bdstall.com

বাংলাদেশ সেরা ১০ টি মোবাইল ব্র্যান্ড

ব্যাক্তিগত যোগাযোগ ও অনলাইনে বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল। আমাদের দেশে ল্যাপটপ, কম্পিউটার সহ বিভিন্ন ডিভাইস সহজলভ্য হলেও মোবাইলের প্রতি সকলেরই আলাদা একটা আকর্ষণ রয়েছে। কারণ এটি কমপ্যাক্ট সাইজ, স্মার্ট ফিচার এবং ন্যানো টেকলোজিতে তৈরি উন্নত মাদারবোর্ড, ক্যামেরা এবং দীর্ঘসময় ব্যবহার উপযোগী ব্যাটারি সরবারহ করে থাকে। টেকনোলোজি যত নতুন নতুন আবিষ্কারে দিকে ঝুকছে, তেমনি ভাবে মোবাইল ব্র্যান্ড গুলোও গ্রাহকদের নতুন টেকনোলোজি, ফিচারের সমন্বয়ে নতুন নতুন মডেলের মোবাইল ফোন সরবারহ করছে। তাহলে, চলুন বাংলাদেশে সেরা ১০ টি মোবাইল ব্র্যান্ড ও তাদের সরবারহকৃত ফিচার সমূহ সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক, যা থেকে আপনি আপনার জন্য বাজেটের মধ্যে সেরা মানের মোবাইল বাছাই করতে পারবেন।

বাংলাদেশ সেরা ১০ টি মোবাইল ব্র্যান্ড

আইফোন

আইফোন মূলত প্রিমিয়াম মোবাইল ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ডের মোবাইল অ্যাপলের ইকোসিস্টেমের সাথে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টিগ্রেশন এবং উন্নত ফোকাস ক্যাপাবিলিটি সহ ক্যামেরা দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে, যা আকর্ষণীয় ইউজার এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশে আইফোন এর দাম ১১,৫০০ টাকা থেকে ৪৫,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে, যা ব্যবহৃত কন্ডিশনে পাওয়া যায়। এছাড়াও, লেটেস্ট মডেলের আইফোন পাওয়া যায়, তবে দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে।

আইফোনের বিশেষ ফিচার সমূহ

  • ক্যামেরাঃ আইফোনের মেইন ক্যামেরাতে বড় সেন্সর, উন্নত অপটিক্যাল জুম সহ উন্নত মাল্টি-লেন্স সিস্টেম রয়েছে, যা দিয়ে কম আলোতে সেরা মানের ছবি ক্যাপচার করা যায়। ফটোনিক ইঞ্জিন রয়েছে যা ফটোতে বেশি ডিটেইলস এবং নির্ভুল রঙ সরবারহ করে থাকে। এছাড়াও, লেটেস্ট মডেলের আইফোন দিয়ে বিভিন্ন ফ্রেম রেটে ৪কে, ৮কে ভিডিও নাইট মোড ও সিনেমাটিক মোড রেকর্ড করা যায়। পাশাপাশি, চলাচলের সময় মসৃণ ভিডিও ক্যাপচার করা যায়। এছাড়াও, ডিএসএলআর এর ন্যায় পেশাদার-গ্রেড ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগ্রাফির জন্য উন্নত ফর্ম্যাট সরবারহ করে থাকে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইল সুপার রেটিনা এক্সডিআর ডিসপ্লে সরবারহ করে। পাশাপাশি উচ্চতর রঙের নির্ভুলতার জন্য এইচডিআর সাপোর্ট সহ উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত ওএলইডি টেকনোলোজির ডিসপ্লে সরবারহ করে। মসৃণ স্ক্রলিং এবং প্রতিক্রিয়াশীলতার জন্য সর্বোচ্চ ১২০ হার্জ পর্যন্ত রিফ্রেশ রেট প্রদান করে। এছাড়াও, আইফোনের প্রো মডেলের মোবাইলের আরেকটি বিশেষ সুবিধা হচ্ছে সম্পূর্ণরূপে ডিসপ্লে অন না করে শুধুমাত্র তথ্য অ্যাক্সেস করার ফিচার সরবারহ করে।
  • পারফরম্যান্সঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে এ১৭ প্রো চিপ রয়েছে, যা উন্নত ৫-ন্যানোমিটার প্রযুক্তির সাথে উল্লেখযোগ্য কর্মক্ষমতা প্রদান করে। এছাড়াও, পরবর্তী প্রজন্মের গ্রাফিক্স প্রসেসর, বর্ধিত গেমিং পারফরম্যান্স এবং কনসোল-লেভেল গ্রাফিক্স এবং রে ট্রেসিং সাপোর্ট করে।
  • কানেক্টিভিটিঃ দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানের জন্য ওয়াইফাই ৬ই সাপোর্ট করে, যা গোলযোগপূর্ণ এরিয়াতে উন্নত কানেক্টিভিটি বজায় রাখে। অ্যাপল পে সহ অন্যান্য যোগাযোগবিহীন লেনদেনের জন্য উন্নত এনএফসি সক্ষমতা রয়েছে।
  • স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ মডেলের উপর নির্ভর করে আইফোনে সাধারনত এনভিএমই  টেকনোলোজির ১২৮ জিবি থেকে ১ টেরাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ সরবারহ করে, যা দ্রুতগতিতে রিড/রাইট স্পীড প্রদান করে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ দক্ষ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট সহ ১৫০০ থেকে ৪৫০০ এমএএইচ পর্যন্ত ব্যাটারি সরবারহ করে, যা উন্নত ব্যাটারি লাইফ নিশ্চিত করে। তাছাড়া, এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে সাধারন চার্জারের পাশাপাশি  ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা প্রদান করে থাকে।

