ফেস মাস্ক কেনাকাটা
পৃথিবীতে মানব সৃষ্ট ও প্রাকৃতিক কারণে বায়ু দূষণ, ধুলাবালি, ভাইরাস, এবং ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়াচ্ছে। বায়ু দূষণ, ধুলা, ভাইরাস, এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সহায়ক উপাদান হচ্ছে ফেস মাস্ক। ফেস মাস্ক হলো এক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক আবরণ যা নাক এবং মুখের উপর পড়া হয় ফলে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, এবং বায়ুবাহিত বিভিন্ন ক্ষতিকর কণা থেকে মুক্ত থাকতে সহায়তা করে। ফেস মাস্ক মূলত কাপড়, কাগজ, এবং এন৯৫ শ্বাস যন্ত্রের মত মেডিকেল গ্রেড উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশে কয় ধরনের ফেস মাস্ক পাওয়া যায়?
ফেস মাস্ক মূলত বিভিন্ন ডিজাইন এবং সাইজের হয়ে থাকে তবে বেশিরভাগ ফেস মাস্কই নাক এবং মুখের উপরে ভালো ভাবে ফিট থাকার জন্য কানের সাথে টাই দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। তাছাড়া, ফেস মাস্ক বিভিন্ন ডিজাইনের সাথে বিভিন্ন স্তরের সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে ফলে ফেস মাস্কের ধরনের পার্থক্য হয়ে থাকে। বর্তমানে বিডিতে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে ফেস মাস্কের ব্যবহার পূর্বের তুলনায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। সচরাচর পাওয়া যায় এমন কিছু ফেস মাস্ক সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
কাপড়ের মাস্কঃ কাপড়ের মাস্ক মূলত ফেব্রিক দিয়ে তৈরি যা সহজেই ধুয়ে পুনরায় ব্যবহার করা যায়। সাধারণত কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারকারীকে অন্যদের শ্বাস প্রশ্বাস এবং বায়ুতে প্রবাহিত ধূলিকণা থেকে নিরাপদ থাকতে সহায়তা করে। কাপড়ের ফেস মাস্ক সব জায়গায় ব্যবহার উপযোগী।
সার্জিক্যাল মাস্কঃ সার্জিক্যাল মাস্ক মূলত নরম পলিপ্রোপিলিন দিয়ে তৈরি। এবং, ব্যবহারকারীর জন্য নিরাপদ এবং আরামদায়ক ফিট নিশ্চিত করতে ইলাস্টিকেটেড কানের লুপ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক ব্যাপকভাবে হাসপাতাল, হোটেল, খাদ্য প্যাকেজিং, এবং দৈনিক চলাফেরায় বায়ু বাহিত দূষণ এবং ধুলা বালি থেকে মুক্ত থাকতে ব্যবহৃত হয়।
এন৯৫ রেসপিরেটর মাস্কঃ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, এবং ৯৫ ভাগ বায়ুবাহিত কণা ফিলটার সহ ব্যবহারকারীর মুখের চারপাশে শক্তভাবে ফিট থাকার মত করে ডিজাইন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যায়।
কেএন৯৫ মাস্কঃ কেএন৯৫ মাস্ক অনেকটা এন৯৫ মাস্কের অনুরূপ যা কমপক্ষে শতকরা ৯৫ ভাগ বায়ুবাহিত কণাকে ফিলটার করতে পারে। বিডিতে কেএন৯৫ মাস্ক সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যায়।
জুপিটার রেসপিরেটরি প্রোটেকশন মাস্কঃ জুপিটার মাস্ক সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের সুরক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে। জুপিটার রেসপিরেটরি প্রোটেকশন মাস্কের বডি থার্মোপ্লাস্টিক এবং পলিপ্রোপিলিন দিয়ে তৈরি এবং ১ কার্টিজ ফিলটার সহ একটি ইলাস্টিক স্ট্র্যাপ ব্যবহার করা হয়েছে যা ব্যবহারকারীর নাক ও মুখের সাথে ভালো ভাবে ফিট থাকে। এই ধরনের মাস্ক মূলত পেইন্টিং স্প্রে, ধুলো, গ্যাস, রাসায়নিক জৈব বাষ্প, এবং অন্যান্য দূষণ থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে।
কার্বন মাস্কঃ কার্বন মাস্ক সাধারণত কার্বন ফিলটার সিস্টেম দিয়ে তৈরি এবং চোখের জন্য সুরক্ষার চশমা ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া কার্বন মাস্ক হেড বেল্ট সিস্টেমসহ ডিজাইন করা হয়েছে যা ব্যবহারকারীকে আরামদায়ক ভাবে ব্যবহারের সুবিধা প্রদান করে থাকে। কার্বন মাস্ক মূলত নাক এবং চোখ কে বিভিন্ন ধরনের বিপদজ্জনক গ্যাস থেকে রক্ষা করে। কার্বন মাস্ক ল্যাবরেটরি তে বিভিন্ন রাসায়নিক পরীক্ষা, এবং ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।
ফেস মাস্ক ব্যবহারে পূর্বে সতর্কতা
ফেস মাস্ক ব্যবহার করার সময় মাস্কের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিতঃ
- ফেস মাস্ক পরার আগে হাত সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে
- নাক এবং মুখ উভয় ভালো ভাবে ফেস মাস্ক ঢাকতে পারছে কিনা এবং মুখের সাথে মসৃণভাবে ফিট থাকে কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
- ফেস মাস্ক ব্যবহার কালীন সময় ফেস মাস্কের যেকোনো স্থানে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন
- ডিসপোজেবল মাস্ক পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না। কাপড়ের মাস্ক প্রতিবার ব্যবহারের পর পরবর্তী ব্যবহারের পূর্বে ধুয়ে নেওয়া উচিত
- মাস্ক পরার সময় মুখ স্পর্শ করা যাবে না কারণ হাত থেকে জীবাণু মুখে স্থানান্তর করতে পারে
- ব্যবহারের পর ফেস মাস্ক স্যাঁতসেঁতে বা নোংরা হয়ে গেলে ব্যবহার করা যাবে না
- শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা হলে ফেস মাস্ক পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে
বাংলাদেশে ফেস মাস্কের দাম কত?
বাংলাদেশে ফেস মাস্কের দাম মাস্কের ডিজাইন, উপাদান, এবং ব্যবহারের ক্ষেত্র ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্য থেকে শুরু হয়। এছাড়া, বর্তমানে বিডিতে মাস্কের সুরক্ষা স্তর অনুযায়ী উন্নত মানের ফেস মাস্কের দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু হয়। তবে, কার্বন ফিলটার এবং রেসপিরেটরি প্রোটেকশন যুক্ত ফেস মাস্কের দাম ৩০০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে থাকে।