বারকোড স্ক্যানার কেনাকাটা
বারকোড স্ক্যানার হলো এমন একটি অপটিক্যাল স্ক্যানার যা যে কোন পণ্যের গায়ে থাকা প্রিন্টেড বারকোডগুলো পরতে পারে। এই বারকোডে থাকা ডেটা যা মানুষের বোধগম্য নয় এমন ধরনের কোডগুলো রিড করে কম্পিউটারে প্রদান করে থাকে। এই বারকোড স্ক্যানার বারকোড রিডার হিসাবেও পরিচিত। বাংলাদেশে, খুব প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি পরিচিত ব্র্যান্ডের বারকোড স্ক্যানার পাওয়া যায়।
কোন বারকোড স্ক্যানিং প্রযুক্তি সেরা?
বর্তমানে বারকোড স্ক্যানার গুলোতে স্ক্যান করার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন লেজার টাইপ স্ক্যানার, সিসিডি বা এলইডি স্ক্যানার, ক্যামেরা বেইস স্ক্যানার এবং ওম্নিডিরেকশনাল স্ক্যানার। ওম্নিডিরেকশনাল স্ক্যানিং প্রযুক্তি সবচেয়ে সেরা।
কোন ধরনের ডিজাইন কাজ করার জন্য সহজ?
এছাড়াও বারকোড স্ক্যানারের নকশার ভিত্তিতে রয়েছে কয়েকটি প্রকারভেদ সেগুলো হলোঃ হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার, পিডিএ স্ক্যানার, অটো বা স্বয়ংক্রিয় স্ক্যানার, এবং সর্বশেষ ওয়্যারলেস স্ক্যানার। কাজের ধরন এবং প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে স্ক্যানার নির্বাচন করা উচিত।
১ডি বনাম ২ডি - কোনটি নির্বাচন করা উচিত?
২ডি স্ক্যানিং হল ১ডির উন্নত ভার্সন। ২ডি স্ক্যানার ভারটিকালি এবং হরাইজন্টালি উভয় দিকে পড়তে পারে। আর ১ডি প্রযুক্তি বারকোড স্ক্যানার শুধু বার স্ক্যান করতে পারে। তবে এই প্রযুক্তির বারকোড স্ক্যানার অনেক কম দামে পাওয়া যায় এবং বহুল ব্যবহৃত।
কিউআর কোড বনাম বারকোড - পার্থক্য কী?
কাজের ধরণ একই রকম তবে কিছু উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে যেমন কিউআর কোড দ্বি-মাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং বারকোডের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি তথ্য ধরে রাখতে পারে। যদি বারকোডে কিউআর কোডের মতো একই পরিমাণ মুদ্রণের প্রয়োজন হয় তবে ১০ গুণ বেশি জায়গার প্রয়োজন হবে।
কানেক্টিভিটি কি?
এগুলোতে কানেক্টিভিটি হিসেবে রয়েছে বেশ কয়েকটি উপায় তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো কীবোর্ড ওয়েজ, ইউএসবি এবং ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং সিস্টেম।
বারকোড স্ক্যানারের দাম কত?
বর্তমানে বাংলাদেশে বারকোড স্ক্যানারের দাম ২,৫০০ টাকা থেকে শুরু হয় তবে দাম নির্ভর করে এর ব্র্যান্ড, প্রযুক্তি, কোয়ালিটি, এবং কর্ম সক্ষমতার ভিত্তিতে। তাছাড়া, আরও উন্নতমানের ১ডি ও ২ডি বারকোড স্ক্যানার বাংলাদেশে পাওয়া যায় যার দাম কিছুটা বেশি। তবে, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বারকোড স্ক্যানারের ও মোবাইল কম্পিউটারগুলোর দাম ৩৫,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়।
বারকোড স্ক্যানার কেনার আগে কী বিবেচনা করা উচিত?
