সৌর Battery কেনাকাটা
সোলার ব্যাটারি হচ্ছে এমন এক ধরনের স্টোরেজ ইউনিট, যা সৌর প্যানেল দ্বারা উৎপন্ন শক্তি ক্যাপচার করে থাকে। এই ধরণের ব্যাটারি যেখানে বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যবস্থা নেই কিংবা বেশি লোডশেডিং প্রবণ এরিয়া বিশেষ করে গ্রাম গঞ্জে সোলার প্যানেলের সাথে ব্যবহৃত হয়। সোলার ব্যাটারি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হয়ে থাকে। বাংলাদেশে হামকো, রিমসো, ওয়ালটন, রহিম আফরোজ এবং সাইফ পাওয়ার সহ জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সোলার ব্যাটারি সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।
সোলার ব্যাটারির ধরণ
শক্তি সঞ্চয়ের চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে বিভিন্ন ধরনের সোলার ব্যাটারি পাওয়া যায়, যা নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই বিদ্যুৎ সমাধান প্রদান করে। বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সোলার ব্যাটারি হচ্ছে
লিড-অ্যাসিড সোলার ব্যাটারিঃ বাংলাদেশে সোলার প্যানেলের সাথে ব্যবহৃত সবচেয়ে প্রচলিত ব্যাটারি হচ্ছে লিড-অ্যাসিড সোলার ব্যাটারি। এই ধরনের সোলার ব্যাটারি বাংলাদেশে কম দামে পাওয়া যায় এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার উপযোগী হয়ে থাকে। তাছাড়া, লিড-অ্যাসিড সোলার ব্যাটারি সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে, যা ওয়েট লিড অ্যাসিড সোলার ব্যাটারি এবং সিল সোলার ব্যাটারি নামে বাংলাদেশে পরিচিত।
লিথিয়াম-আয়ন সোলার ব্যাটারিঃ লিথিয়াম-আয়ন সোলার ব্যাটারি হাই এনার্জি ডেনসিটি প্রদান করার পাশাপাশি দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে। লিথায়াম-আয়ন সোলার ব্যাটারি বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। এই ধরনের সোলার ব্যাটারি লাইটওয়েট, কমপ্যাক্ট সাইজের হয়ে থাকে এবং উচ্চ চার্জ/ডিসচার্জ ক্ষমতা রয়েছে। লিথ্যাম-আয়ন সোলার ব্যাটারি আবাসিক এবং বাণিজ্যিক উভয় ধরনের সোলার প্যানেল সিস্টেমের সাথে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
টিউবুলার সোলার ব্যাটারিঃ এই ধরনের সোলার ব্যাটারি সাধারণত ওয়েট লিড অ্যাসিডের সমন্বয়ে তৈরি যা উন্নত কর্মক্ষমতা এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে। টিউবুলার সোলার ব্যাটারি উচ্চ ক্যাপাসিটি সম্পন্ন হয়ে থাকে। এই ধরনের সোলার ব্যাটারি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণে কয়েক বছর নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশে টিউবুলার ব্যাটারির দাম তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।
সোলার ব্যাটারি ব্যবহারের সুবিধা
১। সোলার ব্যাটারি ব্যবহারে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। কারণ এই ধরনের ব্যাটারি অব্যবহৃত থাকা অবস্থায় সৌরশক্তি থেকে অতিরিক্ত শক্তি সঞ্চয় করা রাখে যা পরবর্তীতে ব্যবহার করা যায়।
২। বাসা-বাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সোলার ব্যাটারি থেকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে ভোল্টেজের আপ ডাউন খুব কম হয়, যার ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কম।
৩। সোলার ব্যাটারি ব্যবহারের ফলে কার্বন নিঃসরণকারী শক্তির প্রয়োজন হয় না। ফলে, পরিবেশের উপর কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলে না।
৪। উন্নত টেকনোলোজিতে সোলার ব্যাটারি তৈরি হওয়ায় অন্যান্য পাওয়ার সাপ্লাই সিস্টেমের মত নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না।
৫। তাছাড়া, সোলার ব্যাটারি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ বিলের মত আলাদা কোনো টাকা খরচ হয় না।
সোলার ব্যাটারির দাম
বাংলাদেশে সোলার ব্যাটারির দাম সাধারণত ব্র্যান্ড, মডেল, গুণমান, এবং ব্যাটারি ক্যাপাসিটি সহ অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে সোলার ব্যাটারির দাম সাধারণত ১২০০ টাকা থেকে শুরু, যা ৪.২৫ এম্পিয়ার ক্যাপাসিটির ছোট সাইজের সীল সোলার ব্যাটারি। এই ধরণের ব্যাটারি সাধারণত ইলেকট্রনিক্স খেলনা, ইমারজেন্সি এবং সিকিউরিটি সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ৩০ এম্পিয়ার থেকে ৫৫ এম্পিয়ার ক্যাপাসিটির লিড-এসিড টাইপ সোলার ব্যাটারি ৬,০০০-৯,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। এছাড়াও ১৩০ এম্পিয়ার থেকে ২০০ এম্পিয়ার সোলার ব্যাটারি বাংলাদেশে পাওয়া যায়, যার ১৯,০০০ টাকা থেকে শুরু।
সোলার ব্যাটারি কিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করবেন?
- সোলার প্যানেলের সাথে সোলার ব্যাটারির সংযোগ তার নির্দিষ্ট সময় পর পর চেক করতে হবে।
- ধুলো বালি কিংবা ময়লা থেকে সোলার ব্যাটারি পরিষ্কার রাখতে হবে। তবে, এই ধরনের ব্যাটারি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে ব্যাটারি টার্মিনাল ক্লিনার ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত।
- সোলার ব্যাটারি চার্জের সময় ঝুঁকি এড়াতে উপযুক্ত ফিউজ, সংযোগ বিচ্ছিন্ন সুইচ এবং গ্রাউন্ডিং ব্যবহার করতে হবে।
- নিয়মিত ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যাটারির কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
- চরম তাপমাত্রা যেমন গরম এবং ঠান্ডা উভয়ই ব্যাটারির কর্মক্ষমতা এবং জীবনকালকে প্রভাবিত করে থাকে। তাই সোলার ব্যাটারি চরম আবহাওয়া থেকে সুরক্ষিত রাখতে উপযুক্ত স্থানে সেট আপ করতে হবে।