শাওমি

এটি মূলত চায়নিজ মোবাইল ব্র্যান্ড। শাওমি মোবাইল সাধারণত সাশ্রয়ী দামে উন্নত ফিচারের সমৃদ্ধ মোবাইল সরবারহ করে থাকে। তাছাড়া, উদ্ভাবনী ডিজাইন এবং আকর্ষণীয় হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশনের জন্য শাওমি মোবাইল বাংলাদেশে বেশ পরিচিত। তাছাড়া, শাওমি মোবাইলের দুটি জনপ্রিয়  সাব ব্র্যান্ড  হচ্ছে এমআই এবং রেডমি। বাজেট অনুযায়ী ভালো মানের কনফিগারেশন এবং আকর্ষণীয় ফিচার সরবারহ করায় শাওমি এমআই এবং রেডমি মোবাইল জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে ব্যবহৃত কন্ডিশন ও লেটেস্ট মডেলের শাওমি মোবাইলের দাম ৩,৫০০ টাকা থেকে ৪৭,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

শাওমি মোবাইলের বিশেষ ফিচার সমূহ

  • ক্যামেরাঃ শাওমি স্মার্টফোনে প্রায়শই উন্নত ক্যামেরা সিস্টেম সরবারহ করে, যার মধ্যে একাধিক লেন্স যেমন ওয়াইড-এঙ্গেল, ম্যাক্রো এবং ডেপথ সেন্সর রয়েছে। বিশেষ করে শাওমি এমআই সিরিজের মোবাইলে উচ্চ-রেজোলিউশন সেন্সর , নাইট মোড এবং ভালো ছবির জন্য এআই ফটো এনহেন্সমেন্ট সুবিধা প্রদান করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে সাধারণত উচ্চ-রেজোলিউশনের ডিসপ্লে সরবারহ করে। কিছু কিছু মডেলে প্রাণবন্ত রঙ এবং গভীর কালোর জন্য অ্যামোলেড বা সুপার অ্যামোলেড টেকনোলজির ডিসপ্লে সরবারহ করে। তাছাড়া, ল্যাগমুক্ত ভিডিও দেখা, গেমিং এবং স্ক্রলিং করার জন্য ১২০ হার্জ পর্যন্ত  উচ্চ রিফ্রেশ রেট সরবারহ করে।
  • পারফরম্যান্সঃ শাওমি মোবাইলে সাধারনত কোয়ালকম -এর স্ন্যাপড্রাগন সিরিজের শক্তিশালী প্রসেসর এবং মিডিয়াটেক-এর ডাইমেনসিটি সিরিজের প্রসেসর ব্যবহার করে থাকে, যা দ্রুত কর্মক্ষমতা এবং দক্ষ মাল্টিটাস্কিং নিশ্চিত করে। এছাড়াও, স্ন্যাপড্রাগন চিপসেটের সমন্বয়ে এড্রিয়েনো জিপিইউ বা মিডিয়াটেক প্রসেসরে মালি জিপিইউ চমৎকার গ্রাফিক্স পারফরম্যান্স প্রদান করে, যা গেমিং এবং মাল্টিমিডিয়া কাজে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
  • কানেক্টিভিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে ৫জি, ওয়াইফাই ৬, ব্লুটুথ ৫.০ সহ এনএফসি এর মত ফিচার সরবারহ করে থাকে।
  • স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ শাওমি মোবাইলে ৬৪ জিবি থেকে ৫১২ জিবি স্টোরেজ ক্যাপাসিটি সরবারহ করে। এছাড়াও, মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে আলাদা স্টোরেজ ব্যবহার করা যায়।  কিছু কিছু  হাই-এন্ড মডেলের শাওমি মোবাইলে দ্রুত গতিতে রিড/রাইট করার জন্য ইউএফএস স্টোরেজ টেকনোলোজি সরবারহ করে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ বেশিরভাগ শাওমি মোবাইলে ৪০০০ এমএএইচ থেকে ৫০০০ এমএএইচ বা তার বেশি ক্যাপাসিটির ব্যাটারি সরবারহ করে। ফলে, এই ক্যাপাসিটির ব্যাটারি একবার চার্জ করে প্রায় ২৮-৩২ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া, দ্রুত চার্জিং সুবিধা প্রদানের জন্য কিছু কিছু মডেলে ১২০ ওয়াট পর্যন্ত চার্জার সরবারহ করে।

সিম্ফনি

চায়না মোবাইলের বাজারে আসার পর পরই বাংলাদেশে সিম্ফনি মোবাইল বাজারজাত শুরু হয়েছে। এটি বাংলাদেশী মোবাইল ব্র্যান্ড। সিম্ফনি মূলত বাটন মোবাইল দিয়ে যাত্রা শুরু করে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাছাড়া, সিম্ফনি বিভিন্ন নেভিগেশন বাটন যুক্ত এন্ট্রি লেভেলের এন্ড্রয়েড মোবাইল সরবারহ করে থাকে। বাংলাদেশে সিম্ফনি বাটন মোবাইল ১,০০০ টাকায় পাওয়া যায় এবং এন্ড্রয়েড মোবাইল ৬,০০০ টাকায় পাওয়া যায়।  এছাড়াও, অ্যামোলেড, আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যুক্ত সিম্ফনি মোবাইল ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

