরিক্ত গরম হতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ব্যাটারিকে গরম করতে পারে এমন কোনো জিনিস হতে ইউপিএস ব্যাটারিকে দূরে রাখতে হবে ফলে ব্যাটারি দীর্ঘমেয়াদি হবে।
- শর্ট সার্কিট যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ইউপিএস ব্যাটারির টার্মিনাল এবং অন্যান্য ধাতব বস্তুর মধ্যে সমস্ত যোগাযোগ এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময়ে মাল্টিপ্লাগের পয়েন্ট গুলো ঢিলা হয়ে থাকে সে সময়ে ব্যাটারি চার্জ করা জন্য প্লাগ ইন করলে আগুন স্পার্ক করে যা শর্ট সার্কিটের প্রধান সূত্র। তাই পয়েন্ট ঢিলা এমন মাল্টিপ্লাগ এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে পুরনো মাল্টিপ্লাগ বাদ দিয়ে নতুন মাল্টিপ্লাগ কেনা অধিক নিরাপদ।
- ভোল্টেজ আপ ডাউন চলা কালীন ইউপিএস ব্যাটারি চার্জ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে প্লাগ খুলে রাখতে হবে নতুবা ইউপিএস ব্যাটারি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
- বৈদ্যুতিক সংযোগ সচল হওয়ার পরে ইউপিএস ব্যাটারিকে পুনরায় চার্জিং অবস্থায় রাখা ভাল। ব্যাটারিকে সচল না রাখলে ব্যাটারির কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।