আইপিএস Battery কেনাকাটা
বর্তমানে, লোডশেডিং এর সমস্যা সমাধানে আইপিএস ব্যাপক জনপ্রিয়। আইপিএস এর প্রধান অংশ হল ব্যাটারি যা বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয় করে ফলে পরবর্তীতে ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে হেমকো, লুমিনাস, রহিমআফরোজ, সুকাম, এবং অন্যান্য ব্র্যান্ডের আইপিএস ব্যাটারি পাওয়া যায়। তাছাড়া, কমদামে বিডিস্টল থেকে যেকোন ব্র্যান্ডের আইপিএস ব্যাটারি সংগ্রহ করতে পারবেন।
বাংলাদেশে কয় ধরনের আইপিএস ব্যাটারি পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে আইপিএস ব্যাটারির নির্মিত প্রযুক্তির ভিত্তিতে মূলত দুই ধরনের ব্যাটারি পাওয়া যায়। আইপিএস ব্যাটারি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলঃ
ওয়েট-লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারিঃ ওয়েট-লিড-এসিড ব্যাটারি মূলত লিকুইড ইলেক্ট্রোলাইট সল্যুশনের মাধ্যমে কাজ করে। ওয়েট-লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারিগুলো প্রাচীন প্রযুক্তিতে নির্মিত। এই ব্যাটারিগুলো তুলনামূলক দামে সস্তা হয়ে থাকে। তবে, ওয়েট-লিড-এসিড ব্যাটারির ঘন ঘন রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। এবং, সঠিক ভাবে ওয়েট-লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারির রক্ষণাবেক্ষণ করলে দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, রক্ষনাবেক্ষণ প্রয়োজন হয় না এমন লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারি পাওয়া যায়।
সিল্ড লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারিঃ সিল্ড লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারিগুলো সাধারনত ভেলভ রেগুলেটেড লিড এসিড ব্যাটারি বলা হয়। এই ব্যাটারিগুলো অ্যাবসর্বড গ্লাস ম্যাট (এজিএম) এবং জেল টাইপ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। সিল্ড লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারিগুলো তুলনামূলক উচ্চ তাপমাত্রায় নির্ভরযোগ্যভাবে কাজ করে। এবং, এই ব্যাটারিগুলো যেকোন অ্যাঙ্গেলে সেট করা যায়। এছাড়াও, সিল্ড লিড-এসিড আইপিএস ব্যাটারিগুলো ড্রাই সেল ব্যাটারি নামেও পরিচিত। এই ব্যাটারিগুলো তুলনামূলক দাম বেশি তবে দীর্ঘ দিন ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া, ড্রাই সেল ব্যাটারিগুলোর ডিসচার্জ রেট তুলনামূলক অনেক কম হয় বিধায় বাংলাদেশে এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কত অ্যাম্পিয়ার আইপিএস ব্যাটারি কিনব?
বর্তমানে বাসা-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ও অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোডশেডিং সমস্যা মোকাবেলায় আইপিএস এর ব্যবহার করা হয়। প্রয়োজনিয়তা অনুসারে আইপিএস এর সাথে মানানসই ব্যাটারি নির্বাচন করতে হবে। তবে, ব্যাটারি কেনার পূর্বে প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ওয়াট ক্যাপাসিটির আইপিএস ইনভার্টার নির্বাচন করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে চাহিদা অনুপাতে বিভিন্ন ক্যাপাসিটির আইপিএস ইনভার্টার পাওয়া যায়। তবে, বাসা-বাড়িতে ব্যবহারের জন্য কমপক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০ ওয়াট সম্পন্ন আইপিএস ইনভার্টার প্রয়োজন হবে যার সাথে ১০০ অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি ব্যবহার করে ৩ থেকে ৪ টি স্ট্যান্ডার্ড সিলিং ফ্যান ও ৬ থেকে ৭টি লাইট ব্যবহার করা যাবে।
কত ওয়াট আইপিএস এর সাথে কত অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি প্রয়োজন?
