দৈনন্দিন জীবনে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকার লেনদেন করতে হয়। বর্তমানে এই সময়ে যদি জাল টাকা সনাক্তকরণের নিয়ম না জানা থাকে তবে যেকোনো সময় বিপদে পড়তে হতে পারে। কেননা জাল নোট ব্যবহার করা বে-আইনি ও অবৈধ। এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে জাল নোট সনাক্তকরণের নিয়ম টি যদি জানা থাকে তবে সহজে আসল নোট এবং জাল নোট চিনে ফেলা যায়। এর জন্য অবশ্যই জাল নোট সনাক্তকরণের নিয়ম জেনে রাখা দরকার। আর যেখানে টাকার লেনদেন বেশি হয় সেখানে জাল টাকা সনাক্তকরনের জন্য মেশিন ব্যাবহার সুবিধাজনক। আর বাংলাদেশে জাল টাকা সনাক্তকরনের মেশিনের দাম বিডিস্টল.কম ওয়েবসাইটে দেখে নিতে পারেন। এই মেশিনগুলো সাধারনত ইউভি লাইট ব্যাবহার করে থাকে।
জাল নোট সনাক্ত করার জন্য প্রথমে আসল নোটের বৈশিষ্ট্য গুলো জানতে হবে। তাহলে সহজেই সনাক্ত করেতে পারবেন কোনটি আসল আর কোনটি নকল নোট। চলুন নিচে আসল নোটের কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ-
আসল টাকার কাগজ
সাধারণ কাগজগুলো মুষ্টির মধ্যে ভাঁজ করে ছেড়ে দিলে সেগুলোর ভাঁজ খুলবে না, কিন্তু আসল টাকাগুলো একাধিক টেকসই কাগজে মুদ্রিত থাকে, যেগুলো সিনথেটিক ফাইবার মিশ্রিত থাকে। ফলে আসল টাকাকে হাতে মূষ্টির মধ্যে ভাঁজ করে ছেড়ে দিলে সেটি ভাঁজ খুলে যাবে।
আসল টাকার জলছাপ
আসল নোটের কাগজে জলছাপ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এই জলছাপ প্রতিকৃতির নিচে নোটের মূল্যমান উল্লেখ করা থাকে। এর বাম দিকে ইলেক্ট্রটাইপ জলছাপ তে উজ্জ্বলভাবে বাংলাদেশের লোগো মুদ্রিত রয়েছে।
ভিন্ন কালিতে টাকার মূল্যমান লেখা
আসল টাকার নোটের ঠিক ডান দিকের কোনায় OVI অংশে টাকার মূল্যমান ১০০, ২০০, ৫০০, ১০০০ দেওয়া থাকবে। সরাসরি ১০০ টাকার নোটের দিকে তাকালে সেটি সোনালী রঙের দেখাবে, কিন্তু কৌনিকভাবে তাকালে সবুজ রঙের মত দেখাবে, আসল ২০০ টাকার নোটের দিক সরাসরি দেখলে সেটি সোনালী রঙের মত দেখাবে আর কৌনিকভাবে দেখলে সবুজ রঙের লাগবে, ৫০০ টাকার নোটে সামনে থেকে তাকালে লালচে রঙের লাগবে এবং কৌনিকভাবে তাকালে সবুজ রঙের লাগবে, ১০০০ টাকায় নিতে সামনে থেকে দেখলে সোনালী এবং কৌনিকভাবে দেখলে সবুজ রঙের দেখাবে।
হলোগ্রাফিক সুতা
যে কোন মুল্যের টাকার নোটের বাম দিকে হলোগ্রাফিক বা নিরাপত্তা সুতা দেওয়া আছে যেটি ৪ মিলিমিটার চওড়া। কোনোভাবেই নখ দিয়ে বা অন্য কিছু দিয়ে হলোগ্রাফিক তুলা সম্ভব নয়। হলোগ্রাফিক সুতার ৪ স্থানে বাংলাদেশের লোগো মুদ্রিত রয়েছে। যদি সরাসরি হলোগ্রাফিক সুতার দিকে তাকালে সেটি সাদা দেখতে লাগবে কিন্তু ৯০ ডিগ্রি বা কৌনিকভাবে দেখলে কালো লাগবে।
নোটের সাইজ
১ হাজার টাকা = ১৬০ × ৭০ মিলিমিটার
৫০০ টাকা = ১৫২ × ৬৫ মিলিমিটার
২০০ টাকা = ১৪৬ × ৬৩ মিলিমিটার
ডান পাশে দেওয়া বৃত্তচাপ
আসল নোটের ডান পাশের নিচের দিকে কোনায় যারা চোখে দেখতে পায়না তাদের টাকা চেনার সুবিধার্থে অন্ধ বিন্ধু দেওয়া হয়েছে। ১০০০ টাকায় রয়েছে ৫ টি টিউন, ৫০০ টাকায় রয়েছে ৪ টি বৃত্তাকার চাপ, ২০০ টাকায় রয়েছে তিনিই ত্রিভুজ আকৃতির চাপ, ১০০ টাকায় রয়েছে ৩ টি বৃত্তাকার চাপ। যেকেউ তার হাতের স্পর্শে বৃত্তাকার চাপ গুলি স্পর্শ করলে উচু নিচু মনে হবে।
ইরিডিসেন্ট স্ট্রাইপ
একটি ১ হাজার টাকার নোটের পেছনের অংশে ইরিডিসেন্ট স্ট্রাইপে বাংলাদেশ ব্যাংক এর নাম লিখা আছে। নোটটি ভিন্ন ভিন্ন এঙ্গেল থেকে দেখলে এটির রং ভিন্ন দেখাবে।
নোটের মধ্যে থাকা ইন্টাগ্লিও লাইন
আসল নোটের ডান পাশে ৭ টি ইন্টাগ্লিও লাইন রয়েছে, যেগুলো হাতের স্পর্শে অনুভব করা যায়।
ক্ষুদ্র আকৃতির লেখা
চিত্রে দেখানো হলোগ্রাফিক সুতা এর বাম পাশে সরলরেখা গুলোতে অতি ক্ষুদ্র আকৃতিতে Bangladesh Bank লেখা রয়েছে। ১০০০ টাকার ক্ষেত্রে দুটি রয়েছে সরলরেখা, যার একটিতে 1000 TAKA লেখা আছে, অন্যটিতে লেখা আছে BANGLADESH BANK। যেগুলো সহজে খালি চোখে দেখা যায় না।
উপরোক্ত কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে নোট বিবেচনা করলে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন কোনটি জাল নোট কোনটি আসল নোট।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: February 16, 2022