এয়ার কমপ্রেসার কেনাকাটা
এয়ার কম্প্রেসার বৈদ্যুতিক শক্তিকে বায়ু শক্তিতে রূপান্তর করে। এয়ার কম্প্রেসার বাতাসের আয়তন কমিয়ে বা বাতাসকে সংকুচিত করে চাপ তৈরি করে এবং বাতাসকে উচ্চচাপে সরবরাহ করে। এয়ার কম্প্রেসারের সাথে চাপ সম্পন্ন বাতাসকে সংরক্ষণ করার জন্য একটি স্টোরেজ ট্যাংক থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনের সাথে এয়ার কম্প্রেসার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে বিশেষ করে যানবাহনের চাকায় হাওয়া দেয়ার জন্য এয়ার কম্প্রেসরের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন জিনিস পরিস্কার করার জন্য এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার দেখা যায়।
এয়ার কম্প্রেসার কেনার আগে কি কি দেখতে হবে?
বর্তমানে বিভিন্ন কাজের জন্য এয়ার কম্প্রেসার ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই, প্রয়োজনীয়তা অনুসারে এয়ার কম্প্রেসারের কিছু বিষয় বিবেচনা করে কেনা উচিত।
ইলেকট্রিক মোটরঃ এয়ার কম্প্রেসারের প্রধান চালিকা শক্তি হল ইলেকট্রিক মোটর। বাতাসকে সংকুচিত করা ও বাতাসের চাপ বৃদ্ধি করার সম্পূর্ণ কাজটাই ইলেকট্রিক মোটরের উপর নির্ভরশীল। ইলেকট্রিক মোটরের শক্তি এইচপি (হর্সপাওয়ার) এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। ইলেকট্রিক মোটরের হর্সপাওয়ার যত বেশি হবে তত বেশি বাতাসের চাপ তৈরি করতে পারবে। তাই, প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে এয়ার কম্প্রেসারের মোটরের হর্সপাওয়ার দেখে কেনা উচিত।
এয়ার প্রেসারঃ এয়ার কম্প্রেসারের মূল কাজ হল উচ্চচাপে বাতাস সরবরাহ করা। তাই, অবশ্যই এয়ার কম্প্রেসার কেনার পূর্বে যেই কাজে এয়ার কম্প্রেসারটি ব্যবহার করা হবে সেখানে প্রয়োজনীয়তা মাফিক বাতাসের চাপ সরবরাহ করতে পারবে কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে।
স্টোরেজ ট্যাংক ক্যাপাসিটিঃ এয়ার কম্প্রেসার মূলত বাতাসকে সংকুচিত করে স্টোরেজ ট্যাংকে সংরক্ষণ করে রাখে বিধায় যখন প্রয়োজন হবে তখন উচ্চচাপে বাতাস সরবরাহ করা যাবে। স্টোরেজ ট্যাংক যত বড় হবে তত বেশি চাপ সম্পন্ন বাতাস সংগ্রহ করে রাখা যাবে। তাই, প্রয়োজন অনুযায়ী স্টোরেজ ট্যাংক ক্যাপাসিটি বিবেচনায় এয়ার কম্প্রেসার মেশিন কেনা উচিত।
সাইলেন্ট ওয়ার্কিং সিস্টেমঃ বেশিরভাগ এয়ার কম্প্রেসারে বিশেষ ধরনের সাইলেন্সার থাকে বিধায় চালু থাকা অবস্থায় তুলনামূলক কম আওয়াজ করে। সাইলেন্সার বিহীন এয়ার কম্প্রেসার মেশিন গুলো চালু থাকা অবস্থায় বিকট শব্দ করে। তাই, সাইলেন্ট ওয়ার্কিং সিস্টেম আছে এমন এয়ার কম্প্রেসার মেশিন কেনা উচিত।
সেফটি সিস্টেমঃ এয়ার কম্প্রেসারে বিশেষ করে তাপমাত্রা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। যদি এয়ার কম্প্রেসার মেশিন বেশি গরম হয়ে যায় তাহলে তাপমাত্রা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারনে অ্যালার্ম বেজে উঠবে। তাই অবশ্যই এয়ার কম্প্রেসার কেনার আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিবেচনা করতে হবে।
এয়ার কম্প্রেসার মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণ।
এয়ার কম্প্রেসার মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত করণীয়ঃ
- এয়ার ফিল্টার নিয়মিত চেক করতে হবে এবং সময়মত পরিবর্তন করতে হবে।
- অয়েল ফিল্টার চেক করতে হবে এবং সময়মত পরিবর্তন করতে হবে।
- অয়েল সেপারেটর ঠিকআছে কিনা নিয়মিত চেক করতে হবে।
- অয়েল কালো হয়ে গেলে পরিবর্তন করতে হবে।
- নিয়মিত এয়ার কম্প্রেসার পরিষ্কার করতে হবে।
বাংলাদেশে এয়ার কম্প্রেসারের দাম কত?
এয়ার কম্প্রেসারের মোটর কোয়ালিটি, সক্ষমতা, ও স্টোরেজ ট্যাংকের ধারণ ক্ষমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশে দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে। এয়ার কম্প্রেসার সর্বনিম্ন ১৫,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১,৭০,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। অন্যদিকে, ট্যাংক বিহীন এয়ার কম্প্রেসার মেশিন যেগুলো এয়ার পাম্প মেশিন নামে পরিচিত সেগুলো ৩,০০০ টাকা থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। এই, এয়ার পাম্প গুলো শুধু ইন্সটেন্ট বাতাসের চাপ বৃদ্ধি করে সরবরাহ করে।