সিম্ফনি মোবাইলের বিশেষ ফিচার সমূহ

  • ক্যামেরাঃ সিম্ফনি মোবাইলে উন্নত মানের ক্যামেরা সেটআপ সরবারহ করে থাকে, যা উচ্চ-রেজোলিউশনের প্রধান ক্যামেরা, আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স এবং ম্যাক্রো লেন্স অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাজেটের মধ্যে সাধারণত ফটোগ্রাফির জন্য সিম্ফনি মোবাইল যথেষ্ট ভালো ক্যামেরা পারফরম্যান্স প্রদান করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ সিম্ফনি মোবাইলে সাধারণত এইচডি থেকে ফুল এইচডি  ডিসপ্লে সরবারহ করে। ভাল রঙের প্রজনন এবং বিস্তৃত দেখার কোণ সরবারহ করার জন্য কিছু কিছু সিম্ফনি মোবাইলে আইপিএস এলসিডি টেকনোলজির ডিসপ্লে সরবারহ করে।
  • পারফরম্যান্সঃ সিম্ফনি মোবাইলে মিডিয়াটেক বা কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগনের মতো ব্র্যান্ডের প্রসেসর ব্যবহার করে। এন্ট্রি-লেভেল সিম্ফনি মোবাইলে কোয়াড-কোর প্রসেসর, মিড-রেঞ্জ এবং হাই-এন্ড মডেলগুলোতে উন্নত মাল্টিটাস্কিং এবং পারফরম্যান্সের জন্য অক্টা-কোর প্রসেসর সরবারহ করে। চিপসেটের উপর নির্ভর করে সিম্ফনি মোবাইলে এআরএম মালি বা অ্যাড্রেনো থেকে সমন্বিত গ্রাফিক্স সরবারহ করে। ফলে, গেমিং এবং হাই-ডেফিনেশনের ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে ল্যাগ খুবই কম হয়ে থাকে।
  • কানেক্টিভিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে সাধারণত ৪জি এলটিই সাপোর্ট, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ এবং জিপিএস সহ বিস্তৃত সংযোগ সুবিধা প্রদান করে। দ্রুত ডেটা ট্রান্সফার এবং চার্জ করার জন্য লেটেস্ট মডেলের সিম্ফনি মোবাইলে ইউএসবি টাইপ-সি সরবারহ করে।
  • স্টোরেজঃ সিম্ফনি এন্ট্রি-লেভেলের মোবাইলে ১৬জিবি/৩২ জিবি স্টোরেজ সরবারহ করে। এছাড়াও, মিড-রেঞ্জ থেকে হাই-এন্ড মডেলের সিম্ফনি মোবাইলে ৬৪ জিবি, ১২৮জিবি বা তার বেশি স্টোরেজ ক্যাপাসিটি প্রদান করে। প্রয়োজনে আলাদা স্টোরেজের জন্য মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করার অপশন রয়েছে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ মডেলের উপর নির্ভর করে সিম্ফনি মোবাইলের ব্যাটারি ক্যাপাসিটি সাধারণত ৩০০০ এমএএইচ থেকে ৫০০০ এমএএইচ হয়ে থাকে।

রিয়েলমি

বাজেট অনুযায়ী মিড রেঞ্জের মোবাইল সরবারহ করায় রিয়েলমি মোবাইল বাংলাদেশে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই ব্র্যান্ডের মোবাইল সাশ্রয়ী দামে মসৃণ ডিজাইন, শক্তিশালী হার্ডওয়্যার সরবারহ করে। ফলে, রিয়েলমি মোবাইল দীর্ঘদিন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে, বাংলাদেশে রিয়েলমি মোবাইলের দাম ১০,০০০ টাকা থেকে ১৮,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

রিয়েলমি মোবাইলের বিশেষ ফিচারসমূহ

  • ক্যামেরাঃ রিয়েলমি মোবাইল মূলত আকর্ষণীয় ক্যামেরার জন্য বাংলাদেশে বেশ পরিচিত। এই ব্র্যান্ডের মিড রেঞ্জ এবং ফ্ল্যাগশিপ মডেলের মোবাইলে ৪৮ মেগাপিক্সেল, ৬৪ মেগাপিক্সেল, ১০৮ মেগাপিক্সেল এর মত উচ্চ-রেজোলিউশনের সেন্সর সরবারহ করে। বিস্তৃত পরিসরে ফটোগ্রাফি করার জন্য অনেক রিয়েলমি মোবাইলে আল্ট্রা-ওয়াইড, ম্যাক্রো এবং ডেপথ সেন্সর সহ একাধিক লেন্স কনফিগারেশন রয়েছে। এছাড়াও, উন্নত ক্যামেরা ফিচার যেমন এআই এনহেন্সমেন্ট, নাইট মোড, এবং পোর্ট্রেট মোড সহ উন্নত ফিচার সরবারহ করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ রিয়েলমি স্মার্টফোন সাধারণত এলসিডি থেকে অ্যামোলেড টেকনোলোজির প্রাণবন্ত ডিসপ্লে সরবারহ করে, যা  দুর্দান্ত রঙ এবং কনট্রাস্ট রেশিও প্রদান করে। অনেক মডেল ৯০ হার্জ বা ১২০ হার্জের উচ্চ রিফ্রেশ রেট সরবারহ করে, যা মসৃণ স্ক্রোলিং এবং ভালো গেমিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
  • পারফরম্যান্সঃ এই ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনে স্ন্যাপড্রাগন এবং মিডিয়াটেক এর  শক্তিশালী প্রসেসর রয়েছে, যা মাল্টিটাস্কিং এবং গেমিংয়ের ক্ষেত্রে মসৃণ কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করে। তাছাড়া, চাহিদা অনুযায়ী অ্যাপ্লিকেশন এবং ল্যাগমুক্ত ভাবে মোবাইল অপারেট করার জন্য ৪জিবি, ৬জিবি বা ৮ জিবি র‍্যাম সরবারহ করে।
  • কানেক্টিভিটিঃ বেশিরভাগ রিয়েলমি মোবাইলে ৪জি এলটিই  নেটওয়ার্ক সাপোর্টেড হয়ে থাকে। তবে, নতুন মডেলের রিয়েলমি ফোনে ৫জি কানেক্টিভিটি সরবারহ করে, যা দ্রুতগতির ইন্টারনেট অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে। এছাড়াও, ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই, জিপিএস, এবং ইউএসবি টাইপ-সি সহ বিভিন্ন কানেক্টিভিটি সুবিধা প্রদান করে।
  • স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ এই ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনে ৬৪ জিবি থেকে ২৫৬জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ সরবারহ করে। অনেক মডেলে মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বাড়ানো যায়।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ রিয়েলমি মোবাইলে ৪০০০ এমএএইচ থেকে ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি সরবারহ করে, যা দৈনন্দিন ব্যবহারে জন্য দীর্ঘসময় ব্যাটারি বেক আপ প্রদান করে। তাছাড়া, ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টেড হওয়ায় ৩০ মিনিটে প্রায় ৫০% ব্যাটারি চার্জ করা যায়।

