পানির অপর নাম জীবন হলেও আবার সেই পানি দুষিত হলে নানা ধরনের পানি বাহিত রোগ ছড়ায়। আমাদের জীবনে সর্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় বস্তু হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি। এই বিশুদ্ধ পানির ব্যাপারে কখনোই কোন আপোষ করা চলে না। তাই উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সব পরিবারেই পানি ফুটিয়ে খাওয়ার প্রচলন আছে। ঢাকাসহ সারাদেশের সরবরাহকৃত পানির মান নিয়ে সম্প্রতি এক জরিপ চালায় বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদন থেকে জানায় যায়, বাসাবাড়িতে যে পানি সরবরাহ হয় সেখানে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ প্রায় ৮২ শতাংশ। তবে আপনি এই পানিকে চাইলে কইটি ধাপে শতভাগ বিশুদ্ধ করতে পারবেন। আর পানির আধুনিক ফিল্টার এর দাম এখন বাংলাদেশে অনেক কম।
পানি ফুটিয়েঃ পানি বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে পুরানো পদ্ধতির হচ্ছে পানিকে ফুটিয়ে পান করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পানিকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় ৫ থেকে ২৫ মিনিট ধরে ফোটালে এরমধ্যে থাকা জীবাণু, লার্ভাসহ সব ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর সেই পানিকে ঠাণ্ডা করে ছাকনি দিয়ে ছেকে পরিষ্কার কাচের বা স্টিল পাত্রে সংরক্ষণ করে ব্যবহার করতে পারবেন।
ফিল্টার: পানি ফুটিয়ে শতভাগ জীবাণু মুক্ত করা যায় না আবার পানি ফুটানোর জন্য অনেক সময় গ্যাসের সংকট পানি ফুটাতে পারে না তাদের ক্ষেত্রে ফিল্টারে পানি বিশুদ্ধ করাই সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। বাজারে বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার পাওয়া যায়। যার মধ্যে অনেকগুলো জীবাণুর পাশাপাশি পানির দুর্গন্ধ পুরোপুরি দূর করতে পারে। বাজারে মূলত দুই ধরণের ফিল্টার পাওয়া যায়। একটি সিরামিক ফিল্টার এবং অপরটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত রিভার্স অসমোসিস ফিল্টার।
ক্লোরিন ট্যাবলেট বা ব্লিচিংঃ পানির জীবাণু ধ্বংস করতে ক্লোরিন বহুল ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক। যদি পানি ফোটানো বা ফিল্টার করার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে পানিকে জীবাণু মুক্ত করতে ক্লোরিন ট্যাবলেট ব্যবহার করতে পারি। কোথাও ভ্রমণে গেলে অথবা দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে পড়লে বা জরুরি কোন অবস্থায় থাকলে ক্লোরিন ট্যাবলেটের মাধ্যমে পানিকে জীবাণু মুক্ত করে রেখে দিতে পারি।
পটাশ বা ফিটকিরিঃ আপনার জগ বা ঘড়াতে পানি থাকলে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে যাবে। তখন ছাকনি দিয়ে পানিটাকে ছেকে পরিস্কার পাত্রে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।
আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মিঃ পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানিকে জীবাণু মুক্ত করার জন্য অতিবেগুনি বিকিরণ কার্যকরী একটা পদ্ধতি। এতে করে পানির সব ধরণের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমানে বাজারে বেশ কয়েকটি আধুনিক ফিল্টারে আল্ট্রাভায়োলেট পিউরিফিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। তবে ঘোলা পানি বা রাসায়নিক-যুক্ত পানিতে এই পদ্ধতিটি খুব একটা কাজ হবে না। তবে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি অনেক ব্যয়বহুল।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: October 16, 2021