সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।। কথার বলার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে বাংলাদেশে স্মার্টফোনে বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে যার মধ্যে ডিসপ্লে প্রযুক্তি অন্যতম। তবে ডিসপ্লে টেকনোলজির উপর নির্ভর করে বর্তমান বাংলাদেশে মোবাইলের দাম কম বা বেশি হয়ে থাকে। তাহলে চলুন কোন ডিসপ্লে টেকনোলজির মোবাইল ভালো সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
রেটিনা ডিসপ্লেঃ অ্যাপল মূলত সর্বোচ্চ ৪কে সহ তার চেয়ে উচ্চ-রেজোলিউশন প্রদর্শনের জন্য ২০১২ এবং ২০১৪ সাল থেকে রেটিনা ডিসপ্লে ব্যবহার শুরু করেছে। এই ধরনের ডিসপ্লেতে পিক্সেল ঘনত্ব প্রতি ইঞ্চিতে 300 পিক্সেলের বেশি (PPI), যা স্মার্ট ফোনের ডিসপ্লে যথেষ্ট তীক্ষ্ণ এবং ঝকঝকে করে তোলে। বিশেষত অ্যাপল ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনে রেটিনা ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রেটিনা ডিসপ্লে যুক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে চোখের কোনো ক্ষতি হয় না তবে দামে ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। অ্যাপল মোবাইলের মডেলের উপরে নির্ভর করে রেটিনা টেকনোলজির ডিসপ্লে ব্যবহার করে থাকে। রেটিনা ডিসপ্লের মোবাইল ফোন গুলো সাধারণত ব্যয়বহুল হয়।
আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লেঃ আইপিএস এলসিডি জনপ্রিয় ডিসপ্লে প্রযুক্তি যা সাধারণত ফিচার ফোন এবং ক্লাসিক ফোনে ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের টেকনোলজির ডিসপ্লে ভালো কালার প্রডাকশন করার পাশাপাশি যেকোনো এংগেল থেকে দেখার সুবিধা প্রদান করে। তবে আইপিএস এলইডি ডিসপ্লে অন্যান্য ডিসপ্লে প্রযুক্তির মতো খুব বেশি উজ্জ্বল হয় না। এই ধরনের ডিসপ্লে প্রযুক্তির স্মার্টফোনের দাম তুলনা মূলক কম হয়ে থাকে। এই ধরনের প্রযুক্তির ডিসপ্লে সচারচর ক্ল্যাসিক ফোন, ফিচার ফোন এবং স্মার্টঅয়াচের মধ্যে দেখা যায়।
এলইডি ডিসপ্লেঃ চীনে তৈরিকৃত পিক্সেল হিসেবে আলো নির্গত ডায়োড অ্যারে ব্যবহার করে থাকে এলইডি ডিসপ্লে। এই ধরনের ডিসপ্লে মূলত ফিচার ফোন, ক্লাসিক ফোন কিংবা কিছুটা বাজেট স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়। সাধারণ মোবাইল ফোনের এলইডি ডিসপ্লেতে ভালো উজ্জ্বলতা এবং স্বচ্ছতা প্রদান করে থাকে, তবে অন্যান্য টেকনোলজির ডিসপ্লের তুলনায় সঠিক কালার সক্ষমতার হার কম হয়ে থাকে। তাছাড়া এলইডি ডিসপ্লে যুক্ত মোবাইল ফোনের দামে তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয়ে থাকে।
ওএলইডি ডিসপ্লেঃ চমৎকার কালার রিপ্রডাকশন এবং কন্ট্রাস্ট রেশিওর জন্য মোবাইল ফোনের জগতে বেশ পরিচিত ওএলইডি ডিসপ্লে। এই ধরণের ডিসপ্লে সাধারন এলসিডি ডিসপ্লের তুলনায় আরও ভাল পাওয়ার দক্ষতা অফার করে থাকে। কারণ ওএলইডি ডিসপ্লে কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় পিক্সেলগুলোকে আলোকিত করে যতটুকু ডিসপ্লে প্রদর্শনে প্রয়োজন হয়৷ বর্তমানে বাংলাদেশে ওএলইডি ডিসপ্লে যুক্ত স্মার্টফোনের দাম ধীরে ধীরে আরও সাশ্রয়ী হয়ে উঠছে।
অ্যামোলেড ডিসপ্লেঃ অ্যামোলেড ডিসপ্লে প্রস্তুত কারক কোম্পানি হচ্ছে স্যামসাং। পাতলা-ফিল্ম ট্রানজিস্টরের অতিরিক্ত স্তর রয়েছে যা ডিসপ্লেতে বেশি শক্তি দক্ষতা, দ্রুত প্রতিক্রিয়া সময় এবং ভালো রিফ্রেশ রেট প্রদান করে থাকে। এই ধরনের ডিসপ্লে সাধারণত হাই-এন্ড স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয় যা চমৎকার কালার রি-প্রোডাকশন এবং কন্ট্রাস্ট রেশিও প্রদান করতে পারে। তবে, অ্যামোলেড টেকনোলজির ডিসপ্লে অন্যান্য ডিসপ্লে প্রযুক্তির তুলনায় উন্নত হওয়ায় মোবাইলের দাম কিছুটা বেশি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।
উপরোক্ত বিষয় গুলো পর্যালোচনা করার পাশাপাশি মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে টেকনোলজি, ব্র্যান্ড, প্রয়োজনীয়তা ও অন্যান্য ফিচার সমূহ যাচাই করা উচিত। তবে স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে সঠিক ডিসপ্লে প্রযুক্তি বাছাই করাটা ব্যক্তিগত পছন্দ এবং প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: July 03, 2023