ভিভো

এটি মূলত চায়না স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ড সাধারণত কম দামে উন্নত ক্যামেরা এবং হাই-কনফিগারেশনের মোবাইল সরবারহ করে থাকে। এছাড়াও, ভিভো মোবাইলে ভালো মানের প্রসেসর যুক্ত থাকায়, সহজে গেম খেলা যায়। বর্তমানে, বাংলাদেশে ব্যবহৃত কন্ডিশন এবং ব্র্যান্ড নিউ উভয় ধরণের ভিভো মোবাইল সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।

ভিভো মোবাইলের বিশেষ ফিচারসমূহ

  • ক্যামেরাঃ ভিভো স্মার্টফোন উচ্চ-রেজোলিউশন ক্যামেরা সরাবরহ করে , পাশাপাশি পরিষ্কার এবং ডিটেইলস ছবির জন্য ৬৪ মেগাপিক্সেলের বেশি ক্যামেরা সেন্সর সরবারহ করে থাকে। অনেক ভিভো মোবাইলে ফটোগ্রাফির জন্য এ আই এনহেন্সম্যান্ট রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পোর্ট্রেট মোড, নাইট মোড এবং বিউটি ফিল্টার। এছাড়াও, অনেক মডেলে বিভিন্ন এংগেলে ফটোগ্রাফি করার জন্য ওয়াইড-এঙ্গেল, ম্যাক্রো এবং ডেপথ সেন্সর সহ বহুমুখী ক্যামেরা সেটআপ প্রদান করে। উচ্চ-রেজোলিউশন ভিডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য ৪কে সহ বিভিন্ন ফ্রেম রেট সরবারহ করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ অনেক ভিভো মোবাইলে প্রাণবন্ত রঙ, গভীর কালো এবং শক্তি দক্ষতার জন্য অ্যামোলেড ডিসপ্লে সরবারহ করে। কিছু মডেলের ভিভো মোবাইলে মসৃণ স্ক্রোলিং এবং গেমিং অভিজ্ঞতার জন্য ১২০ হার্জ পর্যন্ত উচ্চ রিফ্রেশ রেট সরবারহ করে। এই ব্র্যান্ডের বেশিরভাগ মোবাইলে তীক্ষ্ণ ভিজ্যুয়াল প্রদর্শনের জন্য কমপক্ষে ফুল এইচডি+ রেজোলিউশন সরবারহ করে।
  • পারফরম্যান্সঃ  ভিভো স্মার্টফোনে সাধারণত মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি বা কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন সিরিজের মতো শক্তিশালী প্রসেসর ব্যবহার করে, যা মাল্টিটাস্কিং এবং গেমিংয়ের জন্য দক্ষ কার্যক্ষমতা প্রদান করে। এছাড়াও, অ্যাড্রেনো বা মালি-এর মতো উচ্চ-কার্যক্ষমতা সম্পন্ন জিপিইউ দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে, যা গেমিং এবং হাই-ডেফিনেশন ভিডিও দেখার জন্য উন্নত গ্রাফিক্স প্রদান করে৷
  • কানেক্টিভিটিঃ বর্তমানে, অনেক ভিভো মোবাইলে দ্রুতগতি ইন্টারনেট এবং কম লেটেন্সির জন্য ৫জি কানেক্টিভিটি সরবারহ করে। উন্নত ওয়্যারলেস স্পীড এবং সংযোগের জন্য সর্বশেষ ওয়াইফাই ৬ সাপোর্ট করে। এছাড়াও, অনেক ডিভাইসে দ্রুত গতিতে ফাইল ট্রান্সফারের জন্য  ব্লুটুথ ৫.০ রয়েছে।
  • স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ ভিভো মোবাইলে প্রায়ই ৬৪ জিবি থেকে ২৫৬ জিবি পর্যন্ত বিস্তৃত পরিসরে স্টোরেজ সরবরাহ করে। এছাড়াও, মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে বাড়তি স্টোরেজ ব্যবহার করা যায়। দ্রুত ফাইল ট্রান্সফার এবং অ্যাপ্লিকেশন লোডিংয়ের জন্য ইউএফসি স্টোরেজ টেকনোলোজি ব্যবহার করে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ অনেক ভিভো মোবাইলে ডিভাইসে ৩৩ ওয়াট বা তার বেশি ক্যাপাসিটির চার্জার এবং দ্রুত চার্জিং টেকনোলোজি রয়েছে যা ব্যাটারি দ্রুত রিচার্জ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে সাধারণত ৪০০০ এম এ এইচ থেকে ৫০০০ এমএএইচ পর্যন্ত ব্যাটারি সরবারহ করে, যা সারাদিন ব্যবহারের নিশ্চিয়তা প্রদান করে।

