বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে একটি ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন সবারই থাকে। স্থান ভেদে জমির দাম কম বেশি হওয়ায় একজনের পক্ষে জমি ক্রয় করে বাড়ি কেনা যেমন সম্ভব হয় না। তেমনি ফ্ল্যাট কিনতে গেলে বাজেটের কারনে ভালো মানের লোকেশানে বা প্রয়োজনীয় সাইজের ফ্ল্যাট কেনা অনেকের জন্য কঠিন। চলুন জেনে নেই কোন পদ্ধতিতে ফ্ল্যাট কিনলে ২০% থেকে ৫০ % কম খরচে ফ্ল্যাট কেনা যেতে পারে।
জমির শেয়ার পদ্ধতি (৫০% সাশ্রয়)
শেয়ার ভিত্তিক জায়গা ক্রয় করে বাসা-বাড়ি নির্মাণ করা হলে বর্তমান বাজার মুল্য থেকে প্রায় ৫০% কমে নতুন ফ্ল্যাটের মালিক হওয়া যায়। কোন নির্দিষ্ট স্থানে অনেকজন শেয়ার আগ্রহী ব্যক্তি একত্রিত হয়ে শেয়ার ভিত্তিক জমি ক্রয় করে ফ্ল্যাটের মালিক হতে পারেন। শেয়ার পদ্ধতিতে জমি ক্রয় করতে গেলে কিছু নিয়ম কানুন জেনে রাখা ভালো। এগুলোর মধ্যে হচ্ছেঃ-
১। জমির শেয়ার মুল্য পরিশোধ করার সাথে সাথে জমির অংশ অনুযায়ী আপনার নামে রেজিষ্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।
২। জমির শেয়ারের সাথে পাবেন ১টি গাড়ি পার্কিং স্পেস যার জন্য আলাদা কোন খরচ পরিশোধ করতে হবে না।
৩। সাধারণত একটি পরিপূর্ণ বিল্ডিং তৈরি করতে ২.৫ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত সময় লেগে থাকে।
৪। বিল্ডিং নির্মাণ খরচ ধাপে ধাপে পরিশোধ করার সুযোগ পাওয়া যায়।
৫। বিল্ডিং নির্মাণে ব্যবহৃত ইট, বালু, পাথর, সিমেন্ট এবং রডের গুনগত মান ঠিক আছে কিনা সেটার তদারকির সুযোগ পাওয়া যায়।
৬। ফ্ল্যাটের ইনটেরিওর ডিজাইন আপনার পছন্দমত সাজিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
৭। ফ্ল্যাট বন্টন সাধারণত লটারীর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও টপ ফ্লোর প্রাপ্ত শেয়ার মালিকদের আলোচনার মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমান ছাড় দেওয়া হয়ে থাকে।
৮। জমির মালিক হিসাবে আপনার ফ্ল্যাট এর আলাদাভাবে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নেই। একটি বন্টননামা করে রেজিস্ট্রেশন করে নিলেই আপনার ৫-৭ লক্ষ টাকা সাশ্রয় হবে।
আপনার আরও তথ্যের প্রয়োজন হলে আপনি 01896459806 নম্বরে কল করতে পারেন।
ব্যবহৃত ফ্ল্যাট ক্রয়ের মাধ্যমে (২৫% সাশ্রয়)
ঢাকা শহরে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার আছে যাদের মধ্যে অনেকেরই ইচ্ছে থাকে একটি নিজস্ব ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করা। সাম্প্রত্তিক সময়ে নতুন ফ্ল্যাটের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেকের পক্ষে তা ক্রয় করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে ২০% কম দামে ব্যবহৃত ফ্ল্যাট ক্রয় করতে পারেন। কেননা একটি ব্যবহৃত ফ্ল্যাট সবসময় বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি হয়ে থাকে। যদি সহজে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে কোন ফ্ল্যাট ক্রয় করার কথা ভেবে থাকেন সেক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফ্ল্যাট ক্রয় আপনার জন্য তুলনামুলক সহজ এবং কম ব্যয়ব্যহুল হবে। সময়ের সাথে সাথে প্রপাটির মূল্য বাড়তে থাকে ফলে পরবতীতে আপনি এই ফ্ল্যাট অধিক মূল্যে বিক্রিও করতে পারবেন।
নতুন ফ্ল্যাট ক্রয়ের মাধ্যমে (১০% সাশ্রয়)
সামর্থ্য ও চাহিদার কথা মাথায় রেখে যে কোনো এলাকাভিত্তিক নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে অনেকেই নতুন ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী। নতুন রেডি ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে দেখে শুনে ভালো ভাবে ক্রয় করা যায়। তবে এইক্ষেত্রে বাজারদর অনুযায়ী খরচ কিছুটা বেশি হবে। ক্ষেত্রে ক্রেতা হিসেবে আপনি যে সকল বিষয় সমূহ লক্ষ্য রাখবেনঃ –
১। আপনি যদি প্রকল্প শুরু করার আগে নতুন ফ্ল্যাট কিনতে পারেন তাহলে আপনি ১০% টাকা বাঁচাতে পারবেন এবং আপনি কিস্তির জন্য দীর্ঘ সময় পাবেন।
২। জমির দলীল ভালো ভাবে যাচাই বাছাই করে সব কিছু ঠিক থাকলে নিতে পারবেন।
৩। আপনি যে কোম্পানির কাছে থেকে ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনবেন সে কোম্পানির সরকারী ভাবে রেজিস্ট্রেশন আছে কি না সে ব্যাপারে জেনে নিতে হবে।
৪। যে অ্যাপার্টমেন্ট টি ক্রয় করবেন সেটি রাজউক থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত নকশায় তৈরি কিনা সে ব্যাপারে যাচাই করে নিতে হবে।
৫। জমির দলীলে স্বাক্ষর করার আগে ভবন নির্মান থেকে শুরু করে ফ্ল্যাট নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল ধরনের আইনী কার্যক্রম এর লিখিত ডকুমেন্ট ঠিক আছে কিনা দেখে নিতে হবে।
আপনি যে এলাকায় ফ্ল্যাট কিনতে চাচ্ছেন সেখানকার যাতায়াত সুবিধা, নাগরিক সুবিধা (হাসপাতাল,ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, খেলার মাঠ ) রয়েছে কিনা তা দেখে নেওয়া উচিত। ফ্ল্যাট কেনার সময় টাকা পরিশোধের ক্ষেত্রে আপনি ক্যাশ টাকা পরিশোধ করলে অবশ্যই সাথে সাথে মানি রিসিপ্ট গ্রহন করবেন আর ব্যাংকে চেক বা পে অর্ডার এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারেন। দরকার হলে আপনি বিশেষজ্ঞ কারো পরামর্শ নিতে পারেন। কিস্তিতে ফ্ল্যাট ক্রয় করে থাকলে কিস্তি শেষ হওয়া মাত্র আপনার ফ্ল্যাট বা জমির শেয়ার নিজস্ব মালিকানায় রেজিষ্ট্রেশন করে নিবেন ।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: November 11, 2024