পালস অক্সিমিটার অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি মেডিক্যাল ডিভাইস। এটি দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা নির্ণয় করা যায়। একইসাথে হৃদস্পন্দনের গতি সম্পর্কেও জানতে পারা যায়। পালস অক্সিমিটার যন্ত্রটি ছোট আকৃতির দেখতে অনেকটা ক্লিপের মত হয়ে থাকে এবং সহজে বহনযোগ্য। পালস অক্সিমিটার কি? কিভাবে কাজ করে? এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আর এই পালস অক্সিমিটার যন্ত্রের দাম এখন অনেক কমে গিয়েছে এবং বাংলদেশের সবখানেই এটি পাওয়া যায়।
পালস অক্সিমিটার কি?
পালস অক্সিমিটার হচ্ছে এমন এক ধরনের আধুনিক যন্ত্র বা ডিভাইস যেটির দ্বারা সহজে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ও হার্ট বিট নির্ণয় যায়।
পালস অক্সিমিটার কিভাবে কাজ করে?
পালস অক্সিমিটার দ্বারা পরীক্ষা করার জন্য হাতের আঙ্গুলের মধ্যে অক্সিমিটার যন্ত্রটি লাগানো হয় ক্লিপের মাধ্যমে। আঙ্গুলে সেট করার পরে সুইচ চাপ দিলে এটি চালু হবে। অক্সিমিটারের ডিসপ্লেতে রক্তের মাত্রা ৯৫-১০০ শতাংশ হলে স্বাভাবিক বলে বিবেচনা করা হয় এব রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা যদি ৯২ শতাংশের নিচে কমে আসলে সেটিকে অস্বাভাবিক মাত্রা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। রক্তে অক্সিজেনের এই মাত্রাটি কমে গেলে একজন মানুষের শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে কষ্ট হয়ে থাকে। ফলে তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে।
পালস অক্সিমিটারের ব্যবহারবিধি
প্রত্যেক যন্ত্র ব্যবহারের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে ঠিক এর ক্ষেত্রেও আছে। পালস অক্সিমিটারের সঠিক ব্যবহার জানা না থাকলে সঠিক মান পাওয়া সম্ভব হবে না। চলুন পালস অক্সিমিটারের সঠিক ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ-
১। পালস অক্সিমিটারের ব্যবহার করার আগে এবং পরে হাত স্যানিটাইজ করে নিতে হবে।
২। যেহেতু পালস অক্সিমিটার যন্ত্রটি ব্যাটারির সাহায্যে চলে তাই যন্ত্রে ব্যাটারি আছে কি না সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে।
৩। যে হাতের আঙ্গুলে অক্সিমিটারটি লাগানো হবে সেখানে পরিষ্কার থাকতে হবে। বিশেষকরে মহিলাদের হাতের নখে নেইল পলিশ থাকলে তুলে ফেলতে হবে।
৪। পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের আগে সর্বনিম্ন ৫ মিনিট পরিপূর্ণ বিশ্রম নিতে হবে।
৫। হাতের তর্জনি বা মধ্যমা আঙ্গুলের মাথায় যন্ত্রের এক প্রান্ত টিপে ধরে অপর প্রান্ত ঢুকিয়ে দিয়ে যন্ত্রটি চালু করতে হবে।
৬। যে হাতে অক্সিমিটার যন্ত্রটি থাকবে ঐ হাত একেবারে স্থির করে রাখতে হবে।
৭। লক্ষ্য রাখতে হবে যে প্রথমে অক্সিমিটারের ফলাফল অস্বাভাবিক মাত্রায় ওঠানামা করতে পারে ফলে এক মিনিটের মত অপেক্ষা করলে আবার ঠিক হয়ে যাবে।
৮। ফলাফল স্বাভাবিক হয়ে গেলে ৫ সেকেন্ডের মধ্যে অক্সিমিটার যে ফলাফল দিবে সেটি নোট করতে হবে।
৯। মনে রাখতে হবে অক্সিমিটারের স্বাভাবিক মাত্রা ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ। যদি অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ শতাংশ এর নিচে আসলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
সতর্কতা
অবশ্যই উপরের ব্যবহারবিধি অনুসারে ধাপে ধাপে পরিক্ষণটি সম্পন্ন করুন, তাহলে সঠিক ফলাফল প্রদর্শিত হবে না। উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষণ করলে সঠিক ফলাফল দেখতে পারবেন। এক্ষেত্রে অক্সিমিটারের ফলাফল ২% কম বা বেশি হতে পারে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: January 31, 2022