স্যামসাং

স্যামসাং মূলত জনপ্রিয় গ্লোবাল মোবাইল ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ড সাধারণত উন্নত টেকনোলোজি, অত্যাধুনিক ফিচারের সমন্বয়ে স্যামসাং বাটন মোবাইল থেকে শুরু করে হাই-এন্ড ফ্ল্যাগশিপ মডেলের নতুন স্যামসাং মোবাইল বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে সরবারহ করে থাকে। তবে, কান্ট্রি ভ্যারিয়েন্ট ভেদে স্যামসাং মোবাইল এর দাম কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে স্যামসাং মোবাইল এর দাম ১,৯৯০ টাকা থেকে ২৬০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

স্যামসাং মোবাইলের বিশেষ ফিচারসমূহ

  • ক্যামেরাঃ স্যামসাং মোবাইলে মাল্টি-লেন্স সেটআপ বা একাধিক ক্যামেরা লেন্স যেমন ওয়াইড-এঙ্গেল, আল্ট্রা-ওয়াইড, ম্যাক্রো এবং টেলিফটো সরবারহ করে, যা দিয়ে পছন্দসই ফটোগ্রাফি করা যায়। লেটেস্ট মডেলের মোবাইলে ডিটেইলস সহ ফটোগ্রাফি করার জন্য ১০৮ মেগাপিক্সেলের মত উচ্চ-রেজোলিউশন সেন্সর সরবারহ করে। কম-আলো ফটোগ্রাফি করার জন্য নাইট মোড সরবারহ করে যা অন্ধকার পরিবেশে উজ্জল এবং ডিটেইলস সহ ছবি তুলতে সহায়তা করে। চলাচলের সময় মসৃণ ভিডিও রেকর্ড করার জন্য এডভান্স স্টেবিলাইজেশন টেকনিক সরবারহ করে। দৃশ্য অপ্টিমাইজেশন এবং দুর্দান্ত শট ক্যাপচার করার জন্য এ আই এনহেন্সমেন্ট সরাবরহ করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটঃ স্যামসাংয়ের ফ্ল্যাগশিপ মোবাইলে সাধারণত সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে সরবারহ করে, যা প্রাণবন্ত রং, গভীর কালো এবং চমৎকার কনট্রাস্ট রেশিও সরবারহ করে। অনেক মডেলে ১২০ হার্জ পর্যন্ত উচ্চ রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে, যা দিয়ে মসৃণভাবে স্ক্রোলিং এবং উন্নত গেমিং, অ্যানিমেশন এবং মাল্টিমিডিয়া কাজে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, আকর্ষণীয় এবং পরিষ্কার ভিজ্যুয়ালের জন্য কোয়াড এইচডি+ বা ফুল এইচডি+-এর মতো উচ্চ রেজোলিউশন সরবারহ করে।
  • পারফরম্যান্সঃ মডেলভেদে স্যামসাং ব্র্যান্ডের মোবাইলে এক্সিনোস চিপস বা কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন চিপ ব্যবহার করে থাকে, যা শক্তিশালী কর্মক্ষমতা প্রদান করে। এছাড়াও, এড্রেনো বা মালি জিপিইউ সরবারহ করে, যা গেমিং এবং মাল্টিমিডিয়ার জন্য চমৎকার পারফরম্যান্স প্রদান করে।
  • কানেক্টিভিটিঃ অনেক লেটেস্ট স্যামসাং মোবাইলে দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করতে ৫জি কানেক্টিভিটি সরবারহ করে। এছাড়াও, ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে ভালো পারফরম্যান্সের জন্য ওয়াই-ফাই৬ / ৬ই এর মত উন্নত ওয়্যারলেস সংযোগ প্রদান করে। উন্নত ডেটা ট্রান্সফার স্পীড এবং অন্যান্য পেরিফেরাল ডিভাইসের সাথে সংযোগ করার জন্য ব্লুটুথ ৫.০ বা তার উপরের ভার্সন সরবারহ করে। মোবাইল পেমেন্ট এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ ডিভাইসের সাথে সংযোগ করার জন্য এনএফসি সাপোর্ট করে।
  • স্টোরেজ ক্ষমতাঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে ৬৪ জিবি থেকে ২৫৬ জিবি পর্যন্ত ইন্টারনাল স্টোরেজ সরবারহ করে। অনেক স্যামসাং মোবাইলে অতিরিক্ত স্টোরেজের জন্য মাইক্রোএসডি কার্ড স্লট সরবারহ করা যায়।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ মডেলের ভেদে স্যামসাং মোবাইলে সাধারণত ৪০০০ এমএএইচ থেকে ৬০০০ এমএএইচ বা তার বেশি ক্যপাসিটির ব্যাটারি সরবারহ করে। এছাড়াও, দ্রুত চার্জ করার জন্য ওয়্যারড চার্জারের পাশাপাশি ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা প্রদান করে। এছাড়াও, ব্যাটারির আয়ু বাড়ানোর জন্য সফ্টওয়্যার অপ্টিমাইজ করা যায়।