আইপিএস মূলত বৈদ্যুতিক শক্তি বা চার্জ ব্যাটারিতে সঞ্চয় করে। আইপিএস ইনভার্টারের ক্যাপাসিটির ভিত্তিতে কত ওয়াট পর্যন্ত পাওয়ার আউটপুট দিতে পারবে তা নির্ভির করে। তবে, আইপিএস ইনভার্টেরের ক্যাপাসিটির ২০ শতাংশের কম ওয়াটের বৈদ্যুতিক ডিভাই ব্যবহার করা উচিৎ। এবং, কত ওয়াট পাওয়ার প্রইয়োজন হবে এবং কত সময় ব্যাকাপের প্রয়োজন সেই অনুপাতে ব্যাটারি অ্যাম্পিয়ার নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটির আইপিএস এর সাথে নির্দিষ্ট কোন অয়াম্পিয়ারের ব্যাটারি ব্যবহারের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। বর্তমানে বাংলাদেশে ৬০ অ্যাম্পিয়ার, ৬৫ অ্যাম্পিয়ার, ৭০ অ্যাম্পিয়ার, ৮০ অ্যাম্পিয়ার, ১০০ অ্যাম্পিয়ার, ১২০ অ্যাম্পিয়ার, ১২৫ অ্যাম্পিয়ার, ১৩০ অ্যাম্পিয়ার, ১৩৫ অ্যাম্পিয়ার, ১৫০ অ্যাম্পিয়ার, ১৮০ অ্যাম্পিয়ার, এবং ২০০ অ্যাম্পিয়ার আইপিএস ব্যাটারি পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে আইপিএস ব্যাটারির দাম কত?
বর্তমানে, বাংলাদেশে আইপিএস ব্যাটারির দাম ব্যাটারি টাইপ, ব্র্যান্ড, ও ব্যাটারির অ্যাম্পিয়ার এর ভিত্তিতে ৮,৫০০ টাকা থেকে ৯,০০০ টাকার মধ্য থেকে শুরু হয়। ১০০ অ্যাম্পিয়ার আইপিএস ব্যাটারিগুলো ১২,০০০ টাকা থেকে ১৪,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। ১৫০ অ্যাম্পিয়ার আইপিএস ব্যাটারির দাম ১৮,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এবং, ব্যাটারির টাইপের ভিত্তিতে ২০০ অ্যাম্পিয়ার আইপিএস ব্যাটারিগুলো ২৪,০০০ টাকা থেকে ৩১,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
আইপিএস ব্যাটারি কিভাবে ভালো রাখবেন?
আইপিএস ব্যাটারি ভালো রাখতে কিছু নির্দেশনা উল্লেখ করা হলঃ
- আইপিএস ব্যাটারি ভালো রাখতে নির্দিষ্ট মাত্রার অ্যাম্পিয়ার লোডে ব্যবহার করতে হবে। কেননা অতিরিক্ত মাত্রার অ্যাম্পিয়ার লোডে ব্যবহার করলে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে ডিসচার্জ হবে ফলে বছর দুয়েক এর মধ্যে আইপিএস ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাবে।
- আইপিএস ব্যাটারি ডিসচার্জ টাইম অনুসারে ব্যাকআপ দিচ্ছে কিনা সেটা লক্ষ্য করতে হবে। যদি দ্রুত সময়ের মধ্যেই চার্জ শেষ হয়ে যায় তাহলে কম লোডে ব্যবহার করতে হবে।
- বেশি অ্যাম্পিয়ার লোডে ব্যবহার করতে চাইলে দুইটি একই অ্যাম্পিয়ার সম্পন্ন ব্যাটারি ব্যবহার করা উত্তম হবে। তাহলে, দীর্ঘ সময় ব্যাটারি ব্যবহার করা যাবে।
- উন্নতমানের আইপিএস ইনভার্টার ব্যবহার করতে হবে। এবং, প্রয়োজন অনুসারে পাওয়ার আউটপুট প্রদান করতে পারবে কিনা তা বিবেচনায় আইপিএস ইনভার্টার নির্বাচন করতে হবে।
- আইপিএস ইনভার্টারের সাথে ব্যবহার উপযুক্ত আইপিএস ব্যাটারি ব্যবহার করতে হবে।