সামঞ্জস্যতাঃ বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে ১ডি, ২ডি সহ বিভিন্ন ধরণের স্ক্যানার পাওয়া যায়। তাই কেনার আগে অবশ্যই কাজের ধরণ বিবেচনা করে বারকোড স্ক্যানার বিবেচনা করতে হবে।
ইন্টারফেসঃ বারকোড স্ক্যানারে ইউএসবি, ব্লুটুথ, ওয়্যারলেস, এবং কীবোর্ড পোর্ট সহ বিভিন্ন ধরণের ইন্টারফেস পাওয়া যায়। তাই, কেনার আগে অবশ্যই আপনার ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে সংযোগ করা জন্য বারকোড স্ক্যানারের ইন্টারফেস যাচাই করতে হবে।
স্ক্যানিং দূরত্ব এবং গতিঃ বারকোড স্ক্যানারে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে বারকোড স্ক্যান করার পাশাপাশি কম সময়ে অধিক বারকোড স্ক্যান করার সুবিধা পাওয়া যায়। তাই কেনার আগে আপনার ব্যবহারের উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বারকোড স্ক্যানার বিবেচনা করতে হবে।
স্থায়িত্বঃ বারকোড স্ক্যানার কেনার আগে সাধারণত স্ক্যানারের বডি, পড়ে গেলে সহজে ক্ষতিগ্রস্থ হবে না এবং দীর্ঘ সময় কাজের চাপ নেওয়ার মত সক্ষমতা রয়েছে এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে। এরগোনমিক ডিজাইনে তৈরি বারকোড স্ক্যানার বাছাই করা উত্তম, যা দীর্ঘ সময় ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
বারকোড টাইপঃ বিভিন্ন বারকোড স্ক্যানার সাধারণত নির্দিষ্ট ধরণ যেমন UPC/EAN কোড, QR কোড এবং PDF417 কোড ইত্যাদি বারকোড স্ক্যান করে থাকে। তাই, ব্যবসা কিংবা শিল্প কারখানায় ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কেনার আগে বারকোড টাইপ বিবেচনা করতে হবে।
তারযুক্ত বা ওয়্যারলেসঃ বারকোড স্ক্যানার সাধারণত তারযুক্ত এবং ওয়্যারলেস বা ব্লুটুথ সংযোগ উভয় দুই ধরণেরই পাওয়া যায়। তারযুক্ত বারকোড স্ক্যানার সাধারণত কম্পিউটার বা পয়েন্ট অফ সেল সিস্টেমের সাথে সংযোগ করে কাজ করতে হয়, যা বাংলাদেশে কম দামে প্রায় ২,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ওয়্যারলেস বা ব্লুটুথ বারকোড স্ক্যানার তারবিহীন, দ্রুত গতি সম্পন্ন এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে সহজেই স্ক্যান করা যায়। ওয়্যারলেস কানেক্টিভিটিযুক্ত বারকোড স্ক্যানারের দাম বাংলাদেশে তারযুক্ত স্ক্যানারের তুলনায় কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।
সফটওয়্যার সামঞ্জস্যতাঃ বারকোড স্ক্যানার কেনার আগে অবশ্যই আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত সফটওয়্যার যেমন ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, পয়েন্ট-অফ-সেল, বা অ্যাসেট ট্র্যাকিং সফ্টওয়্যারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে কাজ করবে কিনা তা যাচাই করতে হবে। সফটওয়্যারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বারকোড স্ক্যানার ব্যবহারের ফলে মসৃণ ডাটা ট্রান্সফারের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
সহজে বহনযোগ্যঃ বারকোড স্ক্যানার কেনার ক্ষেত্রে হালকা ওজনের এবং কমপ্যাক্ট ডিজাইনে তৈরি স্ক্যানার বিবেচনা করা উচিত। ফলে, যেকোনো জায়গায় সহজে বহন করে স্ক্যানিং করা যাবে।
বাজেটঃ বারকোড স্ক্যানার কেনার ক্ষেত্রে দাম ও বাজেট বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে, দাম বিবেচনায় কম দামের চেয়ে বারকোড স্ক্যানারের গুনমান, স্থায়িত্ব এবং কর্মক্ষমতা বিবেচনা করা উত্তম। এছাড়াও, ব্র্যান্ড বিবেচনা করতে হবে, যা দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদানের পাশাপাশি ভালো বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যাবে।