ওয়ানপ্লাস

এটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির মোবাইল ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ডের মোবাইল আকর্ষণীয় আউটলুক, উচ্চমানের প্রসেসর, এবং উন্নত ক্যামেরা সরবারহ করে থাকে। ফলে, আকর্ষণীয় কালারে ছবি ক্যাপচার করার পাশাপাশি হাই গ্রাফিক্সের গেম মসৃণভাবে খেলা যায়। বর্তমানে, বাংলাদেশে ওয়ানপ্লাস এবং ওয়ানপ্লাস নর্ড সহ জনপ্রিয় সিরিজের প্রায় সকল মডেলের ওয়ানপ্লাস মোবাইল সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে লেটেস্ট মডেলের ওয়ানপ্লাস মোবাইলের দাম ৩৫,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

ওয়ানপ্লাস মোবাইলের বিশেষ ফিচারসমূহ

  • ক্যামেরাঃ ওয়ানপ্লাস মোবাইলে উচ্চ-রেজোলিউশনের মাল্টি-লেন্স ক্যামেরা সিস্টেম রয়েছে, যা দিয়ে বিস্তারিত ছবি তোলা যায়। এছাড়াও, ফটোগ্রাফির জন্য বিস্তৃত ফিচার যেমন নাইটস্কেপ, এইচডিআর, এবং প্রো মোড সরবারহ করে। এছাড়াও, কম-আলো এবং পোর্ট্রেট মোডে ভালো ফটোগ্রাফি করার জন্য উন্নত ইমেজ প্রসেসিং অ্যালগরিদম রয়েছে। তাছাড়া, স্থির অবস্থায় ভালো ভিডিও রেকর্ড করার জন্য ৪কে রেজোলিউশন সাপোর্ট করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে ফ্লুইড অ্যামোলেড ডিসপ্লে সরবারহ করে, যা আকর্ষণীয় রঙ এবং গভীর কালো সরবারহ করে। মসৃণ স্ক্রলিং এবং গেমিং অভিজ্ঞতার জন্য ৯০ হার্জ থেকে ১২০ হার্জ এর উচ্চ রিফ্রেশ রেট সরবারহ করে। চমৎকার পিক্সেল ডেনসিটি সহ সাধারণত ফুল এইচডি+ বা কোয়াড এইচডি+ উচ্চ রেজোলিউশন সরবারহ করে, যা নিমগ্ন দেখার অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
  • পারফরম্যান্সঃ দক্ষ মাল্টিটাস্কিং এবং গেমিংয়ের জন্য উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর ৭-সিরিজ থেকে ৮-সিরিজ দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। এছাড়াও, শক্তিশালী এড্রেনো জিপিইউ সরবারহ করে, যা গেমিং এবং মাল্টিমিডিয়ার জন্য উচ্চ-মানের গ্রাফিক্স সরবারহ করে৷
  • কানেক্টিভিটিঃ দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবারহ করার জন্য লেটেস্ট মডেলের ওয়ানপ্লাস মোবাইলে ৫জি নেটওয়ার্ক রয়েছে। উন্নত ওয়্যারলেস সংযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য ওয়াই-ফাই৬ সরবারহ করে। এছাড়াও, ডুয়াল সিম সাপোর্ট এবং এনএফসি ফিচার রয়েছে।
  • স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে সাধারনত ১২৮ জিবি থেকে ৫১২ জিবি পর্যন্ত ইন্টারনাল স্টোরেজ সরবারহ করে৷ তবে, ওয়ানপ্লাস মোবাইলে এক্সটারনাল স্টোরেজ ব্যবহার করার জন্য মাইক্রোএসডি স্লট নেই, তাই কেনার সময় স্টোরেজ ক্যাপাসিটি যাচাই করে নিতে হবে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ ওয়ানপ্লাস মোবাইলে সাধারণত ৪৫০০ এমএএইচ থেকে ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি সরবারহ করে থাকে। দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তির জন্য ওয়ার্প চার্জ ফিচার রয়েছে, যা ব্যাটারির চার্জ দ্রুত পূরণ করে থাকে। ফলে, মাত্র ৩০ মিনিটে উল্লেখযোগ্য পরিমান চার্জ হয়ে যায়।

টেকনো

চীনের সবচেয়ে উদয়ীমান মোবাইল ব্র্যান্ড হচ্ছে টেকনো। এই ব্র্যান্ডের মোবাইল সাধারণত আকর্ষণীয় ফিচারের সমন্বয়ে তৈরি হয়ে থাকে। পাশাপাশি দামেও সাশ্রয়ী হওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে টেকনো মোবাইল এর দাম ৬,০০০ টাকা থেকে ১১,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

টেকনো মোবাইলের বিশেষ ফিচারসমূহ

  • ক্যামেরাঃ টেকনো ব্র্যান্ডের মোবাইলে একাধিক ক্যামেরা সেটআপ যেমন আল্ট্রা-ওয়াইড, ম্যাক্রো এবং ডেপথ সেন্সর সহ মাল্টি-ক্যামেরা সেটআপ সরবারহ করে। পাশাপাশি কিছু কিছু ফ্ল্যাগশিপ মডেলের টেকনো মোবাইলে ৬৪ মেগাপিক্সেলের বেশি ক্যামেরা সেন্সর সরবারহ করে থাকে, যা দিয়ে আকর্ষণীয় ছবি ও ভিডিও ক্যাপচার করা যায়। অনেক টেকনো মোবাইলে সিনারি রিকগনাইজ এবং পোট্রেট মোড সহ আরও ভালো ফটোগ্রাফির জন্য এআই এনহেন্সম্যান্ট সরবারহ করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ টেকনো এইচডি থেকে ফুল এইচডি+ পর্যন্ত বিস্তৃত ডিসপ্লে সরবারহ করে, যা ক্রিস্প ভিজ্যুয়াল নিশ্চিত করে। তাছাড়া, বেশিরভাগ টেকোনো মোবাইলের ডিসপ্লে ৬.৫ থেকে ৭ ইঞ্চি সাইজের স্ক্রীন সরবারহ করে, যা গেমিং এবং মাল্টিমিডিয়া কাজে ব্যবহারের জন্য আদর্শ।
  • পারফরম্যান্সঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে সাধারণত মিডিয়াটেক চিপসেট ব্যবহার করে, যা দৈনন্দিন কাজ এবং গেমিংয়ের জন্য ভাল পারফরম্যান্স প্রদান করে। এছাড়াও, ৪জিবি থেকে ৮ জিবি র‍্যাম সরবারহ করে, যা মসৃণ মাল্টিটাস্কিং এবং আরও ভাল গেমিং পারফরম্যান্স প্রদান করে। কিছু কিছু মডেলে গেম মোড ফিচার সরবারহ করে।
  • কানেক্টিভিটিঃ বেশিরভাগ টেকনো মোবাইল ডুয়াল সিম সাপোর্টেড হয়ে থাক, যা ব্যক্তিগত এবং পেশাদার উভয় ধরনের কল অপারেট করতে সহায়তা করে। এই ব্র্যান্ডের মোবাইল সাধারণত ৪জি এলটিই সংযোগ সাপোর্ট করে, যা দ্রুত ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং স্ট্রিমিং নিশ্চিত করে। অন্যান্য ডিভাইস এবং নেটওয়ার্কের সাথে উন্নত সংযোগের জন্য আধুনিক ব্লুটুথ এবং ওয়াই-ফাই সংযোগ সুবিধা প্রদান করে।
  • স্টোরেজ ক্ষমতাঃ অনেক টেকনো মোবাইলে মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে এক্সটারনাল স্টোরেজ সরবারহ করে, যার ফলে প্রয়োজন অনুসারে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বাড়ানো যায়। তাছাড়া, টেকনো মোবাইলে ৩২ জিবি থেকে ১২৮ জিবি অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ সরবারহ করে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে ৪০০০ এমএএইচ থেকে ৬০০০ এমএএইচের ব্যাটারি সরবারহ করে থাকে, যা একবার চার্জ করে দীর্ঘসময় নিশ্চিন্তে  ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া, অনেক মডেল ফাস্ট চার্জিং পাওয়ার প্রদান করে, যা দ্রুত সময়ে মোবাইল রিচার্জ করতে সহায়তা করে।

অপ্পো

অপ্পো হচ্ছে চায়না স্মার্টফোন ব্র্যান্ড যা ইনোভেটিভ ক্যামেরা টেকনোলোজি এবং মসৃণ ডিজাইনের জন্য বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই ব্র্যান্ড সাধারণত উন্নত ফিচার এবং স্পেসিফিকেশনের সমন্বয়ে মিড-রেঞ্জ এবং হাই মিড-রেঞ্জ এর মোবাইল সরবারহ করে থাকে। বর্তমানে, ব্যবহৃত কন্ডিশন এবং লেটেস্ট উভয় ধরণের অপ্পো মোবাইল বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।

অপ্পো মোবাইলের বিশেষ ফিচারসমূহ

  • ক্যামেরাঃ অপ্পো মোবাইল মূলত ক্যামেরা জন্য বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। কারণ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে উচ্চ-রেজোলিউশন সেন্সর, একাধিক লেন্স এবং উন্নত ফটোগ্রাফি মোড যেমন নাইট মোড, পোর্ট্রেট মোড, এবং এআই এনহেন্সম্যান্ট সরবারহ করে, যা সকল অবস্থায় গুণমান সম্পন্ন ছবি ও ভিডিও সরবারহ করে। অনেক অপ্পো মোবাইল উচ্চ-মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা এবং বিউটি ফিচার সরবারহ করে, যা সেলফি প্রেমীদের জন্য আদর্শ।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ এই ব্র্যান্ডের অনেক মোবাইলে অ্যামোলেড বা সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে সরবারহ করে, যা স্পন্দনশীল রঙ, গভীর কালো এবং উচ্চ কনট্রাস্ট রেশিও প্রদান করে। এছাড়াও, মাল্টিমিডিয়া কাজে ব্যবহারের জন্য আকর্ষণীয় ভিজ্যুয়াল প্রদান করে। এছাড়াও, কিছু কিছু অপ্পো মোবাইলে ১২০ হার্জ পর্যন্ত রিফ্রেশ রেট সরবারহ করে। ফলে মসৃণভাবে স্ক্রোলিং করার পাশাপাশি আরামদায়কভাবে গেমিং করা যায়।
  • পারফরম্যান্সঃ অপ্পো মোবাইলে সাধারণত মিডিয়াটেক এবং স্ন্যাপড্রাগন সিরিজের শক্তিশালী প্রসেসর দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে, যা মসৃণ মাল্টিটাস্কিং এবং গেমিং এর জন্য উন্নত পারফরম্যান্স প্রদান করে। এছাড়াও, কালারওএস, অপ্পো-এর কাস্টম ইন্টারফেস, অ্যাপ ক্লোনিং এবং গেমিং মোডের মতো উন্নত ফিচার সরবারহ করে, যা ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করার পাশাপাশি উন্নত ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
  • কানেক্টিভিটিঃ লেটেস্ট মডেলের অপ্পো মোবাইলে ৫জি কানেক্টভিটি রয়েছে, যা স্ট্রিমিং, গেমিং এবং ডাউনলোড করার জন্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করে। অন্যান্য ডিভাইসের সাথে দ্রুত এবং স্থিতিশীল সংযোগের জন্য সর্বশেষ ভার্সনের ওয়াই-ফাই,এবং ব্লুটুথ সাপোর্ট করে।
  • স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ অপ্পো মোবাইলে সাধারণত ৬৪ জিবি থেকে ২৫৬ জিবির বেশি স্টোরেজ প্রদান করে। পাশাপাশি অনেক মডেলে মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে বাহ্যিক স্টোরেজ ব্যবহার করা যায়। কিছু কিছু মডেলে ইউএফসি টেকনোলোজি রয়েছে, যা ডাটা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে দ্রুত রিড/রাইট সক্ষমতা প্রদান করে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ অনেক অপ্পো মোবাইলে ৫০০০ এমএএইচ বা তার বেশি ক্যাপাসিটির ব্যাটারি সরবারহ করে, যা একবার চার্জে প্রায় সারাদিন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া, এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে ভিওওসি ফ্ল্যাশ চার্জ টেকনোলোজি ব্যবহার করে থাকে, যা অল্প সময়ের মধ্যে মোবাইল দ্রুত রিচার্জ করতে সহায়তা করে।

অনার

এটি মূলত চায়না ব্র্যান্ডের মোবাইল, যা ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে। এই ব্র্যান্ডের মোবাইল আকর্ষণীয় ডিজাইন, উন্নত ক্যামেরা সিস্টেম এবং উচ্চ পাওয়ার ক্যাপাসিটি সম্পন্ন ব্যাটারি দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। বর্তমানে, অনার কম বাজেট থেকে শুরু করে মিড রেঞ্জ এবং ফ্ল্যাগশিপ মডেলের মোবাইল সরবারহ করে থাকে। বাংলাদেশে অনার মোবাইল এর দাম ১৬,০০০ টাকা  থেকে ৫৩,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

অনার মোবাইলের বিশেষ ফিচারসমূহ

  • ক্যামেরাঃ অনার মোবাইলে উচ্চ মেগাপিক্সেলের মাল্টিপল লেন্স সেটআপ এবং আকর্ষণীয় ফটোগ্রাফির জন্য এআই এনহেন্সম্যান্টের সমন্বয়ে উন্নত ক্যামেরা সিস্টেম সরবারহ করে। অনেক মডেলের মধ্যে ফ্ল্যাগশিপ অনার মোবাইলে অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন, নাইট মোড এবং উন্নত কম-আলো কর্মক্ষমতা প্রদান করে।
  • ডিসপ্লে কোয়ালিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে উচ্চ রেজোলিউশন এবং নির্ভুল রঙের প্রাণবন্ত ডিসপ্লে সরবারহ করে। অনেক মডেলে অ্যামোলেড বা আইপিএস এলসিডি টেকনোলোজি ব্যবহার করে, যা গভীর কালো এবং প্রাণবন্ত রঙের পাশাপাশি মসৃণ অ্যানিমেশন এবং ভালো গেমিং অভিজ্ঞতার জন্য উচ্চ রিফ্রেশ রেট প্রদান করে।
  • পারফরম্যান্সঃ অনার মোবাইল ফোনে হুয়াওয়ের নিজস্ব কিরিন চিপ এবং  কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর সহ বিভিন্ন প্রসেসর দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে, যা মাল্টিটাস্কিং, গেমিং এবং চাহিদা অনুযায়ী অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করার জন্য শক্তিশালী কর্মক্ষমতা প্রদান করে৷ তাছাড়া, পর্যাপ্ত র্যাম সরবারহ করায় সামগ্রিকভাবে গতিশীল এবং দক্ষ কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করে।
  • কানেক্টিভিটিঃ অনার মোবাইলে ৪জি এলটিই, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ সহ বিস্তৃত পরিসরে কানেক্টিভিটি সরবারহ করে। এছাড়াও, কিছু অনার মোবাইলে ৫জি, ডুয়াল সিম সাপোর্ট এবং ওয়াই-ফাই ৬ এর মত কানেক্টিভিটি ফিচার সরবারহ করে।
  • স্টোরেজ ক্যাপাসিটিঃ এই ব্র্যান্ডের মোবাইলে ইন্টারনাল স্টোরেজ সহ মাইক্রোএসডি কার্ডের মত একাধিক স্টোরেজ অপশন রয়েছে। ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে ৬৪ জিবি থেকে ২৫৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ প্রদান করে।
  • পাওয়ার ব্যাকআপঃ অনার মোবাইলে ৩০০০ এমএএইচ থেকে ৫০০০ এমএএইচ বা তার বেশি ব্যাটারি সরবারহ করে। এছাড়াও, ফাস্ট চার্জিং টেকনোলোজি সাপোর্ট করে, যা ব্যবহারকারীদের দ্রুত মোবাইল রিচার্জ করতে সহায়তা করে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: September 02, 2024
Reviews (0) Write a Review